অঁতনা আতো’র কবিতা : মলয় রায়চৌধুরীর অনুবাদ

অঁতনা আর্তোর কবিতা : মলয় রায়চৌধুরীর অনুবাদ

নিরংশু কবি

নিরংশু কবি, একটি তরুণীর বুক

তোমাকে হানা দিয়ে বেড়ায়,

তিক্ত কবি, জীবন ফেনিয়ে ওঠে

আর জীবন পুড়তে থাকে,

আর আকাশ নিজেকে বৃষ্টিতে শুষে নেয়,

জীবনের হৃদয়ে নখের আঁচড় কাটে তোমার কলম ।

অরণ্য, বনানী, তোমার চোখ দিয়ে প্রাণবন্ত

অজস্র ছেঁড়া পালকের ওপরে ;

ঝড় দিয়ে বাঁধা চুলে কবি চাপেন ঘোড়ায়, কুকুরের ওপরে ।

চোখ থেকে ধোঁয়া বেরোয়, জিভ নড়তে থাকে

আমাদের সংবেদনে স্বর্গ উথালপাথাল ঘটায়

মায়ের নীল দুধের মতন ;

নারীরা, ভিনিগারের কর্কশ হৃদয়,

তোমাদের মুখগহ্বর থেকে আমি ঝুলে থাকি ।

আমার টাকাকড়ি নেই

আমার টাকাকড়ি নেই কিন্তু

আমি আঁতোনা আতো

আর আমি ধনী হতে পারি

ব্যাপকভাবে আর এক্ষুনি ধনী হতে পারি

যদি আমি তার জন্য প্রয়াস করতুম ।

সমস্যা হলো আমি চিরকাল টাকাকড়িকে,

ধনদৌলতকে, বৈভবকে ঘৃণা করেছি ।

কালো বাগান

এই কালো পাপড়িগুলো ভারতের আকাশের  ঘুর্ণাবর্তকে ঘোরাও।

ছায়ারা পৃথিবীকে ঢেকে ফেলেছে যা আমাদের সহ্য করে ।

তোমার নক্ষত্রদের মাঝে চাষের জমিতে পথ খুলে দাও ।

আমাদের আলোকিত করো, নিয়ে চলো তোমার নিমন্ত্রণকর্তার কাছে,

চাঁদির সৈন্যবাহিনী, নশ্বর গতিপথে

আমরা রাতের কেন্দ্রের দিকে যেতে চেষ্টা করি ।

আমি কে

আমি কে ?

আমি কোথা থেকে এসেছি ?

আমি আঁতোনা আতো

আর আমি একথা বলছি

কেননা আমি জানি তা কেমন করে বলতে হয়

তাৎক্ষণিকভাবে

তুমি আমার বর্তমান শরীরকে দেখবে

ফেটে গিয়ে বহু টুকরো হয়ে গেছে

আর তাকে আবার গড়ে ফেলবে

দশ হাজার কুখ্যাত পরিপ্রেক্ষিতে

এক নতুন শরীর

তখন তুমি আমাকে

কখনও ভুলতে পারবে না ।

স্নায়ু ছন্দ

একজন অভিনেতাকে দেখা হয় যেন স্ফটিকের ভেতর দিয়ে ।

মঞ্চের ওপরে অনুপ্রেরণা ।

সাহিত্যকে বেশি প্রবেশ করতে দেয়া উচিত নয় ।

আমি আত্মার ঘড়ি ধরে কাজ করা ছাড়া আর কোনো চেষ্টা করিনি,

আমি কেবল নিষ্ফল সমন্বয়ের যন্ত্রণাকে লিপ্যন্তর করেছি ।

আমি একজন সম্পূর্ণ রসাতল ।

যারা ভেবেছিল আমি সমগ্র যন্ত্রণার যোগ্য, এক সুন্দর যন্ত্রণা,

এক ঘন আর মাংসল পীড়া, এমন এক পীড়া যা বিভিন্ন বস্তুর মিশ্রণ,

বুদবুদ-ভরা একটি নিষ্পেশিত ক্ষমতা

ঝুলিয়ে রাখা বিন্দু নয় — আর তবু অস্হির, উপড়ে-তোলা স্পন্দনের সাহায্যে

যা আমার ক্ষমতা আর রসাতলের দ্বন্দ্ব থেকে আসে

শেষতমের উৎসার দেয় ( ক্ষমতার তেজের দ্বন্দ্বের মাপ বেশি ),

আর কোনও কিছু বাকি থাকে না বিশাল রসাতলগুলো ছাড়া,

স্হবিরতা, শীতলতা–

সংক্ষেপে, যারা আমাকে অত্যধিক জীবনের অধিকারী মনে করেছিল

আত্মপতনের আগে আমার সম্পর্কে ভেবেছিল,

যারা মনে করেছিল আমি যন্ত্রণাদায়ক আওয়াজের হাতে নির্যাতিত,

আমি এক হিংস্র অন্ধকারে লড়াই করেছি

তারা সবাই মানুষের ছায়ায় হারিয়ে গেছে ।

ঘুমের ঘোরে, আমার পুরো পায়ে স্নায়ুগুলো প্রসারিত হয়েছে ।

ঘুম এসেছে বিশ্বাসের বদল থেকে, চাপ কমেছে,

অসম্ভাব্যতা আমার পায়ের আঙুলে জুতো-পরা পা ফেলেছে ।

মনে রাখা দরকার যে সমগ্র বুদ্ধিমত্তা কেবল এক বিশাল অনিশ্চিত ঘটনা,

আর যে কেউ তা খুইয়ে ফেলতে পারে, পাগল বা মৃতের মতন নয়,

বরং জীবিত মানুষের মতন, যে বেঁচে আছে

আর যে অনুভব করে জীবনের আকর্ষণ আর তার অনুপ্রেরণা

তার ওপর কাজ করে চলেছে ।

বুদ্ধিমত্তার সুড়সুড়ি আর এই  প্রতিযোগী পক্ষের আকস্মিক প্রতিবর্তন ।

বুদ্ধিমত্তার মাঝপথে শব্দেরা ।

চিন্তার প্রতিবর্তন প্রক্রিয়ার সম্ভাবনা একজনের চিন্তাকে হঠাৎ নোংরামিতে পালটে দ্যায় ।

এই সংলাপটি চিন্তার অন্তর্গত ।

ভেতরে ঢুকিয়ে নেয়া, সবকিছু ভেঙে ফেলা ।

আর হঠাৎ আগ্নেয়গিরিতে এই পাতলা জলের স্রোত, মনের সরু, আস্তে-আস্তে পতন ।

আরেকবার নিজেকে ভয়ঙ্কর অভিঘাতের মুখোমুখি আবিষ্কার করা, 

অবাস্তবের দ্বারা নিরসিত, নিজের একটা কোনে, বাস্তব জগতের কয়েকটা টুকরো-টাকরা ।

আমিই একমাত্র মানুষ যে এর পরিমাপ করতে পারি ।

ভালোবাসা

আর ভালোবাসা? আমাদের নিজেকে পরিষ্কার করে ফেলতে  হবে

এই বংশগত নোংরামি থেকে

যেখানে আমাদের ভেতর নাক্ষত্রিক পোকা

কিলবিল করে বেড়ায়

.

সেই অঙ্গ, যে অঙ্গ বাতাসকে পিষে মারে

উত্তাল সমুদ্রের জোয়ারকেও

সেগুলো আসলে এই বিরক্তিকর 

স্বপ্নের ফালতু সুর

.

ওই মহিলার , আমাদের বা এই আত্মার

আমাদের সাথে ভোজসভায় বসেছে

আমাদের বলুন কে প্রতারিত হয়েছে,

কুখ্যাতির এই প্রেরণাদায়িনী

.

যে মহিলা আমার বিছানায় ঘুমায়

আর আমার ঘরের বাতাসে  ভাগ বসায়,

আমার মনের কড়িকাঠে বসে

টেবিলে পাশা খেলতে পারে

কালো কবি       

কালো কবি, একটি কুমারীর স্তন

তোমাকে তাড়া করে,

বিষণ্ণ কবি, জীবন ছটফট করে

আর শহরগুলো পুড়ে খাক হয়ে যায়,

আর  আকাশ  চুষে নেয় বৃষ্টিকে,

ঠিক যেমন তোমার কলম  জীবনের হৃদয়ে লেখালিখি করে ।

.

বনাঞ্চল, বনাঞ্চল, তোমার চোখে জীবিত,

একাধিক ডানার ওপর;

ঝড়ে ওড়ানো চুল নিয়ে,

কবিরা ঘোড়ায় চড়ে, কুকুরের ওপর চড়ে।

.
চোখ জ্বলে ওঠে, জিভ ছোবল মারে,

আকাশ আমাদের ইন্দ্রিয়ে ঢুকে ঢেউ তোলে

মায়ের পুষ্টিকর দুধের মতো;

নারীর দল, আমি তোমাদের মুখ থেকে ঝুলে আছি

.

আর তোমাদের কঠিন অম্লজারিত হৃদয়কে লাথাচ্ছি ।

রহস্যময় জাহাজ

আমার অসুস্হ স্বপ্নগুলোকে ভিজিয়ে দেয় এমন সমুদ্রে,

সেই প্রাচীন জাহাজ গিয়েছে হারিয়ে

কুয়াশায় লুকিয়ে আছে তার উঁচু মাস্তুল

বাইবেলের আর বৃন্দগানে-ভরা আকাশে।

.

তা কিন্তু গ্রিক যাজকদের মতন হবে না

যারা পাতাহীন গাছের মাঝে হালকা চালে খেলা করে;

 বিদেশে তার বিরল পণ্যসম্ভার

কখনই বিক্রি করবে না পবিত্র জাহাজ

.

জাহাজটা তো পৃথিবীর কোন উষ্ণ বন্দরের কথা জানে না,

চিরকাল একা, ও কেবল একমাত্র ঈশ্বরকে জানে,

যেমন-যেমন জাহাজটা  মহিমান্বিত, অসীম তরঙ্গে ঢেউ তুলে এগিয়ে যায় ।

.

রহস্যের মধ্যে ডুবে যায় তার ছুঁচালো মুখ;

রাতে, এর মাস্তুলের বাতিগুলো জ্বলজ্বল করে

মেরু নক্ষত্রের রহস্যময় রূপালী  নিয়ে।

প্রার্থনা

আহ, আমাদের দাও জ্বলন্ত করোটিগুলো

আকাশ থেকে বাজ পড়ে যে করোটিগুলো পুড়ছে

পরিষ্কার করোটি, আসল করোটি,

যেগুলো আপনার উপস্থিতির দ্বারা শুদ্ধ

.

আমাদের গভীর আকাশের গর্ভে পৌঁছে দাও

যেখানে ঝরনার জলে ভরে যায় খাদ 

আর  যেখানে ঘুর্নিজল তোমার ভাস্বর শক্তি দিয়ে 

আমাদের পূর্ণ করে তোলে

.

আমাদের খেতে দাও – এই দিনটিতে প্রতিদিনের 

বিভ্রান্তির পবিত্রতা খাওয়াও আমাদের,

আহ, তোমার রক্তের বদলে

আমাদের সাথে নক্ষত্র আর আগ্নেয়গিরির লাভা ভাগাভাগি করো,

.

আমাদের বন্দিদশা থেকে মুক্ত করো।  উপজাতিতে বিভক্ত করো

তোমার হাতের অনন্ত আগুন দিয়ে

 আমাদের  জ্বলন্ত রাস্তা দিয়ে পাঠাও,

যেখানে আমরা মৃত্যুর ওপারে গিয়ে মরতে পারবো

.

আমাদের মগজকে মুচড়ে বিকৃত করে দাও

আর যেমন-যেমন আমরা নতুন ঝড়ের মুখোমুখি হবো

আমাদের দেবত্বের পরিচয় জেনে নিয়ে,

আমাদের বুদ্ধিমত্তায় আনন্দ করো ।

.

যৌনতার পাড়া

যৌ্নতার পাড়া হঠাৎ  জীবন্ত হয়ে ওঠে

অবাঞ্ছিত মুখ দেখা দেয়;

ক্যাফেগুলো চোর-বাটপাড়ের, গুজগুজ-ফিসফিসে ভরা

রাস্তার দুধার।

.

যৌনসঙ্গ-লোভী হাত পকেট হাতড়ায় ,

পেটের তলায় কুঁচকি  তপ্ত হয়ে ওঠে;

আর যখন ইচ্ছার সংঘর্ষ হয়,

গর্তের তুলনায় মাথার দাম কমে যায় ।

.

আমার সাথে কুকুরদেবতা আর তার জিভ’

(The Umbilicus of Limbo থেকে)

আমার সাথে আছে কুকুরদেবতা আর  তার জিভ,

যা গলায় ফাঁস দিয়ে কেটে বসে যেতে পারে 

চুলকানিময় বিশ্বজগতের 

দুটো খিলানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা চামড়ার টুপিঅলাকে ।

.

আর এখানে রয়েছে জলের ত্রিভুজ

যা পোকার আদলে কুঁকড়ে-কুঁকড়ে চলে,

কিন্তু যা একটা জ্বলন্ত কুঁড়িকে

ঘুরে দাঁড়িয়ে ছুরি মারতে তৈরি।

.

জঘন্য এই বিশ্বজগতের  বুকের তলায়

লুকিয়ে রেখেছে দেবী-কুক্কুরী

পৃথিবীর স্তন এবং হিমায়িত দুধ

যে তার ফাঁপা জিভকে  পচিয়ে দেবে ।

.

আর  এখানে রয়েছে হাতুড়ি-হাতে একজন কুমারী,

পৃথিবীর গুহাগুলোকে চুরমার করার জন্য তৈরি

সেখানে কুকুর নক্ষত্রের মাথার করোটি

ভয়ঙ্করভাবে উঠতে শুরু করে।

.

Posted in Uncategorized | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

ছাব্বিশ বছর আগে লেখা উত্তরাধুনিক কবিতা

Posted in Uncategorized | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

এথনিক ক্লিনজিঙ

বল তো আমার কী সম্পর্ক মে মাসের উনিশ তারিখের সঙ্গে

জিগ্যেস করলুম আমার খুড়তুতো বোনকে

তার ছেলের বিয়েতে, শিলচরে

বিয়ের নিয়ম-আচার সব অন্য রকম কেন

বর বসে আছে আর বউ ফুল হাতে পাক দিচ্ছে তাকে

জিগ্যেস করলুম আমার ভায়রাভাইকে

.

তফাত কতোকিছুতে হয়

বাঁশের মধ্যে পুঁটিমাছ রেখে পুঁতে দেয়া

নোনা ইলিশের চে্যে দামি

.

তফাত ভাষায় নেই

পশ্চিমবাংলা থেকে দূরে 

আমিও জীবন কাটিয়েছি

এখনও সারা দিনে কেবল বুড়ি স্ত্রীর সঙ্গে

কয়েকটা বাংলা কথা বলি

.

মে মাসের উনিশ তারিখে যারা মারা গেল

সরকারি নির্দেশে, পুলিশের গুলিতে বিদ্ধ হয়ে

তাদেরই মতন আমি, পশ্চিমবাংলার বাইরে কাটিয়েছি

অথচ দেখছিস, বাংলা ভাষা ঘিরে আছে তোকে

তোর বর আর ছেলেপুলেদের, যেমন আমাকেও

.

ভাষার জন্য যে মরে যাওয়া যায়

তা কিন্তু পশ্চিমবাংলায় দেখায়নিকো কেউ

দেখিয়েছে তোর এই এলাকার

এগারোটি উজ্জ্বল মানুষ

এখন হিন্দিভাষার সাম্রাজ্যবাদ 

ভয় দেখাচ্ছে ভারতের সব বাঙালিকে

যেখানেই থাকুক তারা

মে মাসের উনিশ তারিখে ওই এগারোটি মানুষের

স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে 

লড়ে যেতে চায়

Posted in Uncategorized | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

আসমা অধরার জন্য প্রেমের কবিতা

তুমি, নীলাকাশ, ধরাছোঁয়া থেকে বহুদূর

মলয় রায়চৌধুরী

তোমার শাদা-কালো ফোটোগ্রাফ, টের পাবার আগে, মন্দার পাহাড়ে

লুকিয়ে খাচ্ছিলুম, আঃ, আটকে গেল কন্ঠনভোচরে, নীল বিষ হয়ে ;

আমার দুই পা ধরে অসুরেরা আর দুই হাত ধরে দেবতারা,

কালসাপ ভেবে মন্হন করতে লাগলো অমৃতের লোভে ;

জানতো না ওরা, তুমি আছো আমার কন্ঠস্বরে অক্ষরে অভিধা ব্যকরণে

নীলকূট হয়ে প্রিয়তমা

তুমি তো নীলাকাশ তুমি তো ধরাছোঁয়া থেকে বহুদূর কবিতামানুষী

শাশ্বত চাউনিতে, অসহ্য যন্ত্রণায় ক্ষুধার্তের গ্রাসনালিকায়, আঃ,

দেখেছো তো দু’পক্ষই আতঙ্কিত এমনকী মূর্ছিত আমার মারণঘূর্ণনে,

তোমার শাদা-কালো ফোটোগ্রাফ, অষ্টাদশী, চুরি করে খেয়েছি যে–

পুরোটা ব্রহ্মাণ্ড, তীর্যক তাকিয়ে আছো, উদ্গীরণ নিতে ঠোঁট খোলো

আমার হাঁ-মুখে জিভ রেখে দ্যাখো সিংহাসনে তুমি বিশ্বরূপা স্বাদ নাও

Posted in Uncategorized | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

Bengali Avant Garde Poetry

আমার আভাঁগার্দ কবিতা : মলয় রায়চৌধুরী

আভাঁগার্দ মানে ‘অ্যাডভান্স গার্ড’ বা ‘ভ্যানগার্ড’, আক্ষরিক অর্থে ‘ফোর-গার্ড’, ভাবকল্পটি এমন একজন ব্যক্তি বা কাজ যা শিল্প, সংস্কৃতি বা সমাজের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয় যা পরীক্ষামূলক, নতুন বা অপ্রথাগত। কাজগুলো প্রথমদিকে নান্দনিক উদ্ভাবন এবং প্রাথমিক অগ্রহণযোগ্যতা দ্বারা চিহ্নিত করা হয় । আভাঁগার্দ শব্দটা, মূলত ফরাসি সামরিক বাহিনীতে ব্যবহৃত একটি শব্দ ছিল । এই সামরিক রূপকটি সাহিত্য-শিল্পের ক্ষেত্রে প্রয়োগ আরম্ভ হলো প্রথানুগত লেখালিখি থেকে পার্থক্য চিহ্ণিত করার জন্য । শব্দটি সেনাবাহিনীর সামনের জওয়ানদের নির্দেশ করে, যারা যুদ্ধক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রথমে শত্রুদের মুখোমুখি হয় এবং যারা পরে আসে তাদের জন্য পথ প্রশস্ত করে । অর্থাৎ আভাঁগার্দ বলতে বোঝায়, সাহিত্য-শিল্পের ক্ষেত্রে, যাঁরা সমসাময়িক কালখণ্ড থেকে এগিয়ে । বলা বাহুল্য যে তাঁরা আক্রান্ত হবেন এবং তার জন্য তাঁরা নিজেদের সেইমতো প্রস্তুত, এরকম মনে করা হয় । তবে বিবর্তনমূলক অর্থে নয়। কারণ এটি বুর্জোয়া সমাজে সাহিত্য-শিল্পের মূল নীতি সম্পর্কে আমূল প্রশ্ন তোলে, যে বক্তব্যটি হলো এই যে, ব্যক্তি-একক বিশেষ সাহিত্য-শিল্পের কাজের স্রষ্টা বা ব্র্যাণ্ড, পুঁজিবাদী কাঠামোয় বিক্রয়যোগ্য । আভাঁগার্দ ভাবকল্পটি সর্বদা বুর্জোয়া এস্টাব্লিশমেন্টের স্থিতাবস্থাকে চুরমার করে যারা এগিয়ে যাবার কথা বলে । কবি কী বলিতেছেন নয়, কবিতাটি কী করিতেছে, এটাই হলো আভাঁগার্দের নবায়ন । স্বদেশ সেন লিখিত ‘জাদু’ কবিতাটা পড়লে টের পাওয়া যাবে আমি কী বলতে চাইছি :

একটা কি চাঁদ উঠেছে না বৃষ্টিতে ভিজেছে অর্জুন গাছ

সেই অর্জুন গাছে বসেছে পায়রা

লাল পা, শাদা গা, নীল ঘুম ?

ও জাদুবাজ তামাড়িয়া, সিল্ক, গরদ আর টায়রা

একটা কি সূর্য উঠেছে না আগুনের ব্লুম ?

আভাঁগার্দ কবিতা তার আগেকার অন্যান্য কবিদের কাব্যাদর্শ প্রত্যাখ্যান করে এবং পরিবর্তে নতুন এবং উত্তেজনাপূর্ণ বাকপথের সন্ধান করে । একইভাবে ছবি আঁকা আর ভাস্কর্যের নবায়ন করে আভাঁগার্দ । উদ্ভাবন ব্যাপারটা আভাঁগার্দ কাজের কেন্দ্র । ফলত, অনেকসময়ে, আভাঁগার্দ লেখা সম্পূর্ণ নতুন, দুর্বোধ্য, দুরূহ, এবং প্রায়শই সমসাময়িক পাঠকদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়। কবি বা শিল্পী তার ফলে হতাশ হন না, ঠিক যেমন যুদ্ধক্ষেত্রে ঘটে, পেছিয়ে আসার প্রশ্ন ওঠে না । মরে যাবে জেনেই আভাঁগার্দ জওয়ানরা শত্রুনিধনে বেরোয় । কখনও কখনও কবি বা শিল্পীরা, যাঁরা আভাঁগার্দ থিমের সাথে জড়িত, তাঁদের অবদানের জন্য স্বীকৃতি পেতে কয়েক দশক লেগে যায় কিংবা শেষ পর্যন্ত স্বীকৃতি নাও পেতে পারেন । ক্রমশ আভাঁগার্দ সাহিত্য-শিল্প মূলধারার অংশ হয়ে যায় এবং অবিশ্বাস্যভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তাই দেখা যায়, একদা যে ডাডাবাদী কাজগুলো আভাঁগার্দ হইচই হিসাবে নিন্দিত হয়েছিল তা প্রয়োগ করছে বিজ্ঞাপনের এজেন্সিগুলো । প্রাথমিকভাবে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে যা আদর্শ বা স্থিতাবস্থা হিসেবে বহুকাল যাবত গ্রাহ্য, তার সীমানা অতিক্রম করে আভাঁগার্দ সাহিত্য-শিল্প । আভাঁগার্দকে কেউ কেউ আধুনিকতার শেষ বৈশিষ্ট্য বলে মনে করেন যার হাত ধরে উত্তরাধুনিকতা প্রবেশ করেছে । অনেক শিল্পী নিজেদের আভাঁগার্দ আন্দোলনের সাথে যুক্ত করে নিজেদের কাজকে উত্তরাধুনিক হিসাবে চিহ্ণিত করেছেন ।

আভাঁগার্দ আমূল সামাজিক সংস্কারও সমর্থন করে। সেইন্ট সিমোঁর মতাবলম্বী ওলিন্ডে রড্রিগেস তাঁর প্রবন্ধে ( “শিল্পী, বিজ্ঞানী এবং শিল্পপতি”, ১৮২৫) বলেছিলেন যে, সাহিত্যিক এবং শিল্পীদের উচিত সমাজে আভাঁগার্দ পরিবর্তন আনা । রড্রিগেস বলেছিলেন সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য “সাহিত্য ও শিল্পের শক্তি প্রকৃতপক্ষে সবচেয়ে তাৎক্ষণিক এবং দ্রুততম হতে পারে আভাঁগার্দ কাজের মাধ্যমে”। ভাবকল্পটি উনিশ শতকে বামপন্থী ফরাসি র‍্যাডিকালদের সাথে যুক্ত হয়েছিল, যারা রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য আন্দোলন করছিল। সেই শতাব্দীর মাঝামাঝি কোনো এক সময়ে, শব্দটি সাহিত্য-শিল্পের সাথে যুক্ত হয়, এই ধারণার মাধ্যমে যে সাহিত্য-শিল্প হলো সামাজিক পরিবর্তনের উপকরণ। শতাব্দীর শেষের দিকে ইউরোপে আভাঁগার্দ কাজকর্ম সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক বিষয়গুলির সাথে আরও বেশি করে সংযুক্ত হওয়ার দরুন বামপন্থী সামাজিক কারণগুলির থেকে দূরে সরে যেতে শুরু করেছিল। বিশুদ্ধ রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে নান্দনিক বিষয়গুলোর উপর জোর দেওয়ার এই প্রবণতা অব্যাহত, তার কারণ রাজনীতিতে ঢুকে পড়েছে অসাধু লোকেরা যাদের আসল উদ্দেশ্য টাকা কামানো ।

আভাঁগার্দ আজ সাধারণত বুদ্ধিজীবী, লেখক এবং শিল্পীদের গোষ্ঠীকে বোঝায়, যার মধ্যে ভাস্কর আর স্থপতিও রয়েছেন, যাঁরা বর্তমান সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে চ্যালেঞ্জ করে শৈল্পিক পদ্ধতির নবায়নের চিন্তাভাবনা করেন এবং পরীক্ষা করেন। আভাঁগার্দ কাজগুলো, বিশেষ করে যদি তারা সামাজিক সমস্যাগুলোকে সমাধান করতে চায়, প্রায়শই এমন সমাজ-কর্তাদের মুখোমুখি হয় যারা সমাধানগুলো আত্মীকরণ করতে বড়ো বেশি সময় নষ্ট করে । সমস্যা হলো যে গতকালের প্রতিষ্ঠানবিরোধিরা মূলধারায় পরিণত হয়, সরকারে যোগ দেয় বা ক্ষমতাবান মিডিয়ার মুখপত্র হয়ে ওঠে । ফলে আবার নতুন প্রজন্মের বিরোধিদের উদ্ভবের পরিবেশ তৈরি করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় ডাডা আন্দোলন গড়ে ওঠে সেইসব শিল্পীদের নিয়ে, যাঁরা পুঁজিবাদী সমাজের যুক্তি, কারণ বা সৌন্দর্যের ধারণা মানতেন না, বরং তাঁদের কাজের মাধ্যমে প্রকাশ করতেন আপাত-অর্থহীন, উদ্ভট, অযৌক্তিক এবং বুর্জোয়া-বিরোধী প্রতিবাদী বক্তব্য । আন্দোলনটির কাজ প্রসারিত হয়েছিল দৃশ্যমান, সাহিত্য ও শব্দ মাধ্যমে, যেমন কোলাজ, শব্দসঙ্গীত, কাট-আপ লেখা, এবং ভাস্কর্যতে। ডাডাবাদীরা হানাহানি, যুদ্ধ এবং জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে অসন্তোষ প্রকাশ করতেন এবং গোঁড়া বামপন্থীদের সাথে তাঁদের রাজনৈতিক যোগাযোগ ছিল। সবচেয়ে বিশিষ্ট আভান্ট-গার্ড কবিদের মধ্যে আমরা ভিসেন্তে হুইডোব্রো, নিকোলাস গুইলেন, সেজার ভালেজো, জর্হে লুইস বোর্হেস, অক্টাভিও পাজ, জুয়ান কার্লোস ওনেটি, মারিও বেনেদেত্তি, পাবলো নেরুদা, অলিভেরিও গিরোন্ডো, ভাসকো পোপা এবং আরও অনেককে খুঁজে পেতে পারি । সাহিত্যে, বিশেষ করে কবিতায়, আভাঁগার্দরা তাঁদের লেখার নতুন পদ্ধতিতে উদ্ভাবন করেছেন। কবিতায় তাঁরা কিছু ব্যাকরণ যেমন সঠিক বানান এবং সংযোগকারী শব্দ বা বাক্য ব্যবহার করেননি; বা নিয়ম বা কাঠামো যা আগে গ্রাহ্য ছিল তাকে অস্বীকার করেছেন। এই কবিতার বৈশিষ্ট্যগুলি তাঁদের অনন্য করে তুলেছিল, যেহেতু পূর্বোক্তগুলি মেনে চলার পাশাপাশি, তাঁরা সম্পূর্ণ মুক্ত উপায়ে কবিতা চর্চার ঝুঁকিও নিয়েছিলেন; তাঁরা নতুন শব্দ উদ্ভাবন করতেন, নতুন হরফ ব্যবহার করতেন, এমনকি একই টেক্সট (ক্যালিগ্রাম নামে পরিচিত) বা তাদের সাথে ছবি দিতেন পারে। তাঁরা ১) কবিরা ভাবনাকে উপস্থাপন করতে ছবি ব্যবহার করতেন। ২).পুরোনো কবিতার প্রতি কবির অসন্তোষ প্রকাশ করতেন এবং নতুন কিছুর সন্ধান করতেন । ৩). কাব্যিক ভাষা আমূল পরিবর্তন করতেন। ৪ ). আলোচিত বিষয়গুলি খুব বৈচিত্র্যময়, অস্বাভাবিক এবং উদ্ভাবনী হিসাবে উপস্হাপন করতেন । ৫) নতুন পাঠকের কাছে যা অর্থহীন ছিল তা পিছনে ফেলে যাওয়ার চেষ্টা করতেন । এই প্রসঙ্গে শম্ভু রক্ষিত-এর ‘মুক্তিবাদ’ কবিতাটি উল্লেখ্য :

l

যারা আমাকে ডিগডিগে

আমার রুহকে যুদ্ধের হিরো

আমার ঈশ্বরকে অনিষ্টজনক

আমার কবিতাকে

চাকচিক্যময় আভিজাত্য বা বিক্ষিপ্ত প্রলাপ মনে করে

.

আহ ভাইরে

তারা বাণিজ্যের অযথার্থ ক্ষমতা দিয়ে

তাদের নাক মুখ কান দখল করে

এই শক্তিশালী প্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্রের

অস্তিত্ব রক্ষা করুক

.

যারা বালি ফুঁড়ে

আমাকে বাল্যপাঠ শেখাচ্ছে

আহ ভাইরে

তারা মেকি সুন্দরের মিথ্যে সীমারেখা প্রত্যাখ্যান করে

অন্তত্ব একটা ছোটখাটো দেবদূতের সন্ধান করুক

অকেজো জ্যুকবক্সে স্থির ডিস্ক

জীবনের আর ভাঙা ইঁটের

অশুভ যুদ্ধপরা যন্ত্রনায় আন্তর্জাতিক কোরাস

আহ ভাইরে

কবরখানা আর টাউনশিপের সুড়ঙ্গের মধ্যে গুঞ্জন করা

আস্তাবলের ধূর্ত পিটপিটে মায়া

মধ্যে মধ্যে ফ্যাঁকড়া

আহ ভাইরে

.

কাঁধে অগ্নিবর্ণের ক্যামেরা

হাতে অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট ট্রানজিস্টর

অন্য সম্রাটের দায় যাতে মেটে

মাংস ভেদ করে সচল ফ্রেস্কোর মত

এইসব রেডিয়ো-টিভি-অ্যাকটিভ যুবশক্তি

মুক্তিবাদ এবং জাঁকজমক খুঁড়ে নৈশস্তব্ধতা

আহ ভাইরে

ইউরোপ থেকে আনা সাহিত্য-সংরূপগুলোর সংজ্ঞার স্বামীত্ব, তাদের ব্যাখ্যা করার অধিকার, দেশীয়করণের বৈধতা, সেসব বিধিবিধান তত্বায়নের মালিকানা, কথাবস্তুটির উদ্দেশ্যমূলক স্বীকৃতি, চিন্তনতন্ত্রটির অন্তর্গত সংশ্লেষে স্বতঃঅনুমিত ছিল যে, অনির্মিত লেখকপ্রতিস্বের পক্ষে তা অসম্ভব, নিষিদ্ধ, অপ্রবেশ্য, অনধিকার চর্চা । ব্যাপারটা স্বাভাবিক, কেননা যাঁরা সংজ্ঞাগুলো সরবরাহ করছেন, তাঁরাই তো জানবেন যে সেসব সংজ্ঞার মধ্যে কী মালমশলা আছে, আর তলে-তলে কীইবা তাদের ধান্দা । ফলে, কোনও কথাবস্তু যে সংরূপহীন হতে পারে, লেখক-এককটি চিন্তনতন্ত্রে অনির্মিত হতে পারে, রচনাকার তাঁর পাঠবস্তুকে স্হানাংকমুক্ত সমাজপ্রক্রিয়া মনে করতে পারেন, বা নিজেকে বাংলা সাহিত্যের কালরেখার বাইরে মনে করতে পারেন, এই ধরণের ধারণাকে একেবারেই প্রশ্রয় দেয়নি ওই চিন্তনতন্ত্রটি । এই কারণেই হাংরি আন্দোলনকে বুঝতে পারেন না অনেকে, হাংরিদের কবিতা ও গদ্যকে পূর্বের কবি ও লেখকদের কাজের পাশে রেখে তুলনা করতে চান । বর্তমান কালখণ্ডে, আমরা জানি, একজন লোক লেখেন তার কারণ তিনি ‘লেখক হতে চান’ । অথচ লেখক হতে চান না এরকম লোকও তো লেখালিখি করতে পারেন । তাঁরা সাহিত্যসেবক অর্থে লেখক নন, আবার সাহিত্যচর্চাকারী বিশেষ স্হানাংক নির্ণয়-প্রয়াসী না-লেখকও নন । তাঁদের মনে লেখক হওয়া-হওয়ি বলে কোনও সাহিত্য-প্রক্রিয়া থাকে না । হাংরি আন্দোলনকারীদের, ডাডাবাদীদের মতনই, এই প্রেক্ষিতে গ্রহণ করতে হবে ।

বাঙালির সমাজে আমরা দেখি যে একদা প্রতিষ্ঠানবিরোধী সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শৈলেশ্বর ঘোষ, ব্রাত্য বসু, সুবোধ সরকার, জয় গোস্বামী, প্রসূন ভৌমিক প্রমুখ যোগ দিলেন প্রতিষ্ঠানে । সুভাষ ঘোষ যোগ দিলেন সিপিএম দলে । পক্ষান্তরে প্রতিষ্ঠানবিরোধী আভাঁগার্দ লেখক হিসাবে দেখা দিলেন সুবিমল বসাক, ফালগুনী রায়, সুভাষ ঘোষ, সুবিমল মিশ্র, বারীন ঘোষাল, অজিত রায়, নবারুণ ভট্টাচার্য, ধীমান চক্রবর্তী, সুব্রত সেন, রণবীর পুরকায়স্থ, জয়া গোয়ালা, কৌশিক সরকার, অনুপম মুখোপাধ্যায়, অমিতাভ প্রহরাজ, অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ।

আভাঁগার্দ কবিতা ভাষা এবং পরীক্ষামূলক কবিতার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক অন্বেষণ করে । ভাষাই বাস্তবতা। বাস্তবতা হলো ভাষা। আভাঁগার্দ কবিতা এই অন্তহীন টেনশানের মাঝে উপস্হিত । উল্লেখ্য যে পরাবাস্তববাদ এবং জার্মান অভিব্যক্তিবাদ হল আভাঁগার্দের প্রকৃষ্ট উদাহরণ যা একইসঙ্গে নান্দনিক মূল্যবোধ এবং ব্যক্তি-এককের বিকাশকে মেশাতে পেরেছিল, কিন্তু ইউরোপীয় কোনো সাহিত্য আন্দোলনই রাশিয়ার আভাঁগার্দের সাথে যুক্ত হতে পারেনি । পরাবাস্তববাদ ছিল ডাডাবাদী আন্দোলন আর অবচেতনের ফ্রয়েডীয় তত্ত্বের একটি স্বাভাবিক প্রসারণ ও মিশেল। এমনকি জার্মান অভিব্যক্তিবাদকে উনিশ শতকের নব্বই দশকে হারিয়ে যেতে থাকা উত্তেজনার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে । একমাত্র এডভার্ড মুঞ্চ উভয়ের মধ্যে একটি মূল সংযোগ গড়ে তুলতে পেরেছিলেন। তবে নিশ্চিতভাবেই আঁদ্রে ব্রেতঁ এবং ম্যাক্স আর্নস্টের মতো উল্লেখযোগ্য পরাবাস্তববাদীরা তাদের নির্দিষ্ট কেন্দ্রের বাইরে একটি আলাদা জীবন কাটিয়েছিলেন যার দরুন পরাবাস্তববাদীদের মধ্যে অবনিবনার চূড়ান্ত হয়েছিল । এমনকি ক্যান্ডিনস্কি তার নিজস্ব স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করার জন্য দ্রুত তার প্রাথমিক অভিব্যক্তিবাদী অনুষঙ্গগুলির বাইরে চলে গিয়েছিলেন। ব্যাপারটা যুদ্ধক্ষেত্রের মতনই, কে একা এগিয়ে গিয়ে শত্রুপক্ষের ঘাঁটি আক্রমণ করবে তা আভাঁগার্দ আন্দোলনের একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নবিন্দু । ত্রিস্তান জারার কবিতাকে ইউরোপীয় সাহিত্যে আর গুরুত্ব দেয়া হয় না বটে কিন্তু স্বীকার করা হয় যে তিনিই প্রথম পুঁজিবাদী শত্রুর ঘাঁটিতে আভাঁগার্দ পতাকা পুঁতেছিলেন ।

পরাবাস্তববাদকে ‘নির্দিষ্ট’ ছকে ফেলা কঠিন। হাংরি আন্দোলনকেও নির্দিষ্ট ছকে ফেলা যায় না । হাংরি আন্দোলনকারীদের প্রতিস্ব তো একক, নিটোল, একশিলা, একমুখি নয় । পরাবাস্তববাদীরা একই আন্দোলনের সদস্য হয়ে ছবি আঁকলেও এবং কবিতা লিখলেও, তাঁদের দৃষ্টি ও উপলব্ধির মধ্যে ব্যক্তিগত পার্থক্য ছিল । মতবাদটি সম্পর্কে প্রত্যেকে নিজস্ব ভাবনা ভেবেছেন, যে কথা হাংরি আন্দোলনকারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোয্য । ১৯২৯ সালে সালভাদর দালি এই আন্দোলনে যোগ দেন, যদিও তাঁর সঙ্গেও ব্রেতঁর বনিবনা হতো না । সালভাদর দালি মনে করতেন, ‘সুররিয়ালিজম একটি ধ্বংসাত্মক দর্শন এবং এটি কেবল তা-ই ধ্বংস করে যা দৃষ্টিকে সীমাবদ্ধ রাখে।’ অন্যদিকে জন লেলন বলেছেন, ‘সুররিয়ালিজম আমার কাছে বিশেষ প্রভাব নিয়ে উপস্থিত হয়েছিল। কেননা, আমি উপলব্ধি করেছিলাম আমার কল্পনা উন্মাদনা নয়। বরং সুররিয়ালিজমই আমার বাস্তবতা।’

তাঁদের রাজনৈতিক টানাপোড়েন এবং অন্যান্য কারণে প্রেভের, বারোঁ, দেসনস, লেইরিস, লিমবোর, মাসোঁ, কোয়েন্যু, মোরিস, বোইফার সম্পর্কচ্ছদ করেন ব্রেতঁর সঙ্গে, এবং গেয়র্গে বাতাইয়ের নেতৃত্বে পৃথক গোষ্ঠী তৈরি করেন । তবুও তাকে আন্দোলনের মৃত্যুঘণ্টা বলে খিল্লি করা হয়নি । এই সময়েই, ১৯২৯ নাগাদ, ব্রেতঁর গোষ্ঠীতে যোগ দেন সালভাদর দালি, লুই বুনুয়েল, আলবের্তো জিয়াকোমেত্তি, রেনে শার এবং লি মিলার । ত্রিস্তঁ জারার সঙ্গে ঝগড়া মিটমাট করে নেন ব্রেতঁ । দ্বিতীয় সুররিয়ালিস্ট ইশতাহার প্রকাশের সময়ে তাতে সই করেছিলেন আরাগঁ, আর্নস্ট, বুনুয়েল, শার, ক্রেভাল, দালি, এলুয়ার, পেরে, টাঙ্গুই, জারা, ম্যাক্সিম আলেকজান্দ্রে, জো বনসকোয়েত, কামিলে গোয়েমানস, পল নুগ, ফ্রান্সিস পোঙ্গে, মার্কো রিসটিচ, জর্জ শাদুল, আঁদ্রে তিরিয়ঁ এবং আলবেয়ার ভালেনতিন । ফেদেরিকো গারথিয়া লোরকার বন্ধু ছিলেন সালভাদর দালি এবং লুই বুনুয়েল, আলোচনায় অংশ নিতেন, কিন্তু পরাবাস্তব গোষ্ঠিতে যোগ দেননি । ১৯২৯ সালে লোরকার মনে হয়েছিল যে দালি আর বুনুয়েলের ফিল্ম “একটি আন্দালুসিয় কুকুর” তাঁকে আক্রমণ করেছে ; সেই থেকে আরাগঁ ও জর্জ শাদুল ব্রেতঁ’র গোষ্ঠী ত্যাগ করেছিলেন , যদিও ব্রেতঁ বলতেন যে তিনিই ওনাদের তাড়িয়েছেন ।

আভাঁগার্দ সাহিত্য-শিল্প নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ কারণ তা নতুন শৈলীর বিকাশ ঘটায় । লেখক ও শিল্পীরা সীমাকে ঠেলে এগিয়ে না গেলে সাহিত্য-শিল্প অপরিবর্তিত থেকে যেতো । এটি তাঁদের কারণে সম্ভব হয় যাঁরা যুদ্ধক্ষেত্রের অজানা এলাকায় এগিয়ে যাবার সুযোগ নিতে ইচ্ছুক, যে এলাকায় হয়তো মাইন পোঁতা থাকবে, সমালোচকদের লুকোনো কামান থাকবে, বিদ্যায়তনিক মিসাইল আচমকা হানা দেবে । আজ বাজার অর্থনীতির প্রকোপে ভাষা একটি ভয়ঙ্কর ‘বর্জ্য’ নিজের সঙ্গে বয়ে নিয়ে চলছে, বিশেষত নতুন যোগাযোগ প্রযুক্তির উত্থানের দরুন। আভাঁগার্দ কবিতা ও গদ্য এই অপচয়কে শত্রু হিসাবে গ্রহণ করে । আভাঁগার্দ প্রক্রিয়া নীরবতার মাধ্যমেও ভাষা সংরক্ষণের প্রয়াস করে। হাস্যকরভাবে, নিজের পুঁজিবাদী প্রযুক্তির (আত্ম-সহায়তা এবং রোমান্টিক প্রেম থেকে শুরু করে ব্যবস্থাপনা বক্তৃতা এবং বাজারের মতাদর্শের মধ্যে) শব্দ ব্যবহারে অপচয়ের পরিমাণ শব্দগুলোকে জঙ ধরিয়ে দেয়। এই প্রসঙ্গে সুবিমল মিশ্রর ‘বাব্বি’ গদ্যটা উল্লেখ্য যাকে সুবিমল বলেছেন ‘অ্যান্টি-গল্প’ । ১৯৮১ সালে লেখা এটি গুরুত্বপূর্ণ আভাঁগার্দ রচনা :

“বেড নাম্বার নাইন্টিনাইনের পেসেন্টকে কারা দেখতে এসেছেন? পেসেন্ট মারা গেছে ভাের রাতে। ঐ দেখা যায় ডানদিকে লালবাড়ি— মর্গ। মরচে-ধরা। কোলাপসিবল গেট। বডি-টা পাঠানাে হয়েছে ঐ দিকে। এক এক করে সবাই গিয়ে দেখে আসুন। চারদিকে এখন পঁচা লাশের ঠাণ্ডা নীল হাঁ। অন্ধকারে, সেই হাঁ-এর ভেতরে, মােটা থলথলে একটা মাংসপিণ্ড, ফিনফিনে ধুতি-পাঞ্জাবীতে, গাড়ি থেকে থপথপিয়ে নামে, কাছে এসে গায়ে হাত দেয়, কানে কানে বলে: ম্যাচিস আছে? ওটা কোড়-ল্যাংগােয়েজ। তারপর দুজনে অন্ধকারের দিকে মিশে যায়।

লাঠিতে ভর করে কুঁজো মতন একটা লােক রাস্তা পেরােতে থাকে। সেই মুহূর্তের জন্য পৃথিবী স্তব্ধ হয়ে পড়ে। লােকটা ঠুক ঠুক লাঠিতে ভর দিয়েই, আস্তে, রাস্তা পেরােতে থাকে, ক্রমশ রাস্তা পেরােতে থাকে। গল্প রাত-পরীদের দিকে ঘুরে যায়। রাত বাড়ার সংগে সংগে ডানা থেকে তারা তাদের সব পালক খসিয়ে ফ্যালে। কবরখানার ভেতর থেকে ফাঁসিকাঠের খট খট শব্দ হয়। অস্পষ্ট কিছু ছায়ামূর্তি সেই শব্দে আকৃষ্ট হয়ে লণ্ঠন দোলাতে দোলাতে জনবসতি ছাড়িয়ে জংলা কবরখানার দিকে চলে যায়। পর্যায়ক্রমিক এইসব অসংলগ্নতা পাঠকের মনে একটা প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। অনুভূতির ওপর প্রভাব বিস্তার করা, তারপর তাকে ছাড়িয়ে যাওয়া— বিষিয়ে তােলা। এই হচ্ছে শক-ট্রিটমেন্ট। ক্রমশ তাদের মনোেযােগ ঝিঁঝিয়ে ওঠে, সাড়হীন যুক্তি-বিন্যাস নাড়া খায়। রক্তের সংগে জড়িয়ে যায় আপৎকালীন চরাচর। বুড়াে লােকটি এসে হাসতে হাসতে বলে: আমি ফুল চিবিয়ে খাই। তারপর হাসি থামিয়ে জানায় তার গােটা ডানহাতটাই তার নিজের নয়। বহুকাল তার নিজের কোন ডান হাত ছিল না। সে তার হাতখানা খুঁজে পেয়েছে ঘরের পাশে ডাস্টবিনে, এবং পরে সেলাই করে নিয়েছে দেহের সংগে। ডান হাতখানা কোথায় ছিল তবে আপনার? ছেলেবেলায় ওটা আমি হারিয়ে ফেলি। তখন আমি আমার বাবাকে… কোন কিছুর জন্য না, এমনিই। ঘটনাটা ঘটে যায় আর কি … আর এই ঘটে যাওয়ার ওপর তাে কোন চারা নেই।

বাবার এই মৃতদেহ যখন পােড়ানাে হচ্ছে, তখন, সে, হঠাৎই, উচ্ছ্বসিত, হাসিতে ভেঙে পড়েছিল। বিব্রত হয়ে সে শ্মশান থেকে তাড়াতাড়ি চলে আসতে বাধ্য হয় কিন্তু তখনাে তার হাসির বেগ কমেনি। বাবাই তাে সব, এইসব, সব শেখালাে। হাঁ, সে তার বাবাকে খুব ভালবাসতাে। বুড়ােটার দাঁতগুলাে খুব সুন্দর। বলে আমি ফুল চিবিয়ে খাই। বলে আর হাসে। হাসতে হাসতে মন্তব্য করে: চিবিয়ে খাই তাে কি হল— আপত্তি আছে? মাঝরাতে ফ্লাইওভার জুড়ে উপুড় হয়ে পড়ে আছে থেঁতলে-যাওয়া এক মনীশের শরীর। রাত ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে কিন্তু ভাের রাত পর্যন্ত কেউ খবর পায়নি। পাশ দিয়ে অনেক গাড়ি গেছে কিন্তু আজকালকার দিনে কে আর ইচ্ছে করে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে চায়। লম্বা মতন এক যুবক, আর তার পিঠে জড়িয়ে আছে কালাে-বেলবট্‌স-আর-লাল-সােয়েটার-পরা-মেয়েটি। এতখানি চওড়া মসৃণ রাস্তা সবাই পায়ের সুখ মিটিয়ে অ্যাকসিলেটর চাপে, মােটর সাইকেলটি চুরমার হয়ে পড়েছিল নতুন ফ্লাইওভারের ওপর। পরে দেখা গেছে একদিকে বেঁকে দুমড়ে উপুড় হয়ে পড়ে-থাকা মনীশের শরীর, অন্যদিকে মাথায় চোট লেগে অজ্ঞান অবস্থায় রেবেকা চ্যাটার্জী। মনীশের বৌ তখন বাড়িতে পথ চেয়ে। নীলচে কালাে লম্বা ব্যারেলে নিয়তির নিষ্ঠুরতা। ভালবাসা যায় না। অনন্তকাল সংগে থাকলেও না। বাড়ির বাথরুমে এনামেল করা স্নানের টবটা থেকে সুরু করে দরজায় পেতলের হাতল পর্যন্ত, সব, সব ভালবাসি। চারিদিকে গহন বন, নদী। পশ্চিমঘাট পাহাড়ের মধ্যিখানে বিশাল গাছের ঘন ছায়ায় সিমলিজোরা রেস্ট-হাউস। নির্জনতা সেখানে ফিতের মতাে পায়ে পড়ে জড়ায়। বাংলাের পিছনে ঝিরঝিরে ঝর্ণা। রেস্ট-হাউসের সামনে ছাঁটা-ঘাসের মাপা চৌহদ্দিতে দুটি বেতের চেয়ার। একটাতে রেবেকা বসে আছে, এলানাে গা, অদূরে মনীশের মােটরসাইকেল। ঝর্ণা দিয়ে জল গড়িয়ে যাচ্ছে। বাংলাের বারান্দায় শুকনাে পাতা উড়ছে ফরফর। থিরথিরে ছন্দের চেয়ে রুক্ষতার প্রাধান্য থাকলে ঘটনার নির্মমতা আরাে আরাে চারিত্রিক হয়ে ওঠে। আর স্ব-বিরােধিতাই হল কর্মপদ্ধতির একটা অংগ। চরিত্রের ভেতরে প্রবেশ করার একটা দ্বি-মাত্রিক পদ্ধতি। সেটা কখনাে কখনাে ত্রি-মাত্রিকও হতে পারে। সব-সময় সন্দেহজনক এই অনুসন্ধানটা থাকা দরকার। একটা মেয়ে লিখছে, ২৬ বছর আমার বয়স…স্লিম…স্টেট সার্ভিসের জন্য পরীক্ষা দিচ্ছি… নিজের নামের আগে মিস বা মিসেস লিখতে মর্যাদাহীনতা বােধ করি আমি… গত বছরে দিল্লিতে গিয়ে প্রকাশ্যে তােমার সংগে কয়েকটা দিন কাটিয়ে আসতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ৩ দিনের মধ্যে সব টাকা ফুরিয়ে যায়। এই হােল বিরােধিতার একটা দিক। মানে আমার নিজস্ব ভাবে চিন্তা করা। এই পদ্ধতিতে চরিত্ররা এটা ওটা জিজ্ঞেস করতে থাকে। লেখক খুশি হন। যে চরিত্রটি শুধু নিজের অংশটুকু পড়ে দেখছে না, সমস্ত লেখাটাই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ছে তার কৌতুহল স্বাভাবিক ভাবেই লেখককে খুশি করে। উৎসাহ এনে দেয়। চরিত্ররা সকলে মিলে আলােচনায় বসে, তারা প্রতিটি কথার অর্থ জেনে নিতে চায়, তাদের কি কাজ, তারা এসব কেন করছে—’সবই লেখকের সংগে আলােচনা করে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জেনে নেয় তারা। নিজেদের মতামতও জানায়। তর্ক করে। কিন্তু লেখককে অনেক সময় নিরুপায় থাকতে হয়। সবাইকে কি সে ছাই ভাল করে জানে, ফিনফিনে ধুতি-পাঞ্জাবী পরা থলথলে চেহারার লােকটিকে রাত ৮টার পর ভিকটোরিয়ার সামনে গাড়ি থেকে নামতে একদিনই সে দেখেছিল মাত্র। আর তখনি দেশে যে পুরুষ-হিজড়ে রয়েছে, একশ্রেণির কম বয়সি ছেলেরা, এবং তাদের এইসব টিপিক্যাল কাস্টমার, তাদের অস্তিত্বের কথা টের পায়। রেবেকা জানতে চেয়েছিল পাঠকেরা তাকে কীভাবে নেবে। আমার ধারণায় পাঠকদের দৃষ্টি সব সময় তােমার কালাে বেলবটস আর লাল টকটকে ঐ শােয়েটারের ওপর থাকবে…। আসলে একটা চরিত্রের দিকে লেখকের পক্ষে ছুটে যাওয়া খুব খারাপ। ওদের করতে দেওয়া দরকার। দেশজুড়ে হঠাৎ হঠাৎ ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ অঢেল পরিমাণ বে-আইনী আগ্নেয়াস্ত্র ও বহু অস্ত্রনির্মাণ কারখানা আবিষ্কার করে ফ্যালে। উদ্ধার করে অনেক তাজা বােমা ও বােমার মশলা। রাইফেল বন্দুক পিস্তল ও পাইপগান মিলিয়ে এক দিনের তল্লাশীতেই ধরা পড়ে প্রায় ২৫ হাজার বে-আইনী আগ্নেয়াস্ত্র। তখন ছােকরাটি, তাকে সবাই পাড়ার মস্তান বলে জানে, বলতে থাকে: এই দ্যাখাে, বাড়ি থেকে নিয়ে এলুম এগুলাে—মা’র শাল, মেজদার গরদের পাঞ্জাবী, ছােড়দার বিয়ের জুতাে— চোরা বাজারে ঝেড়ে দেবাে। সে এ সব কথা বলছে ঠিকই কিন্তু খুব স্বাচ্ছন্দ্য বােধ করছে না। দ্বিধা রয়েছে। সে না করেও পারে না, করেও কোনও স্বস্তি নেই। চরিত্রের অন্যতর গড়নে এটা সব সময়ই হয়। ওদের নানা সময়ে নানা রকমের আপত্তি থাকে। বিরােধিতা জিনিসটা একটা চরিত্রের কর্ম-পদ্ধতিরই একটা অংগ। বুড়ােটা, ফুল চিবিয়ে খাওয়া বুড়ােটা অবশ্য স্বীকার করেছে যাকে সে খুন করেছিল তার সংগে তার একটা বিশেষ ধরনের দৈহিক সম্পর্ক ছিল। একটা রােমান্টিক সম্পর্ক। তারপর দুজনেই দুজনকে বদলে নিলাম। রােমান্স চলে গেল। এটা একটা অন্য কিছু যা আমাদের দুজনের বন্ধনের মাঝখানে ছিল। বলে সে হাে হাে করে হাসে: আমি এমন লােক ফুল চিবিয়ে খাই। ক্রমশ পাশ থেকে মেয়েটির মুখ পরিষ্কার ভাবে ফুটে উঠতে থাকে। মানে, ইনিই নতুন ঐ ফ্লাইওভারের ওপর মনীশের সাথে এক মােটরসাইকেলে ছিলেন। বেশ চওড়া এক রাস্তায় রাত্তির এগারােটা ছুটে চলেছে প্রচণ্ড বেগে মনীশকে তাড়াতাড়ি পৌঁছতে হবে— বাড়িতে স্ত্রী অনুপমা অপেক্ষায়। তারপরেই ঘটনাটা ঘটল। মনীশের মনে অন্য কিছু ছিল না তাে, অন্যরকম…, অদৃশ্য থেকে মনীশ উঠে দাঁড়ায়। ছন্দ মিলিয়ে বক্ততার ঢঙে পড়ে যেতে থাকে: আমি মিথ্যাকে ভালবাসি। ভুল বােঝানােতেই আমার সুখ। যা কিছু অসত্য তাই আমার পছন্দ। যা কিছু নিষিদ্ধ তা আমাকে আনন্দ দেয়। এই এখন রেবেকাকে নিয়ে…, পড়ার মাঝখানে সে ধূমপান করতে থাকে। চেয়ারে ইতস্তত চরিত্রগুলাে বসে, অনড়। সেই ফাঁকে রেবেকার সংগে খােলাখুলি কিছু কথাবার্তা হয়।

লেখক: তুমি কি ছেলেদের সংগে ঘুরে বেড়ানাে একটু বেশি পছন্দ করাে?

রেবেকা: করিই তাে …ভাল লাগে…

লেখক: ছেলে-বন্ধুদের সংগে কখনাে কোথাও বেড়াতে গিয়েটিয়ে … মানে রাত-টাত কাটানাে…

রেবেকা: তা কি খুব দোষের? তবে তা অনেকটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে কখনাে কখনাে এসব ঘটে যায় আর কি…

লেখক: গণতন্ত্র সম্বন্ধে তােমার কি ধারণা?

রেবেকা: পলিটিকস নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না।

লেখক: চারপাশে যে-সব ঘটনা ঘটছে তার খোঁজখবর রাখাে?

রেবেকা: খবরের কাগজে একবার তাে চোখ বুললাই, রাজনীতি একদম ভাল লাগে না। আমার পৃথিবীতে আরাে আরাে অনেক জিনিস আছে। সে সবেই আমার আগ্রহ।

লেখক: যা তােমার ভাল লাগে না তা নিয়ে তুমি আদৌ চিন্তিত নও ?

রেবেকা: ঠিক ধরেছেন।

লেখক: আর একটা কথা তুমি তাে জানাে মনীশ বিবাহিত … দুটি বড় বড় বাচ্চ আছে …বিবাহিত জীবনে ও সুখী …এসব জেনেও কি …

রেবেকা: হ্যাঁ জানি। ভেবেছি। কিন্তু তাতে কি?…

মস্তান ছেলেটি কথাবার্তার মাঝখানেই উঠে দাঁড়ায়, প্যানটের পকেটে হাত, হাত অদৃশ্য চেম্বারে ঠেকানাে। বলে ওঠে: একটা পাত্তি ছাড়ুন না লেখক মশাই, সাট্টা খেলব। ওল্টানাে খুরিটায় সে সটান একটা লাথি মারে। সবাই দ্যাখে কিন্তু কেউ কিছু বলে না। লেবু-মেশানাে দেশি মদের মতাে সন্ধ্যাগুলাে থেকে খটাখট খটাখট আওয়াজ বেরােয়, দুশ্চিন্তাহীন নতুন জীবন। এক-এক-জন বিশ-পঁচিশটা করে ভােট দেয়। কান-ঢাকা চুল রাখে। স্থানীয় গার্লস ইস্কুলের ছুটির মুখে বন্ধুদের সংগে মােড়ে গিয়ে দাঁড়ায়, সিটি দেয়। ক্যামেরা ধীরে ধীরে প্যান করে আসে। দেখা যায় রাস্তার মােড়ে এক বুড়াে ভিখিরি মরে পড়ে আছে। ক্রমে বেলা বাড়ে। বুড়াের শব নিয়ে পাড়ার ছেলেরা গলি দিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে। হরিধ্বনি শােনা যায়। দোতলা থেকে একজন বৌ কপালে হাত ঠেকিয়ে প্রণাম করে। লােকেরা গলা বাড়িয়ে শবযাত্রা দেখতে থাকে। কুয়াশার আলাে-আঁধারিতে ঝাপসা সেই লাল বাড়ি দেখা যায়— মর্গ। মর্গের লাগােয়া ধীরি ধীরি বয়ে যাওয়া নদী। নদীর গায়ে শান্তি-কুটির। মাটি দিয়ে নিকোনাে ছবির ফ্রেম, ভাঙা পাঁচিলের পাশে। বারান্দার কোণে একটা বুড়ি-ছাগল কালাে কুচকুচে বাচ্চাগুলােকে মাই দিচ্ছে, পায়ের তলায় একরাশ টাটকা নাদি। একঝাঁক কাচ্চা-বাচ্চা নিয়ে ধাড়ী একটা মুরগি বারান্দাময় ছুটোছুটি করছে। উঠোনের জবাগাছে ফুল ভর্তি। লাউয়ের মাচায় লাউ ঝুলছে। ডুরে শাড়ি পরে একটা ১১/১২ বছরের মেয়ে দাঁড়িয়ে অনেক দূরে, মাঠের ও প্রান্তে, রেলগাড়ির চলে যাওয়া দেখছে। চারদিক থেকে হৈ-চৈ শুরু হয়। তখন কে কি বলছে তুমুল হট্টগােলের মাঝে চাপা পড়ে। সমস্যা দেখা দেয় তখন, যখন এক টেবিলে বসিয়ে তাদের, চরিত্রগুলােকে, বােঝার চেষ্টা করি। ফুল চিবিয়ে খেতে-চাওয়া বুড়ােটা প্রথমটা কিন্তু কিন্তু করে, কিন্তু আসে, একটা চেয়ার নিয়ে বসে। রেবেকাও এসে বসে একপাশে, খানিকটা বেপরােয়া। গজ গজ করে: মনীশ বিবাহিত হলাে তাে কি হয়েছে…। মনীশও এসে যায়। সিগারেট হাতে, ধরানাে। কখনাে কখনাে অন্যমনস্ক, টানে। বেশিটা তার হাতেই পুড়ে যায়। তখন আবার নতুন করে সিগারেট ধরায়। ফিনফিনে ধুতি-পাঞ্জাবীতে থলথলে চেহারার অবাঙালি ব্যবসায়ীটিও আসে। ব্যাপারটা কি হচ্ছে সে ঠিকমতাে ধরতে পারে না। কিন্তু ছেলেটি, মস্তান সেই ছেলেটি, কিছুতেই আসতে চায় না। পাড়ার মােড়ে দাঁড়িয়ে থাকা আর জুয়ােখেলার জন্য এর ওর কাছ থেকে টাকা চাওয়াতেই ওর আনন্দ। বলে: এইসব লােকের সংগে কেউ লেডি কিলার, কেউ বুড়াে হাবড়া, কেউ হাফ-প্রস— এই মারােয়াড়িটা তাে এক নম্বর হােমো, বেটা আমাদের ওয়াগন-ভাঙা মাল-পত্তর জলের দামে কেনে, মানে আমাদের বেঁচে দিতে বাধ্য করে— এক টেবিলে বসা— থােঃ।। সবাইকে সংগে নিয়ে আলােচনা আদৌ ঘটানাে যায় না। মানুষগুলাের মধ্যে কোনও প্রচ্ছন্ন যােগসূত্র আছে কিনা— আলােচনার ভেতর দিয়ে যা বেরিয়ে আসতে পারে, তা বাস্তবে ঘটে না আদৌ। মুখ গােমড়া করে ছেলেটা মােড়ে দাঁড়িয়ে থাকে। দুরে পেটো পড়ার শব্দ হয়। ঝাঁপ বন্ধ হওয়ার শব্দ হয়। লােক দৌড়তে থাকে, নিরাপত্তার দিকে। রেবেকা উঠে দাঁড়ায়: আমাকে যেতে হবে। অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে। মনীশ তুমি কি আমায় পৌঁছে দেবে?

পাশের বাড়ির জানালা দিয়ে ৭টা ৫৫-র স্থানীয় সংবাদ ভেসে আসে। গজ-কুডি ওপরে ওঠার পর সমতল পাথরের এক বিশাল চত্বর স্পষ্ট হয়। তার পরেই নীচে নামার অন্ধকার সুড়ংগ। কোণাকুণিভাবে সিঁড়ি বেয়ে নামতে থাকলে, একদম শেষ প্রান্তে, গােপন কফিনঘর। প্রাচীন এই পৃথিবীর প্রাচীনতম এই পাড়া পেচ্ছাব পুলিশ গাড়ির টহলদারি, দিশি ও বিলিতি, গাঁজা, বেলফুল, চাট ও পেঁয়াজের গন্ধে ভােম মেরে থাকে। হঠাৎ সুড়ংগ ফুরিয়ে জীবনযাত্রা শুরু হয়। শহর-নগর খেত-খামার মানুষ গিজগিজ। ঘন সবুজ পাতি-ঘাসের ডগায় ডগায় কালাে ডাঁই পিঁপড়েরা জায়গা বদলাতে বেরিয়ে পড়ে। ভাল করে চেয়ে দেখলে বােঝা যায় ওরা সব উঁচু ডাঙা-জায়গা খুঁজতে বেরিয়েছে। খুব শিগগিরই বৃষ্টি নামবে তাহলে। কেয়া ঝােপে মুরগি-চোর শেয়ালের ডাকাডাকিতে বার বার গৃহস্থ পাড়া গরম হয়ে ওঠে। রক্তের ভেতরে কেমন এক আগ্রাসী ফাটল জমতে সুরু করে। হরিণমারি-বিলের ধারে শ্মশানে মড়ারা পুড়তে থাকে। আমবাগানে ঢুকে ধােপাদের খচ্চরটা ঘাস খেয়ে যায় নিরুত্তাপ। আলসেতে চিড়। ফাটল ক্রমশ বড় হয়, তার ঠাণ্ডা নীল হাঁ। অথচ এইটেই সবচেয়ে কঠিন। এদের সবাইকে আলােচনায় বসানাে। কথাবার্তার মধ্য দিয়ে এদের সামাজিক দিকটি পরিষ্কার করে আনা। কাজটির তীব্রতা তাতেই, যা আনুষঙ্গিক, আপাত বিরােধিতা ছাপিয়ে উঠবে। অথচ সেইটেই হয় না। নীল হাঁ ক্রমশ বড় হতে থাকে। মস্তান ছেলেটি তেমনি প্যানটের পকেটে হাত, পাড়ার মােড়ে দাঁড়িয়ে থাকে। রেবেকা চলে যেতে থাকে, সংগে সংগে নিয়ে যায় মনীশকে। থলথলে-ভুঁড়ি অ্যামবাসাডরে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে বলে ফেলে: বাবুজি, এবার তাে যেতে হােবে। রেবেকা অ্যাবরসনের কথায় হাে হাে করে হেসে ওঠে …কেন করাবাে? বিয়ে করিনি বলে ? ঝিলিক দিয়ে ওঠে তার লাল সােয়েটার। তার এই স্বীকার করতে ভয়-পাওয়াটা লেখক বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখে। তার এই স্বীকারের স্বাভাবিকতাটিও।

মস্তান ছেলেটি একসময় বলেছে, স্বীকার গিয়েছে: আমাকে কারা তৈরি করেছে জানেন …আমাদের হাতে পেটো তুলে দেওয়া হয়েছে, কাজের শেষে টাকা যাঃ ফুর্তি করে আয় … স্বাভাবিক জীবন থেকে কারা আমাদের বিচ্ছিন্ন করল? … রেল ইয়ার্ডগুলােই তাে এখন বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে। বিশ্বাস হয় না ? বুড়ােটা বলে: আমার ডান হাতখানা আসল হাত নয়। কুড়িয়ে পাওয়া। আমি ফুল চিবিয়ে খাই। স্বাভাবিক জীবন থেকে আমাকেও … । রেবেকাও অমনি ফিসফিসিয়ে ওঠে বিশ্বাস করুন আমাকে … বিশ্বাস করুন … আমি সত্যকে ভয় পাই না। তখনাে মনীশের আঙুল তার হাতে ধরা। কিছুতেই এদের একসংগে করানাে যায় না, এক টেবিলে বসানাে। সবাই কিন্তু কিন্তু করতে করতে এলেও ছােকরাটি আসে না। প্যানটের পকেটে হাত ঢুকিয়ে গোঁজ হয়ে পাড়ার মােড়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কে আসে কে যায় লক্ষ্য রাখে। নতুন মুখ দেখলে ভাল করে দেখে নেয় খোঁচড় কিনা। রেবেকাকে গটগটিয়ে যেতে দেখে মন্তব্য করে বসে: এসব হাফ-গেরস্ত মেয়েমানুষ এখানে কেন। টেবিলে একটা চেয়ার ফাঁকা থাকে, ঠাণ্ডা হয়ে-যেতে-থাকে এক কাপ চা, নির্ধারিত। … ঐ দেখা যায় সেই লাল বাড়ি— মর্গ। মরচে-ধরা কোলাপসিবল গেট। বডি-সব পাঠানাে হয়েছে ঐদিকে। রাত বাড়ে, গল্প ক্রমশ রাত-পরীদের দিকে ঘুরে যায়। ঠাণ্ডা নীল সেই হাঁ ক্রমশ প্রসারিত হতে থাকে, দেখা যায়, অ্যাকিলিশ আর কচ্ছপ, কচ্ছপ আর অ্যাকিলিশ দৌড়ে চলেছে। কচ্ছপ অ্যাকিলিশের থেকে হাজার গজ এগিয়ে, এমন অবস্থায় একদা দুজনের দৌড় শুরু হয়েছিল। অ্যাকিলিশ যে সময়ে হাজার গজ যায়, কচ্ছপ সে সময়ে যায় একশাে গজ। কতক্ষণে অ্যাকিলিশ কচ্ছপকে ধরতে পারবে? যখন অ্যাকিলিশ এই হাজার গজের ব্যবধান কমিয়ে দেবে তখন কচ্ছপ আরাে একশাে গজ এগিয়ে থাকছে। অ্যাকিলিশ আবার একশাে গজ যখন যাবে তখন কচ্ছপ দশ গজ এগিয়ে গেছে। ঐ দশ যখন অ্যাকিলিশ দৌড়ে যাবে তখনও কচ্ছপ তার থেকে এক গজ এগিয়ে। আর ঠিক এমনি করে অ্যাকিলিশ আর কচ্ছপের মধ্যে কিছু না কিছু সব সময় সর্বদা।”

আমার আভাঁগার্দ কবিতা সত্যিকার অর্থে প্রচলিত ভাষার বাধ্যবাধকতার বাস্তবতা থেকে সরে গিয়ে ভাষাকে নতুন করে উদ্ভাবনের মাধ্যমে একটি নতুন প্রতিস্ব তুলে ধরতে চাইছে। আমার আভাঁগার্দ কবিতা, পাশ্চাত্য কবিতার ইতিহাসের বিরোধিতা হিসাবে কল্পনা করা যেতে পারে । যে সব ইউরোপীয় বইপত্র নিয়ে বাঙালি আলোচকরা নাচানাচি করেন, আমি মনে করি যে গদ্য বা কবিতা যাই হোক না কেন, পশ্চিমের পুঁজিবাদী জীবনধারাকে বৈধতা দেওয়ার একটি উপায়। সাম্রাজ্যবাদের যুগের পর থেকে সাম্প্রতিককালে প্রায় পাঁচশো বছর ইউরোপের বাইরে বাকি বিশ্বের অভিজ্ঞতা ঠিক এটাই । বাস্তববাদ হল পুঁজিবাদের আদর্শগত অস্ত্র, যেখানে যে ভাষা বাস্তবসম্মত নয় তা পুঁজিবাদের শত্রু । সরকারি সাহিত্য সংস্কৃতি, সর্বত্র এবং সর্বদা, এই বাস্তবতার পুনরাবৃত্তি করে যে যাদের ক্ষমতা আছে তারা শক্তিহীনদের কাজে লাগাতে চায়। এটা বাহ্যিক শর্তগুলোকে নেয়, বলা বাহুল্য যে তা বিপ্লবী নৈতিকতা অনুসরণ করে না । বিশ্বাস করাতে চায় যে ব্যক্তি-এককের প্রতিস্ব স্থিতিশীল আর তা সব সময়ে তার মানসিক নিয়ন্ত্রণে থাকে । সরকারী সাহিত্য ও সংস্কৃতির যারা তাঁবেদার তারা একারণেই আভাঁগার্দ শিল্প-সাহিত্যের শত্রু হিসাবে দেখা দেয় । বহুক্ষেত্রে ছবি আঁকায় বা মূর্তি গড়ায় আভাঁগার্দ স্বীকৃতি পেলেও সেই একই শৈলী সাহিত্যে স্বীকৃতি দিতে কুন্ঠিত হন আলোচকরা, কেননা ছবি আঁকা আর মূর্তি গড়ার ব্যকরণের সঙ্গে তাঁরা পরিচিত নন । আমি মূল বক্তব্যতে জোর দিচ্ছি যে আভাঁগার্দ কবিতায় ভাষা (‘বাস্তবতার’ বাহ্যিক সংকেতগুলোর পরিবর্তে), যেমন ছবি আঁকায় রঙ, হলো মৌলিক কাঁচামাল। অনুপম মুখোপাধ্যায়ের ‘অশ্বমেধ’ কবিতাটা এই প্রসঙ্গে :

ফুলের অন্তর ফুঁড়ে লাফিয়ে ঢুকছে সেই আরবী ঘোড়া

ঘোড়ার পাপড়ি খাবো

ফুলের মাংসও

স্তনবৃন্ত ছিল শিশ্নের শিখর

ভগাঙ্কুর ছিল নেশা পেরিয়ে যাওয়া খাঁড়ির নোঙর

শীৎকার চিনে নিতে তবু কেন লেগে গেল সমস্ত জীবন

হোক হোক

শুরুর আগেও কিছু মৈথুন হোক

যদি সমস্ত বিশ্বের ইতিহাস এবং সমস্ত বিশ্ব ভাষা কবিতার ক্ষেত্র হয়, যদি শিল্প, স্থাপত্য, সঙ্গীত, নৃত্য, ভূতত্ত্ব, জীববিজ্ঞান, রসায়ন, অর্থনীতি এবং মনোবিজ্ঞান সবই কবিতার ক্ষেত্র তৈরি করে, তবে অবশ্যই তা পুঁজিবাদের তিরস্কার। তার কারণ পুঁজিবাদ, কেবলমাত্র একটা নির্দিষ্ট সংকীর্ণ এলাকাকে কবিতার জন্য চিহ্ণিত করে দেয় । সেই ছোট্ট গণ্ডির মধ্যে কবিতা বা অন্যান্য ধরণের লেখা বা ব্যক্তিগত চিন্তা যান্ত্রিকভাবে পরিচালনা করা যায়। আভাঁগার্দে কবিতা, এই অর্থেও সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দেয় ।

আমরা যদি বিজ্ঞাপন এবং চলচ্চিত্রের ভাষা এবং বাজারের পাল্পফিকশান আর রাজনীতির বয়ানগুলোকে কাজে লাগাই, তাহলে আমরা কি চালু শক্তিদের হাত শক্তিশালী করব ? আভাঁগার্দ সাহিত্যিক চেষ্টা করবেন ওই জাল কেটে বেরিয়ে যেতে । বেরোবার সময়ে আভাঁগার্দ জওয়ানের মতন তিনি কাটতে-কাটতে বেরোবেন । অর্থাৎ, আভাঁগার্দ কবিতা দ্ব্যর্থহীনভাবে লেখার নির্দিষ্ট শৈলী, এবং প্রচলিত চিন্তাভাবনার রাস্তা ধরে চলে না। স্বীকার করে যে ভাষা একটি উস্কানি, একটা গোপন রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে কাজ করে, যদিও প্রায়শই মনে হতে পারে যে ভাষাটা স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক নয়। আভাঁগার্দ কবিতা ব্যক্তিকে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করে, কারণ এটি রাজনীতিকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করে, এমনভাবে যা মূলধারার কবিতা পারে না বা করতে চায় না। আভাঁগার্দ কবিতা তার নিজস্ব পাঠক তৈরি করে । বস্তুত আভাঁগার্দ কবিতা নতুন পাঠকদের সন্ধান করে । পাঠকের জন্য অপরিহার্য বিষয় হল পড়ার অভ্যাস।

যদি উত্তর-আধুনিকতাকে চলছে-চলবে বলে মনে করা হয়, তবে আমি বলব যে এই সব ম্যাক্সিমালিস্ট ভাষা-উন্মাদনার কবিতাগুলি যা আমি লিখেছি—একটি তরতাজা প্রক্রিয়া, ইন্দ্রিয়ের জন্য আকর্ষক কারণ টেক্সটগুলো কোথায় থামবে, কোথায় শেষ-বিন্দু তা জানে না বলে থামিয়ে দেয়া হয়েছে। বাস্তববাদী আত্ম-শোষণের জন্য হয়, কবিতাগুলো ইতিহাস এবং রাজনীতি, বিভিন্ন বক্তৃতা (বৈজ্ঞানিক, আধ্যাত্মিক, মানবতাবাদী, টেকনোক্র্যাটিক, সাহিত্যিক, বাঙালদের বুলি) শুষে নিতে চেয়েছে যাতে নিজেকে শেষ পর্যন্ত উন্মোচিত করতে পারে, যা প্রচলিত কবিতার শীতল আবরণের বিপরীতে একটি উত্তপ্ত জিনিস।

আভাঁগার্দ মানেই আন্দোনকারী গোষ্ঠী, এরকম মনে করা অনুচিত । কোনো আন্দোলনের সাথে আভাঁগার্দকে সনাক্ত করলে সমস্যা দেখা দেয় কেননা প্রতিটি কবি বা শিল্পী আন্দোলনের অংশ হয়েও ব্যক্তি-এককের প্রতিস্বের দাবি রাখেন । শিল্পী মার্সেল দ্যুশঁ, যিনি আভাঁগার্দ শিল্পের পুরোধা নিজেকে কখনোই কোনো গোষ্ঠীর অন্তর্গত বলে মনে করতেন না । তিনি ১৯২১ তাঁর তরুণ শিষ্য স্টেথিমারকে বলেছিলেন, “দূর থেকে এই ব্যাপ[আরগুলো , এই আন্দোলনগুলো এমন এক আকর্ষণ তৈরি করে যা আদপে সকলের মধ্যে নেই । বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকের সবচেয়ে উগ্র আমেরিকান লেখক ছিলেন গারট্রুড স্টেইন ; তিনি কিন্তু সাহিত্যিক আন্দোলনগুলিকে অপছন্দ করতেন, কোনও গোষ্ঠীর অন্তর্গত ছিলেন না এবং কোনও গোষ্ঠী ইশতেহার বা কার্যকলাপে অংশ নেননি। গারট্রুড স্টেইনের আড্ডায় অনেক নেতৃস্থানীয় আভাঁগার্দ কবি আর শিল্পী, যেমন অ্যাপোলিনায়ার, পিকাবিয়া, পাউন্ড প্রায়ই যেতেন । গারট্রুডের আনুগত্য অন্য আভাঁগার্দ মহিলা লেখকদের প্রতিও ছিল না । তিনি লেসবিয়ান ছিলেন কিন্তু লেসবিয়ান মহিলা কবি বা শিল্পীদের নিয়ে আভাঁগার্দ গোষ্ঠী তৈরি করেননি। এমনকী আধুনিকতাবাদী আক্রমনাত্মক বহুগামী পুরুষ চিত্রশিল্পী পিকাসোর দলেও যোগ দেননি। স্টেইন কোনো আন্দোলনের অংশ না হয়েও আভাঁগার্দ ছিলেন । যেমন ছিলেন জেমস জয়েস। আমরা যদি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ইউরোপীয় আভাঁগার্দের দিকে ফিরে তাকাই, তখন আমরা বেকেটকে কোথায় রাখব, তা নিয়ে ভাবতে হয় । বেকেট একজন অসাধারণ আভাঁগার্দ নাট্যকার যিনি কোনো আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেননি ।

বেশ কিছু লেখক আভাঁগার্দ কার্যকলাপের প্যারামিটার ম্যাপ করার চেষ্টা করেছেন। ইতালীয় প্রবন্ধকার রেনাটো পোগিওলি ১৯৬২ সালে লেখা তাঁর ‘দ্য থিওরি অফ দ্য আভাঁগার্দ’ বইতে একটি সাংস্কৃতিক ঘটনা হিসাবে ভ্যানগার্ডিজমের বৈশিষ্ট্যগুলো বিশ্লেষণ করেছেন। ভ্যানগার্ডিজমের ঐতিহাসিক, সামাজিক, মনস্তাত্ত্বিক এবং দার্শনিক দিকগুলি জরিপ করে, পোগিওলি শিল্প, কবিতা এবং সঙ্গীতের পৃথক উদাহরণের বাইরে বেরিয়ে দেখাতে চেয়েছেন যে ভ্যানগার্ডস্টরা কিছু আদর্শ বা মূল্যবোধ শেয়ার করতে পারে, যা তাদের গ্রহণ করা অ-সঙ্গতিপূর্ণ জীবনধারার মধ্যে নিজেকে প্রকাশ করে। তিনি ভ্যানগার্ড সংস্কৃতিকে বোহেমিয়ানবাদের একটি বিচিত্র বা উপশ্রেণী হিসাবে দেখেন। জার্মান সাহিত্য সমালোচক পিটার বার্গার ১৯৭৪ সালে লেখা ‘থিওরি অফ দ্য আভাঁগার্দ’ বইতে শিল্পের সামাজিক সমালোচনামূলক কাজের প্রতি এস্টাবলিশমেন্টের প্রতিক্রিয়াকে তুলে ধরেছেন এবং বলেছেন যে পুঁজিবাদী সমাজের সাথে জড়িত হবার ফলে, আভাঁগার্দ সাহিত্য-শিল্পও প্রতিষ্ঠান হিসাবে ব্যক্তির কাজকে রাজনীতি-নিরপেক্ষ করে দেয় ।

পিটার বার্গারের মতে আভাঁগার্দ কাজগুলো আধুনিক শিল্প-সাহিত্যে ক্রিয়াশীল পরস্পরবিরোধী প্রবণতার একটি অপরিহার্য অবদান। বার্গার বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের আভাঁগার্দ আন্দোলনগুলিকে শিল্পের প্রতিষ্ঠানের উপর আক্রমণ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন, যা শিল্প-সাহিত্যের সঙ্গে জীবনকে একত্রিত করার লক্ষ্য দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। বার্গারের মতে, আভাঁগার্দ অভিপ্রায়টি মূলত “অজৈব” শিল্পকর্মের উৎপাদনের আকারে নিজেকে প্রকাশ করে। বার্গারের দৃষ্টিতে, আভাঁগার্দের ঐতিহাসিক গুরুত্ব এই সত্যে নিহিত যে তারা একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে শিল্পের আদর্শিক কাঠামোকে ভাঙচুর করতে পেরেছে । আভাঁগার্দ শিল্পকর্মের সামাজিক অবদান অনস্বীকার্য । বাজার নিয়ন্ত্রিত সমাজে একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে শিল্পের ব্যাপক কার্যকারিতা স্বায়ত্তশাসনের নীতি দ্বারা নির্ধারিত হয় । আভাঁগার্দের পরবর্তী কালখণ্ডে, বার্গার অনুমান করেন, নান্দনিক তত্ত্ব শিল্পের স্বায়ত্তশাসনকে গ্রহণ করতে অক্ষম হয়ে গেছে, তবে প্রতিটি স্বতন্ত্র শিল্পকর্ম তার স্বায়ত্তশাসনের ভিত্তিতে বাজার নিয়ন্ত্রিত সমাজে সুনির্দিষ্টভাবে যে কাজ সম্পাদন করে তা বিশ্লেষণ করা উচিত।

জুরিখ শহরে ডাডাবাদী আন্দোলনের একটি গতিপথ ছিল। আমরা ক্যাবারে ভলতেয়ারকে সর্বোত্তম আভাঁগার্দ মঞ্চ হিসাবে মনে করি, তার সমস্ত বুদ্ধি এবং বিস্ময় নিয়ে বিদ্রোহের চূড়ান্ত চেতনা ফেটে বেরিয়েছিল, তবে এর বহুভুজ প্রবাসী সদস্যদের ব্যক্তিত্ব, অভিনয় এবং ইশতেহারগুলি যতই রঙিন এবং আকর্ষণীয় হোক না কেন – হুগো বল, ত্রিস্তান জারা , রিচার্ড হুয়েলসেনবেক—এই ডাডাবাদীদের কবি হিসেবে তেমন গুরুত্বের সাথে নেওয়া হয়নি। যখন, যুদ্ধের শেষের দিকে, আন্দোলন ভেঙ্গে যায়, তখন অনেক ব্যক্তি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন, যখন হ্যান্স আর্পের মতো অন্যরা ডাডাবাদ ছেড়ে অন্যান্য আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়। এদিকে, হ্যানোভারে ডাডা শব্দটি শিল্পী, কার্ট শ্যুইটারস-এর কাজকে নির্দেশ করে, যখন কিনা বার্লিনে ডাডা, তার উগ্র বাম রাজনীতির কারণে একাডেমিক মঞ্চগুলোতে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে । হার্টফিল্ড, রাউল হাউসম্যান এবং জর্জ গ্রোজ যুদ্ধ এবং যুদ্ধোত্তর পুঁজিবাদের উপর ব্যঙ্গাত্মক ছবি এঁকেছেন যা জার্মান অভিব্যক্তিবাদকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। এই কাজগুলোর অভিপ্রায় চিল শিক্ষামূলক এবং আদর্শিক ফলে এই কাজগুলো ক্যাবারে ভলতেয়ারের হইচই এবং অ-সংবেদনশীলতাকে পিছনে ফেলে দিয়েছে।

এখন আভাঁগার্দ ধারণাটি মূলত শিল্পী, লেখক, সুরকার, ফিল্ম-পরিচালক এবং চিন্তাবিদদের বোঝায় যাদের কাজ মূলধারার সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিরোধিতা করে এবং প্রায়শই একটি সামাজিক বা রাজনৈতিক দর্শনে নির্ভর করে। অনেক লেখক, সমালোচক এবং তাত্ত্বিক আধুনিকতার গঠনমূলক বছরগুলিতে আভাঁগার্দ সংস্কৃতি সম্পর্কে দাবি করেছিলেন, যদিও আভাঁগার্দের প্রাথমিক নির্দিষ্ট বিবৃতিটি ছিল নিউ ইয়র্কের শিল্প সমালোচক ক্লেমেন্ট গ্রিনবার্গের “আভাঁগার্দ এবং কিৎশ” প্রবন্ধে। গ্রিনবার্গ যুক্তি দিয়েছিলেন যে ভ্যানগার্ড সংস্কৃতি ঐতিহাসিকভাবে “উচ্চ” বা “মূলধারার” সংস্কৃতির বিরোধিতা করেছে, এবং এটি শিল্পায়নের দ্বারা উৎপাদিত কৃত্রিমভাবে সংশ্লেষিত গণসংস্কৃতিকেও প্রত্যাখ্যান করেছে। এই মাধ্যমগুলির প্রত্যেকটিই বাজার সংস্কৃতির একটি প্রত্যক্ষ পণ্য—এগুলি সবই এখন উল্লেখযোগ্য শিল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে —এবং যেমন, তারা প্রকৃত শিল্পের আদর্শ নয়, উৎপাদনের অন্যান্য খাতের একই মুনাফা-নির্ধারিত উদ্দেশ্য দ্বারা চালিত হয়, যেমন পাল্প ফিকশান যা ট্রেনে যাবার সময়ে পড়ে পাঠক ডাস্টবিনে ফেলে দেয়৷ গ্রিনবার্গের মতে, এই ফর্মগুলি তাই কিৎশ – নকল, জাল বা যান্ত্রিক সংস্কৃতি, এক লপ্তে হাজার-হাজার কপি বাজারে ছেড়ে দিয়ে লাভ তুলে নেয়া যায়। ভ্যানগার্ড সংস্কৃতি থেকে চুরি করা আনুষ্ঠানিক ডিভাইসগুলি ব্যবহার করে এই জাতীয় জিনিসগুলি প্রায়শই তাদের চেয়ে উন্নত হওয়ার ভান করে। উদাহরণস্বরূপ, বিজ্ঞাপন শিল্প অতিবাস্তবতাকে কাজে লাগানো আরম্ভ করে, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে বিজ্ঞাপনের ফটোগ্রাফগুলি সত্যিই পরাবাস্তব কাজ।

অনুরূপ মতামত ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুলের সদস্যরাও দিয়েছিলেন, যাঁরা সমালোচনামূলক তত্ত্বের প্রবর্তক হিসেবে বিখ্যাত । থিয়োডোর আদোর্নো এবং ম্যাক্স হোরখিমার তাঁদের প্রবন্ধ “দি কালচার ইনডাস্ট্রি : এনলাইটেনমেন্ট অ্যাজ মাস ডিসেপশান” ( ১৯৪৪ ) , এবং ওয়ালটার বেনিয়ামিন তাঁর অত্যন্ত প্রভাবশালী প্রবন্ধ “দি ওয়র্ক অব আর্ট ইন দি এজ অব মেকানিকাল রিপ্রোডাকশান” ( ১৯৩৫ ) একই তর্ক দিয়েছিলেন । তাঁরা বলেছিলেন যে বাজার ভরে গেছে জাল সংস্কৃতিতে । ক্রমাগত একটি নতুন পণ্য সংস্কৃতি-শিল্প (বাণিজ্যিক প্রকাশনা সংস্থা, চলচ্চিত্র শিল্প, রেকর্ড শিল্প এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া সমন্বিত) দ্বারা তৈরি করা হচ্ছে। তাঁরা আরও উল্লেখ করেছেন যে এই পণ্য-সংস্কৃতির উত্থানের অর্থ হল এই যে উৎকর্ষ পরিমাপ করা হয় কতো টাকা বাজার থেকে তোলা গেল। একটা উপন্যাস, বিচার করা হয় কতো কপি আর সংস্করণ হলো সেই পরিসংখ্যান দিয়ে। মেধার ও শৈলীর বিচার হয় না । গল্প-উপন্যাসে গদ্য, আঙ্গিক, বিষয়বস্তু বিচার করা হয় না । স্কুল-কলেজে এখনও “লেখক কী বলিতেছেন” বা “কবি কী বলিতেছেন” প্রশ্ন করে কাজ সেরে ফেলা হয় । সঙ্গীত বিচার হয় রেটিং চার্ট দিয়ে আর গান-বাজনা গোল্ড ডিস্কের ভোঁতা বাণিজ্যিক যুক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করে। আজকাল বিবাহবাসরে গিয়ে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা নাচেন এবং মোটা টাকা রোজগার করেন । তাঁদের নাচের ভিডিও বিক্রি হয় এবং সেই বিক্রি থেকেই উৎকর্ষ পরিমাপ করা হয় । সমাজ-সংস্কৃতির অমন অধঃপতনের কারণেই স্বায়ত্তশাসিত শৈল্পিক যোগ্যতা ও পার্থক্য, আভাঁগার্দ লেখক, কবি, শিল্পী, সঙ্গীতকার, ভাস্করদের কাছে এত প্রিয় । যে ভোক্তা সংস্কৃতি এখন রাজত্ব করেছে তাকে আভাঁগার্দ শিল্পী-সাহিত্যিকরা তাই কোনো গুরুত্ব দেন না।

বৈশ্বিক পুঁজিবাদী বাজার, নিওলিবারেল অর্থনীতি এবং গাই ডেবর্ড যাকে ‘দ্য সোসাইটি অফ দ্য স্পেকট্যাকল’ (“বাজার অর্থনীতির স্বৈরাচারী রাজত্ব” বর্ণনাকারী পরিস্থিতিবাদী আন্দোলনের জন্য একটি মূল পাঠ) বলে অভিহিত করেছেন তার দ্বারা আভাঁগার্দ কাজকে বাজার নিজের আওতায় আনার অবিরাম চেষ্টা করে যায় । সমসাময়িক সমালোচকরা আজ একটি অর্থপূর্ণ আভাঁগার্দের সম্ভাবনার প্রয়োজন অনুভব করছেন। পল ম্যানের বই ‘থিওরি-ডেথ অফ দ্য আভাঁগার্দ’ দেখিয়েছে যে আজকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে আভাঁগার্দকে সম্পূর্ণরূপে জায়গা করে দেবার চেষ্টা হয় যাতে তা ক্রমশ বাজারের অংশ হয়ে যায় । যেমন আমরা দেখেছি সুভাষ ঘোষ, সুবিমল মিশ্র, বাসুদেব দাশগুপ্তকে কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের বইবাজার ছিনিয়ে নিয়েছে লিটল ম্যাগাজিনের আওতা থেকে ।

গ্রিনবার্গ, আদোরনো প্রমুখের পন্য-সংস্কৃতি সম্পর্কিত যুক্তি সত্ত্বেও, মূলধারার সংস্কৃতি সাহিত্য-শিল্পের বিভিন্ন এলাকাকে আভাঁগার্দ তকমা চাপিয়ে অপপ্রয়োগ করেছে যাতে বাজারের কোনো অংশ বাদ না যায় । প্রধানত জনপ্রিয় সঙ্গীত এবং বাণিজ্যিক সিনেমার প্রচারের জন্য আভাঁগার্দ বা নতুন শব্দটি প্রয়োগ হচ্ছে বিপণন সরঞ্জাম হিসাবে। ইউরোপ আর আমেরিকায় সফল রক মিউজিশিয়ান এবং খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতাদের “আভাঁগাদ” হিসাবে বর্ণনা করা সাধারণ হয়ে উঠেছে, এই শব্দটি এর সঠিক অর্থ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বাজার। এই গুরুত্বপূর্ণ ধারণাগত পরিবর্তনকে চিহ্ণিত করে, আধুনিকতার পাঁচটি অভিমুখের কথা বলেছেন ক্যালিনেস্কুর মতো প্রধান সমসাময়িক তাত্ত্বিক: ১) আধুনিকতাবাদ, ২) আভাঁগার্দ, ৩) অবক্ষয়, ৪) কিৎশ, এবং ৫) উত্তরাধুনিকতা ।দ্য আইডিয়া অফ দ্য পোস্টমডার্ন: এ হিস্ট্রি’ বইতে, হ্যান্স বার্টেন্স পরামর্শ দিয়েছেন যে এটি একটি সামাজিক ও আর্থিক লক্ষণ যে আমাদের সংস্কৃতি একটি নতুন উত্তর-আধুনিক যুগে প্রবেশ করেছে, যখন চিন্তাভাবনা এবং আচরণের প্রাক্তন আধুনিকতাবাদী উপায়গুলি অপ্রয়োজনীয় হয়ে গেছে । অর্থাৎ আভাঁগার্দ আবার নতুন চেহারায় দেখা দিয়েছে যাকে বলা হচ্ছে পোস্টমডার্ন ।

সাহিত্য-শিল্পের এই বাজারি পরিবর্তনকে ঝিলম ত্রিবেদী তাঁর ‘ইন্ডাস্ট্রি’ কবিতায় অসাধারণভাবে প্রকাশ করেছেন :

ইন্ডাস্ট্রি / ঝিলম ত্রিবেদী

গেরুয়া সকালের হিন্দুবাদী জামাইষষ্ঠীর সাথে

উগ্রবাদী রাণীর সনেটও লিখে রাখা উচিৎ ছিল?-

তোমার আর কী কী করা উচিৎ ছিল বল তো!

প্লাক করা ভুরুর মত নদী বয়ে যাচ্ছে

বিপদসীমা ছাড়িয়ে যাওয়া গ্রামের পাঁজর দিয়ে

অঞ্জনা নদী মরে পড়ে আছে-

ছলছল…. ছলাৎছল…….

“…….. কাট্ ইট্ ……..!!”

এই তো

লুম্পেনরা বানাচ্ছে

পিওর ক্ল্যাসিক ফিল্ম, নাটক-

“……. এবং নায়িকা এসে

প্যান্টি ও ব্রা আর আইটেম-সং খুলে রেখে

লালপেড়ে নৌকো ক’রে নন্দিনী দামিনী সেজে

আইশ্যাডো ভেসে যাচ্ছে

তোমার ‘না-হয়ে-ওঠা’ রঞ্জনের যৌন করতলে……..”

মদ্যপ দলে দলে

দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে

কখনও বা হাত, কখনও বা ক্ষুরধার দাড়ি

জিভ নয়

যোনি দিয়ে গান গাইছে রেপিস্ট ও সন্ত্রাসবাদী!!

“…….. হৃদয় আজি মোর কেমনে গেল খুলি

জগৎ আসি সেথা করিছে কোলাকুলি ………….”—

মহাজগৎ ধনে প্রাণে ইজ্জত লুটে নিচ্ছে তোমার-

সন্ন্যাসীর আশাতীত চোখ নিয়ে তবুও তাকিয়ে আছ?

“রবীন্দ্রনাথ-অটোম্যাটিক-ক্যাপিটাল”-এর অলৌকিক কর্ণধার!-

আজি এই মহারণভূমে

তোমার প্রফিট তুলছে ওয়ার্ল্ড ইন্ডাস্ট্রি-

হায়!

ভাগ্যিস জন্মেছিলে তুমি!-

কী অবাস্তব জন্ম তোমার………..

তবুও, মূলধারার সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীতে অগ্রগামীদের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন ষাটের দশকের শেষের দিকে নিউ ইয়র্কের সমালোচক হ্যারল্ড রোজেনবার্গ । রেনাটো পোগিওলির অন্তর্দৃষ্টি এবং ক্লেমেন্ট গ্রিনবার্গের দাবির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করে, রোজেনবার্গ পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, সারা বিশ্বে ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে, প্রগতিশীল সংস্কৃতি আর বামপন্হী সাহিত্য-শিল্প তার পূর্বের প্রতিপক্ষের ভূমিকা পালন করে ক্রমশ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হাত মেলাতে আরম্ভ করে। তারপর থেকে এটিকে “একদিকে আভাঁগার্দ ভূত, এবং অন্যদিকে একটি পরিবর্তিত গণ সংস্কৃতি” বলে অভিহিত করা আরম্ভ হয়েছে, । রোজেনবার্গ বলেছেন, সংস্কৃতি হয়ে উঠেছে, “একটি পেশা যার একটি দিক হল এটিকে উৎখাত করার ভান।” পশ্চিমবাংলায় আমরা দেখেছি বামপন্হীরা সরকারের দখল নেবার পর আদর্শের পথ ছেড়ে টাকাকড়ির পেছনে ছোটা আরম্ভ করেন, মানুষের পারিবারিক ব্যাপারে নাক গলাতে থাকেন, খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়েন, সৃজনশীল কাজে মূর্খেরা দাদাগিরি আরম্ভ করেন, যার দরুন বামপন্হী আঁভাঁগার্দ শিল্প-সাহিত্য লোপাট হয়ে যায় । সরকার ও প্রতিষ্ঠান থেকে নিজেদের দূরত্ব গড়ে নিয়ে কবি-লেখক-সাহিত্যিকরা একা নিজেদের কাজে লিপ্ত হন ।

আভাঁগার্দকে প্রায়শই অ্যারিয়েরগার্দের বিপরীতে সংজ্ঞায়িত করা হয়, যার আসল সামরিক অর্থ একটি রিয়ারগার্ড বাহিনীকে বোঝায়, যারা সামনের সারির জওয়ানদের রক্ষা করে। শব্দটি বিশ শতকের শিল্প সমালোচনায় “আভাঁগার্দ” এর চেয়ে কম ব্যবহৃত হয়েছিল। শিল্প ইতিহাসবিদ নাটালি অ্যাডামসন এবং টোবি নরিস যুক্তি দিয়েছেন যে অ্যারিয়েরগার্দ একটি কিৎশ শৈলী বা প্রতিক্রিয়াশীল অভিযোজনে হ্রাসযোগ্য নয়, বরং এর পরিবর্তে এমন শিল্পীদের উল্লেখ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে যারা সচেতনতা বজায় রেখে আভাঁগার্দের উত্তরাধিকারের সাথে জড়িত। কিছু অর্থে অনাক্রমিক। সমালোচক চার্লস আলটিয়েরি যুক্তি দিয়েছেন যে আভাঁগার্দ এবং অ্যারিয়েরগার্দ পরস্পর নির্ভরশীল: “যেখানে আভাঁগার্দ আছে, সেখানে তাকে অ্যারিয়ারগার্দ অনুসরণ করবেই । পশ্চিমবঙ্গে বামপন্হী কবি-লেখকদের সরকারি লেজুড় হয়ে ওঠার পর আমরা যে প্রতিষ্ঠানবিরোধী নবায়ন পেয়েছি তা অ্যারিয়ারগার্দের ।

যেমন বারীণ ঘোষালের এই কবিতা, শিরোনাম, দে ন লা

আহ্লাদ

পই পই

চাই চাঁদ জানে না-র পাখনা

গলি ফলি শিশুটি অযত্নে যুবক হবেই দেখো

দাড়ি গজালে চাইবে পাখা

ধীর পাখোয়াজ

একা তুম একা তুম তুম

একা পাহাড়ে জল নামে

পোষা শ্রু

শ্রু নামের নদী

নদী না নালা ড্রেন লাদেন

Thenলা একটা পাহাড়ি মুভির পথ

খুঁজছে কেউ

বিংশ শতাব্দীর পর সাহিত্যের যে-কোনও অর্থপূর্ণ ধারণাকে অবশ্যই আভান্ট-গার্ড আন্দোলনের সাথে লড়াই করতে হবে যা এর দুটি সময়কাল (আধুনিকতাবাদ এবং উত্তর আধুনিকতা) প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করেছিল। আভান্ট-গার্ড শুধুমাত্র তখনই আসতে পারে যখন শিল্প একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয় (যার কথা আসে, বার্গার আমাদের বলে, উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি বুর্জোয়ারা রাজনৈতিক ক্ষমতায় আসার পর)। এই প্রতিষ্ঠানটি কোডিফাইড হওয়ার পর, নন্দনতাত্ত্বিকতা শৈল্পিক মূল্যায়নের একটি প্রভাবশালী মোড হিসাবে উঠে আসে যা কার্যকারিতাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং বার্গার “জীবন-প্র্যাক্সিস” (যা “বাস্তব জীবন”-এর মতো কিছু) বলে শিল্পের প্রতিফলনকে গ্রহণ করে। তাই এখন স্বতন্ত্র শিল্পকর্মগুলি তারা যে প্রতিষ্ঠানের (আহেম, ডেরিডিয়ান ঘরানার নির্মাণ) অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা করে তা সংজ্ঞায়িত করে এবং বিশ্বকে প্রতিফলিত করা ছাড়া অন্য কোনও কাজ করে না এবং বুর্জোয়া মূল্যবোধের সমালোচনা করতে পারে তবে খুব বেশি সমালোচনামূলক হতে পারে না কারণ তখন তারা’ d একটি ফাংশন আছে এবং শিল্প হতে বন্ধ হবে. অ্যাভান্ট-গার্ডে প্রবেশ করুন। বার্গারের অ্যাভান্ট-গার্ডে শিল্পের সংজ্ঞা হল এমন শিল্প যা শিল্পকে আবার জীবন-প্রাক্সিসের মধ্যে পুনঃসংহত করতে চায়, শিল্প যা মূল্য নির্ধারণ করে এমন নিরাকার প্রতিষ্ঠানের প্রতি দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায়। আভান্ট-গার্ডে শুধুমাত্র একটি কার্ড যা খেলতে হবে, তা হল “শক”, যা মার্সেল ডুচ্যাম্প এবং তার রেডি-মেডস এবং পিকাসো এবং ডালির জন্য ভাল কাজ করে এবং এটিই মোটামুটি। এই উদাহরণগুলি দুর্দান্ত প্রভাবে শক নিযুক্ত করেছিল এবং শিল্পের প্রতিষ্ঠানের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল এবং “শিল্প কী” সম্পর্কে প্রশ্নগুলির দিকে পরিচালিত করেছিল কিন্তু শকটি আর হতবাক না হওয়ার আগে শুধুমাত্র এতদিন ধরে সেই কার্ডটি খেলতে পারে। পরবর্তী অ্যাভান্ট-গার্ড আন্দোলন (কুৎসিতভাবে বলা হয় নিও-অ্যাভান্ট-গার্ড) এই কারণে ব্যর্থ হয়েছে, যে কারণে ওয়ারহল কখনই ডুচাম্প এট আল-এর মতো কট্টরপন্থী হবে না। অ্যাভান্ট-গার্ড আন্দোলন(গুলি) এর ফলাফল হল আপেক্ষিকতাবাদ যা সমসাময়িক শিল্পকে চিহ্নিত করে যেখানে শিল্প হিসাবে একটি কাজের মূল্য অবিলম্বে আপাত বা সহজে সম্মত হয় না। তা সত্ত্বেও, এটি আভান্ট-গার্ড যা প্রভাবশালী শৈল্পিক আন্দোলনকে অনুসরণ করার ভিত্তি তৈরি করে, তাই আধুনিকতা বোঝার অর্থ হল ঝর্ণার সাথে লড়াই করা এবং উত্তর-আধুনিকতা বোঝার অর্থ হল ব্রিলো বক্সের সাথে গণনা করা (যা পরের ঘটনাটি বেশ সুন্দরভাবে ক্লান্তি এবং প্যাস্টিচে এবং শিল্পকে বিরোধী হিসাবে তুলে ধরে। -শিল্প). এই ছোট্ট বইটিতে অনেকগুলি দুর্দান্ত ধারণা রয়েছে যা কিছু মোটামুটি শ্রমসাধ্য গদ্যে ঘনভাবে প্যাক করা হয়েছে। যেমন নিমাই জানার ‘জিরাফ রঙের ফার্নিচার দোকান’ কবিতাটি ; এটি ট্রান্সলোকেশনাল হাইব্রিডিটির একটি রূপ যা বানিজ্যিক ট্রান্সন্যাশনাল হাইব্রিডিটি (বহুসাংস্কৃতিক রাজনীতির সহজ রূপ) গ্রহণ করতে অস্বীকার করে যা ইতিহাসের চলন-বলনের সাথে মানিয়ে নিতে অস্বীকার করে। :

জিরাফ রঙের ফার্নিচার দোকান

প্রতিটি সঙ্গমের পর নিজের ওপর সমকৌণিক বৃক্ষ হয়ে বসে পড়ি আমি , আমার গায়ের আঁশটে গন্ধ চলে যায় আমি তখন কোন এক বৈদিক যুগের বৃত্তাকার আগুন নিয়ে আরও কঠিন শীৎগর্ভ ভেদ করে কৃষ্ণ গহ্বরের লাল দগদগে লাভা নিয়ে আসি

আমার জিভের বদ রক্ত নিজেই খাই বলে খুব মিষ্টি লাগে

আমার অযৌন রঙের অঙ্কন প্রণালী এখনও কেউ প্রমাণ করতে পারেনি কিছু নিষিদ্ধ শিমুল গাছের কাঁটা একগুচ্ছ নারীদের শিফন শাড়ি আত্মহত্যা রং মেখে নাশপাতি বৃক্ষ হয়ে ঝুলে আছে

তরল পাথরের উপর একটি ফার্নিচার দোকানের মৃত জিরাফ , সঙ্গমে লিপ্ত হওয়ার আগেই নিশ্চিহ্ন করে ফেলেছেন তার চৈতন্য শিখা

জিরাফের মধ্যপ্রাচ্যের ডগায় একটি গোলাপ ফুলের চারা লাগিয়েছি কোন ভূমা অঞ্চলের উর্বরতা দিয়ে

চুলের ডগা দিয়ে প্রতিটি অক্ষাংশ মাপার পর দাফন শেষের পুরুষদের হাতে মাটির দাগ লেগে থাকে , সে দাগ কাঁকড়া বিছা জানে না

আত্মহত্যার পর প্রতিটি পাজামার কিছু গ্লিসারিন মেখে নেওয়া উচিত যাতে গর্ভপাত বিষয়ক টেবিলের উপর কোন বোধিবৃক্ষের দাগ না থাকে…

আভাঁগার্দ সাহিত্যিক-শিল্পীদের কার্যকলাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো “ভঙ্গিসর্বশ্ব নন্দনতত্ত্ব” এবং “ডিসকোর্স-গদ্যকৌশল” এর বিপরীত মেরুগুলির মধ্যেকার টেনশান । পিটার বার্গার যেমন তাঁর ‘থিওরি অফ দ্য আভাঁগার্দ বইতে উল্লেখ করেছেন, যে কাজগুলোর উদ্দেশ্য হল একটি অ-জৈব এগিয়ে যাবার ধারণাকে কার্যকর করা। কাজগুলো কোলাজ, মন্টেজ, প্যাশটিশ দ্বারা চিহ্নিত হতে পারে । ফলে কাজটিকে ভিন্ন মাধ্যমগুলির সমন্বয়ে একটি “নতুন” সমগ্রের সাথে ভিন্ন ভিন্ন উপাদানকে একীভূত করার প্রক্রিয়ার সাথে তুলনা করা যেতে পারে। কবিতার অনুশীলন অভ্যাসের মতো, আভাঁগার্দ টেক্সটে নিজের থেকে বিচ্ছিন্নতার চেয়েও বেশি কিছু থাকে । আমেরিকায় লা লিন হেজিনিয়ান, রন সিলিম্যান, ব্রুস অ্যান্ড্রুস, বব পেরেলম্যান এবং ওয়েস্ট কোস্ট আন্দোলনের অন্যরা যা সত্তর দশকে শুরু করেছিলেন । সেগুলো ছিল ষাটের দশকের স্বীকারোক্তিমূলক কবিতার পুনরুত্থিত রোমান্টিকতার সাহসী তিরস্কার । স্বীকারোক্তিমূলক কবিতা প্রচুর পাওয়া যায় কৃত্তিবাস পত্রিকার সম্পাদক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের রচনায় । তারাপদ রায়ের প্যারডিও আসলে স্বীকারোক্তিমূলক । অবশ্য আভাঁগার্দ সাহিত্যিক-শিল্পীরা মনে করেন সৃজনশীল মানুষেরএকটি আবিষ্কারযোগ্য প্রতিস্ব আছে, মূল বিষয়বস্তু আছে । তুষ্টি ভট্টাচার্য তাঁর প্রবন্ধে লিখেছেন, “কৃত্তিবাসের কবিরা বীটনিক কাব্যের অনুরক্ত হয়ে পড়লেন এবং তাঁদের কবিতা হয়ে উঠল তীব্র, উদাসীন, উন্মত্ত, ক্রুদ্ধ, ভয়ংকর চতুর এবং অতৃপ্ত। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়, উৎপল কুমার বসু, তারাপদ রায় প্রমুখরা এই নতুন কবিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হলেন। ১৯৬৯ সালের পর কৃত্তিবাস দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে। এরপর আবার চালু হয় মাসিক পত্রিকা হিসেবে। তখন থেকে কৃত্তিবাস আর শুধু কবিতার পত্রিকা থাকে না, গদ্যও সমান তালে ছাপা হতে থাকে। বর্তমানেও সুনীলের প্রয়াণের পরে কয়েক বছর কৃত্তিবাস পত্রিকা চলার পর একদম পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুজব ছড়িয়েছে। কিন্তু এতদিনে কৃত্তিবাস তার সেই দুরন্ত ছেলের তকমা হারিয়েছে। প্রথম পর্বের কৃত্তিবাস নিয়েও অশ্লীলতার অভিযোগ ওঠে। অতি চিৎকারের অভিযোগ ওঠে। সেই বোহেমিয়ানার ঘোর কেটে গিয়ে কৃত্তিবাস তার গৌরব হারায়।”

আজ, আভাঁগার্দ সাহিত্যের অনেক কিছুই বিশেষভাবে চরম বা বিপ্লবী মনে হতে পারে না কেননা আভাঁগার্দ শিল্পী-সাহিত্যিক নতুন কিছু আনলেই সেগুলো বাজারের কর্তারা দখল করে নেবে । কিন্তু, যে সময়ে ডাডাবাদ-পরাবাস্তববাদ-হাংরি আন্দোলন হয়েছিল, আভাঁগার্দ কাজগুলো সাহিত্য জগতে যা করা সম্ভব, উপযুক্ত এবং যা করার যোগ্য বলে মানুষ ভেবেছিল তার সীমানা বাড়িয়ে দিতে পেরেছিল। তবে পরীক্ষামূলক শৈলী, চ্যালেঞ্জিং সিনট্যাক্স এবং প্লট স্ট্রাকচার, লেখকরা নতুন কাঠামো নিয়ে পরীক্ষা করতে পারেন, যেমন একটি আকারে লাইন সাজানো, নির্দিষ্ট অক্ষর ব্যবহার করতে অস্বীকার করা, একই গল্প বা উপন্যাসের মধ্যে দুটি ভিন্ন ভাষায় লেখা এবং আরও অনেক কিছু। অ্যাভান্ট-গার্ডে সাহিত্য কী হতে পারে তার কোনও সীমা নেই । সুবিমল বসাক ১৯৬৫ সালে তাঁর ‘ছাতামাথা’ উপন্যাসে সংলাপ ব্যবহার করেছিলেন কলকাতার বুলিতে এবং ন্যারেটিভ লিখেছিলেন ঢাকার টাঙ্গাচালক কুট্টিদের বুলিতে । তখন তা বিদ্যায়তনিক আলোচকরা গ্রহণ করতে পারেননি কিন্তু এখন স্বাধীন বাংলাদেশে ব্রাত্য রাইসুর মতো সাহিত্যিকরা ওই বুলিতেই সাহিত্যিক কাজ করার দাবি তুলেছেন । সুবিমল বসাক কবিতাও লিখেছেন ওই বুলিতে, যেমন “অহন আমি আরশিতে” কবিতায়:

আমি অহন আরশিতে আমার উল্টা চ্যারাহান্ দেখতাছি

নিজেরে ঘিরা আমি এউগা চিন্তা-ভাবনা করি

আমারে ঘিরা অন্যজনা ভিন্ন চিন্তা-ভাবনা করে

আমার দিশায় একই রেকর্ডের আওয়াজ বারংবার চিখ্ খৈর পাড়তে থাকে

বেশীভাগ মানুজন একই দিয়া চলাফিরি করে

একই নীল হেজে শুইয়া কাবার করে রাত্র-দিন

পরতেক ম্যায়ালোক জনমের পোষাক লগে লইয়া বড় হয়

আপনা পুরুষের হুম্ কে অরা বেবাক্তেই শরীলের চাম বদলায়

অগো বংশধারা সচল থোয়

নিত্যি আমি একই লেহান আকাশ দেহি

কুনোকিচ্ছুতে হেরফের হয় না এক্কেরে

নিজের গতর থিক্যা বেবাক কুসংস্কারের ধুলা ঝাইব়্যা ফেলছি

তবও হায়।

নিজের পিরন থিক্যা বাইরইয়া আইতে পারিনা

আমি জানি, স্বাধীনতা বেজায় মাঙ্গা —

আর কিচ্ছু না — স্বাধীনতা মাইনষের শরীলের চাম্ —

বংশ মজুদ রাখনের গাদ

দেহি, যে রাস্তা আজ তৈয়ার হইতাছে

জানি, কুনোদিন এইরাস্তা দিয়া কারো কান্ধে ব্যাইয়া মড়া যাইবো

আদিরূপের আভাঁগার্দ এমন একটি আন্দোলন যা সত্যিকারের সমমনা শিল্পীদের একত্রিত করেছিল, যাদের গোষ্ঠীর ম্যানিফেস্টো ছিল যে তারা সংস্কৃতির প্রভাবশালী নান্দনিক মূল্যবোধকে উচ্ছেদ করবে এবং এমন শিল্পকর্ম তৈরি করবে যা প্রকৃতপক্ষে নতুন এবং বিপ্লবী হবে । সেই কাজগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে নতুন প্রযুক্তি, বিজ্ঞান এবং দর্শনের সাথে। মূল উদাহরণ হলো বিশের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত রাশিয়ান আভাঁগার্দ ছিল জীবন্ত। কবি, চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, ফটোগ্রাফার, শিল্পীর বই এবং অভিনয়ের নির্মাতা – গনচারোভা, মালেভিচ, তাটলিন, খলেবনিকভ, ক্রুশচনিখ, মায়াকভস্কি – পরবর্তীতে, রডচেঙ্কো, লিসিটস্কি, মেয়ারহোল্ড প্রমুখ মৌলিক আভাঁগার্দ নীতিগুলির সাথে একমত ছিলেন, বিশেষত তাঁদের কর্মকাণ্ডে একটি অ-প্রতিনিধিত্বমূলক শিল্প এবং কবিতার দিকে এবং ফ্যাক্টুরা (পাঠ্য বা শিল্পকর্মের উপাদান ভিত্তি), sdvig (প্রতিবেশী শব্দের দিকে অভিযোজন), এবং ostranenie (অপরিচিতিকরণ) এর সহযোগে জোর দেওয়া হয়েছিল । মালেভিচের মতো একজন শিল্পীকে একটি বৃহত্তর গোষ্ঠীর সাথে চিহ্নিত করা হয়েছিল, এবং তবুও তিনি সেই গোষ্ঠী পরিচয়কে অতিক্রম করে একজন আদি আধুনিকতাবাদী শিল্পী হিসাবে নিজের অবস্থান সৃষ্টি করেছিলেন । উল্লেখ্য যে তাঁর নিজের “আন্দোলন” পরাক্রমবাদ বা সুপপিম্যাটিজম ছিল একজন মাত্র মানুষের কর্মকাণ্ড : তিনি মালেভিচ, সর্বোপরি, একমাত্র পরাক্রমবাদী বা সুপ্রিম্যাসিস্ট । আজকের দিনে বাংলা ভাষায় কেউ যদি সুপ্রিম্যাটিজম আন্দোলনের পতাকা ওড়ান, তাঁকে গালমন্দ করা হবে ।

একটি ভিন্ন ধরনের আভাঁগার্দ আমেরিকায় গঠিত হয়েছিল ভৌগলিক স্তরে । তা হলো ব্ল্যাক মাউন্টেন আন্দোলন ; যারা ব্ল্যাক মাউন্টেন কলেজে পড়াশুনা করেছিল এবং কবিতা লিখতো আর লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ করতো তারা । অনেক নামকরা শিল্পী-সাহিত্যিক ব্ল্যাক মাউন্টেনের অংশ ছিলেন, যেমন, সেফ অ্যালবার্স থেকে চার্লস ওলসন এবং রবার্ট ডানকান, বাকমিনস্টার ফুলার থেকে জন কেজ, মার্সে কানিংহাম এবং অ্যালান ক্যাপ্রো পর্যন্ত। কয়েক বছর ধরে, ব্ল্যাক মাউন্টেন রিভিউ এই কবিদের একত্রিত করেছিল, কিন্তু তাদের দলগত প্রেরণা কখনই শক্তিশালী ছিল না।

“স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলা ভাষার সাহিত্য আন্দোলন” প্রবন্ধে তুষ্টি ভট্টাচার্য লিখেছেন :

“বাংলা সাহিত্যে স্হিতাবস্হা ভাঙার আওআজ তুলে, ইশতাহার প্রকাশের মাধ্যমে, শিল্প ও সাহিত্যের যে একমাত্র আন্দোলন হয়েছে, তার নাম হাংরি আন্দোলন, যাকে অনেকে বলেন হাংরিয়ালিস্ট, ক্ষুধিত, ক্ষুৎকাতর, ক্ষুধার্ত আন্দোলন। আর্তি বা কাতরতা শব্দগুলো মতাদশর্টিকে সঠিক তুলে ধরতে পারবে না বলে, আন্দোলনকারীরা শেষাবধি হাংরি শব্দটি গ্রহণ করেন। হাংরি আন্দোলন, এই শব্দবন্ধটি বাংলাভাষায় ঠিক সেভাবে প্রবেশ করেছে যে ভাবে মুসলিম লিগ, কম্ম্যুনিস্ট পার্টি বা কংগ্রেস দল ইত্যাদি সংকরায়িত শব্দবন্ধগুলো। উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষে ডিসকোর্সের সংকরায়ণকে স্বীকৃতি দেয়া তাঁদের কর্মকাণ্ডের অংশ ছিল। ১৯৬১ সালের নভেম্বরে পাটনা শহর থেকে একটি ইশতাহার প্রকাশের মাধ্যমে হাংরি আন্দোলনের সূত্রপাত করেছিলেন সমীর রায়চৌধুরী, মলয় রায়চৌধুরী, শক্তি চট্টোপাধ্যায় এবং হারাধন ধাড়া ওরফে দেবী রায়। কবিতা সম্পর্কিত ইশতাহারটি ছিল ইংরেজিতে, কেন না পাটনায় মলয় রায়চৌধুরী বাংলা প্রেস পাননি। আন্দোলনের প্রভাবটি ব্যাপক ও গভীর হলেও, ১৯৬৫ সালে প্রকৃত অর্থে হাংরি আন্দোলন ফুরিয়ে যায়। নকশাল আন্দোলনের পর উত্তরবঙ্গ এবং ত্রিপুরাব তরুণ কবিরা আন্দোলনটিকে আবার জীবনদান করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তাত্ত্বিক ভিত্তিটি জানা না থাকায় তাঁরা আন্দোলনটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি ।

হাংরি আন্দোলনকারীরা হাংরি শব্দটি আহরণ করেছিলেন ইংরেজি ভাষার কবি জিওফ্রে চসারের ইন দি সাওয়ার হাংরি টাইম বাক্যটি থেকে, অর্থাৎ দেশভাগোত্তর বাঙালির কালখণ্ডটিকে তাঁরা হাংরিরূপে চিহ্ণিত করতে চাইলেন। তাত্তিক ভিত্তি সংগ্রহ করা হয়েছিল সমাজতাত্ত্বিক অসওয়াল্ড স্পেংলারের দি ডিক্লাইন অব দি ওয়েস্ট গ্রন্হটির দর্শন থেকে । স্পেংলার বলেছিলেন, একটি সংস্কৃতি কেবল সরলরেখা বরাবর যায় না; তা একযোগে বিভিন্ন দিকে প্রসারিত হয়। তা হল জৈবপ্রক্রিয়া, এবং সেকারণে সমাজটির নানা অংশের কার কোনদিকে বাঁকবদল ঘটবে তা আগাম বলা যায় না। যখন কেবল নিজের সৃজনক্ষমতার ওপর নির্ভর করে, তখন সংস্কৃতিটি বিকশিত ও সমৃদ্ধ হয়। তার সৃজনক্ষমতা ফুরিয়ে গেলে, তা বাইরে থেকে যা পায় তাই আত্মসাৎ করতে থাকে, খেতে থাকে, তার ক্ষুধা তখন তৃপ্তিহীন। হাংরি আন্দোলনকারীদের মনে হয়েছিল দেশভাগের ফলে ও পরে পশ্চিমবঙ্গ এই ভয়ংকর অবসানের মুখে পড়েছে, এবং উনিশ শতকের মণীষীদের পর্যায়ের বাঙালির আবির্ভাব আর সম্ভব নয়। সেকারণে হাংরি আন্দোলনকে তঁরা বললেন কাউন্টার কালচারাল আন্দোলন, এবং নিজেদের সাহিত্যকৃতিকে কাউন্টার ডিসকোর্স। তাঁরা বললেন, “ইউরোপের শিল্প-সাহিত্য আন্দোলনগুলো সংঘটিত হয়েছিল একরৈখিক ইতিহাসের ধারণার বনেদের ওপর; কল্লোল বা কৃত্তিবাস গোষ্ঠী যে নবায়ন এনেছিলেন সে কাজগুলো ছিল কলোনিয়াল ইসথেটিক রিয়্যালিটি বা ঔপনিবেশিক বাস্তবতার চৌহদ্দির মধ্যে, কেন না সেগুলো ছিল যুক্তিগ্রন্থনা-নির্ভর*, এবং তাঁদের মনোবীজে অনুমিত ছিল যে ব্যক্তিপ্রতিস্বের চেতনা ব্যাপারটি একক, নিটোল ও সমন্বিত।” তাঁরা বললেন, “এই ভাবকল্পের প্রধান গলদ হল যে তার সন্দর্ভগুলো নিজেদেরকে পূর্বপুরুষদের তুলনায় উন্নত মনে করে, এবং স্হানিকতাকে ও অনুস্তরীয় আস্ফালনকে অবহেলা করে। ওই ভাবকল্পে যে বীজ লুকিয়ে থাকে, তা যৌথতাকে বিপন্ন আর বিমূর্ত করার মাধ্যমে যে-মননর্স্তাস তৈরি করে, তার দরুন প্রজ্ঞাকে যেহেতু কৌমনিরপেক্ষ ব্যক্তিলক্ষণ হিসাবে প্রতিষ্ঠা দেয়া হয়, সমাজের সুফল আত্মসাৎ করার প্রবণতায় ব্যক্তিদের মাঝে ইতিহাসগত স্হানাঙ্ক নির্ণয়ের হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ব্যক্তিক তত্ত্বসৌধ নির্মাণ। ঠিক এই কারণেই, ইউরেপীয় শিল্প-সাহিত্য আন্দোলনগুলো খতিয়ে দেখলে দেখা যায় যে ব্যক্তিপ্রজ্ঞার আধিপত্যের দামামায় সমাজের কান ফেটে এমন রক্তাক্ত যে সমাজের পাত্তাই নেই কোনো । কৃত্তিবাস গোষ্ঠীর দিকে তাকালে দেখা যাবে যে পুঁজিবলবান প্রাতিষ্ঠানিকতার দাপটে এবং প্রতিযোগী ব্যক্তিবাদের লালনে শতভিষা গোষ্ঠী যেন অস্তিত্বহীন। এমনকি কৃত্তিবাস গোষ্ঠিও সীমিত হয়ে গেছে মাত্র কয়েকজন মেধাসত্তবাধিকারীর নামে। পক্ষান্তরে, ঔপনিবেশিক গণতন্ত্রের আগেকার প্রাকঔপনিবেশিক ডিসকোর্সের কথা ভাবা হয়, তাহলে দেখা যায় যে পদাবলী সাহিত্য নামক ম্যাক্রো পরিসরে সংকুলান ঘটেছে বৈষ্ণব ও শাক্ত কাজ, মঙ্গলকাব্য নামক পরিসরে সংকুলান ঘটেছে মনসা, চণ্ডী, শিব, কালিকা বা ধর্মঠাকুরের মাইক্রো-পরিসর। লক্ষ্মণীয় যে প্রাকৌপনিবেশিক কালখণ্ডে সন্দর্ভ গুরুত্ত্বপূর্ণ ছিল, তার রচয়িতা নয় ।

১৯৬২-৬৩ সালে হাংরি আন্দোলনে যোগদান করেন বিনয় মজুমদার, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, উৎপলকুমার বসু, সুবিমল বসাক, ত্রিদিব মিত্র, ফালগুনী রায়, আলো মিত্র, অনিল করঞ্জাই, রবীন্দ্র গুহ, সুভাষ ঘোষ, করুণানিধান মুখোপাধ্যায়, প্রদীপ চৌধুরী, সুবো আচার্য, অরুপরতন বসু, বাসুদেব দাশগুপ্ত, সতীন্দ্র ভৌমিক, শৈলেশ্বর ঘোষ, হরনাথ ঘোষ, নীহার গুহ, আজিতকুমার ভৌমিক, অশোক চট্টোপাধ্যায়, অমৃততনয় গুপ্ত, ভানু চট্টোপাধ্যায়, শংকর সেন, যোগেশ পাণ্ডা,মনোহর দাশ, তপন দাশ, শম্ভু রক্ষিত, মিহির পাল, রবীন্দ্র গুহ, সুকুমার মিত্র, দেবাশিষ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। অনিল করঞ্জাই এবং করুণনিধান মুখোপাধ্যায় ছিলেন চিত্রকর।

Posted in Uncategorized | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

একশো পাঁচটি আভাঁগার্দ কবিতা

একশোপাঁচটি আভাঁগার্দ কবিতা

এক

দেখেছি ডুমুর ভেঙে কচি ফুল প্রেম ভেঙে যোনি ছিঁড়ে যাচ্ছে প্রত্যবর্তনহীন গোলকধাঁধায় ফুটকড়াই পূজনীয় ব্যথাগুলো দিলুম গো অশরীরী বীক্ষণ বাড়ে দিদি আপনার সাথে যুদ্ধকালীন ঘেমো তৎপরতায় আমি টাশকি খেয়ে হাতড়ে হাতড়ে হাতড়ে হাতড়ে ধর্মের মূল কিতাব লালটুকটুক রেডবইয়ের জলের তলায় এতটাই ভয়ঙ্কর, গা থেকে খুলুখুলু সিংহাসনে কিনারা পাচ্ছিলুম না আবার ইমলিতলার মিচকে গার্লফ্রেন্ড এক দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফসল আদর রে সবাই যেন কেমন মেদহীন আর মোক্ষম স্মরণীয় প্রসূতি গাভীটি জবরদস্ত  কেই বা বলতে পারে চল মন যমুনাকে তীর ছেড়ে আওয়াজের ফাঁকে ফাঁকে স্বজনের আহাজারিতে যোনির ভেতর অনন্ত মৃত্যুর ঘোরাঘুরি ; তবে, থ্যাংকস, ছিঃ ছিঃ একি বলছেন স্যার বারুদ জমে বেআব্রুভাবেই প্রকট হবার কথা

দুই

ওনার ছন্দ মিশনারি আঙ্গিকের ছিল: নিজেই দেখুন: চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা, ড্রিপ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে তাড়ি আর ইঁদুরপোড়া খাই, এমনকি কাসুন্দি ঘুঘনি মাখা ছাগলির থনের কাবাব । গমগমে আলোয় বুকে চুসকি পেতে যে যুবতীদের তেলচিটে শার্ট পরে তাজ হোটেলে মদ খাওয়ার সম্মান  আমার। সে হয়তো দেখাবার মতন সেই সম্মান আমার নেই বলেই ! ল্যাঙটোপোঁদে নাচো যেন কেউ তোমায় দেখছে না চাইলে তোমাদের পাঁচতারা বা বুফেতে মানানোর ব্যাপারগুলোও জানি। জানি সবার সব জানা থাকে না, তাই বলে একব্যান্ডের রেডিওর মতন এক ঘ্যানঘ্যানানি ভাল্লাগে না, কাঁটাচামচ দেখে ঢঙ করি না। ইচ্ছে হলে সেটাও খাই নয়তো হাতে মাখাই। এমনভাবে গাও যাতে কোকিলেরা বসন্ত ঋতুতে লজ্জা পায় ।

তিন

ওনার ছন্দ ছিল র‌্যাপ অ্যারাউণ্ড আঙ্গিকে, দেখুন রূপোলি মাছ পাথর ঝরাতে-ঝরাতে চলে গেলে সবকিছু তোমাদের জিজ্ঞেস করেই চলতে হলে মরে যাওয়া ভালো। রবি ঠাকুরের ভক্ত না হয়েও বড় বড় টিপ, লম্বা দাড়ি আর পাঞ্জাবির ঝুল দুলিয়ে দেখানো পূজো দেয় যারা, অথবা না বুঝেও রাজ্যের বই ঠেঁসে সমঝদার হতে চায়- সে আমি নয় মনে রেখো। যদি না বোঝো, বলো, যে বোঝে সে বোঝাবে। সারা দুনিয়ার সব অচ্ছুৎ মনে করা তোমাদের ভাষায় যোগ্যতা হতে পারে, আমি ভাবি শ্বাস নেবার চাইতে বড় কোন যোগ্যতা হতেই পারে না। তোমাদের এতসবের মাঝেও যে বেঁচে আছে, সেটাই তার বড় যোগ্যতা।  আমি এখন আমার ভাঙ্গা পা নিয়ে বারান্দার রেলিং এ শুয়ে এক চোখ আভিজাত্যের ভান করলেই খ্যাত হওয়া যেতো, তবে সবাই কী আর ইমলিতলা থেকে আসে?

চার

 ওনার ছিল বাটারফ্লাই আঙ্গিকের ছন্দ, দেখুন: হে উর্বশী, ক্ষনিকের মরালকায় ইন্দ্রিয়ের হর্ষে, জান গড়ে তুলি আমার ভুবন? দরোজা খোলা আছে। আমার দাদার বাবা মাঠে কাজ করতো বলতে আমার লজ্জা নেই। কেউ ট্রেন থেকে নামবে, কেউ হেঁটে আসবে বলে কি শত্রু হবে না?  আমার কাছে আজকাল সোনাগাছি যাবার বাস ভাড়াও থাকে না, কিন্তু ভ্যানের পেছনে পা ঝুলিয়ে দিব্যি চলে যাই, তারপর ঝিঁঝি ধরা পা নিয়ে নাচি আর খোঁড়াই ! এখন যদি কেউ আমাকে দেখিয়ে তার নিজস্ব দেবতাদের জোরে জোরে ডাকতে শুরু করে সেও আসলে তফাতের মানুষ। আমার ভাষায়, তাকে থ্যাঙ্কিউ থামে গেঁথে দিই। এক জড়গ্রস্ত বুড়োর দামী মদের গেলাসে চুমুক দিলে  জাতপাত পেছন থেকে অস্ট্রিক, সামনে থেকে দ্রাবিড়,  কারো কারো বুকের মাপ ভোট-চিনীয় কারো আবার মিশ্র নীরবতার 

পাঁচ

ওনার ছিল স্প্লিটিঙ ব্যাম্বু আঙ্গিকের ছন্দ, দেখুন কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো কেউ কথা রাখেনি । সার্থকতম উপহার এই শরীরকে ভালোবাসা জানাই বিভিন্ন বিভঙ্গে ও হ্রস্ববাসে ওরে চলে যাই মহাকালের ডাকে “দড়ি-কলসী” সঙ্গেই রাখবি হ্যাঁ একদম গো তুই কী একটা বলতো? কেবলই  সাবধানবাণী! সমাধানের কিছু উপায় আছে? নেই !  সত্যি এবার বুঝলাম গুড শট, তখনও জপ করেন? দারুন ! ব্যাস কেল্লাফতে । চুটিয়ে চাষ করছি সখা  রাগ ভাঙানোর গোপিনীরা কেউ নেই । জানবার মতো  কিছু নেই । ভেতরে শূন্যতা নাড়া দেয় আমারে নায়ে নিবা মাঝি কু এবং ক্যু শাসন কী উল্লাস তুমিও নিজের গা চুলকে ঘায়ের দলে ? আমি তোমার রাতের মূহুর্ত বুঝি। 

ছয়

ওনার ছন্দের আঙ্গিক ছিল সিটিঙ বুল,পড়ে দেখুন: ওগো চপল-নয়না সুন্দরী, তোলো মোর পানে তব দুই আঁখি, মম শিয়রের কাছে গুঞ্জরি ’একটু মিলিয়ে নেবেন প্লিজ চাল আর কাঁকর  একে অপরের সমান প্রমাণ হয়ে গেছে বদের হাড্ডি এইটুকুই । খুবই মুশকিল এত হাই-হ্যালো পাঠাচ্ছেন দেখতেই টনটনিয়ে উঠলো খুনি ডাইনিদের কষদাঁত গাঁড়াপোতার ফুটেজমূলক কমরেড অষ্টপ্রহর চুল্লির আলো দেখানো পার্টি নেশায় এই বাঁশ দেবার ফিকিরটা কার বাপু এক হাততোলা সাংসদ কিভাবে পুত্রবধূকে কব্জা করে রাখতে হয় আমি এখনো আশাবাদী তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে লাগুক লাগুক দেখে যাই তুগলক ভাইয়া একদম চাঁচা‌ছোলা হুকুম দিয়েছে উত্তরে বললুম অবধারণ অনুসরনে অভিব্যক্ত ব্যক্তিদের হতভম্ব লাগে কনকচাঁপার মত গায়ের রঙ ফুলটা জীবনে দেখেন নাই ক্যান হায়  

সাত

ওনার ছন্দের আঙ্গিক ছিল লঞ্চ প্যাড, পড়ে দেখুন আমের পাতাগুলো দুহাতে ছুঁয়ে দেখি মনে কি পড়ে কিছু, মনেও পড়ে না –তাড়াতাড়ি সাইড হউন। কালবৈশাখী এলো বলে! কে বলোতো তুমি?  ফোনালাপে আমরা দু’জনই অংশগ্রহণ করছি কিন্তু অন্য প্রান্তের যুবতীরা বুঝতো না। যাইহোক, ও প্রিয়ে, আমার অবন্তিকা, আমাদের  সবচাইতে পুরানো স্মৃতি হলো হাগু বিষয়ক, আমরা তখন অনেক ছোটো, নর্দমার ধারে হাগু করতে পারি না। ইমলিতলায়  আমাদের জন্য দু’জোড়া ইট বারোয়ারি কলতলায় বসিয়ে দিলো। বিশাল ইমলিতলাা কলতলা শেষ হইছে একটা ছোট্ট খালের পাশে , সেই খালপাড়ে মাছ ধরা দেখতুম কাতল বাচা ভেটকি কতো রকমের কবি-ভাইয়া স্বপ্নের চেয়ে বাস্তব এতো ভালো কেইবা জানতো ? প্রাপ্য প্রেমের চেয়ে বেশি পাবেন না জীবনে যতোই আপনি ভান করুন।

আট

 ওনার ছিল পিলো টক আঙ্গিকের ছন্দ, দেখুন পড়ে শ্রান্ত বরষা, অবেলার অবসরে,প্রাঙ্গণে মেলে দিয়েছে শ্যামল কায়া ;সোশ্যাল মানে কি? সামাজিক ! যখন লিখি একলা থাকি ঘুমের মধ্যে একা স্বপ্নেও তো তাই তাহলে আপনারা এখন সামাজিক ব্যাপারে উল্লসিত কেন আপনাদেরই লেখক বন্ধু খালি গায়ে আন্ডারওয়ার পরে পুরস্কার মঞ্চে হাততালি কুড়োয় তা কি ওই রঙিন জাঙিয়ার না পুরস্কারের ? দেখে ভেবলে যাই, আঁচ করে হারিয়ে যায়  পুরুষালি প্রতিবাদ। মহিলা দর্শকদের জল খসে না, বোঁটায় ফুল ফোটে না; কাম বাসনা তৃপ্ত হয় না। বসন্ত তো জাঙিয়ায় ঢুকে পুরস্কার নিচ্ছে । ওনারও স্বামী ছিল, তারই মুখের অগোছালো সোহাগে ঢিলেঢালা খাঁজ পুরস্কৃত  আপনাদেরই সদোর ভাই। নিজেকে গ্রহণ করুন, নিজেকে ভালোবাসুন এবং এগিয়ে যান। আপনি যদি উড়তে চান, তবে ভুঁড়ি কমান 

নয়

ওনার ছিল লেগ গ্লাইডার ছন্দের আঙ্গিক, পড়ে দেখুন : বুক পেতে শুয়ে আছি ঘাসের উপরে চক্রবালে ।আনন্দে,কবিতায়, আড্ডায় ভেসে গিয়েছিলাম সেদিন সন্ধ্যেতে নাক খুঁটতে শুরু করেছিলেন। একাগ্রতার সাথে নাক খুঁটছিলেন, মনে-মনে মাত্রাবৃত্ত প্রতিভার নিশান । আপনি সঙ্গে আছেন তো ? আপনার ওই  কালো আঁধারিদাগ । আমার নৌকো আমাকে ইউরোপ আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিয়ে এসেছিল  আমিও ছিলুম ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ তৈরি করেছে যে বিশ্বের এক ঝলক।  আমি যা দেখেছিলুম তা ছিল লালসার অভিশপ্ত দিন। হিন্দু ধর্মের সূর্য অথচ ওদের ধর্মের চাঁদ কেন ? ফ্যান্তাফ্যাচাং গান শুনুন এতো আন্তরিকতা, এতো ভালোবাসা আজকাল  বেশি দেখা যাচ্ছে যুবতীদের প্লাসটিক সার্জারিতে অসাধারণ বলব নাকি? কিন্তু উফ অনেক রকমের হয় ! কোনটা চাই বলুন তো?

দশ

ওনার ছিল যোগাসনের আঙ্গিকে দি ব্রিজ ছন্দ, স্মাইল প্লিজ, আপনারা প্রত্যেকেই একটু হাসুন, বিউটিফুল দিদি। বলি ? কত সুন্দর লিখলেন। দারুন বললে ভুল বলা হবে। এটি ফাটাফাটির পর্যায়ে চলে গেল। কার ফাটলো ? প্রেমিকার? বিভ্রান্তিকে ভালোবাসতে গিয়েছিলিস মাধবীলতা ? নিজেকে ভালোবাসতে হলে চোখ বন্ধ করে কানের খোল বের করার মতন আনন্দ আর নেই, না নেই, সত্যি নেই গো। কেবল তালা নয়, ছাতা, টর্চ, লাইটার, হ্যারিকেন, পেট্রোম্যাক্স  সারাই করতেন। থিম কী হচ্ছে গো দিদি ? তাই এত নাম ডাক-ওরে বাপরে বাপ !  সমস্ত দিক দেখছেন ! যে রাঁধে সে দাড়িও কামায় । যেসব নারীরা পার্টি করে, প্রেমিকা হিসাবে তারা ভাল কিনা জানেন ? পুরো জীবন, অভিনয়কে প্রেমিকার বুকে মিল্ক পাউডার মাখাবে

এগারো

ওনার প্রিয় ছিল দি অ্যাক্রোব্যাট আঙ্গিকের ছন্দ, পড়ে দেখুন :ময়ূর, বুঝি-বা কোনো সূর্যাস্তে জন্মেছ । বেঘোরে গান গাই আমি, চরণ চাটিতে দিও গো আমারে…দু’চারটে ভাবনা বৈ তো নয়।চাঁদমামা টিপ দেয়,এবং ইঁদুর মামা দাঁত দেয় লটারি কইরা ছাইড়া দ্যান  দু’একজন বাচাল না থাকলে আসর তেমন জমে না। তোরে সামনে পেলে তোর নুনু কাটা আছে কিনা আমি তাহা জনসম্মুখে চেক করব, শালা মালুর বাচ্ছা নাস্তিক ; মালটা থাকে কোথায়? নিজস্বতা বেঁচে  থাকুক। উঃ দারুণ, কি একটা অসাধারণ ব্যাপার…প্রবল ক্যালানি খেয়ে ছত্রভঙ্গ একশো বছরের বৃদ্ধের মতোই ধুঁকছে সে।দরং জেলার ঢেকিয়াজুলী থানার বরছলা মৌজার আলিশিঙা গাঁও । মিথ্যে করেও “হ্যাঁ ” বলো…শাক দিয়ে মাছ ঢাকো। বলেন তো শাক কোনটা মাছ কী কী ? আমি মেলায় প্রেমের গান  গেয়ে ফিরে যাচ্ছি 

 বারো

ওনার ছন্দের আঙ্গিক হলো স্প্রেড লেগস, দেখুন পড়ে : পরির পাশে পরির বোন, দাঁড়িয়ে আছে কতক্ষণ।ওই যে বুড়ো তালিবান চারটে মেয়েকে শেকলে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছে ওর পেছনে যাচ্ছে আধুনিক কবিতা । কলকাতায় হোটেলে বিউটি পার্লার নেই, আরেব্বাহ্! আনন্দের খবর। আপনার টাকে নতুন টিকি । তিনি তাঁর স্বামীর নামে আকাদেমিতে বাৎসরিক খানাপিনার ব্যবস্থা করেছেন। ছিঃ, এরা থিয়েটার করে ! এদের জন্য একদলা মধু ছাড়া কিছু নেই ! তোমাকে  ল্যাদনার মাঠে , পাঁচ বিঘায় ছেড়ে এলে আলপথ চিনে  শহর ফিরতে পারবে না কোনদিন, মার্কিন ভায়াগ্রা খেয়ে তালিবান জাগবে ; ম্যালা সুন্দর ।  উনি যে  লুটেরা পুঁজিপতি এটা বুঝলাম অক্ষতযোনি সস্তায় আলকাতরা খায় ! ওই মহিলা আর কোপ দেয়া খুনীদের মধ্যে পার্থক্য যৌনতার  সম্পর্ক রাখা । 

তেরো

ওনার ছন্দের আঙ্গিক স্পুনিঙ, পড়ে দেখুন নিজে, সবারই হয়ত সবকিছু হয় না, আমার যা হয় না তা হয় না। ওগো মাঝবয়সী মাসীমা  চাইনি আমার কোনও রকম স্মৃতি তোমার  পাশ থেকে উঁকি মারুক ! হুমমমম । মাম্মি ফাইড্ডাফাডি লাগতিসো মাঝেমাঝেই পাক্ষিক ঝোলা  থেকে কুমিরছানা বের করে দেয়া হয় , তাতে ক্ষেত্রফলের  হেরফের হয় । প্রবল ক্যালানি খেয়ে ছত্রভঙ্গ, না বসতেই জানিয়ে দিয়েছেন  একছেলে ও এক মেয়ে । দুটি কিস্তিতে দিলে ভাল হোতো,  দারুন লাগলো দিদি আর আমি শালা খুচরো   দিয়ে দিতে পারলে বাঁচি। সেটা মনের ভেতর সন্দেহের এমন রস ঢুকিয়ে দেয় যে ফিরে এলে  আগের মতো ধুতুরোর আঠা থাকে না ; শালা ছ’সাতটা বিয়ে, ইনি না কী গুরু ? এর পাছায় তিন লাথি মারলে অনেক পুণ্যি হবে যা ‘সাহিত্য’ হয়ে উঠবে , তার কোনও ধরাবাঁধা নিয়ম নেই দিদি । 

চোদ্দো

ওনার ছন্দের আঙ্গিক দেয়ালে যখন তুমি, দেখুন নিজেই পড়ে । আগে আপনাকে ভালো লাগত, রামবাবু, এখন আপনি বদলে গেছেন। কখনও কখনও আপনাকে কংগ্রেস মনে হত, কখনও সি.পি.এম, কখনও সি.পি.আই, মধ্যমেধার মাঝারিয়ানার  পঙ্ককুণ্ডে লঘু আচরণ নিজগুণে ক্ষমা করবেন,আছি, নছি, সর্বমঙ্গলা, দিব্য প্রতিভাতে !! নো পার্কিং জোনে  ইন্দ্ররাজ্য মেয়েদের পিরিয়ড হওয়ার মত নিজস্ব বিষয় এটা ? খোলাবুকে টুপটাপ চুমু পড়তে থাকে আলুলায়িতা জীবনের ! কাঁকডা়য় কামডে় দিতে পারে ! ভোলে-ও-.ভোলে !!  প্রেম করার সময়ে বীর্যে লেড, কপার-অক্সাইড আর লিথিয়াম এর মতো নিষিদ্ধ কেমিক্যাল চেক করে নেবেন ; এটা মিথ্যা সেটা কোন মিথ্যুক বলেছে, অ্যাঁ ? লাটাগুড়ি জংগলের মাঝে হঠাৎ তীব্র আওয়াজে নদী দাঁড়িয়ে গেলো। লাইনের উপর তিনটি সমুদ্র । 

পনেরো

ওনার ছন্দের আঙ্গিক রাইডিং দি হর্স, পড়ে দেখুন, দেরি করে যে এসেছে, ইচ্ছে করে ভালোবাসি তাকে। আগ্নেয়গিরিটিও চেনা আমার, ওর লাভায় নীলচে  রূপ…আপনার হয়ে গেলে জানাবেন…উফ থামো না। আমার জামাই বলেছে, এই জীবনে তুমি আছো তাই যথেষ্ট । পরকালে  তোমাকে দরকার নেই । কাফের না হলে পরকাল হবে না । আমিও তো জনি জনি ইয়েস পাপা আর অন্যান্য ভাইয়াদের দেখতে চাই। তাই মিউচুয়ালি সে একজনকে নিয়ে থাকলে আমি অন্যকে । উনি বলেছেন তথাস্তু ! জীবন সুন্দর ! যারা মনে করেন দাড়ি রাখলে সরকার গদিতে বসতে দেবে তাদের চটিতে সেলাম করুন । টেপবার ভোঁপু সাইকেলে  কেন থাকে  জানিনে। ফিল্মস্টারের গালের তৈরি রাজপথে আনন্দ চান না 

ষোলো

ওনার ছন্দের আঙ্গিক গ্রিজলি ভাল্লুকের দাঁতাল, পড়ে দেখুন, জানো এটা কার বাড়ি? শহুরে বাবুরা ছিল কাল, ভীষণ শ্যাওলা এসে আজ তার জানালা দেয়াল । গোঁসা করি না, প্রতিক্রিয়া দিই না, গাজোয়ারি করি না । আপনারা আর যাই করেন নেক্সট টাইম কেউ  উপদেশ দিতে আসলে জাস্ট খবর আছে। আমি খুব নিচুতলার অন্ত্যজ পাড়ার সাধারণ নোংরা লোকেদের  কাতারের মানুষ। ছ্যাবলামি, দুই নাম্বারি, ডাবলস্ট্যান্ডার্ডপনা, বাজারের আগুন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, ধর্মকে বাজারে ফেলে গিট্টু মেরে দেয়া ইত্যাদি নিত্য যা ঘটান  গায়ে আগুন জ্বলে। এই তরল আলকাৎরায় আমি গলা পর্যন্ত ডুবে  কুরুক্ষেত্র দেখছি ।  অত্যন্ত দরকার । তবু বলি, যারা করে  তাদের অকাদেমি জার্সিতে রঙ পালটালেও নম্বর চারশো-বিশ থাকুক।

সতেরো

ওনার ছন্দ আফরিকার একলষেঁড়ে হাতির আঙ্গিক, নিজেই দেখুন পড়ে, আজকাল মেয়েরা অনেক ফুল কেনে। মেয়েরা অনেক ফুল খোঁপায় সাজায়। কিন্তু খোঁপা থেকে ফুল তুলে নিয়ে কার হাতে দেয় তারা? কবে দেয়?একটা শব্দ আছে, যার অর্থ বৈচিত্র্য । কারোর  খোসা ছাড়ানো থাকবে ইহুদিদের মতন কারোর আস্ত খ্রিস্টানদের যেমন । তার নিগূঢ় অর্থ বালির কণা সংস্কৃতিকে ঢুকে গেলে জীবন বরবাদ । বাতাসে   শিখতে না পারলে আপনি নিজে সমাজের জন্য ফালতুমানব । এইটা মাথায় রাখবেন। অন্যের স্বাধীনতাকে গিলে খাবার ধান্দায় আপনি নিজেও কি স্বীকার করে নিচ্ছেন না, যে  খোসায় বালির কণা অপ্রয়োজনীয়। তাহলে ফ্যাসিবাদ-ফ্যাসিবাদ বলে চেল্লাবেন না। কারণ আপনিও তো ফ্যাসিস্ট !

 আঠারো

ওনার ছন্দের আঙ্গিক প্রাইডের সিংহের সারাদিন বসে, নিজেই পড়েন, সে-দেশের একটি মানুষ অনেকদিন কবরের নিচে শুয়ে আছেন, কিন্তু তিনি কখনাে ঘুমােন না, পাহারা দেন, এক পয়সার তৈল কিসে খরচ হৈল তোমার মাথায়, আমার পায় আরো দিলাম ছেলের গায় বড় মেয়ের বিয়ে হলো সাতটি রাত কেটে গেল একটা চোর ঘরে এলো বাকিটুকু নিয়ে গেল ! সরকারকে একটু বলতে ইচ্ছা করছে, ও ইয়াহ্ বেইবি ! সত্যিই রে কেনো যে মনটা ছোঁয় ! হট মামনী, পিরিয়ড কবি, কবি দাদার আবার স্বরূপে আবির্ভাব !  ধর্ষণ সাহিত্যিক, সূর্যের আলোর ছিটেয় মনোরম দেখাচ্ছে মেকাপ আর্টিস্ট, অভিযোগ করলে আমায় যথাযথ প্রমাণ চাই । ফ্রাস্টেটেড ফড়িং, ভালোবাসা নিও, ডিপ্রেসড চামচিক, কোন নেতাদের খারাপ লাগে মাফ করবেন মেরুদন্ডহীন 

উনিশ

ওনার ছন্দের আঙ্গিক স্টাড বাইসনের হুংকার, পড়ে দেখুন, মায়ের সঙ্গে ঠোঙা বানায়, বিকেলে খেলে খো খো, বনগাঁ থেকে বার্লিনে যায়,সাধ্যি থাকে রোখো।কাকিমা,সঠিক মূল্যায়ন দিন, নারীর স্পর্শকাতর অঙ্গ নিয়ে কবিতা লিখেছেন বেশ করেছেন। রাগ করব না কথা দিলাম মুসুরির ডাল পাক করো রে, কাঁচামরিচ দিয়া, গুরুর কাছে মন্ত্র নিও ফাঁকা ঘরে গিয়া ; কী ভয়ঙ্কর ! জিলাপির প্যাঁচ দেয়া ভূত চাই ! কাঠিবাজ টিকটিকি, একে ভালোবাসবো, হ্যাট বয়ে গেছে !  তাই মাঝে মাঝে রাগ হয় পৃথিবীর বুকে সবাই সিঙ্গেল্৷ পরকীয়া প্রেম হলে হবে। আগে এসেছিল একবার প্রেম পিটুইটারির গেম, দেহশিল্প। এইজন্য গান স্ফুর্তি নাচ রঙধনু রংমহল খালি কার্টেসিটা দিলেই চলতো । রাজনীতিকরা চোরচোট্টা  সেলেব হইয়া যাইতেছে হে প্রভু !  খুঁজে পাচ্ছি না ভাষার তোরঙ্গটা শশুরবাড়িতে ফেলে এসেছি এই নাকি রাস্তার রঙ? 

কুড়ি

ওনার ছন্দের আঙ্গিক শালিক পাখির ফুরফুরে, নিজেই পড়ে দেখুন, মহাসাগরের নামহীন কূলে হতভাগাদের বন্দরটিতে ভাই, জগতের যত ভাঙা জাহাজের ভিড়! রাস্তায় ! মানে কি? ‘গিভ মি মোর’ কিংবা ‘লিভ লাইফ কিং সাইজ’। মাইনের  বাড়তি টাকা পার্টির চাঁদা দিতে হয়েছে । কি পাতা ফোঁকেন দাদু ? পাট ? লাউপাতা,কচুপাতা পলতা নলচে ! শুঁটকি-পাট্টির একজন সনামধন্য মহিলা টিপতে চাইলে বাধা দেন না ।  অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলাম, কি অসাধারণ সুন্দর দিদি আপনাকে দেখতে অথচ পঞ্চাশ পেরোলেন । ট্র্যাশ পাঠালে এমন অবস্থা তো হবেই তোমরা মানো আর নাই মানো দেশটা এগোয় আর পেছোয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর স্ত্রী কুচুটেময়ীর খুব প্রিয় ছিল এই লইট্টাঝুরো, সাজবার সময় তিনি রোজ একশো লইট্টামঞ্জরী কবরীতে গুঁজতেন। কিন্তু এটাই কি যথেষ্ট ? উঁহু ! মনে তো হয়, না বড্ড কষ্ট হয় মানুষ কতটা পাল্টাতে পারে দেখলে অবাক হই না 

একুশ

ওনার ছন্দের আঙ্গিক সমুদ্রের হাঙরের, বিশ্বাস না হয় তো পড়ে দেখুন, মুক্ত করে দিনু মোর রুদ্ধ দ্বার বন্ধ বাতায়ন, এস দৃপ্ত প্রভঞ্জন । হা হা হা হা হা হা হা হা (একটি আট মাত্রার হাসি), ভালো লাগলো দি, তোমার মিষ্টি সোনপাপড়ি কবিতা । বেশ্যাপাড়ায় দেখেছি, অন্যের কাছে, মহাবিশ্বটি শালীন বলে মনে হচ্ছে কারণ শালীন লোকেদের চোখের পাতা নেই । যে বোঝার সে ঈশারাতেই বুঝে যাবে,  এ কারণেই তারা সবাই ব্লাউজ ম্যাচিং শাড়ি পরে । অনাড়ম্বর, ভীরু মোরগের ডাকে বা স্টারি আকাশের নীচে যখন ঘুরে বেড়ায় তারা কখনই ভয় পায় না। ব্যর্থদের অভিজ্ঞতার পাল্লা কভু খোলে না। কংক্রিটের ভাগাড় হাড়-বেরুনো খেজুরে আলাপের ব্রজবুলি, যার জন্ম মৈথিলি ডাইনীতে যেন ঝামর চুলো, তাছাড়া আমার বউ নেই, গা শোঁকার মতন ছয় মাত্রার তাল দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মঞ্চে যান।

বাইশ

শ্যামাসঙ্গীতে আছে ? কিন্তু কালীঠাকুর কবে এলেন  এই যে অন্নদামঙ্গলে ঈশ্বরী পাটনী অন্নপূর্ণার কাছ থেকে প্রার্থিত বর চাইলেন ? পাটনীকেও আপনি-আজ্ঞে ! সে সময় তোরাই তো পাশে ছিলি। চিকেন পকোড়া দেখতে দারুণ হয়েছে তার মধ্যে তো হৃদয় নেই। বারে বারে শুধু আঘাত করিয়া যাও তখনকার সেই গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল। বহু আগেই কোটি কোটি পুরুষ বিচি কাঁধে তুলে সোনাগাছি  রওনা  দিতো৷ মাতলা নদী মাতাল হলে সব শেষ, এর জন্য পুরো সমাজদর্শনটাই কী দায়ী নয় ? ক্লাস ক্যান্সেলের একটা পোস্ট দে, অথবা কাকের পটি আপনার মাথায় এসেও পড়তে পারে। সেটা আপনার ব্যাপার। সবাইকেই পাশে পাবি, জমজমাটে জাঁকিয়ে ক্রমে সাধারণভাবে, লোকেরা “দেহের আনন্দগুলি” কেবল এই শর্তে গন্ধ পায় যে তারা নির্বোধ। কেন ভয় লাগে ?  দিন দিন গুন্ডারাজকে তোল্লাই দিচ্ছে কলাকৈবল্যবাদীরা।

তেইশ

আমেরিকা মুজাহিদিনদের ভায়াগ্রা দিচ্ছে বলছে সংবেদনশীল হতে হবে । তবে তোর বাংলাটা চমৎকার হয়েছে। পুরো ফ্যাব !! —-তুই সিরিয়াসলি প্রেগনেন্ট ! যার বাচ্চা সে জানে ব্যাপারটা ? বাহ, বেশ ভাল খবর। জনপ্রিয় প্রসিদ্ধ কালোযাদুর কবি বেটা শয়তান এখন ধুঁকছে পাঁজর, অসাড় আঙ্গুল, জ্বরের শরীর সামলে হামলে কবিতার ঘোড়া দাবড়ালে ; বাঙালি এইভাবে শেতলাপুজো বিশ্বকর্মায়  মেতে উঠেছে তাই ভাষা অত নরম মোলায়েম তো হবার নয়। আমাদের লজ্জা পাওয়া উচিত ভালোবাসা জন্মায় লোকটাকে দেখে তবে গৃহপালিত ষাঁড়, মহিষ, গরু ও ছাগলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে । আপদ কতগুলো পোড়া কপালে। এ হেন চরম কালচারাল পাড়ায় এটি অতিকথন। গাধার গায়ের রং সত্যিই আমার পছন্দ  কিন্তু হোসপাইপ ঝুলিয়ে আগুন জ্বালাতে ছোটে, ধোপাকে মানে না। 

চব্বিশ

আর নাচের সময় হালকা মেকআপ করবেন । ছি ওসব বলতে নেই। ওঁরা দেবদূত, আংকেল বয়সী এক ভদ্রলোক জাস্ট যিশুখ্রিস্ট ওহে পবিত্র , ওহে অনিদ্র নাগলিঙ্গম কাজ চলছে ! জোর কদমে আত্মবিধ্বংসী শিউলিতে উৎসব রঙিন আরো কত্ত অজুহাত বাঁকড়োর মরদ, চিৎপুরের মাগি বলে গালি যে তৃপ্তি আছে হে শাসক কাঙ্গালিনী না কচু পরীক্ষার হলে বুকের দুধ গড়িয়ে পড়ে নারীর অতিগভীর ভালোবাসা বিহনে কলকাতা মরে যাচ্ছে তবুও ভোজবাজিতে নিজেই পকেটমানি জমিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে গেলে একটু ভেবো প্লিজ আতিপাতি করে গরররররর ঘাই মেরে পুকুরের বাশঁ বাগানের মাথার উপর দিদিমা তোমার বয়স হয়েছে তো গুরুঠাকুর রিল্যাপস করেছে দাদু শোনো দিশাহীন  অনির্দিষ্ট প্রেমে জীবনীমূলক মালটা কে ?

পঁচিশ

জানেন ? আসলে কী করলে বা কেমন হলে তোমাদের সাথে চলা যায় ? ভালোমানুষ হলে ? ভালোমানুষ কাকে বলে ? যারা স্বমেহন করে না ? যারা নামকাওয়াস্তে সৎ পথে চলে, আদর্শের বুলি কপচায়, কাঁটা চামচে ভাত খায়, কাদা দেখলে নাক শিটকোয়, সুন্দর কবিতা লিখে, সুন্দর করে খাবার পর সুন্দর করে ঘুমায়, বন্ধুকে সাক্ষী রেখে প্রেম করে, প্রেমিকা বা প্রেমিককে ধোঁকা দিয়ে সংসার করে বা রুটিন মাফিক জীবন চালায়? তবে তো বাবা দয়া বা দাক্ষিণ্য যা করেই হোক তাকে স্বর্গে থাকতে হবে। কলকাতায় এসব চলবে না, চলে না। কলকাতায় নষ্ট জীবন, ফেলে দেয়া টিস্যুর অভাব নেই। তারা আমাদের সাথে পেরে উঠবে না, জিভ ক্ষয়ে যাবে। এই যে সারাক্ষণ জ্ঞানের কথা শুনছি, বলো। কবিতার মাত্রা, ছন্দ, অক্ষরবৃত্ত মেলাও। তাঁর বাবার নাম কেশরী, মায়ের নাম অঞ্জনা  পালক বাপ হলেন পবন দেব কলকাত্তাওয়ালা। 

ছাব্বিশ

বলে দিচ্ছি। পরে যেন বলতে এসোনা, আগে কেন বলিনি। আমি তো নরক পার্টির মানুষ। বাবা মাকে অমান্য করে ছোটবেলায় গাঁজা ফুঁকেছি তাড়ি টেনেছি লুকিয়ে কিচ্ছু করিনি, নষ্ট হয়েছি তা নয়। সমুদ্রের জোয়ারে নেমে হারিয়ে গেল যুবতী। কেন? বন্ধুরা পরস্পরকে চুতিয়া বা গাণ্ডু বলি কারণ হাইপারসনিক রকেট  সায়েন্স জানা আছে । কফিহাউসে গিয়ে শিখেছি । কাঁঠালে ঘুষি মারলেই বড়কা-ভাই হওয়া যায় না, বাবরি চুল দাড়ি আর পা পর্যন্ত আলখাল্লা পরলে রবিঠাকুর হওয়া যায় না। ঋতুরক্তে মাখামাখি গান গাওয়া যায় ? চরণ ধরিতে দিয়ো গো আমারে,  বক্ষে ধরিব জড়ায়ে স্খলিত শিথিল কামনার ভার বহিয়া বহিয়া ফিরি কত আর– আমিও বুকে জড়িয়ে ধরতে চেয়েছিলুম স্যার কিন্তু ভুতের রাজা পারমিশান দেয়নিকো । 

সাতাশ

অপরেরটা তর্জনী দিয়ে টাচ করে  বেরিয়ে যাও, অজহুনের দিকে তাকিও না; অপরেরটা টাচ করলুম নিজস্ব উভয়ের জন্যই অনিরাপদ কিন্তু কেউ না কেউ তো জোর করে ঠোঁটে ঠোঁট ঢুকিয়ে চুমু খাক, একটু জেদ করুক, ঘ্যানঘ্যান করুক, দাও দাও বলে চিলের ডানায় কেঁদে ফিরুক ? এবার মরলে কাক-জোৎস্না হব সান্ধ্য ঝিঁঝিদের অবাকপনা অশৌচ-এর সময় মনের ভাবনা নিংড়ে অপ্রত্যাশিত চুম্বন চেয়েছিল প্রাক্তন বিপত্নিক । এমন মানুষ নুলোদের হাতে গোনা দুই একজন, মুখে মিষ্টি  টেনশনের চোটে পেটের ভাত চাল হয়ে যায় অন্তর্বাস বিষণ্ণ হয়ে খসে পড়ে বিজ্ঞাপনের জোরে  ছাগলের মত চেতনা একই সঙ্গে রহস্য, যৌনতা, রাজকীয় ইতিহাস, ধর্মীয় আবেগ, অন্তঅনুপ্রাস, ছন্দ উনি এককালে আকাট আঁতেল ছিলেন, অ্যাঁ ??? ক্কীঈঈঈ ” ???? আমরা আমাদের পিতৃপুরুষের উত্তরাধিকার নিয়ে জন্মাই, রেগোনা প্লিজ, নতুন বউ, শাঁখা সিঁদুর নেই, বোরখায়  ডুব দেয়ার আগেই গায়ের আরবি রঙে টাচ করে চলে যাও।

আঠাশ

অপরুপা শালগাছ, তোর শাড়ি খোলা রুপ আমিও  ভালবাসি ! থ্যাংকস দাদা আমার মেমরি কম অপরূপ শব্দঝংকারে বিমোহিত হই ঐতিহাসিক বস্তুবাদ থেকে তৈরি কবিতায় । আলহামদুলিল্লাহ। মানে কী ? আমি দেখি, পেট চেপে রাখি, কি হবে বলে সুখ ভোগ করার কায়দা করতে গিয়ে প্রেমিকের হাঁটু লাল সুরকিতে ছড়ে গেছে কেনা তাঁর পাছা সত্যিই একটি অকাদেমি পুরষ্কার  – তার গায়ে হাত দিলে  ক্লান্তি ক্ষমা করে দেন প্রভু চাঁদ সদাগর কেন  চাঁদবেনে হয়ে গেছে ?  তখন কালাপানি ছিল না বলে সম্ভবের রঙ্গমঞ্চ নামের ভালোবাসা একটি মানবিক অনুভূতি এবং আবেগকেন্দ্রিক একটি অভিজ্ঞতা সর্বলোকে হাসে শুনে তবে আমরা প্রেমিক হিসাবে দেখা করিনি, শান্ত মেজাজে আরও প্রাণীর মতো, একটি ক্লিয়ারিংয়ে  জঙ্গলের ট্র্যাক ধরে এগিয়ে গিয়েছি জুলিয়াস সিজারের হত্যা দেখতে।

উনত্রিশ

 ‘সহি নারীবাদ’-এর প্রবক্তা, মনে করেন পুরুষ মাত্রেই পিতৃতন্ত্রের ধ্বজাধারী আর মিসোজিনিস্ট সুতরাং আমরা প্রিলিমিনারি ছাড়াই প্রেম করেছি – আমি তার মধ্যে চুপ করে যাওয়ার আগে ত্রিশ সেকেন্ডও কেটে গেল না। ভোটের আগে গুরুগম্ভীর মিটিং হত, কেন ফলস ভোট দিতে হবে। জামা পাল্টে আঙুলের কালি মুছে, কখনও বোরখা পরে, জুতো পাল্টে ভোট দিতে যাওয়া। পার্টিকে জেতাতে যে কোনও অপরাধকে মেনে নেওয়া শুধু নয়, নিজেই অপরাধী হয়ে ওঠা। আর তা মানুষকে নৈতিকভাবে কতটা অধঃপতিত করে তা নিজের জীবন দিয়ে বুঝেছি।  আমার নিজের ওজনের সাথে মেলে ওঠার জন্য তার দেহের পৃথক ভঙ্গি এবং বিচারের এক মাত্রায় সংগৃহীত তার জীবন – এই মুহুর্ত পর্যন্ত তার জীবন আমার নিজের সমান, ভাল থেকে ভাল, খারাপ থেকে খারাপ, আমার নিমজ্জিত দৃষ্টি যৌনতার চক্ষু বাঁশগাছ আমি একটা বিয়েতে কাৎ 

ত্রিশ

পারছি না, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি অবস্থা। এ আবার ছটা বিয়ে!  ছোট থেকেই দেখে আসছি যতোই দর্পণ বিসর্জন হয়ে যাক না কেন। দেখতে হলে খরচা আছে ভালবাসা এবং হারিয়ে যাওয়া ভাল আমি বিশ্বাস করি মুহূর্তটি নিকটেই আছে বলি ও সেজ বউ, শুনছো, তুমি আমাকে ভালোবাসো কিন্তু বাছা তোমার নাম না জানলে আমি নিই কিভাবে ? আমার প্রেমিকের তিনজন বউ। আমার মা তার মেজ বউ। তারও নাম খুন্তিশ্বরী। আমি তার ছোট বউ, নাম বগলেশ্বরী তো জানোই বাছা। আমি নেতিধোপানি, নেতলসুন্দরী ইত্যাদি নামেও পরিচিত তা তোমাকে কী নামে ডাকবো বলতো? দানাওয়ালারা দেনেওয়ালা  আজ আশমানি মেয়ের জন্মদিন । জানি না মেয়েটির আসল নাম । জানি না সে শেখ, সৈয়দ, খান — কোন বাড়ির । হায়। 

একত্রিশ

আপনাদের সতীচ্ছদ ছেঁড়ার ঘটনা বলবেন ? বড্ডো ইচ্ছে করছে শুনতে। ব্যাপারটা কি নৈতিকতার ?  যখন যুবতীদের নৈতিকতা সম্পর্কে শেখানো হয়, তখন প্রায়ই সহানুভূতি, দয়া, সাহস বা সততার কথা বলা হয় না। বলা হয় সতীচ্ছদ বা যোনিচ্ছদ নিয়ে । আমি বাবার সঙ্গে আরব দেশগুলোতে গেছি । সতীচ্ছদের দেবতা আরব দেশগুলোতে জনপ্রিয়। আপনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করুন বা গোপন নাস্তিক হন, কোন ধর্মের তা বিবেচ্য নয় – প্রত্যেকেই সতীচ্ছদের দেবতার পূজা করে। সতীচ্ছদ – যা সবচেয়ে অপলকা অংশ, যার ওপর কুমারীত্বে।জানি আজকে তার চাউনির জন্ম হয়েছিল, ছোঁয়ার জন্ম হয়েছিল, হাসির জন্ম হয়েছিল । হ্যাঁ, কান্নারও । তাকে কখনও দেখিনি । কেমন করেই বা দেখব । সে তো আশমানি । সে তো অধরা । তবু দেখতে পাই তার পায়ে হাওয়ার নূপুর, শ্বেতপদ্মের গুঞ্জরিপঞ্চম, বেলিফুলের পাঁজেব । দেখতে পাই তার ঢেউগুলো

বত্রিশ

পর বলেই সে ভাগলবা প্রেমিকের বুক অশ্বশক্তি  যেমন ভেতরে যে আরো কী আছে !! ইস কি যে মজা এটা ঠিকঠাক একদিন সব ছেড়ে ওখানে ঢুকে যাবো..সাথেসাথে খেলায় টানছি । এরপর হা হা হা.. লাগানো নিয়ে প্যাঁচাল নইলে মরে যাবো….এত কাঁদাস কেন ভুলভুলাইয়া ?  ধ্বংসলীলারও মূল সূত্রপাত এটাই । এটাই , অন্তরের জ্বালামুখী প্রদাহে কষ্ট পাই, অপেক্ষাদের পোড়াতে হয় ; এক কথায় যদি বলি ভালোলাগল বৈষ্ণবীয় আখড়ার পুচকুর হাত্তালির সীমা শর্তানুযায়ী বউ পা ভেঙে দেয়,  জন্মগত ভাবেই কেউ কেউ নিজের চরকা নিয়ে জন্মায়। আপনি যদি কারোর জীবনে দুর্যোগ হয়ে দেখা দেন তবু তা  উপভোগ্য হবে , আপনি  দুর্যোগ হলেও আপনি আমার দেখা সবচেয়ে পুরুষ্টু যুবতী, তুলতুলে, গুলুগুলু। ভিতর থেকে নিজেকে ভাঙচুর করবেন না । আমার স্বপ্নে একদিন আসুন।

তেত্রিশ

তারপরে কেরোসিন, স্পিরিট, ডিজেল, গ্রীজ, তাও না পাইলে সয়াবিন ত্যাল সহ যা যা মনচায় ড্রামকে ড্রাম ঢালতে থাক, কার কি ! কালো জলে কুচলা তলে, গ্রামের ছেলের নিজের বিষয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানসিকতা এখনও হয় নাই। “খুলে রাখা ক্লিভেজের দিকে তাকালে” ;  কবিতায় নায়ক নয়, মলয় রায়চৌধুরী এক খলনায়ক। গাণিতিক নির্দেশনায় প্রচন্ড দানবীয় তিনি হতাশ হন নীচু, কৃষ্ণ, মাটি তার অতল গভীরে ; ময়ূর বা ময়ূরী মধ্যে সাক্ষরতা হয়। লালসার কোনও গন্তব্য নেই, তা একটা ফাঁকা চরাচরে পাক খাওয়া ।  কিছু পুরুষ 

 আর বউরা কুকুরের মাংস খায় নাগা হয়ে যায়

কেবল এই ধরনের যাত্রাকে ভালোবাসে আর গন্তব্যের কথা চিন্তা করে না। প্রেমও যাত্রা, মৃত্যু ছাড়া কোনো গন্তব্য নেই এমন  যাত্রা, আনন্দময় । 

চৌত্রিশ

দিনশেষে আমাকে একাই লড়তে হয়েছে, প্রতীক্ষায় থাকে তারা ; সকলের তো আর হ্যাংলা প্রবৃত্তি থাকে না। তাই না? অনেকেই  মিলে শিল্পের ধ্বজা না উড়িয়ে ,একান্তে একক প্রচেষ্টায় সারা জীবন শিল্প সাধনা করে শেষে মনে মনে হতাশ হয়ে উন্মাদ  হয়ে যায়, বেচারা । এর মধ্যে ফৌজদারি আদালতে পাচারকারীদের বিচারসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে। যে তোমার সহোদরা ; আর  তুমি , লঘু – ডানা অরণ্যের পরী , সবুজ বিচের মধ্যে রক্তগোষ্ঠী যাদের লাল পাতার উপর তুষারে ; গাইলাম তাই ঐ গানটাই ফের একবার, ‘হবে আর কী? সবাই আমাদের অদৃষ্ট এরপর সবাই চটি চাটতে যাবে কিংবা জুতোর যুগ ফিরে এলে ভোলে-ও-ভোলে  প্রেম এক বিপজ্জনক ব্যাপার, তা আমাদের জীবন পালটে দেবার  জন্য বহুরূপীর বেশে আসে । পলিগ্যামি?

পঁয়ত্রিশ

গেয়ে যাচ্ছো গ্রীষ্মের সঙ্গীত ৷ তারপর বললো পাতা হ্যায় আন্টি হামারা ছয়গো বিবি হ্যায়। আমি বললাম হাতের তালুতে দু-এক ফোঁটা জল নিয়ে নারী বশীকরণ কালী মন্ত্র: ওঁং হ্রিং হ্রিং রিং রিং কালী কালী স্বর্বশক্তি মহাকালী করালবদলি কুরু কুরু স্বাহা ;যে কেনো যুবতী মেয়েকে নিজের বশে আনার কার্যকারী মন্ত্র: কঅআটাআআআ? আমার পোঁদ চড়ক গাছ। আমি একটা বিয়েই সামলাতে রাত জেগে চোখের কোলে কালি।  তারপর যখন বউয়ের কাছে কানমলা খেয়ে বান্ধবীকে টা টা বাই বাই করে দিলো তখন জাস্ট না-মর্দ মনে হয়েছিল। ভাই, যখন বউকে বন্ধু শব্দের মানে বোঝাতে পারিস না তখন বন্ধুত্ব করতে যাওয়া কেন ? পরকীয়া কেনই বা করতে যাওয়া বাপু। তারপর নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে।টাইগার জিন্দা হ্যায় দেখে সালমান খানকে  ইলিশ পাঠিয়েছেন।

ছত্রিশ

দিয়েছিনু দিদি ; সখি ভালবাসায় কারে কয়?আহা! দুর্দান্ত ওয়েদার।এই বৃষ্টিতে কোলকাতা ঘুরছি বাস্তবতা স্বপ্নের জগতের চেয়ে আরও বড় মায়া। রামপ্রসাদ একাই  সকলের গাঁড় মেরে দিতে পারেন। লৌহপ্রাচীরে ছোট একটি ছিদ্র রেখে দিন।

পৃথিবী ঘুরতে মুঞ্চায় না সরি… হুম হুম… আচ্ছা… ও ! বিপণনের ও কৌতূহলের ওয়াও ! কত গর্ব হয়! সিগারেটটা ধরিয়ে ফেলুদার আছড়ে ভেঙে গেল আকাশছোঁয়া শৈশবের প্রিয় নদীতে মৃত শুকনো হলদে পাতার লাইনগুলো নিস্তব্ধে পিতৃপুরুষের নাম ভাঙিয়ে বন্ধুরা আসুন লেজের তুলনায় কুকুর শক্তিশালী । কালী, সরস্বতী, লক্ষ্মী, সন্তোষী, শেতলা মনসা হাজির সবাই, শিশু মানেই বিছানায় হিসু অফিস, মিটিঙ, কফিহাউস পাড়ায় পাড়ায় কবিরা জানে ওদেরই বংশধর মুখে পেচ্ছাপ করে দেবে ! 

সাঁয়ত্রিশ

হয় তুবড়ি জ্বালিয়ে অন্ধকারের ছররা ওড়াও শুক্রকীটের স্ফূলিঙ্গ সব ছবিতে যুবতীদের যৌনাঙ্গ ঝুলিয়ে পিকাসো ফিরে গেছে গোয়ের্নিকা আঁকবার ব্‌উ বদলে একে একে ভিজে যায় নাভি-নিতম্ব ; গজগজাতেম গজাতে তিতলীর কোলে  কেন পাগলামি, ভন্ডামি বলে বার বার দমন করা হয় ঠোঁট যেখানের জামাও  সেখানের উপুড় করায়ে দেখেছি নিচে একদম নগ্ন চাঁদ উঠেছিল পরে আর হবে না উনি আমারে এক ঝটকায় ড্যানা ধইরা টান আজকালকার পোলাপানদের নিকটবর্তী ভিজায়ে রাখো চুম্বন রসে কালোত্তীর্ণ বীর্যের শুক্রতমসা জয় মা গৌরাঙ্গিনী । বিশ্বাসঘাতক বার্ধক্য আর কেউ নাচতে চাইবে না আমার সঙ্গে বেঁচে থাকার খারাপ হুমকি. জীবনের জন্য নাচের জন্য আমাদের ভিতরে খুব বেশি সঙ্গীত অবশিষ্ট নেই আমার হাঁ-মুখ জুড়ে।

আটত্রিশ

বেরিয়েছিল শেয়ালের সারবাঁধা ল্যাজে ঢাকা অপ্সরাদের খাজুরাহোর মাংসল পাথর এই মুড়াগাছার পুতুল টাইপের ডিভাইন মানবী পুতিনবাদী-শিজিনপিঙবাদী লিবারেশান গোষ্ঠীর অধ্যাপক শামীম খান্নাস রেপ করেছিল ।আপনারা এমন ক্যান? আপত্তিকর মাইয়া বলতাছস– ব্যাকসাইডে খাউজানি, বসতে পারতেসে না মনে হয় ।  তরা হইছস কী দিয়া বাপু মাঝেমধ্যেই ডগিস্টাইল প্রিয় হয়ে ওঠে মানব কল্যাণের স্বার্থে জি-স্পটে অসাধারণ মোহনা আপনে একখান দুর্দান্ত মাল দিদি উনাদের বাইরেও ভালোবেসে সখী আপনি এত কিছু কেমনে দেহেন ? জয় হোক আহা!!! ভয় পান, ভয় পেতে শিখুন, ভয় পাওয়াটা দরকার, ভয়ে সিঁটিয়ে যান, সময় হয়েছে ভয় পাওয়ার শুয়োরের বাচ্চারা বলে মোম গলিয়ে লোম তোলা  ও বউ একটু  ত্যাল দে, ধন্যবাদ ম্যাডাম ইসস ভালোবাসা দিতে পারা ও নিতে পারা আনন্দ খ্যামা দে মা ! 

উনচল্লিশ

বোকাচোদা যদি ভুল করে থাকি ক্ষমা করবেন। পররাষ্ট্রনীতি আকুতি কে উপেক্ষা আমার রাতে শোবার আগে খাউজানি এতো হইলে মলম লাগাইলে হয় ছোঁয়াছুঁয়ি করা দায়সারা চুমু খাওয়া ওই হুলুস্থুলু নারীকে যতটুকু করা যায় কাঁচকি মাছের ঝোল আর চচ্চড়ি আমলকি-জামলকি ফলের রস মাখিয়ে উন্মোচন হয়ে যাক ওই গামছা  ডিকহেডেড ?????????? করে ক্যাম্নে ম্যান! মাদি না মদ্দা? ঘটনা কিতা রে? তোদের মা-বোনদের’কে চুদে খুন করে দেছে লাছ পাঠাচ্ছে ছেদিকে তোদের খাড়ায় না কেন রে ছূয়োরের দল। এর রহস্য অম্লান। শান্ত হয়ে দুজন দুজনের কথা কবে শুনবে উকুন ও খুসকি দূর করতে মাথায় খুল্লাম খুল্লা আগুন উইঠা যায় লণ্ড মেঁ কুছ জাদু হ্যায়, নয়ত তারাও সেটাই চাইছে আপন ইস চ্যুত মেঁ হামেশা ছূপা কর রাকখুঁ মেরি তকদির মেরে সাথ না দিয়া জালিম আপনাদের 

চল্লিশ

গোগায় অনেক কারেন্ট আরও একবার প্রণাম কেন গোওওওওওওওওওও? নিজেকে অপরাধী লাগে মাইরি আমাদের ছিটেবেড়ার ঘরে জেলখানা মাতৃগর্ভের মতো প্রেমিকের লিঙ্গ এবং প্রেমিকার বুক, কইষ্যা ধইরা  দেখেন নাই রিক্সায়, বাসে কিছুই করেন নাই? মাক্কলী ! ভালোবাসা ভালোবাসা এত পোজ জানো তুমি পুরোহিতদের বর্জন করাই ভালো…ডাস্টবিনের পচা গন্ধ ব্বেরুচ্ছে এই সমাজে মাক্কালী মাল্লক্ষ্মী জোর লাগাও হেইও, আউর থোড়া হেইও , ব্যোম ব্যোম সেক্স অবসেসড সস্তাচিন্তাবিদ দারুণ উপলব্ধি কিচিরমিচির আমি আর হাগবো না, আই কান্ট ওয়েস্ট মাই গোল্ড, মাই প্রাইড, আমার সোনা, আমার অহংকার বিকৃত যৌন লালসায় আচ্ছাদিত মানুষরে উষ্টা মাইরা বাইর করতেসেন কচ্চি মাইয়া ওর ভাল্লাগসিল, ও করসিল লেখা বিক্রি করছে আর নিজেকে বলছে শ্রমিক আরে তুই 

একচল্লিশ

রাস্তায় ঘোরালো ঘনীভূত নির্যাস নিশুতি থমথম কী  করতুম ? স্ত্রী লিপস্টিক মেখে সুইসাইড করেছে। আলস্য ছাড়া পুরুষের জীবন অর্থহীন । চাই চাই চাই, তার  আফটার এফেক্ট ভাপাইলিশে, জলদের গায়, সংকেতস্থলে দাঁত কেলিয়ে হাসে মহাকাল চড়ুইভাতি, কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে বেশ একটা মারপিট হলো ভীষণ আপ্লুত একদম দমাদম মস্ত কলন্দর রাতদুপুরে কিসের নৌবিহার ? কিন্তু কই কিন্তু ? পাতালপুরীর অজানা কাহিনী কিছুই হচ্ছেনা মাইক বাজিয়ে কেত্তনের আসর গলা টিপে ধরেছে ?? দেখছিলাম বাতাসের তাণ্ডব । অন্ধকার তাড়াতে পারে না অন্ধকারতে তাই অন্ধকার হয়ে যাওয়া ছাড়া যে উপায় তা হলো ঘনান্ধকারে লোপাট হওয়া

বেয়াল্লিশ

হন, তাঁদের প্রতিষ্ঠানের তালিকার সাথে মেলেনি বলে উদীয়মান, রাগী, তরুণ বুদ্ধিজীবী হলে মনঃক্ষুণ্ণের মাত্রা বেশী সাহস থাকে সামনে আয়..!  তোর হাবভাব এর সামনে আমার নাম রাখা হয়েছে “প্রেমিক”। ওঁ ক্রীং কাল্ল্যৈ নমঃ আরাত্রিকম্ সমর্পয়ামি। বেশ ভালোই পাইসে আপনেরে তাই না? বাপ, দাদা, তোমার বাবার আত্মার শান্তি কামনা করছি. মা কালী গতকাল রাতে ভক্তের দেয়া ক্রিমওয়ালা বিস্কুটে কবিতার অন্ত্যমিল গুলো মনে রাখার মতো পুঙপুঙাপুঙ-পুঙ টিংটিঙাটিঙ-টিঙ, তখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ি বাপরে এই অবস্থা কোলকাতায়? আদিভূতা সনাতনী, শূন্যরূপা শশীভালী, ব্রহ্মাণ্ড ছিল না যখন মুণ্ডমালা কোথায় পেলি ? ঠিক এই বিন্দুতে কালো বৌ ফ্রয়েডের যৌনতার তত্ত্বচিন্তা নি‌য়ে মারামা‌রি করে, গলা টিপে ধরে আর কিছুই নেই এলোমেলো  দীর্ঘ সময় কাটায়া 

তেতাল্লিশ

দিলাম হেহে, লিস্টে থাকলেই পারসোনালি যোগাযোগ রাখতে হবে, ভাভারে ভাভা! তাও উনি যাদের পাঠিয়ে হয়েছেন, তাদেরকেও! নিজের আত্মীয় এমনকি আমার বাপ ভাইও আছে আমার লিস্টে। এরা ছাড়া এবং খুব ক্লোজ দুই একজন বন্ধু ছাড়া পারসোনাল যোগাযোগ! হেহেহে। তবে কমেন্টের উত্তর আমি দেই। অবশ্য কমেন্ট করাও তো যে কারো পারসোনাল চয়েস, তাই না? এই জন্য এই হুমকী! প্রত্যেক মানুষের প্রার্থনা প্রত্যাশা থাকে নিজের সংসার নিয়ে।কিন্তু বিধাতার পৈশাচিক উল্লাস অহংকারী সিঁদুরের ভারে লেপটে যাওয়া সধবা কপাল আমার আমার একলা চলার পথে আমার লড়াই এ আমি একা কেউ আমার সাথে নেই ।আমি একা আমার সন্তানকে বুকে আঁকড়ে বেঁচে আছি।লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।”অনেক ‘ভদ্র’ মেয়ে নাকি আমার ছবি দেখে লজ্জিত, আচ্ছা লজ্জা 

চুয়াল্লিশ

তখন আসে না? যখন রাস্তার ধারে কোনো অবলা অসহায় নারীর বুকে পোঁদে কাপড় থাকে না অর্ধ নগ্ন বা ন্যাংটো শরীরে মাইগুলো ঝোলে তখন অশ্লীল দেখতে লাগে না তখন কী নিজের ব্লাউজ বা শাড়ি খুলে অসহায় মানুষগুলোর গায়ে পড়িয়ে দেন । পাশে থেকে তাদের লজ্জা নিবারণ করেন ? শিক্ষিত সমাজের ভণ্ডামির জন্যেই নিম্নবর্গের এই উঞ্ছবৃত্তি “আ্যাসিড ছুঁড়ে দেওয়া হাতটা দানবের সিঁদুর পরানো হাতটা দেবতার আ্যাসিড অথবা সিঁদুর যাই হোক, মেয়েটা কিন্তু জেনে গেছে হাতদুটো আসলে পুরুষের। আপনারাই তো গালাগালি দেন, খানকি মাগি,রেন্ডি মাগি চুদমারানির বেটি । অর্থাৎ খানকি কে চরম ঘেন্না করেন?রূঢ় সত্য তা নয়.. পরিস্থিতি সুযোগ পেলে খানকিকেও চুদবেন, খারীকেও। আর আমার বুকের কাপড় নেই বলে দরদে যৌনাঙ্গ খাঁড়া হয়ে উঠেছে ঠাকুরের যেমন 

পঁয়তাল্লিশ

নামভাব হত, ষোলটি শাঁসে একাকার অমৃত তফাত একটাই তোমার লিংগ দিয়ে সাদা সাদা ফেনা বেরোয় ঠাকুরের বেরতো না। অথবা বেরতো। আমরা জানতে পারিনি। যতটা জানি অমৃতসমান ঠাকুর উলংগ। নির্ভার নিঃসংকোচ দণ্ড। আর মা? নগ্নজবা মহাকালীর নির্লজ্জ যোনি।‘পাঁচ রুপাইয়া বারা আনা’ ওই ৫ টাকা ৭৫ পয়সা নিয়ে ক্যান্টিনে যেতেন  সেই সিকি আধুলির হিসাবে মজে যায় দেশ। হাহাহাহা হাহাহাহা হাহাহাহা হাহাহাহা হাহাহাহা হাহাহাহা আই লাভ স্টুপিডিটি !! তারপর বললো পাতা হ্যায় আন্টি হামারা ছয়গো বিবি হ্যায়। আমি বললাম কঅআটাআআআ? আমার চক্ষু চড়ক গাছ। আমি একটা বিয়েই সামলাতে পারছি না, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি অবস্থা। এ আবার ছটা বিয়ে! একদিন সাজগোজের গ্রুপে দেখি একজন লাইভে ব্লাউজ দেখাচ্ছে। দেখাতে দেখাতেই বাঁহাতের 

ছেচল্লিশ

তর্জনী কানে ঢুকিয়ে ঘুরিয়ে এনে নাকের কাছে রেখে শুঁকে ডানহাতে ধরে থাকা ব্লাউজটায় হাত বুলিয়ে আবার বলতে শুরু করল, দ্যাখো, এই ব্লাউজটা পেয়ে যাচ্ছ মাত্র চারশো নব্বই টাকায়, শিপিং আলাদা। তারপর আগা মাথা এবং আগা মাথার মাঝখানেও যখন কিছুই বুঝি না এই বয়সে পদস্খলন ভাল নয় ওঁ নমামি ফুসলানং দেবীং মুর্গিকরস্হ দিগম্বরীম্ । মার্জন্যা পূর্ণকুম্ভাটাকা জলং তাপশান্ত্যৈ ক্ষিপন্তীম্ ।। দিগবস্ত্রাং ঝাণ্ডানং শূর্পাং পার্টি করিন্তাম ত্রিনেত্রাম্  বিস্ফোটাদ্যুগ্রতাপ প্রশমনকরীং চলছে চলুক ও বিষ দৌড়ে নামো-রে, বিষ দৌড়ে নামো-রে, কালিয়া কালনাগের বিষ দৌড়ে নামো-রে তেরো থেকে উনিশ বছর বয়সে জীবনের প্রেমের মহাপ্রলয় ঘটে।বিশ্বাস করো দেইখা কাইন্দা ফেলসি। আমি এই ইট পাথরে আর থাকতে চাই না দি। আমাকে এইখানে ফেলে দিয়ে আসো…..

সাতচল্লিশ

 স্নানাগার নির্মিত অধিকাংশই এলিয়েন তাই ব্রহ্মচর্যের ব্রত শক্তিই শুধু নয় অশ্বিনীতারার চুল ছিঁড়ে শৈলীর গর্ভমুণ্ড ভয়ংকর উল্লসিত মাথা গোঁজে এইটা মোক্ষম কোনো চ্যালেঞ্জ নয়, আমারে নিবা মাঝি? তুমি ভালো থেকো গো ঘটাং ঘটাং করে কপালের উপরে টিকে থাকে না , নেশা অবাক হয়ে বারবার ধাক্কা খাক, চড় থাপ্পড় খাক লিঙ্গে লেখা আছে সেকথা অবিচুয়্যারি মাতিয়ে রেখেছিলেন রতিনিধিত্বমূলক মিথ্যায়, অসততায়, কুচিন্তায় শুধু ছুঁয়ে দেখবে আরে বাবা, এত সুন্দর আকেঁন যে । স্মৃতিচারণে আবির্ভূত হচ্ছেন যুগে যুগে সবাইকে খিস্তোবে এবং পূর্ণ-প্রাণ হয়ে উঠবে আহা আহা আহা ভাবতে ভাবতেই কাটিয়ে ফেলছেন ল্যাটা, গড়াই, বেলে ধরায় প্রবেশ করিবার প্রস্তাব আসিয়াছে? পাশের এই খান্ডালনি কিন্তু মায়াবতী ভদ্রমহিলার আজ জন্মদিন। ভালবাসার বিনিময়ে যথাযথ 

আটচল্লিশ

ভালবাসা দিয়ে উঠতে পারি না কিন্তু ভালবাসি ঠিক তবে বিকল্প কি?  বিকল্প ভাবার সহজ সমাধান  নেই। আসলে বিকল্প বলে কিছু হয় না । ঘুঁটের আদল-আদরা অন্যরকম হলেও তা ঘুঁটেই থাকে । আমরা রাজনীতিতে ঘুঁটের এসকর্ট হিসাবে কাজ করেছি । জীবনে যদি চরম  দূরত্ব বাড়ে যোগাযোগ নিভে যায়- এর মতো করে এই তো নিউজফিডেই দেখি নিয়ম করে। ব্যস্ততাবিহীন ব্যস্ততায় থেকে  খোঁজখবর নেওয়া হয় না তেমন করে। অথচ জানি আছে, জানে আছি৷ পাশের যুবতীকে ভালোবাসার লোভ সামলাতে পারলাম না। এই মাসেই হবে হয়তো ওয়ান নাইট স্ট্যাণ্ড  দেখলাম দিদিভাই আমাদের পুরনো অগোচরে তোলা ছবি দিয়ে দিয়েছে৷ হয়তো মিস করছিল আমায়। জিজ্ঞেস করতে গিয়েও ভুলে গেলাম, পরী ভাববার মতো মানুষ খুব অল্পই আছে 

উনপঞ্চাশ

টুকরো টুকরো দ্যুতিময় যুদ্ধবাজনায় সাজানো ইগো, আত্মগরিমা, মর্মবিদারী বিবাদ নিজের জীবনে কী হবে এই মায়াপ্রপঞ্চে বিলাই বলবে ম্যাঁও, সাপ বলবে ফোঁস, আর ছাগল বলবে ব্যাঁ নাস্তিক্যবাদী ঈশ্বর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জগাখিচুড়ি প্রাগৈতিহাসিকদের জন্য আসবি কাছে খুকি? একবার মুগ্ধ হতে চাই… শুনে এসে আমায় বোলো তোমার এই স্বভাব কি জামাই জানে ? বউএর ঠোঁটে সিগারেট তরুণদের ছ্যাঁচড়ামি, বৃদ্ধদের লুচ্চামি, মধ্যবয়সীর ইতরামি  বোধিলাভের মই টই পাচ্ছিস না এখন? সে আরো উৎসাহী হয়ে আমার বাসা কোন এলাকায় তা জানার জন্য অধীর খুবই আলাভোলা ভালো মানুষ আপনার বাসায় তো আর যাবোনা  যাক নো রিপ্লাই। সে আবার বললো, হেই গার্ল! কেমন আছো

আমি ভালো নেই করোনায় গণচিতার ভয় গো ! 

পঞ্চাশ

ম্যান,  সিরিয়াসলি ! আব ওঁম শান্তি ! .আঁতেলদের চারটেই হাত রাজনীতির লালনা নীল পশ্চাদ্দেশ তলে তলে  আর কাক বসবে না বোঝো !!! মা কম্যুনিস্ট, বাপ গেরুয়া, প্রথম ধূমকেতু বাহ উস্তাদ বাহ সাদা লোম ভালোবাসার মাত্রা শিউরে ওঠা কান্ডজ্ঞানহীন নরম চাই রোমকূপের শয়তান এর কারখানা তোমার কি ওফ  গুটিকয় মুগ্ধ জলপরি হওয়ার ট্রায়াল যদি পোলাদের ইস্কুলের খরচ দেয়কেউই সারাজীবন ভার্জিন থাকে না । একটা সময় আসে যখন ভার্জিনিটি কেড়ে নেয়া হয় । বললেন মেঘনা। তারপর যোগ করলেন, পুরুষেরাও ভার্জিনিটি হারায় ।  সে  নিজেই টের পায় না । পুরুষের ভার্জিনিটি শুধু মেয়েরা কাড়ে না, রাষ্ট্র, সমাজ, মতবাদ, স্বপ্ন, টাকাকড়ি, লোভ, কার্পণ্য, ক্রোধ, ক্ষোভ, দুঃখ, গ্লানি, প্রতিশোধের ইচ্ছা, হত্যা, আত্মহত্যা  পুরুষের ভার্জিনিটি কেড়ে নেয় । 

একান্ন

সে অর্জুনকে সবার থেকে বেশী ভালোবাসতো অথচ তার সবাইকে সমান ভালোবাসার কথা ছিল ; বুড়া সোয়ামী রাখুম কন কুথায়?  বাহ্ ! অসাধারণ গোয়েন্দা সংস্থার আঁতুড়ঘরে কুলাঙ্গারদের টাটকা বুনো উল্লাসের ঘেমো পাগলের উন্মেষ ঘটে কতো খবরদারির ঘরমুখো বিরোধ ছিঃ এই সমস্ত পচা গণতন্ত্রের ধুয়ো প্রথম দিকে প্রতিটি যৌনসম্পর্ক ছিল সংক্ষিপ্ত কালবৈশাখীর মতো এলো আর গেলো   ভুলে যাওয়া সহজ  সেই মানসিকতাকেই আমি  যৌন জীবনশৈলীর ভিত্তি হিসেবে  ভেবে দেখলাম, আমি, বারবার, যৌনতাকে  তুচ্ছভাবে বিবেচনা করব  খুব দ্রুত বর্তমা‌নে ভী‌তিপ্রদ বিজ্ঞবিচি লোকজন ঝাঁপের ঘুলঘুলি খুলে বিপ্লব ফিরে আসছে ঢ্যামনা শক্তি আসে বিরক্তি অর্জুন নয়, সারা জীবন তাঁকে রক্ষা করেছেন ভীম লোকটা পাকিস্তানি নাকি কুরুক্ষেত্রের

 বাহান্ন

উন্মাদনা মানে একই জিনিস বারবার করা, কিন্তু ভিন্ন ফলাফলের আশায় ফাঁকে ফাঁকে আমারে ছেঁকে ছেঁকে তুলে বুকে কার্তুজের বেল্ট ছিল টুংটাং বাজনা  এখন নেই মুদি দোকানের হিসেব থেকে গভীর মমত্ববোধ আর ঘেন্না উগরে দিতে স্বস্তির বিষয় এটা যে ঝোলা থেকে বেরিয়েছে ফুলকপির হুবহু মিল শব্দ গেলা যত সহজ এসেছি দণ্ডকারণ্যে এই দ্যাখেন ঝালমুড়ি বিক্রেতা চোখে চোখ রেখে রাজদ্বারে শ্মশানে চ যস্তিষ্ঠতি স বান্ধব আরে কিয়জ্জনতন্ত্রের জাঁতাকলে পড়ে যথাবিধি ছাতুর হাল  হাহা হোহো হিহি সেন্ট পার্সেন্ট দালাল তুমি রামের পোলা শ্যাম মাপহীনতা এমনভাবে রয়েছে হাসে তো ঘুরতে ঘুরতে গিয়ে ঢুকলাম এক এন্টিক শপে। সাত সমুদ্রের নারী অবগাহনের ঢেউ বিক্রি হয় আকাশের দরে।

তিপ্পান্ন

 আমার তো । ওরা বললো এটা গুডলাক সাইন। প্রথমে আমার বিশ্বাস হয়নি, কিন্তু এর পর থেকে যেখানেই যাই, এমন হরেকরকমের, বিভিন্ন কালারের মাথায় প্লাস্টারে ডাক্তার লিখেছেন ওনার নাম যেহেতু অবিরাম কর, সেহেতু উনি অবিরাম সেক্স করার অধিকারী  বইমেলায় তো অধ্যাপকের বেশ কয়েকটা বই বেরিয়েছে আর বিক্রি হয়েছে  তার মানে পুরুষেরা নিজেদের দুর্নামও বিক্রয়যোগ্য করে তুলতে পারে  উচ্চশিক্ষা দাঁড়িয়ে আছে অধ্যাপকদের লিঙ্গের ওপর   বাঙালির নবজাগরণ সংস্কৃতি যোনির মুখে পাতলা চাদরটাকে  বাধা হিসেবে দেখেছিল আর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে তা হলো একজন মেয়ের কুমারীত্ব  চিহ্নিতকারী  সভ্যতা আলোকপ্রাপ্তি তো আর নিজের পায়ে আসে না

চুয়ান্ন

হাড় নেই, চাপ দেবেন না । খুলির হাড় নেই। যৌবনের জোঁক ছাড়ালেও যাবে না হাড়ে ব্যথা না হওয়া পর্যন্ত অনুরাগী  স্টিক হাতে সাহিত্য করবে স্পার্ম ব্যাঙ্ক থেকে শুক্রাণু নিয়ে তোমাদের নিজস্ব মালভূমি খুব ক্লান্ত ? প্রবল সন্দিগ্ধ চিত্তে জেলজুলুম, এইডস, গনোরিয়া, সিফিলিস, ডেঙ্গু প্রজাপতি-ঋষি স্মৃতির উদ্দেশে বিক্রিয়া ঘটাতে মাতৃগর্ভ হইতে নিষ্ক্রান্ত ক্ষিদে পেলে চণ্ড-মন্ত্রগুপ্তি অনুসারে কানাঘুষা শুরু হয়েছে এমন অপকর্ম অশ্লীল থ্রেট কুকুরের কামশাস্ত্র আঁশবটিতে কুচিকুচি মায়ের শাড়ি খুলেই গায়ে ঘি মাখাতে হয়েছিল ছেলেটা বাঁচুক, কারণ ? আয় চুমু নিয়ে যা ; সবচেয়ে দুরূহ কর্ম দাঁত মাজা হয়নি এখনও লম্বা লম্বা বোলচাল কি ঠুনকো কেউ পাপ পাপ বাপ বলে কিছু নেই আছে শুয়োরের বাচ্চা বলেছেন মনোরঞ্জন নেতারি বিদ্রোহে বিপ্লবে ঘুমে

পঞ্চান্ন

আলোর ভেতরে দড়ি নিয়ে ঝুলে পড়তে মুঞ্চায়, প্যাঁচ খেয়ে দ্যাখো কান্ড ! সেরা দিলে ওস্তাদ তুমি জগতের কলাবিবিদের  বলছিলুম, ছাগল আর স্ট্রাগল জীবনে আসবেই, পাগল হওয়া যাবে না…উউম্মাম্মাহহহ, লাৎ খেয়েও যারা বদলায় না তারা মহান হয়, যা কিছু অসমাপ্ত কুশ্রী, হেলাচ্ছেদা স্বরূপ তাকে কেবল  কল্পনার ফাঁসি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত কোন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন না।ওমা গো এই ভর দুপুরে কি যে শুনলাম,উফফফ  আমার হাসি থামিও না কিন্তু হিসু আটকে দাও, রাস্তায় হয়ে গেলে মান সম্মান পুরো ডুকরে কেঁদে ফেলবে জাম্বুবান প্লিজ হেল্প মি কেন যে শুনলাম, হাসতে হাসতে পেট থেকে কোলা ব্যাঙ এই হীরক রাজার দেশ, অসম্ভব বলে কিচ্ছু নেই নেপোলিয়ান দাদা। কুন্ডলনী শক্তি জাগ্রত তোমার নামের প্রভু বিস্তার এমনইসব রন্ধ্রপথে ঢুকে জানান দিচ্ছে নিয়মের বসবাস –সরিয়ে দাও, এটাই মায়াপিণ্ডের যম 

ছাপ্পান্ন

নষ্টের গোড়া নতুন কাউকে ঘরে আনো। এমনই তা শক্তিশালী, কাল-কালাতীত খোলা চোখে মোহ পাপ বাপকেও ছাড়ে না ।  তার সেই কল্যাণ রূপকে আমি দেখি। এই বিরাট চামচিকে আমার অনুভবে স্পর্শ করি এই সকল মর্গের আত্মীয় সম্বন্ধের ঐক্যতত্ত্ব ক্ষুধার্ত  চোখে সুর্মা লাগাতে চায়, খাবার দেওয়ার কথা ভাবে না। নবজাগরণ নিয়ে অনেক ভিন্ন মত আছে, কারা বদলালো ? আমরা নিজেরা ? নাকি প্রযুক্তি, শশুর, জামাই, বউমা, ওদের ভাতের বদলে ছাই বেড়ে দাও, আজা সনম মধুর ভোট ব্যাংক ছিল ঝাণ্ডা-ডাণ্ডা’র পাণ্ডা ; মা-কে এখনও স্বাভাবিক করতে পারিনি । বুঝি, এই হারানোটা ভাষায় বোঝালে  বীরানে মে ভি আ জায়েগি বহার যবনবিদ্বেষী যে মেয়েটার সাথে তুমি আমি চরে বেড়াই আজ তার তালাকের ঝামেলা হলো তুমুল, কোথায় সে? দুজনেই দুজনকে কষিয়ে হসন্ত ছাড়া আনন্দ হয় ? থাপ্পড় দে থাপ্পড় দে থাপ্পড় জড়িয়ে

সাতান্ন

রাস্তায় ঘোরালো ঘনীভূত নির্যাস নিশুতি থমথম কী  করতুম ? স্ত্রী লিপস্টিক মেখে সুইসাইড করেছে। আলস্য ছাড়া পুরুষের জীবন অর্থহীন । চাই চাই চাই, তার  আফটার এফেক্ট ভাপাইলিশে, জলদের গায়, সংকেতস্থলে দাঁত কেলিয়ে হাসে মহাকাল চড়ুইভাতি, কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে বেশ একটা মারপিট হলো ভীষণ আপ্লুত একদম দমাদম মস্ত কলন্দর রাতদুপুরে কিসের নৌবিহার ? কিন্তু কই কিন্তু ? পাতালপুরীর অজানা কাহিনী কিছুই হচ্ছেনা মাইক বাজিয়ে কেত্তনের আসর গলা টিপে ধরেছে ?? দেখছিলাম বাতাসের তাণ্ডব । অন্ধকার তাড়াতে পারে না অন্ধকারতে তাই অন্ধকার হয়ে যাওয়া ছাড়া যে উপায় তা হলো ঘনান্ধকারে লোপাট হওয়া

আটান্ন

ভুজঙ্গ-তুঙ্গ-মালিকাম, ডম–ড্ডম-ড্ডম-ড্ডমন্নি– নাদ-বড্ড–মর্বয়ম,চকার চণ্ড-তাণ্ডবম তনোতু নঃ শিবঃ শিবম ইংরাজীটা খায় না মাথায় মাখে মেমের তিতকুটে বুকে প্রকাশ্যে ইঁট ছুঁড়ে মেরে ফেলা যায় আমার মনে আছে, প্রায় মাস ছয়েক আগে ওনার ল্যাংটা নাচের ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল । নিয়ন বাতিতে সাততারা হোটেল ঘরে তিন তরুণীর সাথে হাতে মদের গ্লাস নিয়ে ন্যাংটো হয়ে জেমস বণ্ডের  সাথে উদ্দাম নাচ  তখনও ওনার দুই কৃষ্ণাঙ্গী প্রেমিকা  আমার বিছানায় ছিল। যৌনাঙ্গেই  চরিত্র থেকে বলে লাফাতে থাকা চরিত্র দেখে ফেলেছিলুম ভবিষ্যৎ উজ্বল কোন শালা এই নিদান দিয়েছে উরিশ্লা কী চিজ ভাই ডম-ডমা-ডম ডম্বরুবডি

পুরাণের বউমাদেরও হার মানায় জয়হোক গুরু

উনষাট

ব্লাউজের স্মৃতিবিজড়িত ফাইল বগলে অফিসে গোটা মুখ জুড়ে ভাঙাচোরা সম্পর্কের বেদনার গন্ধ সাবাশ দাদা অরন্ধনের নিভন্ত আঁচে দুর্ভাগ্যজনক রান্না আচরণের ধারাবাহিকতা লক্ষ্মীপ্যাঁচা না পক্ষীছানা বেশি  বয়সী মেয়েমানুষ খুঁজে বেড়াই পথে-পথে বিবিজানের..হৃৎপিণ্ডে বৃক্ষবীজশাক্ত ধর্মে দীক্ষিত এই লিপস্টিক – উফ্ ! বৃথা।বাহ্ কি মজা গো চামশুটকি তিলেখচ্চর তো বারংবার স্মরণযোগ্য ধন্যবাদ ন্যাকা ন্যাকা প্রশ্নে এভাবে হয়না খুউউউব ভালো  উলঙ্গ করে দেবে ! না না ধুর, বোকা কেউ অতলে ডুব দেয়না তারপর তোমার দ্বারা হবেনা । সে কী শ্যাওলার মতন সবুজ? তার গা ভর্তি সোঁদা গন্ধ! সূর্যের আলো ঝুমঝুম করে বাজে তার মধ্যে, অবসকিওরের মতন? তাকে সি মোর করা যায় নাকি গো ডাকপিয়ন? আগুন কী নিরেট হয় ?

ষাট

তার ভাবনায়,  সবুজ সাপের মতন ঢেউ তুলে দোল খায় সুপুরির বাগান ! কোনো হারামজাদাকে ক্ষমা করব না পুড়তে পুড়তেও বাপ চোদ্দপুরুষকে গুয়ের নদীতে ফেলবো ।  ও ভাই, ও ভাই ! কার দোকানে কম দামে পার্টির মস্তান পাওয়া যাবে, বলুন তো ! ছ্যাঁচড়া এক দেশ নাম তার শনিবক্রি, মাকড় বসতি। রোহিঙ্গারা তো মগ, লুটপাট ছেড়ে উদ্বাস্তু হলে তো জেল হবেই । কী ওয়েদার !  প্রেম প্রেম লাগে। আমি তখন স্নাতক । যুবতীরা নোটস চায়। আহা ! কী দিলে মাইরি ! চাদরে বালিশে লেপে ইনসমনিয়া, প্রেমের কথা মনে হলে মহাশ্মশানের ভৌতিক কোলাহল শুনে ভয়ের ঠ্যালায় কামজ্বর এসে যায়। সাবধানের মার নেই। এরা ডিম পাড়ার মতো কবিতা পাড়ে না কেন ? এক ডিমে দুটি কুসুম। শ্রীকৃষ্ণ ডিমের অমলেট খেতেন না পোচ?

একষট্টি

রণতূর্য; প্রতিধ্বনি প্রভব দুন্দুভি, সাড়া দিল সমস্বরে; চমৎকৃত সুষিরে সুষিরে, আমরা  জঘন্য পরিণতির দিকে রাজনীতিকদের ফলো করছি । তা আমাদের কতখানি পাওয়া ! কি মিষ্টি লাগছে, খুব সুন্দর ছবি, দিদি ! শ্রাদ্ধের ফিরিস্তি নিজের হাতে লিখে গেছেন ঔপন্যাসিক ।‘যোনিকেশরে’ একদিন  মন্থিত হতে পারেন ।   কমরেড বন্ধের দিন সঙ্গম করবেন না মাইনে কাটা যাবে । অযোনিসম্ভূত সারকার বেশ  ইন্টারেস্টিং তো। অধীর অপেক্ষার আগ্রহ থাকলো সুরকার ও গায়ক বাংলা মদ, বিড়ি, বোহেমিয়ান । একেই বলে ধামগুজারি ফেগ্রান্সি। লকড়বাগঘা দেখো, প্রেম পাবে, ভামচওলা যাকে বলে পাক্কা পাটনাইয়া বাঃ! খুব ভালো লাগল। কাজ শুরু হয়নি । ধাক্কাপাড় ধুতি পাওয়া যায়নি গো । 

বাষট্টি

জুতোমেলায় হবে  । অতিব্যস্ত সদাধাবমান পুরুষযাত্রীদের অনেকেই ছুটতে ছুটতেই যুবতীদের স্ট্যাচুগুলোয় মাইতে হাত বুলিয়ে নেন কোনো পীনোন্নত বুকে হাতের ভালোবাসা বেশি উজ্জ্বল! টিকিটের দাম উশুল ।দার্শনিকতা হলো ভয় পাওয়ার আরেকটি উপায় নিছক কাপুরুষতায়  বিশ্বাস করা ছাড়া অন্য কোথাও পৌঁছে দেবে না। প্রি-ওয়েডিং ও পোস্ট-ওয়েডিং কাঠের পুতুলের সাহিত্য উৎসবে নাইট শিফটের শ্মশানে যাবার পালতোলা নৌকো ধৈর্যের বাঁধ কখনো হারানো সময়ে পারলৌকিক হাসি হাসি মুখ করাটা রাত দুটোয় অসম্মানজনক অসম্ভব মিথ্যে বাঙালিয়ানা কেন গো সোনা ভুটভুটি ভেসে  যায় কাক-ডাকা বিকেলে  এত জুসি স্যান্ডুইচ মনে শান্তি নেই তাঁকে কেন সমাহিত করা হবে ? পহলে দর্শনধারী ফির

বডির মাপ বিচারি একেই বলে দর্শনপন্হা ।

তেষট্টি

লোকদেখানো ভুজুংভাজুং কাঁপছি শূন্য জ্বরে সুখ কী? সুখ হচ্ছে সবচাইতে উদাসীন মৌচাক। আর কষ্টের কথা বলি যদি, কষ্ট দেয়ার বা পাবার জন্য সুখের গভীরতর পরিমাপের আকাঙ্খা দরজার সামনে মূর্তির মত দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়। এটুকুই  জীবন। একরত্তি কম বা বেশি নয়। আন্তর্নক্ষত্রলোক বিনিময়যোগ্য মদের সাথে পকোড়া থেকেই সত্য কাহারে কয় তা মগজ বলে না । যৌবনে কোনো নগ্ন যুবতীকে জড়িয়ে ধরো দেহের নির্দেশ পাবে আজ বড়ো নোনতা সংসারের উৎসন্নে যাবার জন্য  ছায়া হাতড়ে গড়া মেয়েমানুষ কিন্তু খোঁপা খুলে চুলে মুখ গুঁজে আনন্দ বাড়িয়ে তোলে হ্যালো মরণজেঠু মন্দিরে গিয়ে আপনি হিন্দু হয়ে যান আর গ্যারেজে গিয়ে মার্সিডিজ বেঞ্জ ! নদীতে গেলে কুমির হন না?

চৌষট্টি

নিপীড়ন চলছে চলবে । হেভেওয়েটদের ভর সইবার মতো নাগরিকদের অভাব ।  নেপথ্যে ফেরারিদের ওঠা বসা আর ভাবনা । সম্ভব হলে তা আলো দেয় সুকুঞ্চিত কেশে রাই বাঁধিয়া কবরী, কুন্তলে বুকলমালা গুঞ্জরে ভ্রমরী। নাসার বেশর দোলে মারুত-হিল্লোলে, নবীন কোকিলা যেন আধ-আধ বোলে। আবেশে সখীর অঙ্গে অঙ্গ হেলাইয়া বৃন্দাবনে প্রবেশিল শ্যাম জয় দিয়া ।  এর জন্য গায়ে হলুদের ট্রেগুলো দরকার – যোগাড় করতে না পারলে যে জীবন দুঃখের তা দুঃখেই তলিয়ে থাকে। জীবনের আনন্দ তখন কিসে? বঁধুর পীরিতি আরতি দেখিয়া, মোর মনে হেন করে, কলঙ্কের ডালি মাথার করিয়া, অনল ভেজাই ঘরে। ব্রহ্মাণ্ড ব্যাপিয়া আছয়ে যে জন, কেহ না জানয়ে তারে। প্রেমের আরতি যে জন জানয়ে সেই সে চিনিতে পারে। আমি পারিনি কেন?

পঁয়ষট্টি

বিশ্বধৃক্ ত্বঞ্চ রসনামানদণ্ডধৃক্  দেখে সেই আনন্দের উৎস খুঁজি। আচ্ছা, গল্প না বাস্তবতা, বাস্তবতা নাকি কল্পনা, কল্পগন্ধম তার শেষ হয়ে গেছে খাওয়া  আমি ভয়ে, আর শীৎকারে ডেকে উঠি, হেঁই মারো মারো টান, হেঁইয়ো।  যম পালালো নিজের কালো মোষটাকে নিয়ে  আপনি এই সূক্ষ অনুভূতির ছোঁয়ার যে মাদকতার  প্রচুর শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে যা বর্তমানে বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের মতে অশ্লীল, বৃত্তে এই জাতীয় শব্দ রয়েছে গতানুগতিক চিন্তাধারা, আরবি সাম্রাজ্যবাদ এর বীক্ষা হলো পুরুষ “দেয়” নারী “নেয়” তার মন্তর শুনুন ওঁ ব্রাং ব্রীং ব্রৌং সঃ মলয়ং নমঃ ওঁ এং স্ত্রীং শ্রীং মলয়ঃ নমঃ ওঁ হ্রাং কোং 

তাই ওনারা বলেছেন গণিমতের মাল লুটেপুটে খাও চিন্তাভাবনা এবং ধারণাগুলি প্রকাশের অনুমতির বিভ্রাট ঘটলেও তিনি তা অবগত নন এমনটা না 

ছেষট্টি

ডিডোর প্রেমে সাড়া দেয় ঈনিয়াস। উনি পূর্বপুরুষ ও সহযোদ্ধাদের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, মরিচঝাঁপিতে তাঁদের নতুন বসতি গড়ার জন্য। কিন্তু ঈনিয়াসের প্রস্থান মেনে নিতে পারে না ডিডো। ঈনিয়াসের ফেলে যাওয়া তলোয়ার দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। কোনো পেনিট্রেটিভ পাওয়ার পুরুষত্বের প্রতীক সেটা লাঙল দিয়ে দৈনন্দিন ব্যবহারে লেখক এই শব্দগুলি ব্যবহার করেছেন কারণ তিনি বিশ্বাস করেছিলেন ; সন্ন্যাস নেওয়ার পরে বৈরাগী ধরার স্টেজে আছি।  এটা অসুর না হয়ে গ্ৰীক দেবতা হয়ে গেছে তাঁর চিত্রায়নের জন্য তাদের চরিত্রের প্রয়োজন ছিল। জনগণ এই জাতীয় কথা বলে– প্রয়োজন হয় না এবং অন্যরা আরও স্বচ্ছ হতে পারে, ভাল স্বাদের জন্য …তারপর আমরা একদিন সেই পুরোনো মানুষটার ডাক নামে নতুন কাউকে  বাকস্বাধীনতার কি কোনও স্বাধীনতা থাকতে হবে যদি একজন সত্যিকারের দানব রাতের বেলা আসে 

সাতষট্টি

দেখা দে মা কোতোয়ালির রাইফেলঘরে দেখা দে দেখা দে পদ্ধতিগুলো শুরু থেকেই জটিল। মানুষ ভূমিষ্ঠ হয় না কেবল জানোয়াররা হয় বউয়ের দিকে পশুরা চেয়েও দেখে না, আঁচলের এক কোনা ভাল্লাগে দেখতে বন্যায় বাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে শহরকে খেয়ে ফেলছে আগ্নেয়গিরি বোমায় ছিৎরে যাচ্ছে শখানেক মানুষের হাড়মাংসের টুকরোটাকরা দাঁতে কক্ষনো না, চলচ্চিত্র নির্মাতা এখন হোটেলবয়। আমার চিরযুবক প্রেমিক মলয় রায়চৌধুরীকে অনেক আদর, প্রনাম শ্রদ্ধা।লাভ ইউ। কোথায় যে ছিটকে পড়তাম কে জানে! তখন গাড়ি উল্টে যেত। ঘটনার কথা মনে পড়ে যায় এমন কঠিন সত্য কথা তুমি কেমন করে বললে, লাবণ্য ? আবার কোনও প্রোপজাল পেয়েছো নাকি বুদ্ধদেব বসুর কাছ থেকে 

আটষট্টি

স্কুল-ব্যাগে খুব যত্ন করে লুকিয়ে রাখত শুঁয়োপোকা। দেরিদা বলেছেন, হাইমেন বিভ্রান্তিও নয়, পার্থক্যও নয়, পরিচয়ও নয়, বিভেদও নয়, পরিপূর্ণতাও নয় কুমারীত্বও নয়, ঘোমটাও নয়, উন্মোচনও নয়, ভিতরেও নয় বাইরেও নয়। ড্রইংরুম টি বেশ, ভালো লাগলো ; ফুটে একটা টুল পেতে চা বিক্রি করুন, কাজে লজ্জা নেই, বেকার হয়ে থাকা এই কারণেই আমি ষাঁড় হতে হতেও আল্টিমেটলি বাঘ; গুজবমারানিদের কথা শুনুন! পরচর্চা কী পাপ নয়?  কার্ত্তিকেয়ং মহাভাগং ময়ুরোপরিসংস্থিতম্। কেবল নোলা থাকলেই হবে? এ ঘোর রজনী মেঘের ঘটা, কেমনে আইলা বাটে? তপ্তকাঞ্চনবর্ণাভং শক্তিহস্তং বরপ্রদম্। আমরা যা হওয়ার ভান করি,  আমরা আসলে তাই, সেই জন্য আমরা যা হওয়ার ভান করি সে সম্পর্কে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে।

উনসত্তর

প্রেম একটি উদ্বাস্তু কলোনি। এখন বোল্ড চলছে। এর পর কিছু কিছু রান আউটও হবে। দ্বিভুজং শক্রহন্তারং নানালঙ্কারভূষিতম্। আমার খুব জ্বলে যখন তুই প্রসন্নবদনং দেবং কুমারং পুত্রদায়কম্।কি যে করি, দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে আধঘন্টা মানুষের সাথে মানুষ কবির সাথে কবি শেষ সময়েও আমরা থাকবো একই কলোনিতে চোখের নীরবতার ভাষা কেউ পড়েনি। বুঝতেও চায় নি।বাহঃ  তারা শুধুই বিস্ফারিত চোখে দেখছিল, ওনার সামুদ্রিক স্তনযুগল আর ভাবছিল, উফ্ আর একটু, আর একটু প্লিজ । মাতালদের  ভাঁটিশালায় বীণাপাণি হিন্দিতে কথা বলছেন পুরুতমশায় শ্রাদ্ধের মন্ত্র পড়ছেন বিয়ের সময়

সত্তর

 মাকালীকে কেউ বা আবার  ভেবেছেন, এত কালো বুক ! ইয়ে বলছিলাম কি, পুজো এসে গেলো আমি এখনও উইন্ডো শপিং এ আটকে আছি এ সমাজ কি আমায় মেনে নেবে ? মিষ্টি খাওয়ার সুযোগ দাও নি তার পরেও তোমার ঘুম পায়? ধন্য তুমি ! হু হু দাদা, মৃত্যুকে ভয় করিসনি কেন রে ? তোকে কে বলেছে চিরকাল বাঁচতে হবে ? পাগলরা ছাড়া আর কেউ পৃথিবীকে বদলাতে পারে না কেন জানিস ? ওরা মগজ নিয়ে জন্মায় না ; জন্মাবার সময়ে ওদের পা প্রথমে বেরোয় । ইডিয়ট পাবলিকদের প্রথমে মাথা বেরোয় । আপনি আবার জানতে চাইবেন না যেন মানুষ কোথা থেকে বেরোয় । আপনার কি স্মৃতি বিপর্যয় ঘটেছে যে কোথা থেকে বেরোলেন ভুলে মেরে দিয়েছেন ? চটি চাটেন না জুতো ?

একাত্তর

শ্বাস বন্ধ হবার উপক্রম দুদিকে ধার দেওয়া তলোয়ার তব ঘৃণা তারে যেন তৃণ সম দহে অবলীলায় ওই মুখরোচক গুজব পায়রা ওড়াবে, বাজি পোড়াবে, বাঈজি নাচাবে কাব্যে ফাটাস চাপা চোপা প্লাতেরো নামের সেই গাধাটার মাংস খুবলে খেয়ে বিয়া না হইলে বাচ্চা হইবোনা ক্যান? আনন্দ ছিল গলিত জোনাকি পোকায় গালের চামড়া কুঁচকে গেছে, চোখের তলায় কালি এই প্রকল্পের আওতাধীন আর একটু ভাত দিই ঘুরে বেড়ায় গোটা জীবন শ্যামল শ্যাওলা ও গেঁড়ি ও গুগলি দরজা বন্ধ করে যাও না কেন? মেরুদণ্ডী প্রাণী থেকে অমেরুদণ্ডী প্রাণীর তনয়া পরের ধন না বুঝিয়া বুঝে মন

হায় হায়, একি বিড়ম্বনা বিধাতার। কারারক্ষীর সাথে ভারতচন্দ্রের ভালো সম্পর্ক ছিলো। কৌশলে অল্প কিছু দিন পরেই কারাগার থেকে পালিয়ে যান।

বাহাত্তর

সবচেয়ে কর্তৃত্বপ্রধান হলো বিপ্লব নাটুকে কবিতা, গান লিখবেন । তোমারে একটা কথা জিগাই গিলা করা পাঞ্জাবী খুলে দেখেছো বুকে তোমার নাম লেখা ওগো কতো কতো ঢেউ সরল গরলে, বটছায়া ঘেষে কান্না জলের মতো স্মৃতি, একরোখা পূর্ণিমা, তার পাশে ছায়া গড়ায়  এ গড়ানোর সাথে মার্বেল সাদৃশ্য নেই, চোখ আঁকা থাকেনা  অনেকটা ফেঁসে যাওয়া চাকা, পাংচার গোবেচারা সাইকেলের মতন ঘষটে যাওয়া  ম্যাড়মেড়ে। বিষবৃক্ষ না পেলে পর্যাপ্ত আপেলের বীজ থেতো করে নিতে হয়। তাতে  সায়ানাইড আশানুরূপ, মায়া মায়া মরণ। যেন যত্নে এঁকে রাখা এক কালো বেড়ালের মৃত্যু। সাদা এপ্রন পরে যে ডাক্তার চশমার ফাঁক গলে কবিতা আঁকে সে কী এমন স্লো পয়জন বুঝতে পারেন পালস চিপে ধরে ? দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া ল্যাম্পপোস্টের কাজ হলো প্রেমিক-প্রেমিকার জন্য শীতের আলো দেয়া। 

তিয়াত্তর

যাই হোক না কেন, আপনি মাঝে জীবনে তালগোল পাকিয়ে নেন, এটি একটি সর্বজনীন সত্য।  ভাল ব্যাপার হলো আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে আপনি কীভাবে জীবনকে এলোমেলো করবেন 

মাঝেমধ্যে ধুতুরা কেলেও কী শান্তিভাব আসে !  যেমন অনেকটা কাশেরবনে জড়িয়ে থাকা যুবতীর ফেলে যাওয়া আঁচল ।  যেন অগ্নিনৃত্য, যেন জোনাকতাণ্ডব, যেন চোরকাঁটা ফুটে থাকা চোরের মাঝরাতের উল্লাস। জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রা কালী কপালিনী, দূর্গা শিবা সমাধ্যার্তী সাহা সুধা নমস্তুতে। মনসা দেবী অনার্য হলেও সাংস্কৃতিক ডামাডোলের যুগে তাঁর আর্যীকরণ করা হয়। যদিও তাতে বাংলার লোকজ কৃষ্টিকালচার পিছু ছাড়েনি। সেই সময়ের গ্রাম বাংলার আর্থসামাজিক রাজনৈতিক চিত্র জানতে এই কাব্যের গুরুত্ব আছে বৈকি।

চুয়াত্তর

কী কথা তাহার সাথে, ঢেঁড়শের  সাথে? কারা এই প্রণম্য ঢেঁড়শ ? মহানন্দ নামে এ কাছারিধামে

আছেন এক কর্মচারী, ধরিয়া লেখনী লেখেন পত্রখানি, সদা ঘাড় হেঁট করি। অহন হরিণশিশু পাইবেন কই ? হাতে বাংলা মদের খাম্বা বোতল  ঠোঁটে তামুক পাতার বিড়ি। নাই খাজা তো বগল বাজা ।  আসামি দেশের বাইরে মারা গেছে শুধু নায়িকারা বিছানা  ভিজিয়েছে তা নয় সাব্বাশ এই সমাজ কি সাম্যবাদ মেনে নেবে ? চারু মজুমদার দেখে যেতে পারলেন না চীনের সাম্রাজ্যবাদ ! যৌন পিপাসা শৃঙ্গারের সৌন্দর্য নিলে ডানা মেলে উড়াল দেবার পালা । চকা রেগে উত্তর দিলে,  উড়তে না পারে ঘরে যাক,  খাক-দাক বসে থাক।  কে বলেছে উড়তে ওরে,  ভিড়তে দলে রঙ্গ করে? বাংলাদেশে তাঁর বাড়ি নয়। তিনি পাংশুপুরের রাজা। সংসার বাবু তাঁরি সংসারে কাজ করেন।  ঝুড়িতে আছে পালং শাক, পিড়িং শাক, ট্যাংরা মাছ, চিংড়ি ।

পঁচাত্তর

এর চাইতে একটু প্রেম করলেও কাজে দিতো বেদ্দপের দল! একদম সত্যি কথা ; গভীর তন্ত্রীতে টান দিলে গো মামণি । পুত্র সন্তানকে এখন ডাইনি আন্টির অধীনে ছাড়া যাবে না শুধু ইনারলাইন পারমিট নয়,রাত্রি যাপনের জন্য রেজিস্ট্রিও করতে হবে। মাভৈ বলো হরি হরি বোল বেশীর ভাগই স্বার্থের প্রেম। রাজকুমার জঙ্গলে হাঁটতে থাকে। এসময় তার এক জানগুরুর সাথে দেখা হয় ধাঁধার উত্তর দিয়ে সে একটা করপোরেট ম্যাজিক কার্পেটে চেপে  পৌছে যায় ডাইনির স্টক এক্সচেঞ্জে একবার ষাঁড় জিতছে তো আরেকবার ভাল্লুক সাধের ছুন দোতারা অল্প বয়সে মোরে করলি ঘর ছাড়া ছুন ব্রহ্মাধরশ্চতুর্বক্রশ্চতুর্ভুজঃ। সরকার পরিচালনায় থাকা দলগুলো বিভিন্ন সংগঠন,ব্যবসায়িক ও অন্য সুবিধাভোগী যেমন ট্রেড ইউনিয়নগুলোর জামাই। 

ছিয়াত্তর

কদাচিৎরক্তকমলে হংসারূঢ়ঃ কদাচন।ছুন ছুন ছুন  লাউ এর আগা খাইলাম ডোগা গো খাইলাম জেঠা বাজার করে ফিরলে জিলিপি-লুচির ডুয়েট গানে হরিল্লুটের বাতাসা একজন প্রফেটকে আনতো বর্ণেন রক্তগৌরাঙ্গঃ প্রাংশুস্তুঙ্গাঙ্গ উন্নতঃ সাধের ময়না দুটো কৃষ্ণ কথা বল দুটো হরির কথা বল। কমণ্ডলুর্বামকরে স্রুবো হস্তে তু দক্ষিণে।হায় রে! ক্যাডার ছিল তারা সেই লাল বসন ফেলে দিয়ে গেরুয়া বসন পরিধান করে মুমূর্ষু পাখির অস্থির জীবন যুদ্ধ। পাওলি দামের ছত্রাকের সেই লিক হয়ে যাওয়া ভিডিওর কথা মনে আছে?  দক্ষিণাধস্তথা মালা বামাধশ্চ তথা স্রুবঃ। পর-কে আপন ভেবে রে তুই বাঁধলি সুখের ঘর  দোয়েলে তোর পোরম আপন  আর তো সোবি পোর অন্তিম কালে হরি বলে ডাকরে 

জাবি যেদিন  সোশান ঘাটে বাঁশের দোলায় চড়ে ।

সাতাত্তর

তোরে দেখি ফরসা ফরসা লাগতাছে। রহস্য কি? মনারে, চারি ডাকাইত মিলি করিল লুণ্ঠন লালিমা পাল, ব্রাকেটে পুং দের তো দেখেনই,এখন মাও সে তুং কেও দেখা হলো রাজপন্থে বসি এবে জুড়িছ কান্দন। । নোয়াখালীতে আর নোয়াখাইল্লা নাই। সব চেইঞ্জ  হয়ে গেছে সাবিত্রী বামপার্শ্বস্থা দক্ষিণস্থা সরস্বতী। নাসর্বে চ ঋষয়োহ্যগ্রে কুর্যাদেভিশ্চ চিন্তনম।  ডুবাইলি রে, আমায় ভাসাইলি রে। লাও ঠ্যালা। ধুস ! শহরের ভুঁইফোঁড় বাবুয়ানির  শুভেচ্ছা রইলো বিশেষ ছাড় নাফা সর্বস্ব সমাজ জেঠু-দাদুদের সেনাইল টাকাকড়ি আর ভুঁইফোড় নাতি-নাতনি শ্রী গুরু চরণ সরোজ রজ নিজমন মুকুর সুধারি, বরণৌ রঘুবর বিমলয়শ জো দায়ক ফলচারি । বুদ্ধিহীন তনুজানিকৈ সুমিরৌ পবন কুমার । বল বুদ্ধি বিদ্যা দেহু মোহি হরহু কলেশ বিকার ।

আটাত্তর

অষ্ট আঙুল বাঁশের বাঁশি, মধ্যে মধ্যে ছেঁদা শুঁটকি মাছের পুষ্টিগুণ নাম ধরিয়া বাজায় বাঁশি, কলঙ্কিনী রাধা রুপ দেখিয়া ঘুম আসে না ইলিশ মাছের কাটা ভালো চিংড়ি মাছের টক শিবের প্রেমলিঙ্গে কিলো কিলো পনির মাখানো চারশো টাকায় কিনবে সাধুরা গিলবে গবাগব সাথে কিছু হাহাকার, তোর কচি পোনা বেচেবেচে হাটে বেচা হবে গো মরণোত্তর কাব্যদানে অঙ্গীকারবদ্ধ হোন কারো দিকে নজর লাগাস না খাঁটি পীরের মুরিদ হলে যমে তারে সালাম দেয় পাঁচ শনি পায় মীনে শকুনি মাংস না খায় ঘৃণে। তুই ভেটকাস ক্যান? আন্তরিক ভালোবাসা জানালাম। ক্ষেপি, মনটাকে সামলে রাখ  তুই তো বলিস জোরে কেঁদে নিলে চোখ ভালো হয়ে যায়, অন্তরে আজ দেখব, যখন আলোক নাহি রে । এখন তোমার আপন আলোয় তোমায় চাহি রে ।

উনআশি

গুমরে থাকিস না প্লিজ দাঁত ক্যালানো দেখে হেব্বি খচে গেছিলাম ব্যথার অভিজ্ঞতাগুলি সম্পূর্ণরূপে শারীরিক তোর মানসিক অবস্থা  ব্যথার অনুভূতিকে প্রভাবিত করে, নেতিবাচক, বিশেষত  অবস্থার তীব্রতা আরও ভাল হওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কিত আপনার নেতিবাচক চিন্তাভাবনা, খতিয়ে দেখছিলাম তোর এতো দুঃখ পায় কেন মেয়েদের দেখে আলোচনা কি কেবল রবীন্দ্রনাথ নিয়ে ? দূরঙ্গমং জ্যোতিষাং জ্যোতিরেকং তন্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু । ওঁ অস্য সঙ্কল্পিতার্থস্য সিদ্ধিরস্তু। ওঁ অয়মারম্ভ শুভায় ভবতু। সাধু সাধু !  পরস্ত্রী কাতরতায় যেটা আমি অলরেডি করে নিয়েছি  বেশিরভাগই স্বাদু আপনাদের মুখগুলো কমোড হবারও যোগ্য নয় । আমার মতন এমন জগৎশেঠ ফতেহচাঁদ কু-মনা, অর্থলোভী, লবঙ্গলতিকা বেয়াদব কবিতা মেরামত কোম্পানি লিমিটেড গ্রাম বাংলাকে তুমি নতুন করে চেনাবে লোকের ডাকাতির লাইসেন্স দিল কে হ্যাপি ছটপুজো বাঁটুল দি গ্রেটেস্ট বা হাঁদা-ভোঁদাও জানে ভাই। 

আশি

প্রেম স্বাধীন মাংসের ফাঁদ । শরীর গেলেই শেষ ? গুড়গুড় গুড়গুড় , ঢিসুউমমমমমমম দুগ্গা দুগ্গা বাথরুমে কেউ আছে ? শুরু হয়েছে পুজোর জায়গার দখলদারি। কৌতুকাভিনয়ের তাম্রযুগ চলছে চলবে ২১০০ পর্যন্ত আরে ছি ছি,এরকম বলিসনি সূর্যটা ডুবলো কী রাতে ? মাথাখারাপ আমার অপরাধপ্রবণতা‌ চোখের পাতা ভিজিয়ে দিলে মাম্মি বলত পল্লী গানের আসরে না গেলে  হুরিপরি মিলবে না তৈমুর বংশে এ ঘটনা নতুন কিছু নয় স্বাধীনতা তুমি কাজী নজরুল, ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো মহান পুরুষ বেবি বেবি হবি কি আমার হাবিবি? বেবি বেবি হবি কি আমার হাবিবি? বেবি বেবি হবি কি আমার হাবিবি?

বেবি বেবি হবি কি আমার হাবিবি ? কবে হবি  আমার হাবিবি? কবে হবি কি আমার হাবিবি?

একাশি

বর্ণচোরা আম, মারণ, উচাটন, স্তম্ভন, পঞ্চমকার সাধনা বাদ দিয়ে কবিতা হয় না রে খোকা আমার কথা মনে এলে রুমাল খুলে দেখিও।  উত্তরপ্রদেশে যাকে বলে সেনাহা, সব মনখারাপের কান্না আসেনা, কিছু কিছু মনখারাপে বোবা হয়ে যেতে ইচ্ছে করে বিহারে তাকেই বলে অরিপন, ওড়িশায় ঝঙ্গতী, হা হা হা। হাসলাম, তবুও ভীষণ সত্যি মধ্যভারতে মণ্ডন,  হিমাচল আর হরিয়ানায় লিখনুয়া ,তখন আপনাকে দারুণ লাগতো, আকর্ষণ করতে চুল চোখের কম্বিনেশনে গুজরাটে সাখিয়া, নিপুণ বুনো চালচলন । লাল সেলাম কমরেড,তারপর জড়িয়ে ধরে চুমু খাই আবার কবে আপনারা আসবেন রেড বুক আনতে ভুলবেন না, চীনে আর ছাপা হয় না। গ্রেট লিপ ফরোয়ার্ড নীতি একদম জিরো নম্বরে । 

বিরাশি

আপনার আলুলায়িত চুলে নাক ঘষি আমি আমার ভয়ের সম্মুখীন হবো। আমি একে আমার ওপর আর আমার মধ্য  যেতে দেব।  যখন এটা চলে যাবে তখন আমি দেখতে চাই ভয় কোন রাস্তা দিয়ে গেছে কিছু ফেলে গেছে কিনা । কেননা প্রেমের বিপরীত  উদাসীনতা। শিল্পের বিপরীত উদাসীনতা। বিশ্বাসের বিপরীত  উদাসীনতা।  জীবনের বিপরীত মৃত্যু নয়,  উদাসীনতা। আমি তাই সারাজীবন উদাসীন হয়ে কাটিয়ে দিলুম গো পুকুরে একশো কিলোর কাতলা মাছ সারাদিন উদাসীন সাঁতরে বেড়ায় একজন নামকরা কবি কচি-কচি কবিদের উদাসীন সঙ্গম করে যাতে ওনার শীঘ্রপতনের সঙ্গে তাদের ছন্দপতন না হয় ওরা ভয়ের রাস্তায় কুলুপ এঁটে কালীদাসের কাটা গাছের ডাল তুলে নিয়ে যায়।

তিরাশি

অসাধারণ! রুহানি নামের মেয়েদের মন বড় হয়েও শিশুদের মত ক্যাবলা থাকে। বাবা মা কাছে না থাকলে কেঁদে বর্ষাকালের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখে । রুহানি নামের মেয়েরা কাফেরদের পছন্দ করে । ভালোবাসা এদের ওপর গজব প্রভাব ফ্যালে যাতে একসঙ্গে কয়েকজনের সঙ্গে রিলেশানশিপে দাপাদাপি করে । তবে এখন যাঁরা এমন কম্ম করছেন, তাঁরা কেউ নবীন যুবতী নন ;ওই চলছে, যেমন দেশ তেমন সন্দেশ রুহের হায় বলে একটা কথা আছে এক সময় না এক সময় লাগবেই কি থাপ্পড়  খুব খুব মনের কথা বলেছ গো ওনারে দেশে দাওয়াত দেন স্যানিটারি ন্যাপকিন ফ্রি যোনি দর্শনে সারাজীবনের সৌভাগ্য থ্যাংক ইউ  আমার প্রথম প্রেমের কথা মনে পড়ে গেলো স্যার, কিলাইয়া হোতাইলে যেই কথা, হোতাইয়া কিলাইলে একই কথা শোভাযাত্রায় হিজড়েরা নাচে মৈথুন চেতনায়  ভরা জ্ঞান দিয়ে কী হবে যখন জগৎ চুম্বকের নিয়মে চলে

চুরাশি

চোখে দেখো না? অবশ্য তুমি তো হিজড়ে ছাড়া চেয়ে দ্যাখোই না ! গো-পরব। ঐতিহ্য। পরম্পরা। গরুর পিঠে ছাপ দেওয়া হয়, স্নান করিয়ে। যৌবন কালের লেখা। তখন কমিনিউষ্ট ছিলাম। পার্টির হোলটাইমার । দেখি একটা কলস ভরা লোভ উপুড় হয়েছে ।  ভাইফোঁটার আগের দিন হয় এই পরব। ষাঁড়ের শিঙে লাল রঙ দেওয়া হয়। একজন কমরেড পিঠে বসেন  আর ভোট দিতে যান। বলি জিও বেটা, জিও গভীর শান্তির অনুভব হলো । জয় মা! নারী-ভোটার বশীকরন টোটকা ষাঁড়ের পায়ের কাছে ঝোলে । দ্রুত ফল দানকারী যেমন কোন মন্ত্র বা তন্ত্র প্র্য়োগ করলে একাশি দিনের সাধনা সফল। শিরক দুই প্রকার । এক. শিরকে জলি । দুই. শিরক খফি। ও দেহা তুরুত তুরুত । ওয়ামিং কুল্লি দা-ঈই ইয়াশফীক। ওম শঙ্খম চক্রম জলুকমদধাদ অমৃত।

পঁচাশি

 সুখ পরী বিলাসনম্ । মৌলিম আমজোজা নেট্রামকালাম ভোডোজো ভালংম কতি তাত বিলাশনচারু পিটম বড়ধামভন্দে ধনবন্তরিম তম নিখিলা গদা ভনমপ্রুধা দাবাগনি লিলাম ওয়ামিং শাররি হাসিদিন ইযা-হাসাদ। ওয়া শাররি কুল্লিযি আঈন । এই সময় বাউল সাধক পরীর গলায় গোলাপ ফুলের মালা দেবে। পরী মালা স্বীকার করলে সাধকের বশীভূত হবে । সাধকের আদেশ অনুসারে কাজ করবে।  মন ঠিক রেখে, ধৈর্য্যশীল থেকে বাউল সাধককে কাজ করতে হবে।তোর চেহারা দেখলে তোকে কচি মনে হয় ঠিক কিন্তু মাথায় তাকালে আংকেলই মনে হয় ।কথা কিলিয়ার কোন ভেজাল নাই । আমি কর্ম তে বিশ্বাস রাখি, টিট ফর ট্যাট,  অন্ধ ও নেশাগ্রস্ত মানুষ যাদের চারটে হাত থাকে তারাই  এদের শক্তির উৎস

ছিয়াশি

মানুষের চোখসহা ছিলো ! বাটিচালা জলপড়া বৈধ। আপত্তিকর নয়। একদিন বোলতার ঘরটা নজরে পড়ে গেল বাড়ির লোকজনের। তারা তখনই ঠিক করলো ঘরটা ভেঙে দিতে হবে। বোলতাকে  বিশ্বাস করলে পূণ্য হয় কেঁচোকে বিশ্বাস করলে স্বর্গলাভ নিশ্চিত কেননা বোলতারা কবিতাও লিখতে পারে। কবে শিখলো গো ? আমার জ্বর বাড়লে পুরো শহর ছারখার হয় বলে মেয়েটার লহুলিহান লাশ খাটের তলায় গুঁজড়ে দিই চোখের মণিতে সেই মেয়েমানুষ বলেছিল কেন চলুন পালাই বলতে তো পারতিস ভালোবাসি চল্লো ভাগমভাগ কেটে পড়ি তুই তো সারা গায়ে শুক্ররস মেখে কোটি সন্তানদের মাম্মি আজি এসেছি, আজি এসেছি, এসেছি বঁধু হে নিয়ে এই হাসি, রূপ, গান; আজি আমার যা কিছু আছে, এনেছি তোমার কাছে, তোমায় করিতে সব দান।। 

সাতাশি

উড়িয়েছিলিস তাই বলে শ্রেষ্ঠত্বের প্রত্যয়ই  পশ্বাচার, বীরাচার পেরিয়ে ক্ষমতা থাকলে শুধু নিজের কাজে লাগাও ফড়িং সেজে মানুষ কাঁদে না সর্বনাশ হয়ে গেছে ওগুলো কুমীরমুখো স্তাবক আমার মাকে সারা জীবন কুড়িজনের সংসারে চাকরানির খাটুনি খাটতে হয়েছিল তবু বাড়ির বাইরে ল্যাংটো রক্তমাখা এই ছুরি কেন  রাগ পুষে রাখতে হয় নয়তো কীসের মানুষ ক্রোধ ফাটা মাথা নিয়ে ধ্বংসের স্তূপে বসে গলা টিপে ক্যাওড়া দলে সপাটে কেলেঙ্কারি লাগাটা বেড়ে যায় বাহ ! বাহ ! বৈধ না অবৈধ কোন বেবাক মরদানগির আওতায় লুচ্চাদের লজ্জা দুরকম মনের আর দেহের  মোক্ষম অস্ত্র মাননীয় প্রেমের ভাটিখানা থেকে বুকে ভুঁকে দাও  তারুণ্যমেলায় বমচিকাবম দে রদ্দা কানের পাশে খিঁচকে রঙ্গভরা বঙ্গলোকের সরল মিষ্টি হাসির পাকাপাকি শক থেরাপি কোলে বসতে চায় সবুজ 

অষ্টআশি

মরীচিকা হতবাক খিল্লির গুঞ্জরণ ছিল গাড়ি থেকে নেমেছি আর জ্যাম  উদ্বেগাকুল বসে-বসে মাথায় টাক পড়ে গেল হে সারাজীবন একই বাড়িতে থাকলে  পড়শিরা মাথায় হাগবে কেননা গোরুদের  একবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় যে ষাঁড় শ্রেণীর কোন বিশেষ প্রতিনিধি তাদের প্রতিনিধিত্ব করবে আর যৌবনের বন্ধুদের মতন বাঁশ করবে দাও হুড়কো হুমহুনা   এই মেয়েমানুষ অ্যাসিড খেয়ে মরেছিলিস কেন বলতে তো পারতিস ভালোবাসি তোকে ভালোবাসি বিকল্প যুবতী পাসনি বলে ব্যাপারটাকে মনে করছিস প্রেম আমাদের সৌভাগ্য যে অন্যদের ঘেন্না করার মতন আনন্দ হয় না খসে পড়া জিভগুলো পড়ে আছে মাঝ রাস্তায় রাতের রস চেটেছিল তারা রীতিমতো জীবন্ত মহীরুহ আমার ঘাড়ে একুশটা মাথা চিরকাল  যতো ভাবে ততো মরে বাথরুমের দেয়ালে লিখে রাখে

উননব্বই

তীব্র ধিক্কার পরিণতি যে যৌবনের বন্ধুরা জোচ্চোর পকেটমার মিথ্যাবাদী হবেই যতোই উপকার করো হায় পৃথিবীর সমস্ত সঙ্গীতযন্ত্র থেকে রক্ত ঝরে পড়ছে ভালবাসায় সে কেন ঝাড়া বিছানায় শুয়ে শুয়ে প্রেমিকার পুরোনো প্রেমপত্র পড়ছিল তার হাত থেকে আত্মঘাতী লাল সেলাম কমরেড  বুদ্ধিজীবী আর রসগোল্লার ফারাক  মগজ অপারেশনের  সময় করোটি খুলে রাখা  অপারেশনের পরেও নজর রাখার  জন্য অনেক দিন  যা ছবি আঁকতে সাহায্য করে তিনি যখন লেখেন এক অজানিত ঘাগরাচোলি শরীর জুড়ে নুপুরের মতন কিন্নরে বাজে ঝুম বরাবর আর তিনি যেমন অভিমান, হায় অভিযোগ, মা, তুমি আমায় কঙ্কালরূপে জন্ম দিলে না কেন তোমাকে দেখার বাহানা মৃত্যুর সময়ে তোমাকে নতুন শাড়ি পরিয়েছিলুম লাল রঙের 

নব্বই

আমাকে দাহ করার সময়ে যে গানটা শুনবো তা মুদ্দোফরাসকে বলে রেখেছি নতুন ভর্তি হইলেন নাকি, সেলিম ভাই? ধ্যাৎ অবস্থা তো ক্ষত-বিক্ষত লালনীল বহুবিচিত্র হোমিওপ্যাথি ওষুধ প্রতিবন্ধকতাযুক্ত হিজড়ে কতোটা গুরুত্বপূর্ণ যে মেয়ে গর্ভসঞ্চারের ভয়ে মরে সে প্রেমিকা হবার অযোগ্য গিরগিটিপ্রতিম প্রেমিক ব্যাটা আরিব্বাস নুপুর বাজছে সামুদ্রিক ইবাদত কী কী হেরিলাম চক্ষু মুদিয়া তাল ঠুকিয়া উউউম্মম্মাহহহ এই মেয়েমানুষ বলেছিলিস কেন তোর ইউটেরাস নেই বলতে তো পারতিস ভালোবাসি তোমাকে ভালোবাসি কবিই জানে যে ভাষা হলো প্রাণীর বিকার ভদ্দরলোক দেখলেই তার সামনে পাগলের মতন নাচুন যেন পোঁদে ঘা হিংসাশ্রয়ী ভালোবাসায় নীল ছন্দ  চেতনার রঙে আলোকিত পাড়ার ছিঁচকে মাস্তান সব কয়টা দেশে গাধারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ জিতলেই খচ্চর

একানব্বই

পালটে যায় জয় জওয়ানি এটা কি সত্যি? ছেলে যখন পেন্সিল চিবোতো কুঞ্জবনের বাঘ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে খরপরশা নূপুরের মহিমায় স্বরচিত নিমডাল ভেঙে গভীরভাবে বগলদাবা করে ল্যাজ নাড়ানোর ধরন ধারনের আভাসটুকু নেই এক জঘন্য ও ভাষাহীন স্বীকারে দ্বিধা নেই তো কান্নাকাটি করলে শাড়ি পরা কমে গেছে গুণবাচক চাঁদ উঠলে অনৈসর্গিক জগৎ সিদ্ধ করে খাবো ঘণ্টাধ্বনি শান্তি বজায় রেখেই মাগি আমাক লেপের নিচে শুইয়ে রেখে কন্ডোম কিনতে গেছে, আবার চুমু খাবার জন্য আমাকে ফোলানো বেলুন দিয়েছে গলায় ঝুলিয়েছে তন্দ্রাহরণের তাবিজ-তুবিজ বাঘনখে তৈরি শিবাজি ব্যবহার করেছিল আফজাল খানের পেট চিরে হারেমের খুকিগুলোকে মুক্ত করবে বলে

বিরানব্বই

কলকাতা হল শহরগুলোর এলিজাবেথ টেলর, পাগল, সুন্দর, বিচ্ছিন্ন, মোটা মেয়েদের ভাল্লাগে, আমার তো বার্ধক্য এবং চিরকালের নাটকীয়তা, জানিসই, লিজ বলেছিল কোনও মোহাচ্ছন্ন স্যুটরকে ও বিয়ে করবে, যে তার জীবনকে আরও আরামদায়ক করার প্রতিশ্রুতি দেয়, সে যতই অনুপযুক্ত হোক না কেন, প্রেম একটা জেল-সেল, একটা ডেথ-সেলের শিক দিয়ে আলাদা করা, কারণ প্রেম হলো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর থেকে মাত্র কয়েক ঘন্টা দূরে, প্রেমিক ইতিমধ্যেই তার ধূসর মৃত্যু-পোশাকের মধ্যে একটি কাব্যিক ভূত, আর লিজ টেলর, উনিশ গুলুগুলু তুলতুলে রসালো, মোটা তা সে যতই মোটা হোক দেখেছি তার লিজ টেলর চোখ—বৃষ্টির পরে চরসের মতো দুর্দান্তভাবে তাজা এই মেয়েমানুষ দশপাতার চিঠিতে কান্নাকাটি না করে লাইনে বলতে পারতিস তোশোক আখখেতের আড়ালে আনো

তিরানব্বই

চলো আমার অতীত পচা মড়ায় ঠাশা আজকাল তাদের মাংসে পোকা ধরেছে এই যে দেখছেন নখের কোনায় পিত্ত ফাটিয়ে ফাঁক করা ছাড়া কীই বা আছে কাঁদো কাঁদো আদুরে গলায় নৈরাত্ম-ভাবনাই ঝ্যাম কিলবিলে পোকা কী দুর্গন্ধ বহুত লম্বা হাত থাকলেই হলো আমি কি খার খেয়ে বসে আছি মায়ের হাতের ডিমঝুরি আবার বাজুবন্ধ অকৃত্রিম লটকালাম ! ছায়া ব্যস্ত হয়ে গেলে যে কায়া দৃশ্যমান হয় তা আদতে মৃতদেহে করা-ই যায় ভালোবাসার ও থাকে জুরাসিক যুগের শেষ দিকে এক শ্বাসরুদ্ধকর এক্সপায়ারি ডেট সংখ্যাগরিষ্ঠরাই নির্ণয় নেয় কী ভালো আর কী খারাপ ধর্ম হোক জাত হোক গায়ের চামড়া হোক দল হোক যতটা অবিশ্রান্ত হ্যাংলামি আদুরে প্রথমোক্ত ঘরাণার  বউরা দুপুরে আমার ভেতর, যেন চিরবিরহী ম্যাড়ম্যাড়ে ওই দিগন্ত

চুরানব্বই

কিন্তু দেখার নেই পুরুষদের আগে মুখে, বুকে, নিতম্বে। অনবদ্য  রাজনৈতিক পতাকার মতন ক্ষত আর নেই এতটাই বেপরোয়া পুদুচেরির খুদে মুরগি হুহুহু হিহিহি হাহাহা হোহোহো, তিনটি মাত্রা যথেষ্ট র‍্যাম্পাট কেলিয়েছে ষড়যন্ত্রের গন্ধ  একবার বা দুবার, একজন খারাপ যুবতিকে ভালবাসতে হয়, একটা ভাল যুবতি পাবার জন্য, গুলুগুলু যখন যুবতি হয়ে উঠতে শুরু করেছিল কাউকে তার দিকে তাকাতে দেওয়া হয়নি, কারণ সে ভেবেছিল যে সে মোটা কুইন ভিক্টোরিয়া, সত্যিই মোটা সুন্দর আর গুলুগুলু বুঝতে পেরেছিল যে ছেলেরা তাকে সুন্দর বলে মনে করে, দীর্ঘশ্বাস আর গোলাপি গাল আর চিকনি চামেলি চাউনি, রিচার্ড বার্টন শেক্সপিয়ার শোনায়, মুখস্হ, গুলুগুলুর চোখে 

কাজল গালে রুজ ঠোঁটে লিপ্সটিক, না, গুলুগুলুকে ইমপ্ল্যান্ট করাতে হয়নি, ও তো ক্লিওপেট্রা মস্তানি 

পঁচানব্বই

সিজার, বোঝেন তো, বাংলা সাহিত্য-পড়া  প্রতিক্রিয়াশীল সিলেবাস-প্যাঁদানো অভিজ্ঞতায় ভারতচন্দ্র থেকে আরম্ভ করে খুব বেশি দূর এগোতে পারেন নি, বড়োজোর ১ ছটাক বঙ্কিম সাড়ে ৩ সের শরৎ ও ৬০ মন রবীন্দ্রের সঙ্গে পোয়াটাক বিভূতি প্লাস তারাশঙ্করের চাকনা ছিটানো লাবড়া সাপটে এখন নীতিঠাকমার পুণ্য দায়িত্ব স্বেচ্ছায় পালন করছেন, “স্বচ্ছ ভারত”-তুল্য তৎপরতায়। যদিও, আপত্তির মূল কারণ — “মোটা ও মসৃণ তুলতুলে বাহু”-র মধ্যে যে অনাধুনিক আটপৌরে মাধুর্য আছে তা আপনার প্রিয় অথচ “ছোটো বুক” ভাল্লাগে না কেন ? বলিহারি আপনার রুচি। আরে… মহায়, আলঙ্কারিক আড়ম্বর ছেড়ে সোজা কথার সরল স্বীকারোক্তি ব্যঙ্গভূমির ধুমাধাড় সঙোসকিরিতি আপনার ক্ষুধার্ত যুগেও যা ছিল এখনও তা-ই আছে। যা তা। ঔচিত্যবোধ নিংড়ে গরস্তের ক্ষতের স্বর্ণ। 

ছিয়ানব্বই

গড়ানো কার্পেট থেকে আমার গুলুগুলু তুলতুলে প্রেমিকা শেক্সপিয়ারের হাতে গড়া, উই লাভ ইউ ডারলিঙ । হ্যাঁ, উই মিনস উই । হাতে রক্তের গন্ধ, আরবের সমস্ত আতর ঢেলে দিলেও সে দুর্গন্ধ দূর হবে না, সময়কে ফাঁকি দিতে, সময়ের মতো দেখতে, আপনার চোখ, আপনার হাত, আপনার জিহ্বা স্বাগত, তোমার একটু অভিমানের জন্য যদি কারো চোখে জল আসে, তবে মনে রেখো, তার চেয়ে বেশি কেউ তোমাকে ভালোবাসে না, ওহে, কেউকি আমাকে শেখাবে কী করে আমি চিন্তা করা ভুলতে পারি, আমি কি তোমাকে কোনো গ্রীষ্মের দিনের সঙ্গে তুলনা করব? তুমি একটু বেশিই প্রেমময় ও নাতিশীতোষ্ণ। আপনি  আমার কাছে কী প্রত্যাশা করেন ? একা ঘুমাই?  ! হ্যাঁ । ডিয়ার গুলুগুলু । বললি কেন তোর ইউটেরাস নেই ? 

সাতানব্বই

চলুন কোনো দায়-ফায় ঝক্কিঝামেলা নেই কালো আফ্রিকান স্কার্টপরা বেশ্যা হাতে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে মার্কা মেরে রাখলো মনে হলো অন্ধকারে অন্ধকার চুষছি বুকে পাঁঠার রক্ত মাখিয়ে রেখেছে এই নাও পুঁজির পূঁজ খাও পাও চাও দাও লাও বুড়ো বয়সে বেঁচে থাকার আশ্রয় হলো জীবনকে পাগলাগারদে পালটে ফেলা কেউ পছন্দ করছে মানেই বিপদ এলো বলে ঘাড় হেঁট করে বংশানুক্রমিক কালো রঙের ফোঁস ফোঁস টাকা মানেই তো অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে নিজের হাত হুইস্কিতে ধুয়ে ফেলুন বারো দিনের স্বামী ভয়ের যে কারণ আওয়াজ দেন ঢেঁকি গিলতে যদি হয় বাসনার দাম শাব্বাস লজ্জাবতী লজ্জানন্দ একই আনাচে কানাচে দুর্গা, বাসন্তী, ধর্মঠাকুর, রাস, ক্ষেত্রপাল, তোর্সা, তিস্তা, মহানন্দা হাট-বাট নগর ছাড়িয়ে ফসলবিহীন ঠিক ঠিক বিপদসংকুল

অষ্টনব্বই

 ডেঙ্গু নেগেটিভ শ্রীঘর থেকে বেরিয়েই দু’গরস খেয়ে তারপর ব্লাড ক্যান্সারে ভেজে খাইখেজুরের রস হাত ঘুরিয়ে অনেক নাড়ু পচা-নোঙরা খঞ্জ-খোজা ফিরে ওইটারে আত্মাকে অধিগত করে দাড়ি রেখেছেন হালায় আচ্ছে দিন আবার সাদা সাদা দাড়ি চরম বালখিল্য ও বাপ রে কী সুন্দর মুগ্ধ হয়ে হুজুরের নিদান নাম শুনে চমকে চুমু খেলে ঈশ্বরে বিশ্বাস করুন ঈশ্বরে বিশ্বাস করুন বলে বলে চরস ফোঁকার নেশা ধরিয়ে দিলে গো এখন ফুসফুসময় ঈশ্বরে ঈশ্বরে ছয়লাপ ওয়াশরুমে ভালোবাসা কতোটা কাল্পনিক উউউম্মম্মাহহ উউম্মাহহহ কার মাথায় হিসি করছেন খেয়াল করার দরকার নেই প্রেম করে বিয়ে করার পর গিরগিটির রং বদল ঝনঝন গুণ মানেই হিসির যোগ্যশব্দ শুরু উনি আগুনে পোড়াতেন গাঁজা একদিকে হাঁস-মুরগি,গরু-ছাগল অতএব কেন অমাবস্যার রাতে লিঙ্গ ঢোঁড়াসাপ ?

নিরানব্বই

উঁকি দিতে চান অথচ ককনও তোমাকে চায়নি জানো খুনসুটি চোখে জল প্রার্থনাময় মিশকালো টেস্টটিউব বেবির বাপ কে ? বলুন !  হেলতে হেলতে টলে গ্যাছে যে মতাদর্শ লাল ধুলো সর্বাঙ্গে মরিচঝাঁপির কাদায় অফবিট লোকেশনে পা গণতন্ত্রের নাড়ি জেগে উঠলো নষ্ট হয়ে যাওয়া কীট অসহ্য চুপচাপ কাঁদতে থাকি নষ্ট হওয়ার স্বাধীনতা উইরা যখন খেলই না, বইতে থাকে দুধকুসুম্বা নদী। চুমু ও সঙ্গম যোগ্য কোনো রমণীর উম্মাহ হায় একাকীত্ব ভাল্লাগে অথচ স্বমেহনের মশলা নেই অমর হবার পেছনে ছুটছে ভাগ্যক্রমে কোটিকোটি শুক্রকীটের মধ্যে থেকে ওই বানচোদই সাঁতারে প্রথম হয়েছিল তোমরা জানো আমি দুশ্চরিত্র লম্পট অয়ি গজদন্তমিনারবাসিনী আমি নখ বাড়তে দিই না

একশো

জানি তুই করাল দানবী সঙ্গমের পরই দাঁড়িয়ে ধুয়ে নিবি তক্ষুনি ওহো কতো হাজার লোকের মদ খেয়ে নর্দমায় গড়াগড়ি দেবার জন্য প্রতিভা দরকার পোঁদে কুলুপ এঁটে কারেন্ট চলে গেল মুন্ডু নেই পরিচয় নেই কিন্তু মগজকে উন্মাদ হতে হবে নয়তো প্রতিভার জনাকীর্ণ আদালতে মধুচাকের গান প্রভাতিল বিভাবরী, উত্তরিলা রাজ-ঋষি আমাদের চুলবুল পাণ্ডে আই লাব্বিউ, উনি এসেছিলেন চুপিচুপি অ্যানাইস নিনের ‘ডেলটা অব মার্স’ জমির দালালেরাও আস্তাবলবন্দী করে মাথা নামিয়ে ভীষণ কাঁদবে, ভাল কাউকে খুঁজুন আরে-ভাই  মৌবনে যৌবনের সাম-দাম-দন্ড-ভেদ নীতির উলুঝুলুকুলু মেধাবী এবং ভারী সাজুগুজু কী হাহাকার গো ! মাথা গরম হয়ে গেছিলো একটা ঘূর্ণি, শারীরিক উত্তেজনা  ওকে নিয়েই তো আমাদের মার্কসবাদ 

একশো এক

সাদা দাড়ি রাখার জন্য একাকীত্বকে জাস্টিফাই করেননি রবিঠাকুরের দাদু ! দু:খের মাঝে কিভাবে হাসতে হয় ক্ষুধার্ত হায়নার খাঁচায় চোখ উপড়ানো বোধহয় বাকি আছে প্রশ্নটি ঘিরে রয়েছে বিষ ছড়ানো নাকানিচুবানি খায়  কীর্তিকলাপের বিষয়ে দেশপ্রেম মাটি, মাম্মি, মানুষ ইত্যাদি দেখতে দেখতে দুঃসময়ের বিরুদ্ধে আমরা ক্লান্ত, ভীত, অসাড় এই বদবুদ্ধিগুলো কেন উঠে আসবে কথায় ভেজাল আ‌ছে গলায় এইসব শতকৌস্তভ যন্ত্র কেন নয় কেন নয় বড্ড শীত কচ্চে রে মুখ থম থম রাম-নাম সত্য হ্যায় বাদবাকি সমস্তকিছুই বুঝলেন তো ঝুটা হ্যায় স্বমহিমায় বিরল  কী বলছো ? আগেও ছিলো, এখনো আছে। না দেখলে আমার কী দোষ। না দেখালে কেমন করে দেখব ? এখন দেখালে তাই দেখতে পেলুম ! ঠোঁটের তলায় তিল বরকে দিলে?

একশো দুই

প্রেমালাপ করবেন তারা ভুলেও উহু আহা ময়না পাআআআখি এইসব করে ডাকবেন না। সোনা বাবুর মন খারাপ হলে মন ভালো করার জন্য চুমাচাটি করবেন , আপনার পাপ্পির শব্দে কোথায় কে বা কারা যাতনার ঠ্যালায় বেহুঁশ হয়ে যাবে সেটাও পরে দোষ আপনার হবে। বোঝেন গুড পিপলস? কি মিত্তিইইইইইই তিনি ঝাঁটা, কুলো, মশাল ও গদা ধারণ করে থাকেন শুধু শুধু এটা ভাজা ওটা ভাজা না খেয়ে ক্লেদপঙ্কিল  নির্মাণ ঋদ্ধিতে সুপ্রভ আমরা কাপুরুষ, ইতি গন্ধপুষ্পে , ওং রিংরিং আকাশে আধফালি চাঁদ অনেক ক্ষেত্রেই আর সব ক্ষেত্র এক না মা-মাম্মি-মানুষ এমনই মায়াঘন হেমন্ত পদ্মের পাতা তার ওপর মা মনসার হাত। বিরাশি বছর বয়সের বাংলার নির্লজ্জ বদনাম কবি !

একশো তিন

বুকের পাটাটাই পয়সা-কড়ির দাওয়াত আজো স্মৃতিতে অমলিন ধীরে, ধীর তরঙ্গে নিতম্ব ওঠে আর নামে সত্যিই তাই দ্রিমিদ্রিমি চেতনা দন্ড কখন- কিসে- কী উদ্দেশ্যে উথ্থিত হয় ঘেঁটে দেখেননি লাভিউ ।  নাম মেনশন করার দরকার নেই । লাভ হরমোনে পোড়া হৃদয়ের গন্ধ ! সত্যিই খুব ইচ্ছে তোমায় উলঙ্গ দেখার হে মৃত্যু কিস্যু আসে যায় না কী বলে ধন্যবাদ দেব আপনাকে কি বিষময় এ পেশা  ভবিষ্যত বলে কিছু নেই আজিকে কী ঘোর তুফান সজনি গো, জোরে জোরে তালি দাও তাল্লি।  ফিরেছি গো ঘরপোড়া গরু। সিঁদুরে মেঘ  অবিশ্বাসী শীৎকারে ঘাম উৎপাদন করবেই। তারপর ইনসিনারেটর তো আগেই বুক করা আছে

মুখাগ্নি করার দরকার হয় না জাস্ট ট্রে ঠেলে দাও 

একশো চার

ধর্ম এবং ঈশ্বর এই দুইটা অনস্তিত্ব আমার কাছে বেশ স্পষ্ট ভীষণ  ভালো করে দেখলাম ,অ, তুই ? স্তাবকতা ওনার রন্ধ্রে অদ্ভুত একটা ঘোর আছে, গায়ে কাঁটা দিচ্ছে, তারা জানে, নরক বলে কিছু নেই। বা হটাৎ হটাৎ প্রেম পায় । সেই সুন্দরী কেন যে দাঁত মাজতো না জীবনে সবচেয়ে বড়ো আফশোষ অ্যাসিড খেয়ে মরে গেলি ? মোচরমান কোথাকার ! তোর ঈশ্বর তো আমার তাতে কী? তাদের নিয়ে হাসাহাসি করি, কাঠমোল্লা বলি, গোঁড়া, অন্ধ, কূপমণ্ডূক, মূর্খ, ধর্মব্যবসায়ী বেচারা

কিন্তু তুই তো বলেছিলি ধর্ম বলে কিছু নেই আছে কেবল মৃত্যু । তুই মরলি তোকে গোর দিয়ে তোর বাপ সমাধি গড়েছে । আমি মরে ছাই হয়ে গেলুম।

গণচিতায় মিশে গিয়ে তোর কবর ঘিরে পাক খাই।

একশো পাঁচ

স্ত্রী বিষ্ণুপ্রিয়াকে  ঘরে রেখে ? আপনিও স্ত্রী যশোধরাকে লুম্বিনীতে রেখে মাঝরাতে চলে গেলেন। 

আমার শিষ্যদের দল নেই কোথায় গিয়ে মরে পড়ে থাকবো ? কী কষ্ট যে বুক চিতিয়ে বেরিয়ে পড়া? কাস্তে আর নেই আচমকাই এদের চিহ্নিত করে কাঁধ মিলিয়েছেন শীতকালে পাগল কম হয়  তাহলে চেপে যাবেন না আস্ত রাক্ষস বেরিয়ে ঘোড়া গুলো ঘাস খায় তেমন ব্যবস্থা অক্ষম, অসহায়, অন্ধ তারপরেও নাছোড়বান্দা  দাদু দিদাদের নিদান দেবেন তো ? মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র পাঠ করলে অকাল মৃত্যু ঠেকানো যায় কিন্তু আমি তো নিজেই কতো মন্ত্র লিখেছি কবিতার বইগুলোতে আর তার জন্য দাদু-আলোচকদের গালাগাল খাচ্ছি তার কী হবে ব্‌জ্জাতদের জন্য যারা তাদের নাভি-কে পুজো করে

Posted in Uncategorized | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

অদ্রীশ বিশ্বাস-এর আত্মহত্যা

হৃৎপিণ্ডে ওঠেনি কি দ্রিদিম দ্রিদিম দ্রিম দ্রিম

যখন আকাশের ইস্পাতে গিঁট বাঁধছিলে

দেখে নিচ্ছিলে গিঁট শক্ত হলো কিনা

পায়ের শিরাগুলো তাদের কুয়োর দড়ি দিয়ে রক্ত তো পাঠাচ্ছিল

তোমার হৃৎপিণ্ডের দিকে, ভালভ খুলে এবং বন্ধ করে

ওই দ্রিদিম দ্রিদিম দ্রিম দ্রিম শুনে তাড়া পড়ে গিয়েছিল

তোমার শরীর জুড়ে, অথচ তুমি বরফের তৈরি মাথায়

জানি না কবে কোন দিন কখন নির্ণয় নিয়ে ফেলেছিলে

আকাশের হুক থেকে ঝুলে পড়ে, ঝুলে পড়ে আত্মহত্যা করে নেবে

শেষ প্রশ্বাসের সঙ্গে শেষ বীর্য ফোঁটা ঝরেও ঝরবে না

কিছুটা হদিশ কি পাইনিকো ? পেয়ে তো ছিলুম–

বলেও ছিলুম, এ কী করছো অদ্রীশ তুমি, উত্তর দিলে না

নারীও পুরুষের মতো জড়িয়ে ধরতে পারে, ধরে, জানাই ছিল না

আমি তো জানোই, নারীদেরই জড়িয়ে ধরেছি চিরকাল

পুরুষকে জড়িয়ে ধরার কথা ভাবলেই বিরক্তি ধরে, বমি পায়

মনে হয় রাস্তাছাপ রাজনীতি শরীরে আশ্রয় নিতে এলো

এও বলেছিলে তুমি, চিরকাল মুক্তযৌনতার পক্ষে

রজনীশ-আশ্রমের যৌনতার খেলা সমর্থন করো, সম্পর্কের ব্যাগাটেলি

তোমার যৌনজীবনের কথা জানতে চাইলে তবে লজ্জা পেয়েছিলে কেন

ইউরোপে গিয়ে বিদেশিনী প্রেম করেছিলে কিনা, রোমান হলিডে,

জুলিয়েট, জাঁ দুভাল, তার কোনো উত্তর দাওনি তো

তোমাকে বুঝতে পারা ক্রমশ জটিলতর করে দিয়ে তুমি

ফেলে গেলে বুদ্ধদেব বসুর উপহার দেয়া মিমিকে ১৯৬৫ সালে

লরেন্স ফেরলিংঘেট্টি সম্পাদিত সিটি লাইটস জার্নালের দ্বিতীয় খণ্ডটি

যাতে হাংরিদের লেখা প্রকাশিত হয়েছিল, হাওয়ার্ড ম্যাককর্ডের

বিদ্যায়তনিক ভূমিকাটিসহ, ফুটপাথ থেকে কেনার সময়ে

হৃৎপিণ্ডে ওঠেনি কি দ্রিদিম দ্রিদিম দ্রিম  দ্রিম

তোমার কাছেই জানলুম, জীবনানন্দের মেয়ে মঞ্জুশ্রীর চাকরি গিয়েছিল

সাউথ পয়েন্ট থেকে, মধুসূদন সান্যালের সাথে প্রেমের কারণে

বলেছিলে তুমি, যে বিদ্রোহী সে তো সমাজবিহীন, তার কেউ নেই

তার অদ্রীশ আছে, মলয়ের প্রথম সাক্ষাৎকার তুমি নিয়েছিলে

যখন কেউই পাত্তা দিতে চায়নি আমাকে, আমার প্রবন্ধগ্রন্হের

ভূমিকাও লিখে দিয়েছিলে, জানি না কখন কবে প্রৌঢ় হয়ে গেলে

সংবাদপত্রে পড়লুম, যখন আকাশের খুঁটি থেকে ঝুলছিলে, ঘরে ছিল

আলো, নাকি অন্ধকার ঘরে তুমি শ্লেষ হাসি ঠোঁটে নিয়ে

এনজয় করেছো প্রিয় একাকীত্ব ; তখনও কি নিজেকে নিজে নিঃশব্দে  

বলছিলে : এই বাংলায় দুইটি জিনিস আর ফিরবে না কোনোদিন :

সুভাষচন্দ্র বসু আর সিপিএম । মার্কস বা লানিন নয়, স্তালিনও নয়

মাও বা ফিদেল কাস্ত্রো নয়, কেবল সিপিএম ক্যাডারিত হাড়গিলে লোকেদের

ঘেন্না করে গেছো, তুমি তো প্যারিস রোম ফ্লোরেন্স ভেনিস ব্রিটেনে গিয়েছিলে

তবু তারা রাস্তায় তোমাকে ফেলে রায়গঞ্জে থেঁতো করেছিল

যাদবপুরের চারতলা বাড়ি থেকে হিঁচড়ে টেনে নিয়ে গিয়ে পাগলাগারদে

ইলেকট্রিক শক দিয়েছিল, অথচ তুমি তো নিজেই বিনয় মজুমদারকে

হাসপাতালে দেখাশোনার ভার নিয়েছিলে, বিনয় মজুমদারের বউ রাধা

আর ছেলে কেলোকে সোনাগাছি গিয়ে খুঁজে-খুঁজে ছবি তুলে এনেছিলে

অর্ঘ্য দত্তবক্সির বইয়ের মলাটেতে দেখেছি তাদের, সত্যি বলতে কি

কয় দিন কয় রাত ঝুলেছো নিজের ঘরে, তারপর পিস হেভেনের শীতাতপে নয়

কাটাপুকুর মর্গে তিন দিন পড়েছিলে, বুক চিরে ব্যবচ্ছেদ হয়েছিল ?

ডাক্তারেরা পেয়েছিল কিছু ? জমাট বেঁধে যাওয়া দ্রিদিম দ্রিদিম দ্রিম দ্রিম

জানি না । শুনিনিকো । দেহেতে পোশাক ছিল ? কোন পোশাক ?

লাশকাটা ঘরে ? চোখ আর বন্ধ করোনিকো, সম্ভবই ছিল না

সবুজ প্লাস্টিকে মোড়া, ফুল নেই, রজনীগন্ধার রিদ নেই

সাজুগুজু সুন্দরীরা এসে রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়নিকো তোমার মরদেহ ঘিরে

কেওড়াতলায় উল্টো বন্দুক করে প্রতিষ্ঠানের সেলামি পাওনি তা জানি

নন্দন চত্বরে প্রতিষ্ঠানের মোসাহেবদের মতো শোয়ানো হয়নি দেহ

তোমার প্রিয় সন্দীপন ঘুরতো তো বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পিছনে পিছনে

জিগ্যেস করোনি তাঁকে সিপিএম কেন তোমাকে টার্গেট করেছিল !

আশে পাশে আরও কয়েকজনের শব ছিল, ওঠেনি কি দ্রিদিম দ্রিদিম দ্রিম দ্রিম

দাদা নকশাল  বলে শ্রীরামপুরের বাড়িতে হামলা করেছিল, তোমার কথায়

সেই লোকগুলো যারা বাংলার রেনেসাঁকে ধ্বংস করে গড়িয়ার মোড়ে নেচেছিল

বটতলা ফিরিয়ে আনলে তুমি গবেষণা করে, ভিক্টোরিয় বিদেশিরা যাকে

অশ্লীল ছাপ দিয়ে আদিগঙ্গার পাঁকে ছুঁড়ে ফেলেছিল

আর কমলকুমারের রেডবুক, ১৮৬৮ সালে প্রকাশিত প্রথম বাঙালি মহিলার

লেখা উপন্যাস ‘মনোত্তমা’ খুঁজে পেয়েছিল ব্রিটিশ লাইব্রেরির তাকে অযত্নে রাখা

তখন হৃৎপিণ্ডে ওঠেনি কি দ্রিদিম দ্রিদিম দ্রিম দ্রিম

যেমন প্রথমবার প্রেসিডেন্সির প্রথম বছরে ঝালমুড়ি খেতে খেতে

প্রিন্সেপ ঘাটে, ভিক্টোরিয়ায়, ক্যানিঙের ট্রেনে, গঙ্গার খেয়া নিয়ে এপার-ওপার

মা ‘লীলাবতী’কে নিয়ে বই লিখে হয়তো ভেবেছিলে পৃথিবীতে কাজ সাঙ্গ হলো

জানবো কেমন করে বলো, এই তো সেদিন ১৯৬৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর

জন্মেছিলে তুমি, মৃত্যুর দিনটাকে আকাশের খুূঁটিকে বলে চলে গেলে

কেবল এটুকু জানি ২০১৭ সালে ১৬ই জুন কেওড়াতলার শ্মশানে প্রাঙ্গনে

ডেডবডি ক্যারিয়ার সার্ভিস গাড়িতে গোপনে শুয়ে গন্তব্যে চলে গেলে

পাখিরা কোথায় গিয়ে মারা যায় জানতে চেয়েছেন অরুন্ধতী রায়

তিমিমাছ বুড়ো হয় মারা যায়, রুই ও কাৎলা বুড়ো হয়ে মারা যায়

মারা গেলে তাদের গল্পগুলো  জলের তলায় চাপা পড়ে থাকে–

কতো কাজ বাকি রয়ে গেল, সেসব প্রজেক্টের কেউই কিচ্ছু জানে না

যাকিছু  বহুদিন সযত্নে সংগ্রহ করেছিলে সবই ফালতু মনে হলো

যা জরুরি মনে হলো তা ওই এক ঝটকায় দ্রিদিম দ্রিদিম দ্রিম দ্রিম

বন্ধ করে, নিঃশব্দে অট্টহাসি হেসে, আত্মনিধন করে ফেলা…

Posted in Uncategorized | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

এই শহর আমার ? তাই বুঝি !

অতীত মুছে ফেলার জন্য  তারা সমস্ত ক্ষত লুকিয়ে ফেলেছে

কঠোর আর ধূসর  আমলাতন্ত্রের কাজে মন্ত্রমুগ্ধ যেভাবে শহর  

আমার জিভকে সংলাপের মাধ্যমে পরিচালনা করে

বেলেপাথরেও ফুল ফোটে , হেঁচকির মতো ফিরে আসে, 

এই মহানগর মানুষদের কাঠকয়লায় পরিণত করে

হাতে হাতকড়া আর কোমরে দড়িবাঁধা অবস্হায় রাজপথে 

হাঁটিয়েছিল এই মহানগর, শুনেছি শহরটা আমার বাপ-ঠাকুর্দার 

ফারসি ভাষায় লিখতো  তারকাদের প্রয়োজন দূর করার উপায় জানতো

এটা নিয়ে হাহাকার কেন, রাস্তার আলোয় নাচতে  শিখিয়েছে মহানগর 

এর ফুটপাত আমাকে বলেছে প্রতিরোধের আঙ্গিক হলো আলিঙ্গন শিল্প 

 ভিতরে ভিতরে শুনতে শিখেছি মহানগরে

 রাতের বিরুদ্ধে নিজেকে সাজানোর ওর সময় নেই

কেননা অনুভব করি ওর উপস্থিতি আমার শিরাকে তাপিয়ে বয়ে চলেছে

রক্তাক্ত সূর্যোদয়কে আড়াল করার জন্য মৃদু কুয়াশা দিয়েছিল

হেঁটেছি চোর-ডাকাত-খুনিদের সঙ্গে — টের পেয়েছি একাকীত্ব–

সবাই বলে,  ‘ওসব ভাবেন কেন ? দেখছেন তো যারা দেশোদ্ধারের কথা বলেছিল

কোটি-কোটি টাকা চুরি করে কারাগারে সিমেন্টের মেঝেতে শুয়ে আছে’

আমিও রাতের পর রাত কলকাতায় মাথা গুঁজেছি নক্ষত্রের তলায়

গ্রীষ্মের তাপে  পিচ রাস্তায়  আলকাতরার বুদবুদ । উইলিয়াম ব্লেক লিখেছেন তো

আমি প্রতিটি  রাস্তায় ঘুরে বেড়াই, যেখানে পেঁকো গঙ্গা প্রবাহিত হয়

প্রতিটি মুখে আমি দুর্বলতার  দুর্ভোগের চিহ্নগুলি পূরণ করি

 প্রতিটি মানুষের প্রতিটি কান্নায়, প্রতিটি শিশুর ভয়ের কান্নায়, 

প্রতিটি কণ্ঠে: প্রতিটি নিষেধাজ্ঞায়, কান্নায় কালো হয়ে যাওয়া  আতঙ্ক

ওহ—একসময়— ঝিঁঝিঁর ডাক আর বজ্রপাত, গর্জন, গঙ্গার ওপারে

বিয়ের হুল্লোড়ে মাতালেরা ঢেউ ভেঙে পড়লে যারা ধরে নিয়ে যায়

এই মহানগর  কি বহুদিন আগে অপবিত্র হয় নি? না, স্মৃতি: 

কিংবদন্তির ভাঁড়ার ফুরিয়ে গেছে অনেক আগেই জানে 

কোথায় প্রতিটা বাড়ি, এঁদো গলিতে চোরেদের মহাহাকিম ঘরকন্না করে

Posted in Uncategorized | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

একশো পাঁচটি আভাঁগার্দ কবিতা

এক

দেখেছি ডুমুর ভেঙে কচি ফুল প্রেম ভেঙে যোনি ছিঁড়ে যাচ্ছে প্রত্যবর্তনহীন গোলকধাঁধায় ফুটকড়াই পূজনীয় ব্যথাগুলো দিলুম গো অশরীরী বীক্ষণ বাড়ে দিদি আপনার সাথে যুদ্ধকালীন ঘেমো তৎপরতায় আমি টাশকি খেয়ে হাতড়ে হাতড়ে হাতড়ে হাতড়ে ধর্মের মূল কিতাব লালটুকটুক রেডবইয়ের জলের তলায় এতটাই ভয়ঙ্কর, গা থেকে খুলুখুলু সিংহাসনে কিনারা পাচ্ছিলুম না আবার ইমলিতলার মিচকে গার্লফ্রেন্ড এক দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফসল আদর রে সবাই যেন কেমন মেদহীন আর মোক্ষম স্মরণীয় প্রসূতি গাভীটি জবরদস্ত  কেই বা বলতে পারে চল মন যমুনাকে তীর ছেড়ে আওয়াজের ফাঁকে ফাঁকে স্বজনের আহাজারিতে যোনির ভেতর অনন্ত মৃত্যুর ঘোরাঘুরি ; তবে, থ্যাংকস, ছিঃ ছিঃ একি বলছেন স্যার বারুদ জমে বেআব্রুভাবেই প্রকট হবার কথা

দুই

ওনার ছন্দ মিশনারি আঙ্গিকের ছিল: নিজেই দেখুন: চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা, ড্রিপ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে তাড়ি আর ইঁদুরপোড়া খাই, এমনকি কাসুন্দি ঘুঘনি মাখা ছাগলির থনের কাবাব । গমগমে আলোয় বুকে চুসকি পেতে যে যুবতীদের তেলচিটে শার্ট পরে তাজ হোটেলে মদ খাওয়ার সম্মান  আমার। সে হয়তো দেখাবার মতন সেই সম্মান আমার নেই বলেই ! ল্যাঙটোপোঁদে নাচো যেন কেউ তোমায় দেখছে না চাইলে তোমাদের পাঁচতারা বা বুফেতে মানানোর ব্যাপারগুলোও জানি। জানি সবার সব জানা থাকে না, তাই বলে একব্যান্ডের রেডিওর মতন এক ঘ্যানঘ্যানানি ভাল্লাগে না, কাঁটাচামচ দেখে ঢঙ করি না। ইচ্ছে হলে সেটাও খাই নয়তো হাতে মাখাই। এমনভাবে গাও যাতে কোকিলেরা বসন্ত ঋতুতে লজ্জা পায় ।

তিন

ওনার ছন্দ ছিল র‌্যাপ অ্যারাউণ্ড আঙ্গিকে, দেখুন রূপোলি মাছ পাথর ঝরাতে-ঝরাতে চলে গেলে সবকিছু তোমাদের জিজ্ঞেস করেই চলতে হলে মরে যাওয়া ভালো। রবি ঠাকুরের ভক্ত না হয়েও বড় বড় টিপ, লম্বা দাড়ি আর পাঞ্জাবির ঝুল দুলিয়ে দেখানো পূজো দেয় যারা, অথবা না বুঝেও রাজ্যের বই ঠেঁসে সমঝদার হতে চায়- সে আমি নয় মনে রেখো। যদি না বোঝো, বলো, যে বোঝে সে বোঝাবে। সারা দুনিয়ার সব অচ্ছুৎ মনে করা তোমাদের ভাষায় যোগ্যতা হতে পারে, আমি ভাবি শ্বাস নেবার চাইতে বড় কোন যোগ্যতা হতেই পারে না। তোমাদের এতসবের মাঝেও যে বেঁচে আছে, সেটাই তার বড় যোগ্যতা।  আমি এখন আমার ভাঙ্গা পা নিয়ে বারান্দার রেলিং এ শুয়ে এক চোখ আভিজাত্যের ভান করলেই খ্যাত হওয়া যেতো, তবে সবাই কী আর ইমলিতলা থেকে আসে?

চার

 ওনার ছিল বাটারফ্লাই আঙ্গিকের ছন্দ, দেখুন: হে উর্বশী, ক্ষনিকের মরালকায় ইন্দ্রিয়ের হর্ষে, জান গড়ে তুলি আমার ভুবন? দরোজা খোলা আছে। আমার দাদার বাবা মাঠে কাজ করতো বলতে আমার লজ্জা নেই। কেউ ট্রেন থেকে নামবে, কেউ হেঁটে আসবে বলে কি শত্রু হবে না?  আমার কাছে আজকাল সোনাগাছি যাবার বাস ভাড়াও থাকে না, কিন্তু ভ্যানের পেছনে পা ঝুলিয়ে দিব্যি চলে যাই, তারপর ঝিঁঝি ধরা পা নিয়ে নাচি আর খোঁড়াই ! এখন যদি কেউ আমাকে দেখিয়ে তার নিজস্ব দেবতাদের জোরে জোরে ডাকতে শুরু করে সেও আসলে তফাতের মানুষ। আমার ভাষায়, তাকে থ্যাঙ্কিউ থামে গেঁথে দিই। এক জড়গ্রস্ত বুড়োর দামী মদের গেলাসে চুমুক দিলে  জাতপাত পেছন থেকে অস্ট্রিক, সামনে থেকে দ্রাবিড়,  কারো কারো বুকের মাপ ভোট-চিনীয় কারো আবার মিশ্র নীরবতার 

পাঁচ

ওনার ছিল স্প্লিটিঙ ব্যাম্বু আঙ্গিকের ছন্দ, দেখুন কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো কেউ কথা রাখেনি । সার্থকতম উপহার এই শরীরকে ভালোবাসা জানাই বিভিন্ন বিভঙ্গে ও হ্রস্ববাসে ওরে চলে যাই মহাকালের ডাকে “দড়ি-কলসী” সঙ্গেই রাখবি হ্যাঁ একদম গো তুই কী একটা বলতো? কেবলই  সাবধানবাণী! সমাধানের কিছু উপায় আছে? নেই !  সত্যি এবার বুঝলাম গুড শট, তখনও জপ করেন? দারুন ! ব্যাস কেল্লাফতে । চুটিয়ে চাষ করছি সখা  রাগ ভাঙানোর গোপিনীরা কেউ নেই । জানবার মতো  কিছু নেই । ভেতরে শূন্যতা নাড়া দেয় আমারে নায়ে নিবা মাঝি কু এবং ক্যু শাসন কী উল্লাস তুমিও নিজের গা চুলকে ঘায়ের দলে ? আমি তোমার রাতের মূহুর্ত বুঝি। 

ছয়

ওনার ছন্দের আঙ্গিক ছিল সিটিঙ বুল,পড়ে দেখুন: ওগো চপল-নয়না সুন্দরী, তোলো মোর পানে তব দুই আঁখি, মম শিয়রের কাছে গুঞ্জরি ’একটু মিলিয়ে নেবেন প্লিজ চাল আর কাঁকর  একে অপরের সমান প্রমাণ হয়ে গেছে বদের হাড্ডি এইটুকুই । খুবই মুশকিল এত হাই-হ্যালো পাঠাচ্ছেন দেখতেই টনটনিয়ে উঠলো খুনি ডাইনিদের কষদাঁত গাঁড়াপোতার ফুটেজমূলক কমরেড অষ্টপ্রহর চুল্লির আলো দেখানো পার্টি নেশায় এই বাঁশ দেবার ফিকিরটা কার বাপু এক হাততোলা সাংসদ কিভাবে পুত্রবধূকে কব্জা করে রাখতে হয় আমি এখনো আশাবাদী তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে লাগুক লাগুক দেখে যাই তুগলক ভাইয়া একদম চাঁচা‌ছোলা হুকুম দিয়েছে উত্তরে বললুম অবধারণ অনুসরনে অভিব্যক্ত ব্যক্তিদের হতভম্ব লাগে কনকচাঁপার মত গায়ের রঙ ফুলটা জীবনে দেখেন নাই ক্যান হায়  

সাত

ওনার ছন্দের আঙ্গিক ছিল লঞ্চ প্যাড, পড়ে দেখুন আমের পাতাগুলো দুহাতে ছুঁয়ে দেখি মনে কি পড়ে কিছু, মনেও পড়ে না –তাড়াতাড়ি সাইড হউন। কালবৈশাখী এলো বলে! কে বলোতো তুমি?  ফোনালাপে আমরা দু’জনই অংশগ্রহণ করছি কিন্তু অন্য প্রান্তের যুবতীরা বুঝতো না। যাইহোক, ও প্রিয়ে, আমার অবন্তিকা, আমাদের  সবচাইতে পুরানো স্মৃতি হলো হাগু বিষয়ক, আমরা তখন অনেক ছোটো, নর্দমার ধারে হাগু করতে পারি না। ইমলিতলায়  আমাদের জন্য দু’জোড়া ইট বারোয়ারি কলতলায় বসিয়ে দিলো। বিশাল ইমলিতলাা কলতলা শেষ হইছে একটা ছোট্ট খালের পাশে , সেই খালপাড়ে মাছ ধরা দেখতুম কাতল বাচা ভেটকি কতো রকমের কবি-ভাইয়া স্বপ্নের চেয়ে বাস্তব এতো ভালো কেইবা জানতো ? প্রাপ্য প্রেমের চেয়ে বেশি পাবেন না জীবনে যতোই আপনি ভান করুন।

আট

 ওনার ছিল পিলো টক আঙ্গিকের ছন্দ, দেখুন পড়ে শ্রান্ত বরষা, অবেলার অবসরে,প্রাঙ্গণে মেলে দিয়েছে শ্যামল কায়া ;সোশ্যাল মানে কি? সামাজিক ! যখন লিখি একলা থাকি ঘুমের মধ্যে একা স্বপ্নেও তো তাই তাহলে আপনারা এখন সামাজিক ব্যাপারে উল্লসিত কেন আপনাদেরই লেখক বন্ধু খালি গায়ে আন্ডারওয়ার পরে পুরস্কার মঞ্চে হাততালি কুড়োয় তা কি ওই রঙিন জাঙিয়ার না পুরস্কারের ? দেখে ভেবলে যাই, আঁচ করে হারিয়ে যায়  পুরুষালি প্রতিবাদ। মহিলা দর্শকদের জল খসে না, বোঁটায় ফুল ফোটে না; কাম বাসনা তৃপ্ত হয় না। বসন্ত তো জাঙিয়ায় ঢুকে পুরস্কার নিচ্ছে । ওনারও স্বামী ছিল, তারই মুখের অগোছালো সোহাগে ঢিলেঢালা খাঁজ পুরস্কৃত  আপনাদেরই সদোর ভাই। নিজেকে গ্রহণ করুন, নিজেকে ভালোবাসুন এবং এগিয়ে যান। আপনি যদি উড়তে চান, তবে ভুঁড়ি কমান 

নয়

ওনার ছিল লেগ গ্লাইডার ছন্দের আঙ্গিক, পড়ে দেখুন : বুক পেতে শুয়ে আছি ঘাসের উপরে চক্রবালে ।আনন্দে,কবিতায়, আড্ডায় ভেসে গিয়েছিলাম সেদিন সন্ধ্যেতে নাক খুঁটতে শুরু করেছিলেন। একাগ্রতার সাথে নাক খুঁটছিলেন, মনে-মনে মাত্রাবৃত্ত প্রতিভার নিশান । আপনি সঙ্গে আছেন তো ? আপনার ওই  কালো আঁধারিদাগ । আমার নৌকো আমাকে ইউরোপ আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিয়ে এসেছিল  আমিও ছিলুম ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ তৈরি করেছে যে বিশ্বের এক ঝলক।  আমি যা দেখেছিলুম তা ছিল লালসার অভিশপ্ত দিন। হিন্দু ধর্মের সূর্য অথচ ওদের ধর্মের চাঁদ কেন ? ফ্যান্তাফ্যাচাং গান শুনুন এতো আন্তরিকতা, এতো ভালোবাসা আজকাল  বেশি দেখা যাচ্ছে যুবতীদের প্লাসটিক সার্জারিতে অসাধারণ বলব নাকি? কিন্তু উফ অনেক রকমের হয় ! কোনটা চাই বলুন তো?

দশ

ওনার ছিল যোগাসনের আঙ্গিকে দি ব্রিজ ছন্দ, স্মাইল প্লিজ, আপনারা প্রত্যেকেই একটু হাসুন, বিউটিফুল দিদি। বলি ? কত সুন্দর লিখলেন। দারুন বললে ভুল বলা হবে। এটি ফাটাফাটির পর্যায়ে চলে গেল। কার ফাটলো ? প্রেমিকার? বিভ্রান্তিকে ভালোবাসতে গিয়েছিলিস মাধবীলতা ? নিজেকে ভালোবাসতে হলে চোখ বন্ধ করে কানের খোল বের করার মতন আনন্দ আর নেই, না নেই, সত্যি নেই গো। কেবল তালা নয়, ছাতা, টর্চ, লাইটার, হ্যারিকেন, পেট্রোম্যাক্স  সারাই করতেন। থিম কী হচ্ছে গো দিদি ? তাই এত নাম ডাক-ওরে বাপরে বাপ !  সমস্ত দিক দেখছেন ! যে রাঁধে সে দাড়িও কামায় । যেসব নারীরা পার্টি করে, প্রেমিকা হিসাবে তারা ভাল কিনা জানেন ? পুরো জীবন, অভিনয়কে প্রেমিকার বুকে মিল্ক পাউডার মাখাবে

এগারো

ওনার প্রিয় ছিল দি অ্যাক্রোব্যাট আঙ্গিকের ছন্দ, পড়ে দেখুন :ময়ূর, বুঝি-বা কোনো সূর্যাস্তে জন্মেছ । বেঘোরে গান গাই আমি, চরণ চাটিতে দিও গো আমারে…দু’চারটে ভাবনা বৈ তো নয়।চাঁদমামা টিপ দেয়,এবং ইঁদুর মামা দাঁত দেয় লটারি কইরা ছাইড়া দ্যান  দু’একজন বাচাল না থাকলে আসর তেমন জমে না। তোরে সামনে পেলে তোর নুনু কাটা আছে কিনা আমি তাহা জনসম্মুখে চেক করব, শালা মালুর বাচ্ছা নাস্তিক ; মালটা থাকে কোথায়? নিজস্বতা বেঁচে  থাকুক। উঃ দারুণ, কি একটা অসাধারণ ব্যাপার…প্রবল ক্যালানি খেয়ে ছত্রভঙ্গ একশো বছরের বৃদ্ধের মতোই ধুঁকছে সে।দরং জেলার ঢেকিয়াজুলী থানার বরছলা মৌজার আলিশিঙা গাঁও । মিথ্যে করেও “হ্যাঁ ” বলো…শাক দিয়ে মাছ ঢাকো। বলেন তো শাক কোনটা মাছ কী কী ? আমি মেলায় প্রেমের গান  গেয়ে ফিরে যাচ্ছি 

 বারো

ওনার ছন্দের আঙ্গিক হলো স্প্রেড লেগস, দেখুন পড়ে : পরির পাশে পরির বোন, দাঁড়িয়ে আছে কতক্ষণ।ওই যে বুড়ো তালিবান চারটে মেয়েকে শেকলে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছে ওর পেছনে যাচ্ছে আধুনিক কবিতা । কলকাতায় হোটেলে বিউটি পার্লার নেই, আরেব্বাহ্! আনন্দের খবর। আপনার টাকে নতুন টিকি । তিনি তাঁর স্বামীর নামে আকাদেমিতে বাৎসরিক খানাপিনার ব্যবস্থা করেছেন। ছিঃ, এরা থিয়েটার করে ! এদের জন্য একদলা মধু ছাড়া কিছু নেই ! তোমাকে  ল্যাদনার মাঠে , পাঁচ বিঘায় ছেড়ে এলে আলপথ চিনে  শহর ফিরতে পারবে না কোনদিন, মার্কিন ভায়াগ্রা খেয়ে তালিবান জাগবে ; ম্যালা সুন্দর ।  উনি যে  লুটেরা পুঁজিপতি এটা বুঝলাম অক্ষতযোনি সস্তায় আলকাতরা খায় ! ওই মহিলা আর কোপ দেয়া খুনীদের মধ্যে পার্থক্য যৌনতার  সম্পর্ক রাখা । 

তেরো

ওনার ছন্দের আঙ্গিক স্পুনিঙ, পড়ে দেখুন নিজে, সবারই হয়ত সবকিছু হয় না, আমার যা হয় না তা হয় না। ওগো মাঝবয়সী মাসীমা  চাইনি আমার কোনও রকম স্মৃতি তোমার  পাশ থেকে উঁকি মারুক ! হুমমমম । মাম্মি ফাইড্ডাফাডি লাগতিসো মাঝেমাঝেই পাক্ষিক ঝোলা  থেকে কুমিরছানা বের করে দেয়া হয় , তাতে ক্ষেত্রফলের  হেরফের হয় । প্রবল ক্যালানি খেয়ে ছত্রভঙ্গ, না বসতেই জানিয়ে দিয়েছেন  একছেলে ও এক মেয়ে । দুটি কিস্তিতে দিলে ভাল হোতো,  দারুন লাগলো দিদি আর আমি শালা খুচরো   দিয়ে দিতে পারলে বাঁচি। সেটা মনের ভেতর সন্দেহের এমন রস ঢুকিয়ে দেয় যে ফিরে এলে  আগের মতো ধুতুরোর আঠা থাকে না ; শালা ছ’সাতটা বিয়ে, ইনি না কী গুরু ? এর পাছায় তিন লাথি মারলে অনেক পুণ্যি হবে যা ‘সাহিত্য’ হয়ে উঠবে , তার কোনও ধরাবাঁধা নিয়ম নেই দিদি । 

চোদ্দো

ওনার ছন্দের আঙ্গিক দেয়ালে যখন তুমি, দেখুন নিজেই পড়ে । আগে আপনাকে ভালো লাগত, রামবাবু, এখন আপনি বদলে গেছেন। কখনও কখনও আপনাকে কংগ্রেস মনে হত, কখনও সি.পি.এম, কখনও সি.পি.আই, মধ্যমেধার মাঝারিয়ানার  পঙ্ককুণ্ডে লঘু আচরণ নিজগুণে ক্ষমা করবেন,আছি, নছি, সর্বমঙ্গলা, দিব্য প্রতিভাতে !! নো পার্কিং জোনে  ইন্দ্ররাজ্য মেয়েদের পিরিয়ড হওয়ার মত নিজস্ব বিষয় এটা ? খোলাবুকে টুপটাপ চুমু পড়তে থাকে আলুলায়িতা জীবনের ! কাঁকডা়য় কামডে় দিতে পারে ! ভোলে-ও-.ভোলে !!  প্রেম করার সময়ে বীর্যে লেড, কপার-অক্সাইড আর লিথিয়াম এর মতো নিষিদ্ধ কেমিক্যাল চেক করে নেবেন ; এটা মিথ্যা সেটা কোন মিথ্যুক বলেছে, অ্যাঁ ? লাটাগুড়ি জংগলের মাঝে হঠাৎ তীব্র আওয়াজে নদী দাঁড়িয়ে গেলো। লাইনের উপর তিনটি সমুদ্র । 

পনেরো

ওনার ছন্দের আঙ্গিক রাইডিং দি হর্স, পড়ে দেখুন, দেরি করে যে এসেছে, ইচ্ছে করে ভালোবাসি তাকে। আগ্নেয়গিরিটিও চেনা আমার, ওর লাভায় নীলচে  রূপ…আপনার হয়ে গেলে জানাবেন…উফ থামো না। আমার জামাই বলেছে, এই জীবনে তুমি আছো তাই যথেষ্ট । পরকালে  তোমাকে দরকার নেই । কাফের না হলে পরকাল হবে না । আমিও তো জনি জনি ইয়েস পাপা আর অন্যান্য ভাইয়াদের দেখতে চাই। তাই মিউচুয়ালি সে একজনকে নিয়ে থাকলে আমি অন্যকে । উনি বলেছেন তথাস্তু ! জীবন সুন্দর ! যারা মনে করেন দাড়ি রাখলে সরকার গদিতে বসতে দেবে তাদের চটিতে সেলাম করুন । টেপবার ভোঁপু সাইকেলে  কেন থাকে  জানিনে। ফিল্মস্টারের গালের তৈরি রাজপথে আনন্দ চান না 

ষোলো

ওনার ছন্দের আঙ্গিক গ্রিজলি ভাল্লুকের দাঁতাল, পড়ে দেখুন, জানো এটা কার বাড়ি? শহুরে বাবুরা ছিল কাল, ভীষণ শ্যাওলা এসে আজ তার জানালা দেয়াল । গোঁসা করি না, প্রতিক্রিয়া দিই না, গাজোয়ারি করি না । আপনারা আর যাই করেন নেক্সট টাইম কেউ  উপদেশ দিতে আসলে জাস্ট খবর আছে। আমি খুব নিচুতলার অন্ত্যজ পাড়ার সাধারণ নোংরা লোকেদের  কাতারের মানুষ। ছ্যাবলামি, দুই নাম্বারি, ডাবলস্ট্যান্ডার্ডপনা, বাজারের আগুন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, ধর্মকে বাজারে ফেলে গিট্টু মেরে দেয়া ইত্যাদি নিত্য যা ঘটান  গায়ে আগুন জ্বলে। এই তরল আলকাৎরায় আমি গলা পর্যন্ত ডুবে  কুরুক্ষেত্র দেখছি ।  অত্যন্ত দরকার । তবু বলি, যারা করে  তাদের অকাদেমি জার্সিতে রঙ পালটালেও নম্বর চারশো-বিশ থাকুক।

সতেরো

ওনার ছন্দ আফরিকার একলষেঁড়ে হাতির আঙ্গিক, নিজেই দেখুন পড়ে, আজকাল মেয়েরা অনেক ফুল কেনে। মেয়েরা অনেক ফুল খোঁপায় সাজায়। কিন্তু খোঁপা থেকে ফুল তুলে নিয়ে কার হাতে দেয় তারা? কবে দেয়?একটা শব্দ আছে, যার অর্থ বৈচিত্র্য । কারোর  খোসা ছাড়ানো থাকবে ইহুদিদের মতন কারোর আস্ত খ্রিস্টানদের যেমন । তার নিগূঢ় অর্থ বালির কণা সংস্কৃতিকে ঢুকে গেলে জীবন বরবাদ । বাতাসে   শিখতে না পারলে আপনি নিজে সমাজের জন্য ফালতুমানব । এইটা মাথায় রাখবেন। অন্যের স্বাধীনতাকে গিলে খাবার ধান্দায় আপনি নিজেও কি স্বীকার করে নিচ্ছেন না, যে  খোসায় বালির কণা অপ্রয়োজনীয়। তাহলে ফ্যাসিবাদ-ফ্যাসিবাদ বলে চেল্লাবেন না। কারণ আপনিও তো ফ্যাসিস্ট !

 আঠারো

ওনার ছন্দের আঙ্গিক প্রাইডের সিংহের সারাদিন বসে, নিজেই পড়েন, সে-দেশের একটি মানুষ অনেকদিন কবরের নিচে শুয়ে আছেন, কিন্তু তিনি কখনাে ঘুমােন না, পাহারা দেন, এক পয়সার তৈল কিসে খরচ হৈল তোমার মাথায়, আমার পায় আরো দিলাম ছেলের গায় বড় মেয়ের বিয়ে হলো সাতটি রাত কেটে গেল একটা চোর ঘরে এলো বাকিটুকু নিয়ে গেল ! সরকারকে একটু বলতে ইচ্ছা করছে, ও ইয়াহ্ বেইবি ! সত্যিই রে কেনো যে মনটা ছোঁয় ! হট মামনী, পিরিয়ড কবি, কবি দাদার আবার স্বরূপে আবির্ভাব !  ধর্ষণ সাহিত্যিক, সূর্যের আলোর ছিটেয় মনোরম দেখাচ্ছে মেকাপ আর্টিস্ট, অভিযোগ করলে আমায় যথাযথ প্রমাণ চাই । ফ্রাস্টেটেড ফড়িং, ভালোবাসা নিও, ডিপ্রেসড চামচিক, কোন নেতাদের খারাপ লাগে মাফ করবেন মেরুদন্ডহীন 

উনিশ

ওনার ছন্দের আঙ্গিক স্টাড বাইসনের হুংকার, পড়ে দেখুন, মায়ের সঙ্গে ঠোঙা বানায়, বিকেলে খেলে খো খো, বনগাঁ থেকে বার্লিনে যায়,সাধ্যি থাকে রোখো।কাকিমা,সঠিক মূল্যায়ন দিন, নারীর স্পর্শকাতর অঙ্গ নিয়ে কবিতা লিখেছেন বেশ করেছেন। রাগ করব না কথা দিলাম মুসুরির ডাল পাক করো রে, কাঁচামরিচ দিয়া, গুরুর কাছে মন্ত্র নিও ফাঁকা ঘরে গিয়া ; কী ভয়ঙ্কর ! জিলাপির প্যাঁচ দেয়া ভূত চাই ! কাঠিবাজ টিকটিকি, একে ভালোবাসবো, হ্যাট বয়ে গেছে !  তাই মাঝে মাঝে রাগ হয় পৃথিবীর বুকে সবাই সিঙ্গেল্৷ পরকীয়া প্রেম হলে হবে। আগে এসেছিল একবার প্রেম পিটুইটারির গেম, দেহশিল্প। এইজন্য গান স্ফুর্তি নাচ রঙধনু রংমহল খালি কার্টেসিটা দিলেই চলতো । রাজনীতিকরা চোরচোট্টা  সেলেব হইয়া যাইতেছে হে প্রভু !  খুঁজে পাচ্ছি না ভাষার তোরঙ্গটা শশুরবাড়িতে ফেলে এসেছি এই নাকি রাস্তার রঙ? 

কুড়ি

ওনার ছন্দের আঙ্গিক শালিক পাখির ফুরফুরে, নিজেই পড়ে দেখুন, মহাসাগরের নামহীন কূলে হতভাগাদের বন্দরটিতে ভাই, জগতের যত ভাঙা জাহাজের ভিড়! রাস্তায় ! মানে কি? ‘গিভ মি মোর’ কিংবা ‘লিভ লাইফ কিং সাইজ’। মাইনের  বাড়তি টাকা পার্টির চাঁদা দিতে হয়েছে । কি পাতা ফোঁকেন দাদু ? পাট ? লাউপাতা,কচুপাতা পলতা নলচে ! শুঁটকি-পাট্টির একজন সনামধন্য মহিলা টিপতে চাইলে বাধা দেন না ।  অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলাম, কি অসাধারণ সুন্দর দিদি আপনাকে দেখতে অথচ পঞ্চাশ পেরোলেন । ট্র্যাশ পাঠালে এমন অবস্থা তো হবেই তোমরা মানো আর নাই মানো দেশটা এগোয় আর পেছোয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর স্ত্রী কুচুটেময়ীর খুব প্রিয় ছিল এই লইট্টাঝুরো, সাজবার সময় তিনি রোজ একশো লইট্টামঞ্জরী কবরীতে গুঁজতেন। কিন্তু এটাই কি যথেষ্ট ? উঁহু ! মনে তো হয়, না বড্ড কষ্ট হয় মানুষ কতটা পাল্টাতে পারে দেখলে অবাক হই না 

একুশ

ওনার ছন্দের আঙ্গিক সমুদ্রের হাঙরের, বিশ্বাস না হয় তো পড়ে দেখুন, মুক্ত করে দিনু মোর রুদ্ধ দ্বার বন্ধ বাতায়ন, এস দৃপ্ত প্রভঞ্জন । হা হা হা হা হা হা হা হা (একটি আট মাত্রার হাসি), ভালো লাগলো দি, তোমার মিষ্টি সোনপাপড়ি কবিতা । বেশ্যাপাড়ায় দেখেছি, অন্যের কাছে, মহাবিশ্বটি শালীন বলে মনে হচ্ছে কারণ শালীন লোকেদের চোখের পাতা নেই । যে বোঝার সে ঈশারাতেই বুঝে যাবে,  এ কারণেই তারা সবাই ব্লাউজ ম্যাচিং শাড়ি পরে । অনাড়ম্বর, ভীরু মোরগের ডাকে বা স্টারি আকাশের নীচে যখন ঘুরে বেড়ায় তারা কখনই ভয় পায় না। ব্যর্থদের অভিজ্ঞতার পাল্লা কভু খোলে না। কংক্রিটের ভাগাড় হাড়-বেরুনো খেজুরে আলাপের ব্রজবুলি, যার জন্ম মৈথিলি ডাইনীতে যেন ঝামর চুলো, তাছাড়া আমার বউ নেই, গা শোঁকার মতন ছয় মাত্রার তাল দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মঞ্চে যান।

বাইশ

শ্যামাসঙ্গীতে আছে ? কিন্তু কালীঠাকুর কবে এলেন  এই যে অন্নদামঙ্গলে ঈশ্বরী পাটনী অন্নপূর্ণার কাছ থেকে প্রার্থিত বর চাইলেন ? পাটনীকেও আপনি-আজ্ঞে ! সে সময় তোরাই তো পাশে ছিলি। চিকেন পকোড়া দেখতে দারুণ হয়েছে তার মধ্যে তো হৃদয় নেই। বারে বারে শুধু আঘাত করিয়া যাও তখনকার সেই গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল। বহু আগেই কোটি কোটি পুরুষ বিচি কাঁধে তুলে সোনাগাছি  রওনা  দিতো৷ মাতলা নদী মাতাল হলে সব শেষ, এর জন্য পুরো সমাজদর্শনটাই কী দায়ী নয় ? ক্লাস ক্যান্সেলের একটা পোস্ট দে, অথবা কাকের পটি আপনার মাথায় এসেও পড়তে পারে। সেটা আপনার ব্যাপার। সবাইকেই পাশে পাবি, জমজমাটে জাঁকিয়ে ক্রমে সাধারণভাবে, লোকেরা “দেহের আনন্দগুলি” কেবল এই শর্তে গন্ধ পায় যে তারা নির্বোধ। কেন ভয় লাগে ?  দিন দিন গুন্ডারাজকে তোল্লাই দিচ্ছে কলাকৈবল্যবাদীরা।

তেইশ

আমেরিকা মুজাহিদিনদের ভায়াগ্রা দিচ্ছে বলছে সংবেদনশীল হতে হবে । তবে তোর বাংলাটা চমৎকার হয়েছে। পুরো ফ্যাব !! —-তুই সিরিয়াসলি প্রেগনেন্ট ! যার বাচ্চা সে জানে ব্যাপারটা ? বাহ, বেশ ভাল খবর। জনপ্রিয় প্রসিদ্ধ কালোযাদুর কবি বেটা শয়তান এখন ধুঁকছে পাঁজর, অসাড় আঙ্গুল, জ্বরের শরীর সামলে হামলে কবিতার ঘোড়া দাবড়ালে ; বাঙালি এইভাবে শেতলাপুজো বিশ্বকর্মায়  মেতে উঠেছে তাই ভাষা অত নরম মোলায়েম তো হবার নয়। আমাদের লজ্জা পাওয়া উচিত ভালোবাসা জন্মায় লোকটাকে দেখে তবে গৃহপালিত ষাঁড়, মহিষ, গরু ও ছাগলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে । আপদ কতগুলো পোড়া কপালে। এ হেন চরম কালচারাল পাড়ায় এটি অতিকথন। গাধার গায়ের রং সত্যিই আমার পছন্দ  কিন্তু হোসপাইপ ঝুলিয়ে আগুন জ্বালাতে ছোটে, ধোপাকে মানে না। 

চব্বিশ

আর নাচের সময় হালকা মেকআপ করবেন । ছি ওসব বলতে নেই। ওঁরা দেবদূত, আংকেল বয়সী এক ভদ্রলোক জাস্ট যিশুখ্রিস্ট ওহে পবিত্র , ওহে অনিদ্র নাগলিঙ্গম কাজ চলছে ! জোর কদমে আত্মবিধ্বংসী শিউলিতে উৎসব রঙিন আরো কত্ত অজুহাত বাঁকড়োর মরদ, চিৎপুরের মাগি বলে গালি যে তৃপ্তি আছে হে শাসক কাঙ্গালিনী না কচু পরীক্ষার হলে বুকের দুধ গড়িয়ে পড়ে নারীর অতিগভীর ভালোবাসা বিহনে কলকাতা মরে যাচ্ছে তবুও ভোজবাজিতে নিজেই পকেটমানি জমিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে গেলে একটু ভেবো প্লিজ আতিপাতি করে গরররররর ঘাই মেরে পুকুরের বাশঁ বাগানের মাথার উপর দিদিমা তোমার বয়স হয়েছে তো গুরুঠাকুর রিল্যাপস করেছে দাদু শোনো দিশাহীন  অনির্দিষ্ট প্রেমে জীবনীমূলক মালটা কে ?

পঁচিশ

জানেন ? আসলে কী করলে বা কেমন হলে তোমাদের সাথে চলা যায় ? ভালোমানুষ হলে ? ভালোমানুষ কাকে বলে ? যারা স্বমেহন করে না ? যারা নামকাওয়াস্তে সৎ পথে চলে, আদর্শের বুলি কপচায়, কাঁটা চামচে ভাত খায়, কাদা দেখলে নাক শিটকোয়, সুন্দর কবিতা লিখে, সুন্দর করে খাবার পর সুন্দর করে ঘুমায়, বন্ধুকে সাক্ষী রেখে প্রেম করে, প্রেমিকা বা প্রেমিককে ধোঁকা দিয়ে সংসার করে বা রুটিন মাফিক জীবন চালায়? তবে তো বাবা দয়া বা দাক্ষিণ্য যা করেই হোক তাকে স্বর্গে থাকতে হবে। কলকাতায় এসব চলবে না, চলে না। কলকাতায় নষ্ট জীবন, ফেলে দেয়া টিস্যুর অভাব নেই। তারা আমাদের সাথে পেরে উঠবে না, জিভ ক্ষয়ে যাবে। এই যে সারাক্ষণ জ্ঞানের কথা শুনছি, বলো। কবিতার মাত্রা, ছন্দ, অক্ষরবৃত্ত মেলাও। তাঁর বাবার নাম কেশরী, মায়ের নাম অঞ্জনা  পালক বাপ হলেন পবন দেব কলকাত্তাওয়ালা। 

ছাব্বিশ

বলে দিচ্ছি। পরে যেন বলতে এসোনা, আগে কেন বলিনি। আমি তো নরক পার্টির মানুষ। বাবা মাকে অমান্য করে ছোটবেলায় গাঁজা ফুঁকেছি তাড়ি টেনেছি লুকিয়ে কিচ্ছু করিনি, নষ্ট হয়েছি তা নয়। সমুদ্রের জোয়ারে নেমে হারিয়ে গেল যুবতী। কেন? বন্ধুরা পরস্পরকে চুতিয়া বা গাণ্ডু বলি কারণ হাইপারসনিক রকেট  সায়েন্স জানা আছে । কফিহাউসে গিয়ে শিখেছি । কাঁঠালে ঘুষি মারলেই বড়কা-ভাই হওয়া যায় না, বাবরি চুল দাড়ি আর পা পর্যন্ত আলখাল্লা পরলে রবিঠাকুর হওয়া যায় না। ঋতুরক্তে মাখামাখি গান গাওয়া যায় ? চরণ ধরিতে দিয়ো গো আমারে,  বক্ষে ধরিব জড়ায়ে স্খলিত শিথিল কামনার ভার বহিয়া বহিয়া ফিরি কত আর– আমিও বুকে জড়িয়ে ধরতে চেয়েছিলুম স্যার কিন্তু ভুতের রাজা পারমিশান দেয়নিকো । 

সাতাশ

অপরেরটা তর্জনী দিয়ে টাচ করে  বেরিয়ে যাও, অজহুনের দিকে তাকিও না; অপরেরটা টাচ করলুম নিজস্ব উভয়ের জন্যই অনিরাপদ কিন্তু কেউ না কেউ তো জোর করে ঠোঁটে ঠোঁট ঢুকিয়ে চুমু খাক, একটু জেদ করুক, ঘ্যানঘ্যান করুক, দাও দাও বলে চিলের ডানায় কেঁদে ফিরুক ? এবার মরলে কাক-জোৎস্না হব সান্ধ্য ঝিঁঝিদের অবাকপনা অশৌচ-এর সময় মনের ভাবনা নিংড়ে অপ্রত্যাশিত চুম্বন চেয়েছিল প্রাক্তন বিপত্নিক । এমন মানুষ নুলোদের হাতে গোনা দুই একজন, মুখে মিষ্টি  টেনশনের চোটে পেটের ভাত চাল হয়ে যায় অন্তর্বাস বিষণ্ণ হয়ে খসে পড়ে বিজ্ঞাপনের জোরে  ছাগলের মত চেতনা একই সঙ্গে রহস্য, যৌনতা, রাজকীয় ইতিহাস, ধর্মীয় আবেগ, অন্তঅনুপ্রাস, ছন্দ উনি এককালে আকাট আঁতেল ছিলেন, অ্যাঁ ??? ক্কীঈঈঈ ” ???? আমরা আমাদের পিতৃপুরুষের উত্তরাধিকার নিয়ে জন্মাই, রেগোনা প্লিজ, নতুন বউ, শাঁখা সিঁদুর নেই, বোরখায়  ডুব দেয়ার আগেই গায়ের আরবি রঙে টাচ করে চলে যাও।

আঠাশ

অপরুপা শালগাছ, তোর শাড়ি খোলা রুপ আমিও  ভালবাসি ! থ্যাংকস দাদা আমার মেমরি কম অপরূপ শব্দঝংকারে বিমোহিত হই ঐতিহাসিক বস্তুবাদ থেকে তৈরি কবিতায় । আলহামদুলিল্লাহ। মানে কী ? আমি দেখি, পেট চেপে রাখি, কি হবে বলে সুখ ভোগ করার কায়দা করতে গিয়ে প্রেমিকের হাঁটু লাল সুরকিতে ছড়ে গেছে কেনা তাঁর পাছা সত্যিই একটি অকাদেমি পুরষ্কার  – তার গায়ে হাত দিলে  ক্লান্তি ক্ষমা করে দেন প্রভু চাঁদ সদাগর কেন  চাঁদবেনে হয়ে গেছে ?  তখন কালাপানি ছিল না বলে সম্ভবের রঙ্গমঞ্চ নামের ভালোবাসা একটি মানবিক অনুভূতি এবং আবেগকেন্দ্রিক একটি অভিজ্ঞতা সর্বলোকে হাসে শুনে তবে আমরা প্রেমিক হিসাবে দেখা করিনি, শান্ত মেজাজে আরও প্রাণীর মতো, একটি ক্লিয়ারিংয়ে  জঙ্গলের ট্র্যাক ধরে এগিয়ে গিয়েছি জুলিয়াস সিজারের হত্যা দেখতে।

উনত্রিশ

 ‘সহি নারীবাদ’-এর প্রবক্তা, মনে করেন পুরুষ মাত্রেই পিতৃতন্ত্রের ধ্বজাধারী আর মিসোজিনিস্ট সুতরাং আমরা প্রিলিমিনারি ছাড়াই প্রেম করেছি – আমি তার মধ্যে চুপ করে যাওয়ার আগে ত্রিশ সেকেন্ডও কেটে গেল না। ভোটের আগে গুরুগম্ভীর মিটিং হত, কেন ফলস ভোট দিতে হবে। জামা পাল্টে আঙুলের কালি মুছে, কখনও বোরখা পরে, জুতো পাল্টে ভোট দিতে যাওয়া। পার্টিকে জেতাতে যে কোনও অপরাধকে মেনে নেওয়া শুধু নয়, নিজেই অপরাধী হয়ে ওঠা। আর তা মানুষকে নৈতিকভাবে কতটা অধঃপতিত করে তা নিজের জীবন দিয়ে বুঝেছি।  আমার নিজের ওজনের সাথে মেলে ওঠার জন্য তার দেহের পৃথক ভঙ্গি এবং বিচারের এক মাত্রায় সংগৃহীত তার জীবন – এই মুহুর্ত পর্যন্ত তার জীবন আমার নিজের সমান, ভাল থেকে ভাল, খারাপ থেকে খারাপ, আমার নিমজ্জিত দৃষ্টি যৌনতার চক্ষু বাঁশগাছ আমি একটা বিয়েতে কাৎ 

ত্রিশ

পারছি না, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি অবস্থা। এ আবার ছটা বিয়ে!  ছোট থেকেই দেখে আসছি যতোই দর্পণ বিসর্জন হয়ে যাক না কেন। দেখতে হলে খরচা আছে ভালবাসা এবং হারিয়ে যাওয়া ভাল আমি বিশ্বাস করি মুহূর্তটি নিকটেই আছে বলি ও সেজ বউ, শুনছো, তুমি আমাকে ভালোবাসো কিন্তু বাছা তোমার নাম না জানলে আমি নিই কিভাবে ? আমার প্রেমিকের তিনজন বউ। আমার মা তার মেজ বউ। তারও নাম খুন্তিশ্বরী। আমি তার ছোট বউ, নাম বগলেশ্বরী তো জানোই বাছা। আমি নেতিধোপানি, নেতলসুন্দরী ইত্যাদি নামেও পরিচিত তা তোমাকে কী নামে ডাকবো বলতো? দানাওয়ালারা দেনেওয়ালা  আজ আশমানি মেয়ের জন্মদিন । জানি না মেয়েটির আসল নাম । জানি না সে শেখ, সৈয়দ, খান — কোন বাড়ির । হায়। 

একত্রিশ

আপনাদের সতীচ্ছদ ছেঁড়ার ঘটনা বলবেন ? বড্ডো ইচ্ছে করছে শুনতে। ব্যাপারটা কি নৈতিকতার ?  যখন যুবতীদের নৈতিকতা সম্পর্কে শেখানো হয়, তখন প্রায়ই সহানুভূতি, দয়া, সাহস বা সততার কথা বলা হয় না। বলা হয় সতীচ্ছদ বা যোনিচ্ছদ নিয়ে । আমি বাবার সঙ্গে আরব দেশগুলোতে গেছি । সতীচ্ছদের দেবতা আরব দেশগুলোতে জনপ্রিয়। আপনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করুন বা গোপন নাস্তিক হন, কোন ধর্মের তা বিবেচ্য নয় – প্রত্যেকেই সতীচ্ছদের দেবতার পূজা করে। সতীচ্ছদ – যা সবচেয়ে অপলকা অংশ, যার ওপর কুমারীত্বে।জানি আজকে তার চাউনির জন্ম হয়েছিল, ছোঁয়ার জন্ম হয়েছিল, হাসির জন্ম হয়েছিল । হ্যাঁ, কান্নারও । তাকে কখনও দেখিনি । কেমন করেই বা দেখব । সে তো আশমানি । সে তো অধরা । তবু দেখতে পাই তার পায়ে হাওয়ার নূপুর, শ্বেতপদ্মের গুঞ্জরিপঞ্চম, বেলিফুলের পাঁজেব । দেখতে পাই তার ঢেউগুলো

বত্রিশ

পর বলেই সে ভাগলবা প্রেমিকের বুক অশ্বশক্তি  যেমন ভেতরে যে আরো কী আছে !! ইস কি যে মজা এটা ঠিকঠাক একদিন সব ছেড়ে ওখানে ঢুকে যাবো..সাথেসাথে খেলায় টানছি । এরপর হা হা হা.. লাগানো নিয়ে প্যাঁচাল নইলে মরে যাবো….এত কাঁদাস কেন ভুলভুলাইয়া ?  ধ্বংসলীলারও মূল সূত্রপাত এটাই । এটাই , অন্তরের জ্বালামুখী প্রদাহে কষ্ট পাই, অপেক্ষাদের পোড়াতে হয় ; এক কথায় যদি বলি ভালোলাগল বৈষ্ণবীয় আখড়ার পুচকুর হাত্তালির সীমা শর্তানুযায়ী বউ পা ভেঙে দেয়,  জন্মগত ভাবেই কেউ কেউ নিজের চরকা নিয়ে জন্মায়। আপনি যদি কারোর জীবনে দুর্যোগ হয়ে দেখা দেন তবু তা  উপভোগ্য হবে , আপনি  দুর্যোগ হলেও আপনি আমার দেখা সবচেয়ে পুরুষ্টু যুবতী, তুলতুলে, গুলুগুলু। ভিতর থেকে নিজেকে ভাঙচুর করবেন না । আমার স্বপ্নে একদিন আসুন।

তেত্রিশ

তারপরে কেরোসিন, স্পিরিট, ডিজেল, গ্রীজ, তাও না পাইলে সয়াবিন ত্যাল সহ যা যা মনচায় ড্রামকে ড্রাম ঢালতে থাক, কার কি ! কালো জলে কুচলা তলে, গ্রামের ছেলের নিজের বিষয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানসিকতা এখনও হয় নাই। “খুলে রাখা ক্লিভেজের দিকে তাকালে” ;  কবিতায় নায়ক নয়, মলয় রায়চৌধুরী এক খলনায়ক। গাণিতিক নির্দেশনায় প্রচন্ড দানবীয় তিনি হতাশ হন নীচু, কৃষ্ণ, মাটি তার অতল গভীরে ; ময়ূর বা ময়ূরী মধ্যে সাক্ষরতা হয়। লালসার কোনও গন্তব্য নেই, তা একটা ফাঁকা চরাচরে পাক খাওয়া ।  কিছু পুরুষ 

 আর বউরা কুকুরের মাংস খায় নাগা হয়ে যায়

কেবল এই ধরনের যাত্রাকে ভালোবাসে আর গন্তব্যের কথা চিন্তা করে না। প্রেমও যাত্রা, মৃত্যু ছাড়া কোনো গন্তব্য নেই এমন  যাত্রা, আনন্দময় । 

চৌত্রিশ

দিনশেষে আমাকে একাই লড়তে হয়েছে, প্রতীক্ষায় থাকে তারা ; সকলের তো আর হ্যাংলা প্রবৃত্তি থাকে না। তাই না? অনেকেই  মিলে শিল্পের ধ্বজা না উড়িয়ে ,একান্তে একক প্রচেষ্টায় সারা জীবন শিল্প সাধনা করে শেষে মনে মনে হতাশ হয়ে উন্মাদ  হয়ে যায়, বেচারা । এর মধ্যে ফৌজদারি আদালতে পাচারকারীদের বিচারসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে। যে তোমার সহোদরা ; আর  তুমি , লঘু – ডানা অরণ্যের পরী , সবুজ বিচের মধ্যে রক্তগোষ্ঠী যাদের লাল পাতার উপর তুষারে ; গাইলাম তাই ঐ গানটাই ফের একবার, ‘হবে আর কী? সবাই আমাদের অদৃষ্ট এরপর সবাই চটি চাটতে যাবে কিংবা জুতোর যুগ ফিরে এলে ভোলে-ও-ভোলে  প্রেম এক বিপজ্জনক ব্যাপার, তা আমাদের জীবন পালটে দেবার  জন্য বহুরূপীর বেশে আসে । পলিগ্যামি?

পঁয়ত্রিশ

গেয়ে যাচ্ছো গ্রীষ্মের সঙ্গীত ৷ তারপর বললো পাতা হ্যায় আন্টি হামারা ছয়গো বিবি হ্যায়। আমি বললাম হাতের তালুতে দু-এক ফোঁটা জল নিয়ে নারী বশীকরণ কালী মন্ত্র: ওঁং হ্রিং হ্রিং রিং রিং কালী কালী স্বর্বশক্তি মহাকালী করালবদলি কুরু কুরু স্বাহা ;যে কেনো যুবতী মেয়েকে নিজের বশে আনার কার্যকারী মন্ত্র: কঅআটাআআআ? আমার পোঁদ চড়ক গাছ। আমি একটা বিয়েই সামলাতে রাত জেগে চোখের কোলে কালি।  তারপর যখন বউয়ের কাছে কানমলা খেয়ে বান্ধবীকে টা টা বাই বাই করে দিলো তখন জাস্ট না-মর্দ মনে হয়েছিল। ভাই, যখন বউকে বন্ধু শব্দের মানে বোঝাতে পারিস না তখন বন্ধুত্ব করতে যাওয়া কেন ? পরকীয়া কেনই বা করতে যাওয়া বাপু। তারপর নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে।টাইগার জিন্দা হ্যায় দেখে সালমান খানকে  ইলিশ পাঠিয়েছেন।

ছত্রিশ

দিয়েছিনু দিদি ; সখি ভালবাসায় কারে কয়?আহা! দুর্দান্ত ওয়েদার।এই বৃষ্টিতে কোলকাতা ঘুরছি বাস্তবতা স্বপ্নের জগতের চেয়ে আরও বড় মায়া। রামপ্রসাদ একাই  সকলের গাঁড় মেরে দিতে পারেন। লৌহপ্রাচীরে ছোট একটি ছিদ্র রেখে দিন।

পৃথিবী ঘুরতে মুঞ্চায় না সরি… হুম হুম… আচ্ছা… ও ! বিপণনের ও কৌতূহলের ওয়াও ! কত গর্ব হয়! সিগারেটটা ধরিয়ে ফেলুদার আছড়ে ভেঙে গেল আকাশছোঁয়া শৈশবের প্রিয় নদীতে মৃত শুকনো হলদে পাতার লাইনগুলো নিস্তব্ধে পিতৃপুরুষের নাম ভাঙিয়ে বন্ধুরা আসুন লেজের তুলনায় কুকুর শক্তিশালী । কালী, সরস্বতী, লক্ষ্মী, সন্তোষী, শেতলা মনসা হাজির সবাই, শিশু মানেই বিছানায় হিসু অফিস, মিটিঙ, কফিহাউস পাড়ায় পাড়ায় কবিরা জানে ওদেরই বংশধর মুখে পেচ্ছাপ করে দেবে ! 

সাঁয়ত্রিশ

হয় তুবড়ি জ্বালিয়ে অন্ধকারের ছররা ওড়াও শুক্রকীটের স্ফূলিঙ্গ সব ছবিতে যুবতীদের যৌনাঙ্গ ঝুলিয়ে পিকাসো ফিরে গেছে গোয়ের্নিকা আঁকবার ব্‌উ বদলে একে একে ভিজে যায় নাভি-নিতম্ব ; গজগজাতেম গজাতে তিতলীর কোলে  কেন পাগলামি, ভন্ডামি বলে বার বার দমন করা হয় ঠোঁট যেখানের জামাও  সেখানের উপুড় করায়ে দেখেছি নিচে একদম নগ্ন চাঁদ উঠেছিল পরে আর হবে না উনি আমারে এক ঝটকায় ড্যানা ধইরা টান আজকালকার পোলাপানদের নিকটবর্তী ভিজায়ে রাখো চুম্বন রসে কালোত্তীর্ণ বীর্যের শুক্রতমসা জয় মা গৌরাঙ্গিনী । বিশ্বাসঘাতক বার্ধক্য আর কেউ নাচতে চাইবে না আমার সঙ্গে বেঁচে থাকার খারাপ হুমকি. জীবনের জন্য নাচের জন্য আমাদের ভিতরে খুব বেশি সঙ্গীত অবশিষ্ট নেই আমার হাঁ-মুখ জুড়ে।

আটত্রিশ

বেরিয়েছিল শেয়ালের সারবাঁধা ল্যাজে ঢাকা অপ্সরাদের খাজুরাহোর মাংসল পাথর এই মুড়াগাছার পুতুল টাইপের ডিভাইন মানবী পুতিনবাদী-শিজিনপিঙবাদী লিবারেশান গোষ্ঠীর অধ্যাপক শামীম খান্নাস রেপ করেছিল ।আপনারা এমন ক্যান? আপত্তিকর মাইয়া বলতাছস– ব্যাকসাইডে খাউজানি, বসতে পারতেসে না মনে হয় ।  তরা হইছস কী দিয়া বাপু মাঝেমধ্যেই ডগিস্টাইল প্রিয় হয়ে ওঠে মানব কল্যাণের স্বার্থে জি-স্পটে অসাধারণ মোহনা আপনে একখান দুর্দান্ত মাল দিদি উনাদের বাইরেও ভালোবেসে সখী আপনি এত কিছু কেমনে দেহেন ? জয় হোক আহা!!! ভয় পান, ভয় পেতে শিখুন, ভয় পাওয়াটা দরকার, ভয়ে সিঁটিয়ে যান, সময় হয়েছে ভয় পাওয়ার শুয়োরের বাচ্চারা বলে মোম গলিয়ে লোম তোলা  ও বউ একটু  ত্যাল দে, ধন্যবাদ ম্যাডাম ইসস ভালোবাসা দিতে পারা ও নিতে পারা আনন্দ খ্যামা দে মা ! 

উনচল্লিশ

বোকাচোদা যদি ভুল করে থাকি ক্ষমা করবেন। পররাষ্ট্রনীতি আকুতি কে উপেক্ষা আমার রাতে শোবার আগে খাউজানি এতো হইলে মলম লাগাইলে হয় ছোঁয়াছুঁয়ি করা দায়সারা চুমু খাওয়া ওই হুলুস্থুলু নারীকে যতটুকু করা যায় কাঁচকি মাছের ঝোল আর চচ্চড়ি আমলকি-জামলকি ফলের রস মাখিয়ে উন্মোচন হয়ে যাক ওই গামছা  ডিকহেডেড ?????????? করে ক্যাম্নে ম্যান! মাদি না মদ্দা? ঘটনা কিতা রে? তোদের মা-বোনদের’কে চুদে খুন করে দেছে লাছ পাঠাচ্ছে ছেদিকে তোদের খাড়ায় না কেন রে ছূয়োরের দল। এর রহস্য অম্লান। শান্ত হয়ে দুজন দুজনের কথা কবে শুনবে উকুন ও খুসকি দূর করতে মাথায় খুল্লাম খুল্লা আগুন উইঠা যায় লণ্ড মেঁ কুছ জাদু হ্যায়, নয়ত তারাও সেটাই চাইছে আপন ইস চ্যুত মেঁ হামেশা ছূপা কর রাকখুঁ মেরি তকদির মেরে সাথ না দিয়া জালিম আপনাদের 

চল্লিশ

গোগায় অনেক কারেন্ট আরও একবার প্রণাম কেন গোওওওওওওওওওও? নিজেকে অপরাধী লাগে মাইরি আমাদের ছিটেবেড়ার ঘরে জেলখানা মাতৃগর্ভের মতো প্রেমিকের লিঙ্গ এবং প্রেমিকার বুক, কইষ্যা ধইরা  দেখেন নাই রিক্সায়, বাসে কিছুই করেন নাই? মাক্কলী ! ভালোবাসা ভালোবাসা এত পোজ জানো তুমি পুরোহিতদের বর্জন করাই ভালো…ডাস্টবিনের পচা গন্ধ ব্বেরুচ্ছে এই সমাজে মাক্কালী মাল্লক্ষ্মী জোর লাগাও হেইও, আউর থোড়া হেইও , ব্যোম ব্যোম সেক্স অবসেসড সস্তাচিন্তাবিদ দারুণ উপলব্ধি কিচিরমিচির আমি আর হাগবো না, আই কান্ট ওয়েস্ট মাই গোল্ড, মাই প্রাইড, আমার সোনা, আমার অহংকার বিকৃত যৌন লালসায় আচ্ছাদিত মানুষরে উষ্টা মাইরা বাইর করতেসেন কচ্চি মাইয়া ওর ভাল্লাগসিল, ও করসিল লেখা বিক্রি করছে আর নিজেকে বলছে শ্রমিক আরে তুই 

একচল্লিশ

রাস্তায় ঘোরালো ঘনীভূত নির্যাস নিশুতি থমথম কী  করতুম ? স্ত্রী লিপস্টিক মেখে সুইসাইড করেছে। আলস্য ছাড়া পুরুষের জীবন অর্থহীন । চাই চাই চাই, তার  আফটার এফেক্ট ভাপাইলিশে, জলদের গায়, সংকেতস্থলে দাঁত কেলিয়ে হাসে মহাকাল চড়ুইভাতি, কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে বেশ একটা মারপিট হলো ভীষণ আপ্লুত একদম দমাদম মস্ত কলন্দর রাতদুপুরে কিসের নৌবিহার ? কিন্তু কই কিন্তু ? পাতালপুরীর অজানা কাহিনী কিছুই হচ্ছেনা মাইক বাজিয়ে কেত্তনের আসর গলা টিপে ধরেছে ?? দেখছিলাম বাতাসের তাণ্ডব । অন্ধকার তাড়াতে পারে না অন্ধকারতে তাই অন্ধকার হয়ে যাওয়া ছাড়া যে উপায় তা হলো ঘনান্ধকারে লোপাট হওয়া

বেয়াল্লিশ

হন, তাঁদের প্রতিষ্ঠানের তালিকার সাথে মেলেনি বলে উদীয়মান, রাগী, তরুণ বুদ্ধিজীবী হলে মনঃক্ষুণ্ণের মাত্রা বেশী সাহস থাকে সামনে আয়..!  তোর হাবভাব এর সামনে আমার নাম রাখা হয়েছে “প্রেমিক”। ওঁ ক্রীং কাল্ল্যৈ নমঃ আরাত্রিকম্ সমর্পয়ামি। বেশ ভালোই পাইসে আপনেরে তাই না? বাপ, দাদা, তোমার বাবার আত্মার শান্তি কামনা করছি. মা কালী গতকাল রাতে ভক্তের দেয়া ক্রিমওয়ালা বিস্কুটে কবিতার অন্ত্যমিল গুলো মনে রাখার মতো পুঙপুঙাপুঙ-পুঙ টিংটিঙাটিঙ-টিঙ, তখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ি বাপরে এই অবস্থা কোলকাতায়? আদিভূতা সনাতনী, শূন্যরূপা শশীভালী, ব্রহ্মাণ্ড ছিল না যখন মুণ্ডমালা কোথায় পেলি ? ঠিক এই বিন্দুতে কালো বৌ ফ্রয়েডের যৌনতার তত্ত্বচিন্তা নি‌য়ে মারামা‌রি করে, গলা টিপে ধরে আর কিছুই নেই এলোমেলো  দীর্ঘ সময় কাটায়া 

তেতাল্লিশ

দিলাম হেহে, লিস্টে থাকলেই পারসোনালি যোগাযোগ রাখতে হবে, ভাভারে ভাভা! তাও উনি যাদের পাঠিয়ে হয়েছেন, তাদেরকেও! নিজের আত্মীয় এমনকি আমার বাপ ভাইও আছে আমার লিস্টে। এরা ছাড়া এবং খুব ক্লোজ দুই একজন বন্ধু ছাড়া পারসোনাল যোগাযোগ! হেহেহে। তবে কমেন্টের উত্তর আমি দেই। অবশ্য কমেন্ট করাও তো যে কারো পারসোনাল চয়েস, তাই না? এই জন্য এই হুমকী! প্রত্যেক মানুষের প্রার্থনা প্রত্যাশা থাকে নিজের সংসার নিয়ে।কিন্তু বিধাতার পৈশাচিক উল্লাস অহংকারী সিঁদুরের ভারে লেপটে যাওয়া সধবা কপাল আমার আমার একলা চলার পথে আমার লড়াই এ আমি একা কেউ আমার সাথে নেই ।আমি একা আমার সন্তানকে বুকে আঁকড়ে বেঁচে আছি।লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।”অনেক ‘ভদ্র’ মেয়ে নাকি আমার ছবি দেখে লজ্জিত, আচ্ছা লজ্জা 

চুয়াল্লিশ

তখন আসে না? যখন রাস্তার ধারে কোনো অবলা অসহায় নারীর বুকে পোঁদে কাপড় থাকে না অর্ধ নগ্ন বা ন্যাংটো শরীরে মাইগুলো ঝোলে তখন অশ্লীল দেখতে লাগে না তখন কী নিজের ব্লাউজ বা শাড়ি খুলে অসহায় মানুষগুলোর গায়ে পড়িয়ে দেন । পাশে থেকে তাদের লজ্জা নিবারণ করেন ? শিক্ষিত সমাজের ভণ্ডামির জন্যেই নিম্নবর্গের এই উঞ্ছবৃত্তি “আ্যাসিড ছুঁড়ে দেওয়া হাতটা দানবের সিঁদুর পরানো হাতটা দেবতার আ্যাসিড অথবা সিঁদুর যাই হোক, মেয়েটা কিন্তু জেনে গেছে হাতদুটো আসলে পুরুষের। আপনারাই তো গালাগালি দেন, খানকি মাগি,রেন্ডি মাগি চুদমারানির বেটি । অর্থাৎ খানকি কে চরম ঘেন্না করেন?রূঢ় সত্য তা নয়.. পরিস্থিতি সুযোগ পেলে খানকিকেও চুদবেন, খারীকেও। আর আমার বুকের কাপড় নেই বলে দরদে যৌনাঙ্গ খাঁড়া হয়ে উঠেছে ঠাকুরের যেমন 

পঁয়তাল্লিশ

নামভাব হত, ষোলটি শাঁসে একাকার অমৃত তফাত একটাই তোমার লিংগ দিয়ে সাদা সাদা ফেনা বেরোয় ঠাকুরের বেরতো না। অথবা বেরতো। আমরা জানতে পারিনি। যতটা জানি অমৃতসমান ঠাকুর উলংগ। নির্ভার নিঃসংকোচ দণ্ড। আর মা? নগ্নজবা মহাকালীর নির্লজ্জ যোনি।‘পাঁচ রুপাইয়া বারা আনা’ ওই ৫ টাকা ৭৫ পয়সা নিয়ে ক্যান্টিনে যেতেন  সেই সিকি আধুলির হিসাবে মজে যায় দেশ। হাহাহাহা হাহাহাহা হাহাহাহা হাহাহাহা হাহাহাহা হাহাহাহা আই লাভ স্টুপিডিটি !! তারপর বললো পাতা হ্যায় আন্টি হামারা ছয়গো বিবি হ্যায়। আমি বললাম কঅআটাআআআ? আমার চক্ষু চড়ক গাছ। আমি একটা বিয়েই সামলাতে পারছি না, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি অবস্থা। এ আবার ছটা বিয়ে! একদিন সাজগোজের গ্রুপে দেখি একজন লাইভে ব্লাউজ দেখাচ্ছে। দেখাতে দেখাতেই বাঁহাতের 

ছেচল্লিশ

তর্জনী কানে ঢুকিয়ে ঘুরিয়ে এনে নাকের কাছে রেখে শুঁকে ডানহাতে ধরে থাকা ব্লাউজটায় হাত বুলিয়ে আবার বলতে শুরু করল, দ্যাখো, এই ব্লাউজটা পেয়ে যাচ্ছ মাত্র চারশো নব্বই টাকায়, শিপিং আলাদা। তারপর আগা মাথা এবং আগা মাথার মাঝখানেও যখন কিছুই বুঝি না এই বয়সে পদস্খলন ভাল নয় ওঁ নমামি ফুসলানং দেবীং মুর্গিকরস্হ দিগম্বরীম্ । মার্জন্যা পূর্ণকুম্ভাটাকা জলং তাপশান্ত্যৈ ক্ষিপন্তীম্ ।। দিগবস্ত্রাং ঝাণ্ডানং শূর্পাং পার্টি করিন্তাম ত্রিনেত্রাম্  বিস্ফোটাদ্যুগ্রতাপ প্রশমনকরীং চলছে চলুক ও বিষ দৌড়ে নামো-রে, বিষ দৌড়ে নামো-রে, কালিয়া কালনাগের বিষ দৌড়ে নামো-রে তেরো থেকে উনিশ বছর বয়সে জীবনের প্রেমের মহাপ্রলয় ঘটে।বিশ্বাস করো দেইখা কাইন্দা ফেলসি। আমি এই ইট পাথরে আর থাকতে চাই না দি। আমাকে এইখানে ফেলে দিয়ে আসো…..

সাতচল্লিশ

 স্নানাগার নির্মিত অধিকাংশই এলিয়েন তাই ব্রহ্মচর্যের ব্রত শক্তিই শুধু নয় অশ্বিনীতারার চুল ছিঁড়ে শৈলীর গর্ভমুণ্ড ভয়ংকর উল্লসিত মাথা গোঁজে এইটা মোক্ষম কোনো চ্যালেঞ্জ নয়, আমারে নিবা মাঝি? তুমি ভালো থেকো গো ঘটাং ঘটাং করে কপালের উপরে টিকে থাকে না , নেশা অবাক হয়ে বারবার ধাক্কা খাক, চড় থাপ্পড় খাক লিঙ্গে লেখা আছে সেকথা অবিচুয়্যারি মাতিয়ে রেখেছিলেন রতিনিধিত্বমূলক মিথ্যায়, অসততায়, কুচিন্তায় শুধু ছুঁয়ে দেখবে আরে বাবা, এত সুন্দর আকেঁন যে । স্মৃতিচারণে আবির্ভূত হচ্ছেন যুগে যুগে সবাইকে খিস্তোবে এবং পূর্ণ-প্রাণ হয়ে উঠবে আহা আহা আহা ভাবতে ভাবতেই কাটিয়ে ফেলছেন ল্যাটা, গড়াই, বেলে ধরায় প্রবেশ করিবার প্রস্তাব আসিয়াছে? পাশের এই খান্ডালনি কিন্তু মায়াবতী ভদ্রমহিলার আজ জন্মদিন। ভালবাসার বিনিময়ে যথাযথ 

আটচল্লিশ

ভালবাসা দিয়ে উঠতে পারি না কিন্তু ভালবাসি ঠিক তবে বিকল্প কি?  বিকল্প ভাবার সহজ সমাধান  নেই। আসলে বিকল্প বলে কিছু হয় না । ঘুঁটের আদল-আদরা অন্যরকম হলেও তা ঘুঁটেই থাকে । আমরা রাজনীতিতে ঘুঁটের এসকর্ট হিসাবে কাজ করেছি । জীবনে যদি চরম  দূরত্ব বাড়ে যোগাযোগ নিভে যায়- এর মতো করে এই তো নিউজফিডেই দেখি নিয়ম করে। ব্যস্ততাবিহীন ব্যস্ততায় থেকে  খোঁজখবর নেওয়া হয় না তেমন করে। অথচ জানি আছে, জানে আছি৷ পাশের যুবতীকে ভালোবাসার লোভ সামলাতে পারলাম না। এই মাসেই হবে হয়তো ওয়ান নাইট স্ট্যাণ্ড  দেখলাম দিদিভাই আমাদের পুরনো অগোচরে তোলা ছবি দিয়ে দিয়েছে৷ হয়তো মিস করছিল আমায়। জিজ্ঞেস করতে গিয়েও ভুলে গেলাম, পরী ভাববার মতো মানুষ খুব অল্পই আছে 

উনপঞ্চাশ

টুকরো টুকরো দ্যুতিময় যুদ্ধবাজনায় সাজানো ইগো, আত্মগরিমা, মর্মবিদারী বিবাদ নিজের জীবনে কী হবে এই মায়াপ্রপঞ্চে বিলাই বলবে ম্যাঁও, সাপ বলবে ফোঁস, আর ছাগল বলবে ব্যাঁ নাস্তিক্যবাদী ঈশ্বর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জগাখিচুড়ি প্রাগৈতিহাসিকদের জন্য আসবি কাছে খুকি? একবার মুগ্ধ হতে চাই… শুনে এসে আমায় বোলো তোমার এই স্বভাব কি জামাই জানে ? বউএর ঠোঁটে সিগারেট তরুণদের ছ্যাঁচড়ামি, বৃদ্ধদের লুচ্চামি, মধ্যবয়সীর ইতরামি  বোধিলাভের মই টই পাচ্ছিস না এখন? সে আরো উৎসাহী হয়ে আমার বাসা কোন এলাকায় তা জানার জন্য অধীর খুবই আলাভোলা ভালো মানুষ আপনার বাসায় তো আর যাবোনা  যাক নো রিপ্লাই। সে আবার বললো, হেই গার্ল! কেমন আছো

আমি ভালো নেই করোনায় গণচিতার ভয় গো ! 

পঞ্চাশ

ম্যান,  সিরিয়াসলি ! আব ওঁম শান্তি ! .আঁতেলদের চারটেই হাত রাজনীতির লালনা নীল পশ্চাদ্দেশ তলে তলে  আর কাক বসবে না বোঝো !!! মা কম্যুনিস্ট, বাপ গেরুয়া, প্রথম ধূমকেতু বাহ উস্তাদ বাহ সাদা লোম ভালোবাসার মাত্রা শিউরে ওঠা কান্ডজ্ঞানহীন নরম চাই রোমকূপের শয়তান এর কারখানা তোমার কি ওফ  গুটিকয় মুগ্ধ জলপরি হওয়ার ট্রায়াল যদি পোলাদের ইস্কুলের খরচ দেয়কেউই সারাজীবন ভার্জিন থাকে না । একটা সময় আসে যখন ভার্জিনিটি কেড়ে নেয়া হয় । বললেন মেঘনা। তারপর যোগ করলেন, পুরুষেরাও ভার্জিনিটি হারায় ।  সে  নিজেই টের পায় না । পুরুষের ভার্জিনিটি শুধু মেয়েরা কাড়ে না, রাষ্ট্র, সমাজ, মতবাদ, স্বপ্ন, টাকাকড়ি, লোভ, কার্পণ্য, ক্রোধ, ক্ষোভ, দুঃখ, গ্লানি, প্রতিশোধের ইচ্ছা, হত্যা, আত্মহত্যা  পুরুষের ভার্জিনিটি কেড়ে নেয় । 

একান্ন

সে অর্জুনকে সবার থেকে বেশী ভালোবাসতো অথচ তার সবাইকে সমান ভালোবাসার কথা ছিল ; বুড়া সোয়ামী রাখুম কন কুথায়?  বাহ্ ! অসাধারণ গোয়েন্দা সংস্থার আঁতুড়ঘরে কুলাঙ্গারদের টাটকা বুনো উল্লাসের ঘেমো পাগলের উন্মেষ ঘটে কতো খবরদারির ঘরমুখো বিরোধ ছিঃ এই সমস্ত পচা গণতন্ত্রের ধুয়ো প্রথম দিকে প্রতিটি যৌনসম্পর্ক ছিল সংক্ষিপ্ত কালবৈশাখীর মতো এলো আর গেলো   ভুলে যাওয়া সহজ  সেই মানসিকতাকেই আমি  যৌন জীবনশৈলীর ভিত্তি হিসেবে  ভেবে দেখলাম, আমি, বারবার, যৌনতাকে  তুচ্ছভাবে বিবেচনা করব  খুব দ্রুত বর্তমা‌নে ভী‌তিপ্রদ বিজ্ঞবিচি লোকজন ঝাঁপের ঘুলঘুলি খুলে বিপ্লব ফিরে আসছে ঢ্যামনা শক্তি আসে বিরক্তি অর্জুন নয়, সারা জীবন তাঁকে রক্ষা করেছেন ভীম লোকটা পাকিস্তানি নাকি কুরুক্ষেত্রের

 বাহান্ন

উন্মাদনা মানে একই জিনিস বারবার করা, কিন্তু ভিন্ন ফলাফলের আশায় ফাঁকে ফাঁকে আমারে ছেঁকে ছেঁকে তুলে বুকে কার্তুজের বেল্ট ছিল টুংটাং বাজনা  এখন নেই মুদি দোকানের হিসেব থেকে গভীর মমত্ববোধ আর ঘেন্না উগরে দিতে স্বস্তির বিষয় এটা যে ঝোলা থেকে বেরিয়েছে ফুলকপির হুবহু মিল শব্দ গেলা যত সহজ এসেছি দণ্ডকারণ্যে এই দ্যাখেন ঝালমুড়ি বিক্রেতা চোখে চোখ রেখে রাজদ্বারে শ্মশানে চ যস্তিষ্ঠতি স বান্ধব আরে কিয়জ্জনতন্ত্রের জাঁতাকলে পড়ে যথাবিধি ছাতুর হাল  হাহা হোহো হিহি সেন্ট পার্সেন্ট দালাল তুমি রামের পোলা শ্যাম মাপহীনতা এমনভাবে রয়েছে হাসে তো ঘুরতে ঘুরতে গিয়ে ঢুকলাম এক এন্টিক শপে। সাত সমুদ্রের নারী অবগাহনের ঢেউ বিক্রি হয় আকাশের দরে।

তিপ্পান্ন

 আমার তো । ওরা বললো এটা গুডলাক সাইন। প্রথমে আমার বিশ্বাস হয়নি, কিন্তু এর পর থেকে যেখানেই যাই, এমন হরেকরকমের, বিভিন্ন কালারের মাথায় প্লাস্টারে ডাক্তার লিখেছেন ওনার নাম যেহেতু অবিরাম কর, সেহেতু উনি অবিরাম সেক্স করার অধিকারী  বইমেলায় তো অধ্যাপকের বেশ কয়েকটা বই বেরিয়েছে আর বিক্রি হয়েছে  তার মানে পুরুষেরা নিজেদের দুর্নামও বিক্রয়যোগ্য করে তুলতে পারে  উচ্চশিক্ষা দাঁড়িয়ে আছে অধ্যাপকদের লিঙ্গের ওপর   বাঙালির নবজাগরণ সংস্কৃতি যোনির মুখে পাতলা চাদরটাকে  বাধা হিসেবে দেখেছিল আর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে তা হলো একজন মেয়ের কুমারীত্ব  চিহ্নিতকারী  সভ্যতা আলোকপ্রাপ্তি তো আর নিজের পায়ে আসে না

চুয়ান্ন

হাড় নেই, চাপ দেবেন না । খুলির হাড় নেই। যৌবনের জোঁক ছাড়ালেও যাবে না হাড়ে ব্যথা না হওয়া পর্যন্ত অনুরাগী  স্টিক হাতে সাহিত্য করবে স্পার্ম ব্যাঙ্ক থেকে শুক্রাণু নিয়ে তোমাদের নিজস্ব মালভূমি খুব ক্লান্ত ? প্রবল সন্দিগ্ধ চিত্তে জেলজুলুম, এইডস, গনোরিয়া, সিফিলিস, ডেঙ্গু প্রজাপতি-ঋষি স্মৃতির উদ্দেশে বিক্রিয়া ঘটাতে মাতৃগর্ভ হইতে নিষ্ক্রান্ত ক্ষিদে পেলে চণ্ড-মন্ত্রগুপ্তি অনুসারে কানাঘুষা শুরু হয়েছে এমন অপকর্ম অশ্লীল থ্রেট কুকুরের কামশাস্ত্র আঁশবটিতে কুচিকুচি মায়ের শাড়ি খুলেই গায়ে ঘি মাখাতে হয়েছিল ছেলেটা বাঁচুক, কারণ ? আয় চুমু নিয়ে যা ; সবচেয়ে দুরূহ কর্ম দাঁত মাজা হয়নি এখনও লম্বা লম্বা বোলচাল কি ঠুনকো কেউ পাপ পাপ বাপ বলে কিছু নেই আছে শুয়োরের বাচ্চা বলেছেন মনোরঞ্জন নেতারি বিদ্রোহে বিপ্লবে ঘুমে

পঞ্চান্ন

আলোর ভেতরে দড়ি নিয়ে ঝুলে পড়তে মুঞ্চায়, প্যাঁচ খেয়ে দ্যাখো কান্ড ! সেরা দিলে ওস্তাদ তুমি জগতের কলাবিবিদের  বলছিলুম, ছাগল আর স্ট্রাগল জীবনে আসবেই, পাগল হওয়া যাবে না…উউম্মাম্মাহহহ, লাৎ খেয়েও যারা বদলায় না তারা মহান হয়, যা কিছু অসমাপ্ত কুশ্রী, হেলাচ্ছেদা স্বরূপ তাকে কেবল  কল্পনার ফাঁসি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত কোন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন না।ওমা গো এই ভর দুপুরে কি যে শুনলাম,উফফফ  আমার হাসি থামিও না কিন্তু হিসু আটকে দাও, রাস্তায় হয়ে গেলে মান সম্মান পুরো ডুকরে কেঁদে ফেলবে জাম্বুবান প্লিজ হেল্প মি কেন যে শুনলাম, হাসতে হাসতে পেট থেকে কোলা ব্যাঙ এই হীরক রাজার দেশ, অসম্ভব বলে কিচ্ছু নেই নেপোলিয়ান দাদা। কুন্ডলনী শক্তি জাগ্রত তোমার নামের প্রভু বিস্তার এমনইসব রন্ধ্রপথে ঢুকে জানান দিচ্ছে নিয়মের বসবাস –সরিয়ে দাও, এটাই মায়াপিণ্ডের যম 

ছাপ্পান্ন

নষ্টের গোড়া নতুন কাউকে ঘরে আনো। এমনই তা শক্তিশালী, কাল-কালাতীত খোলা চোখে মোহ পাপ বাপকেও ছাড়ে না ।  তার সেই কল্যাণ রূপকে আমি দেখি। এই বিরাট চামচিকে আমার অনুভবে স্পর্শ করি এই সকল মর্গের আত্মীয় সম্বন্ধের ঐক্যতত্ত্ব ক্ষুধার্ত  চোখে সুর্মা লাগাতে চায়, খাবার দেওয়ার কথা ভাবে না। নবজাগরণ নিয়ে অনেক ভিন্ন মত আছে, কারা বদলালো ? আমরা নিজেরা ? নাকি প্রযুক্তি, শশুর, জামাই, বউমা, ওদের ভাতের বদলে ছাই বেড়ে দাও, আজা সনম মধুর ভোট ব্যাংক ছিল ঝাণ্ডা-ডাণ্ডা’র পাণ্ডা ; মা-কে এখনও স্বাভাবিক করতে পারিনি । বুঝি, এই হারানোটা ভাষায় বোঝালে  বীরানে মে ভি আ জায়েগি বহার যবনবিদ্বেষী যে মেয়েটার সাথে তুমি আমি চরে বেড়াই আজ তার তালাকের ঝামেলা হলো তুমুল, কোথায় সে? দুজনেই দুজনকে কষিয়ে হসন্ত ছাড়া আনন্দ হয় ? থাপ্পড় দে থাপ্পড় দে থাপ্পড় জড়িয়ে

সাতান্ন

রাস্তায় ঘোরালো ঘনীভূত নির্যাস নিশুতি থমথম কী  করতুম ? স্ত্রী লিপস্টিক মেখে সুইসাইড করেছে। আলস্য ছাড়া পুরুষের জীবন অর্থহীন । চাই চাই চাই, তার  আফটার এফেক্ট ভাপাইলিশে, জলদের গায়, সংকেতস্থলে দাঁত কেলিয়ে হাসে মহাকাল চড়ুইভাতি, কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে বেশ একটা মারপিট হলো ভীষণ আপ্লুত একদম দমাদম মস্ত কলন্দর রাতদুপুরে কিসের নৌবিহার ? কিন্তু কই কিন্তু ? পাতালপুরীর অজানা কাহিনী কিছুই হচ্ছেনা মাইক বাজিয়ে কেত্তনের আসর গলা টিপে ধরেছে ?? দেখছিলাম বাতাসের তাণ্ডব । অন্ধকার তাড়াতে পারে না অন্ধকারতে তাই অন্ধকার হয়ে যাওয়া ছাড়া যে উপায় তা হলো ঘনান্ধকারে লোপাট হওয়া

আটান্ন

ভুজঙ্গ-তুঙ্গ-মালিকাম, ডম–ড্ডম-ড্ডম-ড্ডমন্নি– নাদ-বড্ড–মর্বয়ম,চকার চণ্ড-তাণ্ডবম তনোতু নঃ শিবঃ শিবম ইংরাজীটা খায় না মাথায় মাখে মেমের তিতকুটে বুকে প্রকাশ্যে ইঁট ছুঁড়ে মেরে ফেলা যায় আমার মনে আছে, প্রায় মাস ছয়েক আগে ওনার ল্যাংটা নাচের ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল । নিয়ন বাতিতে সাততারা হোটেল ঘরে তিন তরুণীর সাথে হাতে মদের গ্লাস নিয়ে ন্যাংটো হয়ে জেমস বণ্ডের  সাথে উদ্দাম নাচ  তখনও ওনার দুই কৃষ্ণাঙ্গী প্রেমিকা  আমার বিছানায় ছিল। যৌনাঙ্গেই  চরিত্র থেকে বলে লাফাতে থাকা চরিত্র দেখে ফেলেছিলুম ভবিষ্যৎ উজ্বল কোন শালা এই নিদান দিয়েছে উরিশ্লা কী চিজ ভাই ডম-ডমা-ডম ডম্বরুবডি

পুরাণের বউমাদেরও হার মানায় জয়হোক গুরু

উনষাট

ব্লাউজের স্মৃতিবিজড়িত ফাইল বগলে অফিসে গোটা মুখ জুড়ে ভাঙাচোরা সম্পর্কের বেদনার গন্ধ সাবাশ দাদা অরন্ধনের নিভন্ত আঁচে দুর্ভাগ্যজনক রান্না আচরণের ধারাবাহিকতা লক্ষ্মীপ্যাঁচা না পক্ষীছানা বেশি  বয়সী মেয়েমানুষ খুঁজে বেড়াই পথে-পথে বিবিজানের..হৃৎপিণ্ডে বৃক্ষবীজশাক্ত ধর্মে দীক্ষিত এই লিপস্টিক – উফ্ ! বৃথা।বাহ্ কি মজা গো চামশুটকি তিলেখচ্চর তো বারংবার স্মরণযোগ্য ধন্যবাদ ন্যাকা ন্যাকা প্রশ্নে এভাবে হয়না খুউউউব ভালো  উলঙ্গ করে দেবে ! না না ধুর, বোকা কেউ অতলে ডুব দেয়না তারপর তোমার দ্বারা হবেনা । সে কী শ্যাওলার মতন সবুজ? তার গা ভর্তি সোঁদা গন্ধ! সূর্যের আলো ঝুমঝুম করে বাজে তার মধ্যে, অবসকিওরের মতন? তাকে সি মোর করা যায় নাকি গো ডাকপিয়ন? আগুন কী নিরেট হয় ?

ষাট

তার ভাবনায়,  সবুজ সাপের মতন ঢেউ তুলে দোল খায় সুপুরির বাগান ! কোনো হারামজাদাকে ক্ষমা করব না পুড়তে পুড়তেও বাপ চোদ্দপুরুষকে গুয়ের নদীতে ফেলবো ।  ও ভাই, ও ভাই ! কার দোকানে কম দামে পার্টির মস্তান পাওয়া যাবে, বলুন তো ! ছ্যাঁচড়া এক দেশ নাম তার শনিবক্রি, মাকড় বসতি। রোহিঙ্গারা তো মগ, লুটপাট ছেড়ে উদ্বাস্তু হলে তো জেল হবেই । কী ওয়েদার !  প্রেম প্রেম লাগে। আমি তখন স্নাতক । যুবতীরা নোটস চায়। আহা ! কী দিলে মাইরি ! চাদরে বালিশে লেপে ইনসমনিয়া, প্রেমের কথা মনে হলে মহাশ্মশানের ভৌতিক কোলাহল শুনে ভয়ের ঠ্যালায় কামজ্বর এসে যায়। সাবধানের মার নেই। এরা ডিম পাড়ার মতো কবিতা পাড়ে না কেন ? এক ডিমে দুটি কুসুম। শ্রীকৃষ্ণ ডিমের অমলেট খেতেন না পোচ?

একষট্টি

রণতূর্য; প্রতিধ্বনি প্রভব দুন্দুভি, সাড়া দিল সমস্বরে; চমৎকৃত সুষিরে সুষিরে, আমরা  জঘন্য পরিণতির দিকে রাজনীতিকদের ফলো করছি । তা আমাদের কতখানি পাওয়া ! কি মিষ্টি লাগছে, খুব সুন্দর ছবি, দিদি ! শ্রাদ্ধের ফিরিস্তি নিজের হাতে লিখে গেছেন ঔপন্যাসিক ।‘যোনিকেশরে’ একদিন  মন্থিত হতে পারেন ।   কমরেড বন্ধের দিন সঙ্গম করবেন না মাইনে কাটা যাবে । অযোনিসম্ভূত সারকার বেশ  ইন্টারেস্টিং তো। অধীর অপেক্ষার আগ্রহ থাকলো সুরকার ও গায়ক বাংলা মদ, বিড়ি, বোহেমিয়ান । একেই বলে ধামগুজারি ফেগ্রান্সি। লকড়বাগঘা দেখো, প্রেম পাবে, ভামচওলা যাকে বলে পাক্কা পাটনাইয়া বাঃ! খুব ভালো লাগল। কাজ শুরু হয়নি । ধাক্কাপাড় ধুতি পাওয়া যায়নি গো । 

বাষট্টি

জুতোমেলায় হবে  । অতিব্যস্ত সদাধাবমান পুরুষযাত্রীদের অনেকেই ছুটতে ছুটতেই যুবতীদের স্ট্যাচুগুলোয় মাইতে হাত বুলিয়ে নেন কোনো পীনোন্নত বুকে হাতের ভালোবাসা বেশি উজ্জ্বল! টিকিটের দাম উশুল ।দার্শনিকতা হলো ভয় পাওয়ার আরেকটি উপায় নিছক কাপুরুষতায়  বিশ্বাস করা ছাড়া অন্য কোথাও পৌঁছে দেবে না। প্রি-ওয়েডিং ও পোস্ট-ওয়েডিং কাঠের পুতুলের সাহিত্য উৎসবে নাইট শিফটের শ্মশানে যাবার পালতোলা নৌকো ধৈর্যের বাঁধ কখনো হারানো সময়ে পারলৌকিক হাসি হাসি মুখ করাটা রাত দুটোয় অসম্মানজনক অসম্ভব মিথ্যে বাঙালিয়ানা কেন গো সোনা ভুটভুটি ভেসে  যায় কাক-ডাকা বিকেলে  এত জুসি স্যান্ডুইচ মনে শান্তি নেই তাঁকে কেন সমাহিত করা হবে ? পহলে দর্শনধারী ফির

বডির মাপ বিচারি একেই বলে দর্শনপন্হা ।

তেষট্টি

লোকদেখানো ভুজুংভাজুং কাঁপছি শূন্য জ্বরে সুখ কী? সুখ হচ্ছে সবচাইতে উদাসীন মৌচাক। আর কষ্টের কথা বলি যদি, কষ্ট দেয়ার বা পাবার জন্য সুখের গভীরতর পরিমাপের আকাঙ্খা দরজার সামনে মূর্তির মত দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়। এটুকুই  জীবন। একরত্তি কম বা বেশি নয়। আন্তর্নক্ষত্রলোক বিনিময়যোগ্য মদের সাথে পকোড়া থেকেই সত্য কাহারে কয় তা মগজ বলে না । যৌবনে কোনো নগ্ন যুবতীকে জড়িয়ে ধরো দেহের নির্দেশ পাবে আজ বড়ো নোনতা সংসারের উৎসন্নে যাবার জন্য  ছায়া হাতড়ে গড়া মেয়েমানুষ কিন্তু খোঁপা খুলে চুলে মুখ গুঁজে আনন্দ বাড়িয়ে তোলে হ্যালো মরণজেঠু মন্দিরে গিয়ে আপনি হিন্দু হয়ে যান আর গ্যারেজে গিয়ে মার্সিডিজ বেঞ্জ ! নদীতে গেলে কুমির হন না?

চৌষট্টি

নিপীড়ন চলছে চলবে । হেভেওয়েটদের ভর সইবার মতো নাগরিকদের অভাব ।  নেপথ্যে ফেরারিদের ওঠা বসা আর ভাবনা । সম্ভব হলে তা আলো দেয় সুকুঞ্চিত কেশে রাই বাঁধিয়া কবরী, কুন্তলে বুকলমালা গুঞ্জরে ভ্রমরী। নাসার বেশর দোলে মারুত-হিল্লোলে, নবীন কোকিলা যেন আধ-আধ বোলে। আবেশে সখীর অঙ্গে অঙ্গ হেলাইয়া বৃন্দাবনে প্রবেশিল শ্যাম জয় দিয়া ।  এর জন্য গায়ে হলুদের ট্রেগুলো দরকার – যোগাড় করতে না পারলে যে জীবন দুঃখের তা দুঃখেই তলিয়ে থাকে। জীবনের আনন্দ তখন কিসে? বঁধুর পীরিতি আরতি দেখিয়া, মোর মনে হেন করে, কলঙ্কের ডালি মাথার করিয়া, অনল ভেজাই ঘরে। ব্রহ্মাণ্ড ব্যাপিয়া আছয়ে যে জন, কেহ না জানয়ে তারে। প্রেমের আরতি যে জন জানয়ে সেই সে চিনিতে পারে। আমি পারিনি কেন?

পঁয়ষট্টি

বিশ্বধৃক্ ত্বঞ্চ রসনামানদণ্ডধৃক্  দেখে সেই আনন্দের উৎস খুঁজি। আচ্ছা, গল্প না বাস্তবতা, বাস্তবতা নাকি কল্পনা, কল্পগন্ধম তার শেষ হয়ে গেছে খাওয়া  আমি ভয়ে, আর শীৎকারে ডেকে উঠি, হেঁই মারো মারো টান, হেঁইয়ো।  যম পালালো নিজের কালো মোষটাকে নিয়ে  আপনি এই সূক্ষ অনুভূতির ছোঁয়ার যে মাদকতার  প্রচুর শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে যা বর্তমানে বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের মতে অশ্লীল, বৃত্তে এই জাতীয় শব্দ রয়েছে গতানুগতিক চিন্তাধারা, আরবি সাম্রাজ্যবাদ এর বীক্ষা হলো পুরুষ “দেয়” নারী “নেয়” তার মন্তর শুনুন ওঁ ব্রাং ব্রীং ব্রৌং সঃ মলয়ং নমঃ ওঁ এং স্ত্রীং শ্রীং মলয়ঃ নমঃ ওঁ হ্রাং কোং 

তাই ওনারা বলেছেন গণিমতের মাল লুটেপুটে খাও চিন্তাভাবনা এবং ধারণাগুলি প্রকাশের অনুমতির বিভ্রাট ঘটলেও তিনি তা অবগত নন এমনটা না 

ছেষট্টি

ডিডোর প্রেমে সাড়া দেয় ঈনিয়াস। উনি পূর্বপুরুষ ও সহযোদ্ধাদের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, মরিচঝাঁপিতে তাঁদের নতুন বসতি গড়ার জন্য। কিন্তু ঈনিয়াসের প্রস্থান মেনে নিতে পারে না ডিডো। ঈনিয়াসের ফেলে যাওয়া তলোয়ার দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। কোনো পেনিট্রেটিভ পাওয়ার পুরুষত্বের প্রতীক সেটা লাঙল দিয়ে দৈনন্দিন ব্যবহারে লেখক এই শব্দগুলি ব্যবহার করেছেন কারণ তিনি বিশ্বাস করেছিলেন ; সন্ন্যাস নেওয়ার পরে বৈরাগী ধরার স্টেজে আছি।  এটা অসুর না হয়ে গ্ৰীক দেবতা হয়ে গেছে তাঁর চিত্রায়নের জন্য তাদের চরিত্রের প্রয়োজন ছিল। জনগণ এই জাতীয় কথা বলে– প্রয়োজন হয় না এবং অন্যরা আরও স্বচ্ছ হতে পারে, ভাল স্বাদের জন্য …তারপর আমরা একদিন সেই পুরোনো মানুষটার ডাক নামে নতুন কাউকে  বাকস্বাধীনতার কি কোনও স্বাধীনতা থাকতে হবে যদি একজন সত্যিকারের দানব রাতের বেলা আসে 

সাতষট্টি

দেখা দে মা কোতোয়ালির রাইফেলঘরে দেখা দে দেখা দে পদ্ধতিগুলো শুরু থেকেই জটিল। মানুষ ভূমিষ্ঠ হয় না কেবল জানোয়াররা হয় বউয়ের দিকে পশুরা চেয়েও দেখে না, আঁচলের এক কোনা ভাল্লাগে দেখতে বন্যায় বাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে শহরকে খেয়ে ফেলছে আগ্নেয়গিরি বোমায় ছিৎরে যাচ্ছে শখানেক মানুষের হাড়মাংসের টুকরোটাকরা দাঁতে কক্ষনো না, চলচ্চিত্র নির্মাতা এখন হোটেলবয়। আমার চিরযুবক প্রেমিক মলয় রায়চৌধুরীকে অনেক আদর, প্রনাম শ্রদ্ধা।লাভ ইউ। কোথায় যে ছিটকে পড়তাম কে জানে! তখন গাড়ি উল্টে যেত। ঘটনার কথা মনে পড়ে যায় এমন কঠিন সত্য কথা তুমি কেমন করে বললে, লাবণ্য ? আবার কোনও প্রোপজাল পেয়েছো নাকি বুদ্ধদেব বসুর কাছ থেকে 

আটষট্টি

স্কুল-ব্যাগে খুব যত্ন করে লুকিয়ে রাখত শুঁয়োপোকা। দেরিদা বলেছেন, হাইমেন বিভ্রান্তিও নয়, পার্থক্যও নয়, পরিচয়ও নয়, বিভেদও নয়, পরিপূর্ণতাও নয় কুমারীত্বও নয়, ঘোমটাও নয়, উন্মোচনও নয়, ভিতরেও নয় বাইরেও নয়। ড্রইংরুম টি বেশ, ভালো লাগলো ; ফুটে একটা টুল পেতে চা বিক্রি করুন, কাজে লজ্জা নেই, বেকার হয়ে থাকা এই কারণেই আমি ষাঁড় হতে হতেও আল্টিমেটলি বাঘ; গুজবমারানিদের কথা শুনুন! পরচর্চা কী পাপ নয়?  কার্ত্তিকেয়ং মহাভাগং ময়ুরোপরিসংস্থিতম্। কেবল নোলা থাকলেই হবে? এ ঘোর রজনী মেঘের ঘটা, কেমনে আইলা বাটে? তপ্তকাঞ্চনবর্ণাভং শক্তিহস্তং বরপ্রদম্। আমরা যা হওয়ার ভান করি,  আমরা আসলে তাই, সেই জন্য আমরা যা হওয়ার ভান করি সে সম্পর্কে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে।

উনসত্তর

প্রেম একটি উদ্বাস্তু কলোনি। এখন বোল্ড চলছে। এর পর কিছু কিছু রান আউটও হবে। দ্বিভুজং শক্রহন্তারং নানালঙ্কারভূষিতম্। আমার খুব জ্বলে যখন তুই প্রসন্নবদনং দেবং কুমারং পুত্রদায়কম্।কি যে করি, দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে আধঘন্টা মানুষের সাথে মানুষ কবির সাথে কবি শেষ সময়েও আমরা থাকবো একই কলোনিতে চোখের নীরবতার ভাষা কেউ পড়েনি। বুঝতেও চায় নি।বাহঃ  তারা শুধুই বিস্ফারিত চোখে দেখছিল, ওনার সামুদ্রিক স্তনযুগল আর ভাবছিল, উফ্ আর একটু, আর একটু প্লিজ । মাতালদের  ভাঁটিশালায় বীণাপাণি হিন্দিতে কথা বলছেন পুরুতমশায় শ্রাদ্ধের মন্ত্র পড়ছেন বিয়ের সময়

সত্তর

 মাকালীকে কেউ বা আবার  ভেবেছেন, এত কালো বুক ! ইয়ে বলছিলাম কি, পুজো এসে গেলো আমি এখনও উইন্ডো শপিং এ আটকে আছি এ সমাজ কি আমায় মেনে নেবে ? মিষ্টি খাওয়ার সুযোগ দাও নি তার পরেও তোমার ঘুম পায়? ধন্য তুমি ! হু হু দাদা, মৃত্যুকে ভয় করিসনি কেন রে ? তোকে কে বলেছে চিরকাল বাঁচতে হবে ? পাগলরা ছাড়া আর কেউ পৃথিবীকে বদলাতে পারে না কেন জানিস ? ওরা মগজ নিয়ে জন্মায় না ; জন্মাবার সময়ে ওদের পা প্রথমে বেরোয় । ইডিয়ট পাবলিকদের প্রথমে মাথা বেরোয় । আপনি আবার জানতে চাইবেন না যেন মানুষ কোথা থেকে বেরোয় । আপনার কি স্মৃতি বিপর্যয় ঘটেছে যে কোথা থেকে বেরোলেন ভুলে মেরে দিয়েছেন ? চটি চাটেন না জুতো ?

একাত্তর

শ্বাস বন্ধ হবার উপক্রম দুদিকে ধার দেওয়া তলোয়ার তব ঘৃণা তারে যেন তৃণ সম দহে অবলীলায় ওই মুখরোচক গুজব পায়রা ওড়াবে, বাজি পোড়াবে, বাঈজি নাচাবে কাব্যে ফাটাস চাপা চোপা প্লাতেরো নামের সেই গাধাটার মাংস খুবলে খেয়ে বিয়া না হইলে বাচ্চা হইবোনা ক্যান? আনন্দ ছিল গলিত জোনাকি পোকায় গালের চামড়া কুঁচকে গেছে, চোখের তলায় কালি এই প্রকল্পের আওতাধীন আর একটু ভাত দিই ঘুরে বেড়ায় গোটা জীবন শ্যামল শ্যাওলা ও গেঁড়ি ও গুগলি দরজা বন্ধ করে যাও না কেন? মেরুদণ্ডী প্রাণী থেকে অমেরুদণ্ডী প্রাণীর তনয়া পরের ধন না বুঝিয়া বুঝে মন

হায় হায়, একি বিড়ম্বনা বিধাতার। কারারক্ষীর সাথে ভারতচন্দ্রের ভালো সম্পর্ক ছিলো। কৌশলে অল্প কিছু দিন পরেই কারাগার থেকে পালিয়ে যান।

বাহাত্তর

সবচেয়ে কর্তৃত্বপ্রধান হলো বিপ্লব নাটুকে কবিতা, গান লিখবেন । তোমারে একটা কথা জিগাই গিলা করা পাঞ্জাবী খুলে দেখেছো বুকে তোমার নাম লেখা ওগো কতো কতো ঢেউ সরল গরলে, বটছায়া ঘেষে কান্না জলের মতো স্মৃতি, একরোখা পূর্ণিমা, তার পাশে ছায়া গড়ায়  এ গড়ানোর সাথে মার্বেল সাদৃশ্য নেই, চোখ আঁকা থাকেনা  অনেকটা ফেঁসে যাওয়া চাকা, পাংচার গোবেচারা সাইকেলের মতন ঘষটে যাওয়া  ম্যাড়মেড়ে। বিষবৃক্ষ না পেলে পর্যাপ্ত আপেলের বীজ থেতো করে নিতে হয়। তাতে  সায়ানাইড আশানুরূপ, মায়া মায়া মরণ। যেন যত্নে এঁকে রাখা এক কালো বেড়ালের মৃত্যু। সাদা এপ্রন পরে যে ডাক্তার চশমার ফাঁক গলে কবিতা আঁকে সে কী এমন স্লো পয়জন বুঝতে পারেন পালস চিপে ধরে ? দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া ল্যাম্পপোস্টের কাজ হলো প্রেমিক-প্রেমিকার জন্য শীতের আলো দেয়া। 

তিয়াত্তর

যাই হোক না কেন, আপনি মাঝে জীবনে তালগোল পাকিয়ে নেন, এটি একটি সর্বজনীন সত্য।  ভাল ব্যাপার হলো আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে আপনি কীভাবে জীবনকে এলোমেলো করবেন 

মাঝেমধ্যে ধুতুরা কেলেও কী শান্তিভাব আসে !  যেমন অনেকটা কাশেরবনে জড়িয়ে থাকা যুবতীর ফেলে যাওয়া আঁচল ।  যেন অগ্নিনৃত্য, যেন জোনাকতাণ্ডব, যেন চোরকাঁটা ফুটে থাকা চোরের মাঝরাতের উল্লাস। জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রা কালী কপালিনী, দূর্গা শিবা সমাধ্যার্তী সাহা সুধা নমস্তুতে। মনসা দেবী অনার্য হলেও সাংস্কৃতিক ডামাডোলের যুগে তাঁর আর্যীকরণ করা হয়। যদিও তাতে বাংলার লোকজ কৃষ্টিকালচার পিছু ছাড়েনি। সেই সময়ের গ্রাম বাংলার আর্থসামাজিক রাজনৈতিক চিত্র জানতে এই কাব্যের গুরুত্ব আছে বৈকি।

চুয়াত্তর

কী কথা তাহার সাথে, ঢেঁড়শের  সাথে? কারা এই প্রণম্য ঢেঁড়শ ? মহানন্দ নামে এ কাছারিধামে

আছেন এক কর্মচারী, ধরিয়া লেখনী লেখেন পত্রখানি, সদা ঘাড় হেঁট করি। অহন হরিণশিশু পাইবেন কই ? হাতে বাংলা মদের খাম্বা বোতল  ঠোঁটে তামুক পাতার বিড়ি। নাই খাজা তো বগল বাজা ।  আসামি দেশের বাইরে মারা গেছে শুধু নায়িকারা বিছানা  ভিজিয়েছে তা নয় সাব্বাশ এই সমাজ কি সাম্যবাদ মেনে নেবে ? চারু মজুমদার দেখে যেতে পারলেন না চীনের সাম্রাজ্যবাদ ! যৌন পিপাসা শৃঙ্গারের সৌন্দর্য নিলে ডানা মেলে উড়াল দেবার পালা । চকা রেগে উত্তর দিলে,  উড়তে না পারে ঘরে যাক,  খাক-দাক বসে থাক।  কে বলেছে উড়তে ওরে,  ভিড়তে দলে রঙ্গ করে? বাংলাদেশে তাঁর বাড়ি নয়। তিনি পাংশুপুরের রাজা। সংসার বাবু তাঁরি সংসারে কাজ করেন।  ঝুড়িতে আছে পালং শাক, পিড়িং শাক, ট্যাংরা মাছ, চিংড়ি ।

পঁচাত্তর

এর চাইতে একটু প্রেম করলেও কাজে দিতো বেদ্দপের দল! একদম সত্যি কথা ; গভীর তন্ত্রীতে টান দিলে গো মামণি । পুত্র সন্তানকে এখন ডাইনি আন্টির অধীনে ছাড়া যাবে না শুধু ইনারলাইন পারমিট নয়,রাত্রি যাপনের জন্য রেজিস্ট্রিও করতে হবে। মাভৈ বলো হরি হরি বোল বেশীর ভাগই স্বার্থের প্রেম। রাজকুমার জঙ্গলে হাঁটতে থাকে। এসময় তার এক জানগুরুর সাথে দেখা হয় ধাঁধার উত্তর দিয়ে সে একটা করপোরেট ম্যাজিক কার্পেটে চেপে  পৌছে যায় ডাইনির স্টক এক্সচেঞ্জে একবার ষাঁড় জিতছে তো আরেকবার ভাল্লুক সাধের ছুন দোতারা অল্প বয়সে মোরে করলি ঘর ছাড়া ছুন ব্রহ্মাধরশ্চতুর্বক্রশ্চতুর্ভুজঃ। সরকার পরিচালনায় থাকা দলগুলো বিভিন্ন সংগঠন,ব্যবসায়িক ও অন্য সুবিধাভোগী যেমন ট্রেড ইউনিয়নগুলোর জামাই। 

ছিয়াত্তর

কদাচিৎরক্তকমলে হংসারূঢ়ঃ কদাচন।ছুন ছুন ছুন  লাউ এর আগা খাইলাম ডোগা গো খাইলাম জেঠা বাজার করে ফিরলে জিলিপি-লুচির ডুয়েট গানে হরিল্লুটের বাতাসা একজন প্রফেটকে আনতো বর্ণেন রক্তগৌরাঙ্গঃ প্রাংশুস্তুঙ্গাঙ্গ উন্নতঃ সাধের ময়না দুটো কৃষ্ণ কথা বল দুটো হরির কথা বল। কমণ্ডলুর্বামকরে স্রুবো হস্তে তু দক্ষিণে।হায় রে! ক্যাডার ছিল তারা সেই লাল বসন ফেলে দিয়ে গেরুয়া বসন পরিধান করে মুমূর্ষু পাখির অস্থির জীবন যুদ্ধ। পাওলি দামের ছত্রাকের সেই লিক হয়ে যাওয়া ভিডিওর কথা মনে আছে?  দক্ষিণাধস্তথা মালা বামাধশ্চ তথা স্রুবঃ। পর-কে আপন ভেবে রে তুই বাঁধলি সুখের ঘর  দোয়েলে তোর পোরম আপন  আর তো সোবি পোর অন্তিম কালে হরি বলে ডাকরে 

জাবি যেদিন  সোশান ঘাটে বাঁশের দোলায় চড়ে ।

সাতাত্তর

তোরে দেখি ফরসা ফরসা লাগতাছে। রহস্য কি? মনারে, চারি ডাকাইত মিলি করিল লুণ্ঠন লালিমা পাল, ব্রাকেটে পুং দের তো দেখেনই,এখন মাও সে তুং কেও দেখা হলো রাজপন্থে বসি এবে জুড়িছ কান্দন। । নোয়াখালীতে আর নোয়াখাইল্লা নাই। সব চেইঞ্জ  হয়ে গেছে সাবিত্রী বামপার্শ্বস্থা দক্ষিণস্থা সরস্বতী। নাসর্বে চ ঋষয়োহ্যগ্রে কুর্যাদেভিশ্চ চিন্তনম।  ডুবাইলি রে, আমায় ভাসাইলি রে। লাও ঠ্যালা। ধুস ! শহরের ভুঁইফোঁড় বাবুয়ানির  শুভেচ্ছা রইলো বিশেষ ছাড় নাফা সর্বস্ব সমাজ জেঠু-দাদুদের সেনাইল টাকাকড়ি আর ভুঁইফোড় নাতি-নাতনি শ্রী গুরু চরণ সরোজ রজ নিজমন মুকুর সুধারি, বরণৌ রঘুবর বিমলয়শ জো দায়ক ফলচারি । বুদ্ধিহীন তনুজানিকৈ সুমিরৌ পবন কুমার । বল বুদ্ধি বিদ্যা দেহু মোহি হরহু কলেশ বিকার ।

আটাত্তর

অষ্ট আঙুল বাঁশের বাঁশি, মধ্যে মধ্যে ছেঁদা শুঁটকি মাছের পুষ্টিগুণ নাম ধরিয়া বাজায় বাঁশি, কলঙ্কিনী রাধা রুপ দেখিয়া ঘুম আসে না ইলিশ মাছের কাটা ভালো চিংড়ি মাছের টক শিবের প্রেমলিঙ্গে কিলো কিলো পনির মাখানো চারশো টাকায় কিনবে সাধুরা গিলবে গবাগব সাথে কিছু হাহাকার, তোর কচি পোনা বেচেবেচে হাটে বেচা হবে গো মরণোত্তর কাব্যদানে অঙ্গীকারবদ্ধ হোন কারো দিকে নজর লাগাস না খাঁটি পীরের মুরিদ হলে যমে তারে সালাম দেয় পাঁচ শনি পায় মীনে শকুনি মাংস না খায় ঘৃণে। তুই ভেটকাস ক্যান? আন্তরিক ভালোবাসা জানালাম। ক্ষেপি, মনটাকে সামলে রাখ  তুই তো বলিস জোরে কেঁদে নিলে চোখ ভালো হয়ে যায়, অন্তরে আজ দেখব, যখন আলোক নাহি রে । এখন তোমার আপন আলোয় তোমায় চাহি রে ।

উনআশি

গুমরে থাকিস না প্লিজ দাঁত ক্যালানো দেখে হেব্বি খচে গেছিলাম ব্যথার অভিজ্ঞতাগুলি সম্পূর্ণরূপে শারীরিক তোর মানসিক অবস্থা  ব্যথার অনুভূতিকে প্রভাবিত করে, নেতিবাচক, বিশেষত  অবস্থার তীব্রতা আরও ভাল হওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কিত আপনার নেতিবাচক চিন্তাভাবনা, খতিয়ে দেখছিলাম তোর এতো দুঃখ পায় কেন মেয়েদের দেখে আলোচনা কি কেবল রবীন্দ্রনাথ নিয়ে ? দূরঙ্গমং জ্যোতিষাং জ্যোতিরেকং তন্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু । ওঁ অস্য সঙ্কল্পিতার্থস্য সিদ্ধিরস্তু। ওঁ অয়মারম্ভ শুভায় ভবতু। সাধু সাধু !  পরস্ত্রী কাতরতায় যেটা আমি অলরেডি করে নিয়েছি  বেশিরভাগই স্বাদু আপনাদের মুখগুলো কমোড হবারও যোগ্য নয় । আমার মতন এমন জগৎশেঠ ফতেহচাঁদ কু-মনা, অর্থলোভী, লবঙ্গলতিকা বেয়াদব কবিতা মেরামত কোম্পানি লিমিটেড গ্রাম বাংলাকে তুমি নতুন করে চেনাবে লোকের ডাকাতির লাইসেন্স দিল কে হ্যাপি ছটপুজো বাঁটুল দি গ্রেটেস্ট বা হাঁদা-ভোঁদাও জানে ভাই। 

আশি

প্রেম স্বাধীন মাংসের ফাঁদ । শরীর গেলেই শেষ ? গুড়গুড় গুড়গুড় , ঢিসুউমমমমমমম দুগ্গা দুগ্গা বাথরুমে কেউ আছে ? শুরু হয়েছে পুজোর জায়গার দখলদারি। কৌতুকাভিনয়ের তাম্রযুগ চলছে চলবে ২১০০ পর্যন্ত আরে ছি ছি,এরকম বলিসনি সূর্যটা ডুবলো কী রাতে ? মাথাখারাপ আমার অপরাধপ্রবণতা‌ চোখের পাতা ভিজিয়ে দিলে মাম্মি বলত পল্লী গানের আসরে না গেলে  হুরিপরি মিলবে না তৈমুর বংশে এ ঘটনা নতুন কিছু নয় স্বাধীনতা তুমি কাজী নজরুল, ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো মহান পুরুষ বেবি বেবি হবি কি আমার হাবিবি? বেবি বেবি হবি কি আমার হাবিবি? বেবি বেবি হবি কি আমার হাবিবি?

বেবি বেবি হবি কি আমার হাবিবি ? কবে হবি  আমার হাবিবি? কবে হবি কি আমার হাবিবি?

একাশি

বর্ণচোরা আম, মারণ, উচাটন, স্তম্ভন, পঞ্চমকার সাধনা বাদ দিয়ে কবিতা হয় না রে খোকা আমার কথা মনে এলে রুমাল খুলে দেখিও।  উত্তরপ্রদেশে যাকে বলে সেনাহা, সব মনখারাপের কান্না আসেনা, কিছু কিছু মনখারাপে বোবা হয়ে যেতে ইচ্ছে করে বিহারে তাকেই বলে অরিপন, ওড়িশায় ঝঙ্গতী, হা হা হা। হাসলাম, তবুও ভীষণ সত্যি মধ্যভারতে মণ্ডন,  হিমাচল আর হরিয়ানায় লিখনুয়া ,তখন আপনাকে দারুণ লাগতো, আকর্ষণ করতে চুল চোখের কম্বিনেশনে গুজরাটে সাখিয়া, নিপুণ বুনো চালচলন । লাল সেলাম কমরেড,তারপর জড়িয়ে ধরে চুমু খাই আবার কবে আপনারা আসবেন রেড বুক আনতে ভুলবেন না, চীনে আর ছাপা হয় না। গ্রেট লিপ ফরোয়ার্ড নীতি একদম জিরো নম্বরে । 

বিরাশি

আপনার আলুলায়িত চুলে নাক ঘষি আমি আমার ভয়ের সম্মুখীন হবো। আমি একে আমার ওপর আর আমার মধ্য  যেতে দেব।  যখন এটা চলে যাবে তখন আমি দেখতে চাই ভয় কোন রাস্তা দিয়ে গেছে কিছু ফেলে গেছে কিনা । কেননা প্রেমের বিপরীত  উদাসীনতা। শিল্পের বিপরীত উদাসীনতা। বিশ্বাসের বিপরীত  উদাসীনতা।  জীবনের বিপরীত মৃত্যু নয়,  উদাসীনতা। আমি তাই সারাজীবন উদাসীন হয়ে কাটিয়ে দিলুম গো পুকুরে একশো কিলোর কাতলা মাছ সারাদিন উদাসীন সাঁতরে বেড়ায় একজন নামকরা কবি কচি-কচি কবিদের উদাসীন সঙ্গম করে যাতে ওনার শীঘ্রপতনের সঙ্গে তাদের ছন্দপতন না হয় ওরা ভয়ের রাস্তায় কুলুপ এঁটে কালীদাসের কাটা গাছের ডাল তুলে নিয়ে যায়।

তিরাশি

অসাধারণ! রুহানি নামের মেয়েদের মন বড় হয়েও শিশুদের মত ক্যাবলা থাকে। বাবা মা কাছে না থাকলে কেঁদে বর্ষাকালের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখে । রুহানি নামের মেয়েরা কাফেরদের পছন্দ করে । ভালোবাসা এদের ওপর গজব প্রভাব ফ্যালে যাতে একসঙ্গে কয়েকজনের সঙ্গে রিলেশানশিপে দাপাদাপি করে । তবে এখন যাঁরা এমন কম্ম করছেন, তাঁরা কেউ নবীন যুবতী নন ;ওই চলছে, যেমন দেশ তেমন সন্দেশ রুহের হায় বলে একটা কথা আছে এক সময় না এক সময় লাগবেই কি থাপ্পড়  খুব খুব মনের কথা বলেছ গো ওনারে দেশে দাওয়াত দেন স্যানিটারি ন্যাপকিন ফ্রি যোনি দর্শনে সারাজীবনের সৌভাগ্য থ্যাংক ইউ  আমার প্রথম প্রেমের কথা মনে পড়ে গেলো স্যার, কিলাইয়া হোতাইলে যেই কথা, হোতাইয়া কিলাইলে একই কথা শোভাযাত্রায় হিজড়েরা নাচে মৈথুন চেতনায়  ভরা জ্ঞান দিয়ে কী হবে যখন জগৎ চুম্বকের নিয়মে চলে

চুরাশি

চোখে দেখো না? অবশ্য তুমি তো হিজড়ে ছাড়া চেয়ে দ্যাখোই না ! গো-পরব। ঐতিহ্য। পরম্পরা। গরুর পিঠে ছাপ দেওয়া হয়, স্নান করিয়ে। যৌবন কালের লেখা। তখন কমিনিউষ্ট ছিলাম। পার্টির হোলটাইমার । দেখি একটা কলস ভরা লোভ উপুড় হয়েছে ।  ভাইফোঁটার আগের দিন হয় এই পরব। ষাঁড়ের শিঙে লাল রঙ দেওয়া হয়। একজন কমরেড পিঠে বসেন  আর ভোট দিতে যান। বলি জিও বেটা, জিও গভীর শান্তির অনুভব হলো । জয় মা! নারী-ভোটার বশীকরন টোটকা ষাঁড়ের পায়ের কাছে ঝোলে । দ্রুত ফল দানকারী যেমন কোন মন্ত্র বা তন্ত্র প্র্য়োগ করলে একাশি দিনের সাধনা সফল। শিরক দুই প্রকার । এক. শিরকে জলি । দুই. শিরক খফি। ও দেহা তুরুত তুরুত । ওয়ামিং কুল্লি দা-ঈই ইয়াশফীক। ওম শঙ্খম চক্রম জলুকমদধাদ অমৃত।

পঁচাশি

 সুখ পরী বিলাসনম্ । মৌলিম আমজোজা নেট্রামকালাম ভোডোজো ভালংম কতি তাত বিলাশনচারু পিটম বড়ধামভন্দে ধনবন্তরিম তম নিখিলা গদা ভনমপ্রুধা দাবাগনি লিলাম ওয়ামিং শাররি হাসিদিন ইযা-হাসাদ। ওয়া শাররি কুল্লিযি আঈন । এই সময় বাউল সাধক পরীর গলায় গোলাপ ফুলের মালা দেবে। পরী মালা স্বীকার করলে সাধকের বশীভূত হবে । সাধকের আদেশ অনুসারে কাজ করবে।  মন ঠিক রেখে, ধৈর্য্যশীল থেকে বাউল সাধককে কাজ করতে হবে।তোর চেহারা দেখলে তোকে কচি মনে হয় ঠিক কিন্তু মাথায় তাকালে আংকেলই মনে হয় ।কথা কিলিয়ার কোন ভেজাল নাই । আমি কর্ম তে বিশ্বাস রাখি, টিট ফর ট্যাট,  অন্ধ ও নেশাগ্রস্ত মানুষ যাদের চারটে হাত থাকে তারাই  এদের শক্তির উৎস

ছিয়াশি

মানুষের চোখসহা ছিলো ! বাটিচালা জলপড়া বৈধ। আপত্তিকর নয়। একদিন বোলতার ঘরটা নজরে পড়ে গেল বাড়ির লোকজনের। তারা তখনই ঠিক করলো ঘরটা ভেঙে দিতে হবে। বোলতাকে  বিশ্বাস করলে পূণ্য হয় কেঁচোকে বিশ্বাস করলে স্বর্গলাভ নিশ্চিত কেননা বোলতারা কবিতাও লিখতে পারে। কবে শিখলো গো ? আমার জ্বর বাড়লে পুরো শহর ছারখার হয় বলে মেয়েটার লহুলিহান লাশ খাটের তলায় গুঁজড়ে দিই চোখের মণিতে সেই মেয়েমানুষ বলেছিল কেন চলুন পালাই বলতে তো পারতিস ভালোবাসি চল্লো ভাগমভাগ কেটে পড়ি তুই তো সারা গায়ে শুক্ররস মেখে কোটি সন্তানদের মাম্মি আজি এসেছি, আজি এসেছি, এসেছি বঁধু হে নিয়ে এই হাসি, রূপ, গান; আজি আমার যা কিছু আছে, এনেছি তোমার কাছে, তোমায় করিতে সব দান।। 

সাতাশি

উড়িয়েছিলিস তাই বলে শ্রেষ্ঠত্বের প্রত্যয়ই  পশ্বাচার, বীরাচার পেরিয়ে ক্ষমতা থাকলে শুধু নিজের কাজে লাগাও ফড়িং সেজে মানুষ কাঁদে না সর্বনাশ হয়ে গেছে ওগুলো কুমীরমুখো স্তাবক আমার মাকে সারা জীবন কুড়িজনের সংসারে চাকরানির খাটুনি খাটতে হয়েছিল তবু বাড়ির বাইরে ল্যাংটো রক্তমাখা এই ছুরি কেন  রাগ পুষে রাখতে হয় নয়তো কীসের মানুষ ক্রোধ ফাটা মাথা নিয়ে ধ্বংসের স্তূপে বসে গলা টিপে ক্যাওড়া দলে সপাটে কেলেঙ্কারি লাগাটা বেড়ে যায় বাহ ! বাহ ! বৈধ না অবৈধ কোন বেবাক মরদানগির আওতায় লুচ্চাদের লজ্জা দুরকম মনের আর দেহের  মোক্ষম অস্ত্র মাননীয় প্রেমের ভাটিখানা থেকে বুকে ভুঁকে দাও  তারুণ্যমেলায় বমচিকাবম দে রদ্দা কানের পাশে খিঁচকে রঙ্গভরা বঙ্গলোকের সরল মিষ্টি হাসির পাকাপাকি শক থেরাপি কোলে বসতে চায় সবুজ 

অষ্টআশি

মরীচিকা হতবাক খিল্লির গুঞ্জরণ ছিল গাড়ি থেকে নেমেছি আর জ্যাম  উদ্বেগাকুল বসে-বসে মাথায় টাক পড়ে গেল হে সারাজীবন একই বাড়িতে থাকলে  পড়শিরা মাথায় হাগবে কেননা গোরুদের  একবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় যে ষাঁড় শ্রেণীর কোন বিশেষ প্রতিনিধি তাদের প্রতিনিধিত্ব করবে আর যৌবনের বন্ধুদের মতন বাঁশ করবে দাও হুড়কো হুমহুনা   এই মেয়েমানুষ অ্যাসিড খেয়ে মরেছিলিস কেন বলতে তো পারতিস ভালোবাসি তোকে ভালোবাসি বিকল্প যুবতী পাসনি বলে ব্যাপারটাকে মনে করছিস প্রেম আমাদের সৌভাগ্য যে অন্যদের ঘেন্না করার মতন আনন্দ হয় না খসে পড়া জিভগুলো পড়ে আছে মাঝ রাস্তায় রাতের রস চেটেছিল তারা রীতিমতো জীবন্ত মহীরুহ আমার ঘাড়ে একুশটা মাথা চিরকাল  যতো ভাবে ততো মরে বাথরুমের দেয়ালে লিখে রাখে

উননব্বই

তীব্র ধিক্কার পরিণতি যে যৌবনের বন্ধুরা জোচ্চোর পকেটমার মিথ্যাবাদী হবেই যতোই উপকার করো হায় পৃথিবীর সমস্ত সঙ্গীতযন্ত্র থেকে রক্ত ঝরে পড়ছে ভালবাসায় সে কেন ঝাড়া বিছানায় শুয়ে শুয়ে প্রেমিকার পুরোনো প্রেমপত্র পড়ছিল তার হাত থেকে আত্মঘাতী লাল সেলাম কমরেড  বুদ্ধিজীবী আর রসগোল্লার ফারাক  মগজ অপারেশনের  সময় করোটি খুলে রাখা  অপারেশনের পরেও নজর রাখার  জন্য অনেক দিন  যা ছবি আঁকতে সাহায্য করে তিনি যখন লেখেন এক অজানিত ঘাগরাচোলি শরীর জুড়ে নুপুরের মতন কিন্নরে বাজে ঝুম বরাবর আর তিনি যেমন অভিমান, হায় অভিযোগ, মা, তুমি আমায় কঙ্কালরূপে জন্ম দিলে না কেন তোমাকে দেখার বাহানা মৃত্যুর সময়ে তোমাকে নতুন শাড়ি পরিয়েছিলুম লাল রঙের 

নব্বই

আমাকে দাহ করার সময়ে যে গানটা শুনবো তা মুদ্দোফরাসকে বলে রেখেছি নতুন ভর্তি হইলেন নাকি, সেলিম ভাই? ধ্যাৎ অবস্থা তো ক্ষত-বিক্ষত লালনীল বহুবিচিত্র হোমিওপ্যাথি ওষুধ প্রতিবন্ধকতাযুক্ত হিজড়ে কতোটা গুরুত্বপূর্ণ যে মেয়ে গর্ভসঞ্চারের ভয়ে মরে সে প্রেমিকা হবার অযোগ্য গিরগিটিপ্রতিম প্রেমিক ব্যাটা আরিব্বাস নুপুর বাজছে সামুদ্রিক ইবাদত কী কী হেরিলাম চক্ষু মুদিয়া তাল ঠুকিয়া উউউম্মম্মাহহহ এই মেয়েমানুষ বলেছিলিস কেন তোর ইউটেরাস নেই বলতে তো পারতিস ভালোবাসি তোমাকে ভালোবাসি কবিই জানে যে ভাষা হলো প্রাণীর বিকার ভদ্দরলোক দেখলেই তার সামনে পাগলের মতন নাচুন যেন পোঁদে ঘা হিংসাশ্রয়ী ভালোবাসায় নীল ছন্দ  চেতনার রঙে আলোকিত পাড়ার ছিঁচকে মাস্তান সব কয়টা দেশে গাধারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ জিতলেই খচ্চর

একানব্বই

পালটে যায় জয় জওয়ানি এটা কি সত্যি? ছেলে যখন পেন্সিল চিবোতো কুঞ্জবনের বাঘ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে খরপরশা নূপুরের মহিমায় স্বরচিত নিমডাল ভেঙে গভীরভাবে বগলদাবা করে ল্যাজ নাড়ানোর ধরন ধারনের আভাসটুকু নেই এক জঘন্য ও ভাষাহীন স্বীকারে দ্বিধা নেই তো কান্নাকাটি করলে শাড়ি পরা কমে গেছে গুণবাচক চাঁদ উঠলে অনৈসর্গিক জগৎ সিদ্ধ করে খাবো ঘণ্টাধ্বনি শান্তি বজায় রেখেই মাগি আমাক লেপের নিচে শুইয়ে রেখে কন্ডোম কিনতে গেছে, আবার চুমু খাবার জন্য আমাকে ফোলানো বেলুন দিয়েছে গলায় ঝুলিয়েছে তন্দ্রাহরণের তাবিজ-তুবিজ বাঘনখে তৈরি শিবাজি ব্যবহার করেছিল আফজাল খানের পেট চিরে হারেমের খুকিগুলোকে মুক্ত করবে বলে

বিরানব্বই

কলকাতা হল শহরগুলোর এলিজাবেথ টেলর, পাগল, সুন্দর, বিচ্ছিন্ন, মোটা মেয়েদের ভাল্লাগে, আমার তো বার্ধক্য এবং চিরকালের নাটকীয়তা, জানিসই, লিজ বলেছিল কোনও মোহাচ্ছন্ন স্যুটরকে ও বিয়ে করবে, যে তার জীবনকে আরও আরামদায়ক করার প্রতিশ্রুতি দেয়, সে যতই অনুপযুক্ত হোক না কেন, প্রেম একটা জেল-সেল, একটা ডেথ-সেলের শিক দিয়ে আলাদা করা, কারণ প্রেম হলো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর থেকে মাত্র কয়েক ঘন্টা দূরে, প্রেমিক ইতিমধ্যেই তার ধূসর মৃত্যু-পোশাকের মধ্যে একটি কাব্যিক ভূত, আর লিজ টেলর, উনিশ গুলুগুলু তুলতুলে রসালো, মোটা তা সে যতই মোটা হোক দেখেছি তার লিজ টেলর চোখ—বৃষ্টির পরে চরসের মতো দুর্দান্তভাবে তাজা এই মেয়েমানুষ দশপাতার চিঠিতে কান্নাকাটি না করে লাইনে বলতে পারতিস তোশোক আখখেতের আড়ালে আনো

তিরানব্বই

চলো আমার অতীত পচা মড়ায় ঠাশা আজকাল তাদের মাংসে পোকা ধরেছে এই যে দেখছেন নখের কোনায় পিত্ত ফাটিয়ে ফাঁক করা ছাড়া কীই বা আছে কাঁদো কাঁদো আদুরে গলায় নৈরাত্ম-ভাবনাই ঝ্যাম কিলবিলে পোকা কী দুর্গন্ধ বহুত লম্বা হাত থাকলেই হলো আমি কি খার খেয়ে বসে আছি মায়ের হাতের ডিমঝুরি আবার বাজুবন্ধ অকৃত্রিম লটকালাম ! ছায়া ব্যস্ত হয়ে গেলে যে কায়া দৃশ্যমান হয় তা আদতে মৃতদেহে করা-ই যায় ভালোবাসার ও থাকে জুরাসিক যুগের শেষ দিকে এক শ্বাসরুদ্ধকর এক্সপায়ারি ডেট সংখ্যাগরিষ্ঠরাই নির্ণয় নেয় কী ভালো আর কী খারাপ ধর্ম হোক জাত হোক গায়ের চামড়া হোক দল হোক যতটা অবিশ্রান্ত হ্যাংলামি আদুরে প্রথমোক্ত ঘরাণার  বউরা দুপুরে আমার ভেতর, যেন চিরবিরহী ম্যাড়ম্যাড়ে ওই দিগন্ত

চুরানব্বই

কিন্তু দেখার নেই পুরুষদের আগে মুখে, বুকে, নিতম্বে। অনবদ্য  রাজনৈতিক পতাকার মতন ক্ষত আর নেই এতটাই বেপরোয়া পুদুচেরির খুদে মুরগি হুহুহু হিহিহি হাহাহা হোহোহো, তিনটি মাত্রা যথেষ্ট র‍্যাম্পাট কেলিয়েছে ষড়যন্ত্রের গন্ধ  একবার বা দুবার, একজন খারাপ যুবতিকে ভালবাসতে হয়, একটা ভাল যুবতি পাবার জন্য, গুলুগুলু যখন যুবতি হয়ে উঠতে শুরু করেছিল কাউকে তার দিকে তাকাতে দেওয়া হয়নি, কারণ সে ভেবেছিল যে সে মোটা কুইন ভিক্টোরিয়া, সত্যিই মোটা সুন্দর আর গুলুগুলু বুঝতে পেরেছিল যে ছেলেরা তাকে সুন্দর বলে মনে করে, দীর্ঘশ্বাস আর গোলাপি গাল আর চিকনি চামেলি চাউনি, রিচার্ড বার্টন শেক্সপিয়ার শোনায়, মুখস্হ, গুলুগুলুর চোখে 

কাজল গালে রুজ ঠোঁটে লিপ্সটিক, না, গুলুগুলুকে ইমপ্ল্যান্ট করাতে হয়নি, ও তো ক্লিওপেট্রা মস্তানি 

পঁচানব্বই

সিজার, বোঝেন তো, বাংলা সাহিত্য-পড়া  প্রতিক্রিয়াশীল সিলেবাস-প্যাঁদানো অভিজ্ঞতায় ভারতচন্দ্র থেকে আরম্ভ করে খুব বেশি দূর এগোতে পারেন নি, বড়োজোর ১ ছটাক বঙ্কিম সাড়ে ৩ সের শরৎ ও ৬০ মন রবীন্দ্রের সঙ্গে পোয়াটাক বিভূতি প্লাস তারাশঙ্করের চাকনা ছিটানো লাবড়া সাপটে এখন নীতিঠাকমার পুণ্য দায়িত্ব স্বেচ্ছায় পালন করছেন, “স্বচ্ছ ভারত”-তুল্য তৎপরতায়। যদিও, আপত্তির মূল কারণ — “মোটা ও মসৃণ তুলতুলে বাহু”-র মধ্যে যে অনাধুনিক আটপৌরে মাধুর্য আছে তা আপনার প্রিয় অথচ “ছোটো বুক” ভাল্লাগে না কেন ? বলিহারি আপনার রুচি। আরে… মহায়, আলঙ্কারিক আড়ম্বর ছেড়ে সোজা কথার সরল স্বীকারোক্তি ব্যঙ্গভূমির ধুমাধাড় সঙোসকিরিতি আপনার ক্ষুধার্ত যুগেও যা ছিল এখনও তা-ই আছে। যা তা। ঔচিত্যবোধ নিংড়ে গরস্তের ক্ষতের স্বর্ণ। 

ছিয়ানব্বই

গড়ানো কার্পেট থেকে আমার গুলুগুলু তুলতুলে প্রেমিকা শেক্সপিয়ারের হাতে গড়া, উই লাভ ইউ ডারলিঙ । হ্যাঁ, উই মিনস উই । হাতে রক্তের গন্ধ, আরবের সমস্ত আতর ঢেলে দিলেও সে দুর্গন্ধ দূর হবে না, সময়কে ফাঁকি দিতে, সময়ের মতো দেখতে, আপনার চোখ, আপনার হাত, আপনার জিহ্বা স্বাগত, তোমার একটু অভিমানের জন্য যদি কারো চোখে জল আসে, তবে মনে রেখো, তার চেয়ে বেশি কেউ তোমাকে ভালোবাসে না, ওহে, কেউকি আমাকে শেখাবে কী করে আমি চিন্তা করা ভুলতে পারি, আমি কি তোমাকে কোনো গ্রীষ্মের দিনের সঙ্গে তুলনা করব? তুমি একটু বেশিই প্রেমময় ও নাতিশীতোষ্ণ। আপনি  আমার কাছে কী প্রত্যাশা করেন ? একা ঘুমাই?  ! হ্যাঁ । ডিয়ার গুলুগুলু । বললি কেন তোর ইউটেরাস নেই ? 

সাতানব্বই

চলুন কোনো দায়-ফায় ঝক্কিঝামেলা নেই কালো আফ্রিকান স্কার্টপরা বেশ্যা হাতে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে মার্কা মেরে রাখলো মনে হলো অন্ধকারে অন্ধকার চুষছি বুকে পাঁঠার রক্ত মাখিয়ে রেখেছে এই নাও পুঁজির পূঁজ খাও পাও চাও দাও লাও বুড়ো বয়সে বেঁচে থাকার আশ্রয় হলো জীবনকে পাগলাগারদে পালটে ফেলা কেউ পছন্দ করছে মানেই বিপদ এলো বলে ঘাড় হেঁট করে বংশানুক্রমিক কালো রঙের ফোঁস ফোঁস টাকা মানেই তো অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে নিজের হাত হুইস্কিতে ধুয়ে ফেলুন বারো দিনের স্বামী ভয়ের যে কারণ আওয়াজ দেন ঢেঁকি গিলতে যদি হয় বাসনার দাম শাব্বাস লজ্জাবতী লজ্জানন্দ একই আনাচে কানাচে দুর্গা, বাসন্তী, ধর্মঠাকুর, রাস, ক্ষেত্রপাল, তোর্সা, তিস্তা, মহানন্দা হাট-বাট নগর ছাড়িয়ে ফসলবিহীন ঠিক ঠিক বিপদসংকুল

অষ্টনব্বই

 ডেঙ্গু নেগেটিভ শ্রীঘর থেকে বেরিয়েই দু’গরস খেয়ে তারপর ব্লাড ক্যান্সারে ভেজে খাইখেজুরের রস হাত ঘুরিয়ে অনেক নাড়ু পচা-নোঙরা খঞ্জ-খোজা ফিরে ওইটারে আত্মাকে অধিগত করে দাড়ি রেখেছেন হালায় আচ্ছে দিন আবার সাদা সাদা দাড়ি চরম বালখিল্য ও বাপ রে কী সুন্দর মুগ্ধ হয়ে হুজুরের নিদান নাম শুনে চমকে চুমু খেলে ঈশ্বরে বিশ্বাস করুন ঈশ্বরে বিশ্বাস করুন বলে বলে চরস ফোঁকার নেশা ধরিয়ে দিলে গো এখন ফুসফুসময় ঈশ্বরে ঈশ্বরে ছয়লাপ ওয়াশরুমে ভালোবাসা কতোটা কাল্পনিক উউউম্মম্মাহহ উউম্মাহহহ কার মাথায় হিসি করছেন খেয়াল করার দরকার নেই প্রেম করে বিয়ে করার পর গিরগিটির রং বদল ঝনঝন গুণ মানেই হিসির যোগ্যশব্দ শুরু উনি আগুনে পোড়াতেন গাঁজা একদিকে হাঁস-মুরগি,গরু-ছাগল অতএব কেন অমাবস্যার রাতে লিঙ্গ ঢোঁড়াসাপ ?

নিরানব্বই

উঁকি দিতে চান অথচ ককনও তোমাকে চায়নি জানো খুনসুটি চোখে জল প্রার্থনাময় মিশকালো টেস্টটিউব বেবির বাপ কে ? বলুন !  হেলতে হেলতে টলে গ্যাছে যে মতাদর্শ লাল ধুলো সর্বাঙ্গে মরিচঝাঁপির কাদায় অফবিট লোকেশনে পা গণতন্ত্রের নাড়ি জেগে উঠলো নষ্ট হয়ে যাওয়া কীট অসহ্য চুপচাপ কাঁদতে থাকি নষ্ট হওয়ার স্বাধীনতা উইরা যখন খেলই না, বইতে থাকে দুধকুসুম্বা নদী। চুমু ও সঙ্গম যোগ্য কোনো রমণীর উম্মাহ হায় একাকীত্ব ভাল্লাগে অথচ স্বমেহনের মশলা নেই অমর হবার পেছনে ছুটছে ভাগ্যক্রমে কোটিকোটি শুক্রকীটের মধ্যে থেকে ওই বানচোদই সাঁতারে প্রথম হয়েছিল তোমরা জানো আমি দুশ্চরিত্র লম্পট অয়ি গজদন্তমিনারবাসিনী আমি নখ বাড়তে দিই না

একশো

জানি তুই করাল দানবী সঙ্গমের পরই দাঁড়িয়ে ধুয়ে নিবি তক্ষুনি ওহো কতো হাজার লোকের মদ খেয়ে নর্দমায় গড়াগড়ি দেবার জন্য প্রতিভা দরকার পোঁদে কুলুপ এঁটে কারেন্ট চলে গেল মুন্ডু নেই পরিচয় নেই কিন্তু মগজকে উন্মাদ হতে হবে নয়তো প্রতিভার জনাকীর্ণ আদালতে মধুচাকের গান প্রভাতিল বিভাবরী, উত্তরিলা রাজ-ঋষি আমাদের চুলবুল পাণ্ডে আই লাব্বিউ, উনি এসেছিলেন চুপিচুপি অ্যানাইস নিনের ‘ডেলটা অব মার্স’ জমির দালালেরাও আস্তাবলবন্দী করে মাথা নামিয়ে ভীষণ কাঁদবে, ভাল কাউকে খুঁজুন আরে-ভাই  মৌবনে যৌবনের সাম-দাম-দন্ড-ভেদ নীতির উলুঝুলুকুলু মেধাবী এবং ভারী সাজুগুজু কী হাহাকার গো ! মাথা গরম হয়ে গেছিলো একটা ঘূর্ণি, শারীরিক উত্তেজনা  ওকে নিয়েই তো আমাদের মার্কসবাদ 

একশো এক

সাদা দাড়ি রাখার জন্য একাকীত্বকে জাস্টিফাই করেননি রবিঠাকুরের দাদু ! দু:খের মাঝে কিভাবে হাসতে হয় ক্ষুধার্ত হায়নার খাঁচায় চোখ উপড়ানো বোধহয় বাকি আছে প্রশ্নটি ঘিরে রয়েছে বিষ ছড়ানো নাকানিচুবানি খায়  কীর্তিকলাপের বিষয়ে দেশপ্রেম মাটি, মাম্মি, মানুষ ইত্যাদি দেখতে দেখতে দুঃসময়ের বিরুদ্ধে আমরা ক্লান্ত, ভীত, অসাড় এই বদবুদ্ধিগুলো কেন উঠে আসবে কথায় ভেজাল আ‌ছে গলায় এইসব শতকৌস্তভ যন্ত্র কেন নয় কেন নয় বড্ড শীত কচ্চে রে মুখ থম থম রাম-নাম সত্য হ্যায় বাদবাকি সমস্তকিছুই বুঝলেন তো ঝুটা হ্যায় স্বমহিমায় বিরল  কী বলছো ? আগেও ছিলো, এখনো আছে। না দেখলে আমার কী দোষ। না দেখালে কেমন করে দেখব ? এখন দেখালে তাই দেখতে পেলুম ! ঠোঁটের তলায় তিল বরকে দিলে?

একশো দুই

প্রেমালাপ করবেন তারা ভুলেও উহু আহা ময়না পাআআআখি এইসব করে ডাকবেন না। সোনা বাবুর মন খারাপ হলে মন ভালো করার জন্য চুমাচাটি করবেন , আপনার পাপ্পির শব্দে কোথায় কে বা কারা যাতনার ঠ্যালায় বেহুঁশ হয়ে যাবে সেটাও পরে দোষ আপনার হবে। বোঝেন গুড পিপলস? কি মিত্তিইইইইইই তিনি ঝাঁটা, কুলো, মশাল ও গদা ধারণ করে থাকেন শুধু শুধু এটা ভাজা ওটা ভাজা না খেয়ে ক্লেদপঙ্কিল  নির্মাণ ঋদ্ধিতে সুপ্রভ আমরা কাপুরুষ, ইতি গন্ধপুষ্পে , ওং রিংরিং আকাশে আধফালি চাঁদ অনেক ক্ষেত্রেই আর সব ক্ষেত্র এক না মা-মাম্মি-মানুষ এমনই মায়াঘন হেমন্ত পদ্মের পাতা তার ওপর মা মনসার হাত। বিরাশি বছর বয়সের বাংলার নির্লজ্জ বদনাম কবি !

একশো তিন

বুকের পাটাটাই পয়সা-কড়ির দাওয়াত আজো স্মৃতিতে অমলিন ধীরে, ধীর তরঙ্গে নিতম্ব ওঠে আর নামে সত্যিই তাই দ্রিমিদ্রিমি চেতনা দন্ড কখন- কিসে- কী উদ্দেশ্যে উথ্থিত হয় ঘেঁটে দেখেননি লাভিউ ।  নাম মেনশন করার দরকার নেই । লাভ হরমোনে পোড়া হৃদয়ের গন্ধ ! সত্যিই খুব ইচ্ছে তোমায় উলঙ্গ দেখার হে মৃত্যু কিস্যু আসে যায় না কী বলে ধন্যবাদ দেব আপনাকে কি বিষময় এ পেশা  ভবিষ্যত বলে কিছু নেই আজিকে কী ঘোর তুফান সজনি গো, জোরে জোরে তালি দাও তাল্লি।  ফিরেছি গো ঘরপোড়া গরু। সিঁদুরে মেঘ  অবিশ্বাসী শীৎকারে ঘাম উৎপাদন করবেই। তারপর ইনসিনারেটর তো আগেই বুক করা আছে

মুখাগ্নি করার দরকার হয় না জাস্ট ট্রে ঠেলে দাও 

একশো চার

ধর্ম এবং ঈশ্বর এই দুইটা অনস্তিত্ব আমার কাছে বেশ স্পষ্ট ভীষণ  ভালো করে দেখলাম ,অ, তুই ? স্তাবকতা ওনার রন্ধ্রে অদ্ভুত একটা ঘোর আছে, গায়ে কাঁটা দিচ্ছে, তারা জানে, নরক বলে কিছু নেই। বা হটাৎ হটাৎ প্রেম পায় । সেই সুন্দরী কেন যে দাঁত মাজতো না জীবনে সবচেয়ে বড়ো আফশোষ অ্যাসিড খেয়ে মরে গেলি ? মোচরমান কোথাকার ! তোর ঈশ্বর তো আমার তাতে কী? তাদের নিয়ে হাসাহাসি করি, কাঠমোল্লা বলি, গোঁড়া, অন্ধ, কূপমণ্ডূক, মূর্খ, ধর্মব্যবসায়ী বেচারা

কিন্তু তুই তো বলেছিলি ধর্ম বলে কিছু নেই আছে কেবল মৃত্যু । তুই মরলি তোকে গোর দিয়ে তোর বাপ সমাধি গড়েছে । আমি মরে ছাই হয়ে গেলুম।

গণচিতায় মিশে গিয়ে তোর কবর ঘিরে পাক খাই।

একশো পাঁচ

স্ত্রী বিষ্ণুপ্রিয়াকে  ঘরে রেখে ? আপনিও স্ত্রী যশোধরাকে লুম্বিনীতে রেখে মাঝরাতে চলে গেলেন। 

আমার শিষ্যদের দল নেই কোথায় গিয়ে মরে পড়ে থাকবো ? কী কষ্ট যে বুক চিতিয়ে বেরিয়ে পড়া? কাস্তে আর নেই আচমকাই এদের চিহ্নিত করে কাঁধ মিলিয়েছেন শীতকালে পাগল কম হয়  তাহলে চেপে যাবেন না আস্ত রাক্ষস বেরিয়ে ঘোড়া গুলো ঘাস খায় তেমন ব্যবস্থা অক্ষম, অসহায়, অন্ধ তারপরেও নাছোড়বান্দা  দাদু দিদাদের নিদান দেবেন তো ? মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র পাঠ করলে অকাল মৃত্যু ঠেকানো যায় কিন্তু আমি তো নিজেই কতো মন্ত্র লিখেছি কবিতার বইগুলোতে আর তার জন্য দাদু-আলোচকদের গালাগাল খাচ্ছি তার কী হবে ব্‌জ্জাতদের জন্য যারা তাদের নাভি-কে পুজো করে

Posted in Uncategorized | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

মাথা কেটে পাঠাচ্ছি যত্ন করে রেখো

মাথা কেটে পাঠাচ্ছি, যত্ন করে রেখো
মুখ দেখে ভালোবেসে বলেছিলে, “চলুন পালাই”
ভিতু বলে সাহস যোগাতে পারিনি সেই দিন, তাই
নিজের মাথা কেটে পাঠালুম, আজকে ভ্যালেনটাইনের দিন
ভালো করে গিফ্টপ্যাক করা আছে, “ভালোবাসি” লেখা কার্ডসহ
সব পাবে যা-যা চেয়েছিলে, ঘাম-লালা-অশ্রুজল, ফাটাফুটো ঠোঁট
তুমি ঝড় তুলেছিলে, বিদ্যুৎ খেলিয়েছিলে, জাহাজ ভাসিয়েছিলে
তার সব চিহ্ণ পাবে কাটা মাথাটায়, চুলে শ্যাম্পু করে পাঠিয়েছি
উলঙ্গ দেখার আতঙ্কে ভুগতে হবে না
গৌড়ীয় লবণাক্ত লিঙ্গ কোনো স্কোপ আর নেই
চোখ খোলা আছে, তোমাকে দেখার জন্য সব সময়, আইড্রপ দিও
গিফ্টপ্যাক আলতো করে খুলো, মুখ হাঁ-করাই আছে
আমার পছন্দের ননভেজ, সন্ধ্যায় সিঙ্গল মল্ট খাওয়াতে ভুলো না
মাথাকে কোলেতে রেখে কথা বোলো, গিটার বাজিয়ে গান গেও
ছ’মাস অন্তর ফেশিয়াল করিয়ে দিও, চন্দনের পাউডার মাখিও
ভোর বেলা উঠে আর ঘুমোতে যাবার আগে চুমু খেও ঠোঁটে
রাত হলে দু’চোখের পাতা বন্ধ করে দিও, জানো তো আলোতে ঘুমোতে পারি না
কানে কানে বোলো আজও উন্মাদের মতো ভালোবাসো
মাথা কেটে পাঠালুম, প্রাপ্তি জানিও, মোবাইল নং কার্ডে লেখা আছে।

Posted in Uncategorized | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান